সেরা চটি -- চোদন ঠাকুর-এর "ছোটগল্প" সমগ্র (স্বলিখিত) - অধ্যায় ১৪৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42127-post-5838184.html#pid5838184

🕰️ Posted on December 26, 2024 by ✍️ Chodon.Thakur (Profile)

🏷️ Tags:
📖 3449 words / 16 min read

Parent
২৮। সেরাচটি (ছোটগল্প)  --  নকশালবাদী ছেলের প্রত্যাবর্তনে গৃহলক্ষ্মী মায়ের কামজ সমাবর্তন by চোদন ঠাকুর [ যেই সময়ের ঘটনা বলছি, সেটা আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগেকার কথা। সালটা ১৯৭৪। সমগ্র বাংলা অঞ্চল জুড়ে চলা ইতিহাস বিখ্যাত বামপন্থী রাজনৈতিক মতাদর্শের 'নকশাল আন্দোলন' ততদিনে গতি হারিয়ে বেশ স্তিমিত হয়ে পড়েছে। ] "এই তো আমি অফিস থেকে চলে এসেছি, মা !" বলে পিছন দিক থেকে মেঘ আচমকা ওর মায়ের গলা জড়িয়ে ধরল। তার মায়ের মুখের সামনে এগিয়ে দিল অফিস শেষে বিকেল বেলায় সবে বাজার থেকে কেনা গিফট। তাঁতে বোনা একটা রঙিন দেশী শাড়ি। মেঘের নিজের চাকুরীর কামাই থেকে কেনা। অফিস থেকে ফেরার পথে বাজারের দোকান থেকে শাড়িটা কিনেছে। বাড়ি ফিরে ঘরের মূল দরজা খুলে পায়ের বুটজোড়া খুলে খালি পায়ে চুপিসারে শব্দ না করে হেঁটে দুটো ঘর পেরিয়ে রান্নাঘরে ঢুকেছে মেঘ। মাকে সারপ্রাইজ দেবে বলে রান্নাঘরের কাজে ব্যস্ত থাকা মায়ের শরীরটা পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে। "ওমা! সেদিনই না একটা শাড়ি কিনে দিলি! আবার আরেকটা! সবসময় এরকম কিছু না কিছু কিনে আনতে কে বলেছে তোকে!" মুখে যাই বলুক, মেঘের মা মৃদুলার দুচোখ বেয়ে খুশির হাসি উপচে পড়তে লাগলো। "পাঁচটা না দশটা না, আমার একটা মোটে মা! তোমার জন্য কিনবো না তো তার জন্য কিনবো" ছেলে বেশ খুশি মাখা গলায় বলে। তার তরুণ দেহের হাতদুটো যুবতী মায়ের হালকা ঘামে ভেজা গলার চারপাশ জড়িয়ে রেখেছে। "বেঁচে থাক বাবা, সুখে থাক | মায়ের আয়ু লাগুক তোর গায়ে |" একপাশে ঘাড় ঘুরিয়ে ছেলের গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে স্নেহের আদর করে দেয় মৃদুলা। ছেলের পরনে তখনো পুলিশ বাহিনীর কাজে নিযুক্ত ইউনিফর্মের হাফ শার্ট ও প্যান্ট। সারাদিন মাঠে ঘাটে পুলিশের ডিউটি দিয়ে আসা তরুণ বয়সের ঘামের গন্ধ পায় মা। বয়সের সাথে সাথে সেই খোকা এখন কত বড় হয়ে গেছে! "মায়ের আয়ু চাইনা আমার ! তুমিও আমার সাথে থাকবে সারাজীবন। তাহলেই হলো।" পেছন থেকে মায়ের খোঁপা বাঁধা চুলের গোড়ায় জমে থাকা ঘামে মুখ গুঁজে আদুরে সুরে মাথা নাড়ে মেঘ। "পাগল ছেলে আমার ! এতদিন বাদে মায়ের কোলে ফিরেছিস, তাতেই আমি খুশি!" পাশ থেকে নিজের গালে ছেলের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি ভর্তি গাল চেপে ধরে মমতাময়ী হাসিতে ভরে ওঠে মৃদুলা'র মুখ | "এতদিনের কষ্টের জীবন পাড় করে তোমাকে কাছে পেয়ে দারুণ সৌভাগ্যবান মনে হয় নিজেকে৷ বাজি রেখে বলতে পারি, পৃথিবীর সবথেকে ভালো মা হলে তুমি |" মেঘের মন ভরে ওঠে অনির্বচনীয় এক স্বর্গীয় আনন্দে | গত ছয় মাস হলো পুরো উত্তর ও পশ্চিম ভারত জুড়ে চলা নকশাল আন্দোলন ছেড়ে ছুড়ে সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় ফিরে এসেছে মেঘ। সরকারের প্রতিশ্রুতি মত নিঃশর্ত আত্মসমর্পনকারী নকশাল-বাদী হিসেবে পুলিশের কনস্টেবলের চাকরি পেয়েছে সে। তবে, ছয় মাস ধরে পুলিশের চাকরি করা ছেলের দুই রুমের অফিসার্স কোয়ার্টারে মৃদুলা এসেছে সবে এক মাস হলো। বাড়ি পালিয়ে আন্দোলনে যাওয়া ছেলের আগমন যে মায়ের বাড়িতে হয়নি। এম্নিতেই মৃদুলা খবর পেয়েছে দেরিতে, তার ওপর পৈতৃক ভিটা ছেড়ে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ওখানকার নিজের ভাগের জমিজমা সবকিছু বিক্রি করে আসতে মাস পাঁচেক সময় লেগেই গেল। "ইশ! এখন তো খুব মুখে বলছিস এসব! তা বাড়ি ফেরার সময় এসব তোর কোথায় ছিল? তখন তো খুব মায়ের বাড়ি না হিয়ে এই গ্রামে চলে এসেছেস!" মৃদু স্নেহময় বকুনী দিল যেন মৃদুলা। "উঁহহ! তোমাকে নিয়ে এই হয়েছে মুশকিল! মাথায় একটা কিছু ঢুকলে আর বেরোয় না! কতবার না বলেছি, যা ভুল করেছি সেসব আর মনে করিয়ে দেবে না, মা!" ছেলের হাতদুটো একটু অসহিষ্ণু হয়ে মৃদুলার গলার চারপাশে খামচে দিল যেন। মায়ের গালে নিজের গাল আরেকটু বেশি ঘষে দিল মেঘ। গত মাসখানেক ধরে মা এই গ্রামে আসার পর থেকেই সুযোগ পেলেই ছেলেকে খোঁটা দিতে ছাড়ে না। নকশালপন্থী ছেলে তার আন্দোলন ছেড়ে সরকারের কাছে স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছে এই 'মহেশপুর' নামের গ্রামে। জায়গাটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদা জেলার সদর মহকুমার বামনগোলা সম্প্রদায় উন্নয়ন ব্লকের একটি অজপাড়াগাঁ। পাঁচ বছর আগে মাকে ফেলে বাবা পালিয়ে যাবার পর থেকে পরিত্যক্তা মা তার বাবা মা ভিটাবাড়ি মালদা জেলার সদরে মেঘের দাদু দিদার একান্নবর্তী পরিবারে বসবাস করছিল। ওবাড়িতে মেঘের বেশ ক'জন মামা মামী, মাসী মেসো ও তাদের বাচ্চাকাচ্চা সমেত কোলাহলময় বাড়ি ছিল সেটা। ছেলের এখানে আসার আগে সে বাড়ির রান্নাঘরে দিনরাত সবসময় কাটিয়ে বলতে গেলে একরকম দাসীবৃত্তি করে এতদিন কাটিয়েছিল মৃদুলা। "হুম! এখন খুব খুব মা-ন্যাওটা হয়েছিস দেখি! অথচ তুই বাড়ি ফিরলি না বলে বাধ্য হয়ে আমাকে এই প্রত্যন্ত অচেনা গ্রামে তোর কাছে আসতে হলো!" সামান্য হাসি দিয়ে বলে মৃদুলা। ছেলের খাটো করে ছাটা চুল ধরে ঝাঁকিয়ে মেঘের চুলগুলো এলোমেলো করে দিল মা। "বেশ করেছি এই গ্রামে এসেছি! দাদু দিদার বাড়িতে তোমার কাছে না গিয়ে ভালোই হয়েছে! মামা মামী মাসী মেসোদের ওই জঙ্গলে চাইলেও এখানকার মত তোমাকে নিজের মত করে পেতাম না। ঠিক বলেছি কিনা তুমি-ই বলো, মা?" "হ্যাঁ তা আমি অস্বীকার করবো না। আমাকে একলা পেয়ে এখানে ভালোই রেখেছিস তুই! তাই বুঝি প্রায় সময় আমার জন্য কেনাকাটা করে এসব পাগলামি করছিস?" "শাড়িটা পড়ে দেখবে কিন্তু কেমন হলো। চার চারটে দোকান ঘুরে তবেই পছন্দ করে কিনেছি তোমার জন্য"। "অনেক খরচা হলো নিশ্চয়ই? কি দরকার তোর বাবার কাছে পরিত্যক্ত মায়ের জন্য এতকিছু কেনার?" "সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না. আমি চাকরী-বাকরী করছি, তোমাকে খুশি রাখার জন্যই তো করছি, নাকি বলো মা?" মেঘের অবাধ্য হাতদুটো মায়ের গলার দুপাশ থেকে সামান্য নিচে নেমে তার শাড়ি ব্লাউজ ঢাকা বুকের উপর আলতো করে চেপে বসেছে তখন। সুযোগ বুঝে সামান্য চাপ দিচ্ছে মায়ের ভরাট বুকের উপর! "শুধু আমার জন্য করছিস জানলে তো সত্যিই খুশি হতাম। কিন্তু আশেপাশে যা শুনছি, তাতে তো মনে হয় তোর এসব ছলাকলা আরো অনেকের উপরই খাটিয়েছিস!" গলার অভিমানটা লুকানোর চেষ্টা করল না মৃদুলা। মায়ের কন্ঠে স্পষ্ট অভিমানের সুর ছেলের কানেও ধরা পড়ল। "তোমার আবার হঠাৎ কি হলো, মা! শাড়িটা পছন্দ হয়নি বুঝি?" কিছুটা বিস্মিত সুরে পেছন থেকে বলে মেঘ। তার হাতের নড়াচড়া মায়ের বুকে আচমকা থমকে গেল যেন। "তোর কেনা সবগুলো শাড়ি-ই ভীষণ পছন্দ হয়েছে আমার। কিন্তু তোর ওসব চালাকি এখন আমি ধরে ফেলেছি! নিশ্চয়ই তোর কোন প্রেমিকার জন্য আগে কিনে রেখেছিলি, মওকা বুঝে আমার নামে চালিয়ে দিচ্ছিস।" "আরে! কি আজব কথা! তোমাকে না কতবার বলেছি, এখন পর্যন্ত আমার জীবনে ওসব ঘাটের মড়া প্রেমিকা বা বান্ধবী বলে কিছু নেই। কখনো ছিলও না।" মায়ের মুখটা পাশ থেকে হাত দিয়ে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে মৃদুলার চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে কথাগুলো বলে মেঘ। "থাক থাক! আমাকে আর শেখাতে আসিস না | আমি কচি খুকি না! তোর ওসব মিথ্যে কথা এতদিন না জানলেও এখন সব জানি। তোর আশেপাশের কোয়ার্টারের কাজের ঝি-বুয়া গুলো আমাকে তোর কুকীর্তি সব জানিয়ে দিয়েছে!" হঠাৎ সুর পাল্টে রাগান্বিত গলা মৃদুলার। এক ধাক্কা দিয়ে নিজের মুখে থাকা ছেলের হাত সরিয়ে মুখ ঘুরিয়ে রান্নাঘরের চুলোর কাজে মনোনিবেশ করে মৃদুলা। তার আচরণে স্পষ্ট ছেলের উপর কোন কারণে বেশ ক্ষুব্ধ। "কিসের সাথে কি মেলাচ্ছো তুমি, মা! তুমি এখানে আসার আগে গত পাঁচ মাস রান্নাবান্নার জন্য আমার এই বাসায় বাঁধাধরা গৃহকর্মী ছিল সেতো তোমায় আগেই বলেছি! তুমি আসার আগেই তো সেসব বিদেয় করে দিয়েছি। এখানে নতুন করে আবার কি জানলে তুমি?" "ইশ! ছেলের ঢং দেখো! ভাজা মাছটি যেন উল্টে খেতে জানে না! আমি যখন এখানে ছিলাম না, তুই যে মাসে মাসে কাজের বুয়া পাল্টেছিস সেটা আমি জেনে গেছি! সেই পাঁচজন কাজের বুয়ার সাথে কথাও বলেছি আমি!" মায়ের কন্ঠে রাগ যেন বাড়ছেই তো বাড়ছেই! "কেন, মা? কাজের বুুয়ার রান্না পছন্দ নাহলে বুয়া পাল্টাতে পারি না আমি? এটা কী এমন ব্যাপার যে তুমি ধরে বসে আছো" বলতে বলতে আবার মৃদুলার গলার দুপাশে জড়িয়ে নিয়ে নিজের শরীটা মায়ের আরো ঘনিষ্ঠ করে মেঘ। তবে, মেঘের এই আদুরেপনা মা আর সইবে কেন! পেছন ঘুরে ছেলের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এক ঝটকা দিয়ে মেঘকে তার শরীর থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। মেঘ মায়ের চোখে ভালোমত তাকিয়ে গনগনে রাগের উত্তাপ টের পেল! "আর কত মিথ্যে কথা বলবি তুই! এতটুকু লাজলজ্জা নেই বুঝি তোর! তোকে কিভাবে পেটে ধরে বড় করেছি সেটাই আমার মাথায় আসছে না!" আচমকা রীতিমতো ধমকে উঠে মৃদুলা। "মা, রাগ না করে ঠান্ডা মাথায় বলো তো তুমি আমার নামে কি শুনেছো?" "কি শুনেছি জানতে চাস! তোর মায়ের মুখে নিজের বেহায়া কুকীর্তি শোনার এত শখ!" গত এক মাসে মায়ের কন্ঠ এই প্রথম এতটা উচ্চস্বরে যেতে শুনল মেঘ। "যা শুনেছো নির্দ্বিধায় বলে ফেলো, মা। আগে শুনি ওসব বান্দি ঝি-গুলো আমার নামে কি বাজে কথা রটিযেছে।" কিছুটা ভয়, কিছুটা উদ্বেগ, কিছুটা দ্বিধা নিয়ে কোনমতে বললো মেঘ। "ছিঃ ছিঃ আমার শুনেও বিশ্বাস হয়নি তুই আমার ছেলে হয়ে একাজ করতে পেরেছিস! পরে এতগুলো বুয়ার সবার একই ধরনের কথায় আমার ভুল ভেঙেছে! তুই যে আসলে বাজে একটা ছেলে সেটা আশেপাশের অন্যরাও বলেছে।" "মানুষের কথার পরোয়া করি না আমি। কোন কথায় তুমি এত ক্ষেপেছো? কি এমন করেছি আমি, মা?" "কেন? এই বাড়ির আগেকার পাঁচজন কাজের বুয়ার সবার সাথে তুই শারীরিক সম্পর্ক করেছিস সেটা অস্বীকার করতে চাস? ওদের সবাইকে পিল খাইয়ে মাসের পর মাস রোজদিন রাতে বিছানায় তুলে আমোদ ফুর্তি করেছিস, এসব মিথ্যা বলতে চাস? ছিঃ ছিঃ ছিঃ ওরা সবাই, এমনকি আশেপাশের প্রতিবেশী সকলে তোকে লুচ্চা লাফাঙ্গা চরিত্রের ঘৃণিত ছেলে হিসেবে জানে!" সামান্য দু'একটা কথাতে মুহূর্তের মধ্যেই আনন্দঘন পরিবেশটা কেমন যেন গরম হয়ে উঠলো। মৃদুলা যে সব সত্যি কথা জেনে মেঘের থলের বেড়াল বের করে ফেলেছে এটা ছেলের নীরবতায় পরিস্কার বোঝা যাচ্ছিল। "কি হলো! এখন আর মুখে কথা বেরোচ্ছে না তোর?" ধিক্কার মিশ্রিত তীব্র গলায় বলে মৃদুলা। "আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকলে কিছু কথা তোমায় বোঝানোর চেষ্টা করতে পারি, মা। শুনবে আমার কথা?" মৃদু গলায় কান্না জড়ানো সুরে মেঘ অনুনয় জানায়। তার কন্ঠে প্রায়শ্চিত্তের চাপা অনুনাদ। "বল কি বলবি? নোংরামি ঢাকতে নতুন কি মিথ্যে বলবি বল। তোর কোন কথা আর বিশ্বাস করি না আমি।" "সে আমি বুঝতে পারছি। তবুও সত্যিটা তোমাকে জানতে হবে। মা হিসেবে ছেলের মনের কথা শোনা তোমার দায়িত্ব, সেটা তুমি অস্বীকার করতে পারো না।" "তোর মত ছেলের মা হয়ে নিজের উপরই লজ্জা হচ্ছে আমার! ছিঃ ছিঃ এতদিন নকশাল আন্দোলন করা আদর্শবাদী ছেলে ভাবতাম তোকে!" ছেলের উপর ভয়ানক ক্রোধে কেঁদে ফেলে মৃদুলা। "তুমি বিশ্বাস করবে কিনা জানি না, মা। তবে সত্যিটা হলো, নিজের তারুণ্যের অনবদমিত ইচ্ছার চেয়ে তোমার ছোটবেলার স্মৃতি ফিরে পেতেই ওসব গৃহকর্মীদের নিয়ে গত কয়েক মাস মজে ছিলাম আমি।" "মানে! এই কথার মানে কি তোর?" মৃদুলা ফোঁপাতে ফোপাঁতে কেমন হতভম্বের মত বলে। "মানে হলো, ছোটবেলায় তোমার শরীরের রান্নাবান্না করা তেলমশলার ঘ্রান আমি কখনো ভুলতে পারি নি। তাইতো ওসব কাজের ঝি-মহিলাদের শরীর অনাবৃত করে শারীরিক সম্পর্কের ছলে তোমার ঘনিষ্ঠতা প্রার্থনা করে এসেছি আমি, মা!" নিস্তব্ধ কান্না জড়ানো রান্নাঘরে বোমা ফাটলেও বোধহয় এতটা চমকাতো না মৃদুলা। ছেলের মুখে এমন ইঙ্গিতপূর্ণ কথার প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করতে পারলেও সেটা চিন্তায় আনতে চাইছিল না মা। "ছিঃ ছিঃ ছিঃ এতটা নিচে কিভাবে নামলি তুই মেঘ? তুই তাহলে বলতে চাস, ওসব কাজের বেটি ঝি-বুয়াদের আড়ালে তুই এতদিন নিজের মাকে কামনা করেছিস, শয়তান?" লজ্জার ক্রন্দন থামিয়ে তখন প্রচন্ড রাগে জ্বলছিল মৃদুলার পুরো শরীর। "হ্যাঁ ঠিক তাই মা। অবিশ্বাস্য শোনালেও এটাই পৃথিবীর সবথেকে বড় সত্য কথা! আর এই কথা বলার জন্য আমি মোটেও লজ্জিত নই।" ভয়ডরহীন বুকে নিঃসঙ্কোচে দ্ব্যর্থহীন স্বরে বজ্রপাত ঘটালো মেঘ। এসময় মৃদুলার মনে পড়ে, গত ক'দিন ধরে ওসব কাজের ঝি গুলো এমন কথাই তাকে বলছিলো৷ তাদের সাথে শারীরিক মিলনের সময়টুকুর পুরোটা জুড়ে তার তরুণ ছেলে মেঘ নাকি তাদের দেহের প্রতিটি কোনায় তেলমশলার ঘ্রান শুকতো। আর বিড়বিড়িয়ে নাকি বলতো, "আহ মায়ের শরীরে এমন গন্ধটাই পেতাম! তবে মায়েরটা আরো সুন্দর, আরো প্রবল ও আগ্রাসী!" বলতে গেলে মৃদুলার এতকালের জীবনের পুরোটা সময় রান্নাঘরে খাবার রাঁধা আর গৃহকর্মেই কেটেছে। ফলে, বাড়ির গৃহবধূ হলেও দাসী বান্দি বা গৃহকর্মীদের মত পাকঘরের চিরন্তন তেলমশলা বা রান্নার উপকরণের ঘ্রানযুক্ত মেয়েলি গন্ধ থাকতো তার শরীরে। এখনো মৃদুলার দেহের সর্বত্র এই গন্ধটা আছে, দিনদিন যেন আরো বেড়েছে৷ ছোটবেলায় মেঘকে বুকে জড়িয়ে যখন ঘুমোতো, মায়ের শরীরের ফাঁক দিয়ে রান্নাঘরের এই আদা রসুন পেঁয়াজ মরিচের ঘ্রানটা ছেলের বড্ড চেনা পরিচিত হয়ে গিয়েছিল। কখনো মায়ের শরীরের এই ঘ্রান সে ভুলতে পারেনি। তাই বোধহয় তারুণ্যে এসেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে নারীসঙ্গে আড়ালে মাকে খুঁজে বেড়াত তরুণ মেঘ! "একদম গোল্লায় চলে গেছিস তুই! তোর মত চরিত্রহীন ছেলেকে আমি আর কখনো মেনে নেবো না। বেরিয়ে যা তুই এখন থেকে, এখনি বেড়ি যা বদমাশ!" চিৎকার করে ছেলেকে তিরস্কার করে তার চোখের সামনে থেকে দূর হতে বলে মৃদুলা। "যাচ্ছি মা, তোমার কথার কখনো অবাধ্য হবো না আমি। তবে চিরদিন মনে রাখবে, তোমাকে কখনো না পেলেও, বাকি জীবনটা এভাবে তোমায় খুঁজতে খুঁজতে দিব্যি কাটিয়ে দিতে পারবো আমি।" কথা শেষ হওয়া মাত্র দুদ্দাড় করে রান্নাঘর ছেড়ে রুম দুটো পেড়িয়ে ঘরের সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায় মেঘ | সত্যি, এত সুন্দর বিকেলটাকে মা এত তাড়াতাড়ি তেতো করে দিল! ভীষণ বিরক্ত হয়ে গ্রামের শস্যক্ষেত পেরিয়ে দূরবর্তী প্রান্তে থাকা পুলিশ বাহিনীর একতলা টিনের ক্লাবঘরে চলে যায় ছেলে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা বা রাত অব্দি ক্লাবঘরে পুলিশের সহকর্মী কনস্টেবলদের সাথে তাস খেলে আর দেশি বাংলা মদ গিলে মায়ের কাছে পাওয়া কষ্ট ভোলার চেষ্টা করবে মেঘ। সাধারণত ক্লাবঘরে না গেলেও বা এসব মদ তাসের নেশা না থাকলেও আজ সেসবের কোন পরোয়া করবে না ছেলে। তরুণ ছেলের মনটা তার মা মৃদুলা পুরো চটকে দিয়েছে | মুখ গোমড়া করে গ্রামের শেষ প্রান্তের ক্লাবঘরে ঢোকে মেঘ। আসলে, পুথিবীতে সবচেয়ে বড় অদ্ভুত বিষয় হলো -- মায়েদের মন। পৃথিবীর কোন দার্শনিক হয়তো সবসময় তলিয়ে ভাবে না, তাই অগোচরে রয়ে যায় মায়েদের সুপ্ত দুঃখগুলো | একটা নারী জানতেও পারেনা কবে তার স্বামীর চেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে তার সন্তান। মমতা ছাপিয়ে যায় যৌনতাকে। নারীসত্ত্বা চাপা পড়ে যায় মাতৃসত্ত্বায় | তাই বোধহয় রাতে স্বামীর কাছে আদর খাওয়ার চেয়েও মৃদুলার কাছে জরুরি হয়ে পড়ে সন্তানের অসুবিধার দিকে নজর দেওয়া। তবে, ছাইয়ের অতল পাহাড়ের নিচে কোন এক কোনায় ধিকি ধিকি আগুন হয়ে জ্বলতে থাকে যৌনক্ষুধা, কিন্তু নির্লজ্জ হয়ে বেরিয়ে আসতে পারে না সন্তানের মুখ চেয়ে | সেই যৌনতার যখন বহিঃপ্রকাশ হয়, যে কোনো রূপভেদেই তা অশ্লীল অবৈধ মনে হয় | এমনকি স্বামীর সাথে সেক্স করতে চাইলেও স্বামীর চোখে তা কখনও হয়তো মাঝবয়সী মহিলার অসভ্যতা হয়ে ওঠে | আর অন্য কোনো পরপুরুষের সাথে সঙ্গম তো সমাজেই নিষিদ্ধ, নরকগমনের পথ ! বহু হতভাগ্য গৃহলক্ষ্মীর অতৃপ্ত যৌনতা মাথা খুঁড়ে খুঁড়ে এক সময় শেষ হয়ে যায় বয়সের সাথে | পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার ৩৯ বছরের যুবতী মা শ্রীমতী মৃদুলা সমাদ্দার এর দুঃখটা এর চেয়েও আলাদা | আজ প্রায় পাঁচ বছর হলো ওর স্বামী ওকে ছেড়ে হঠাৎ সংসার পালিয়ে চলে গেছে| কোথায় গেছে কেউ বলতে পারে না | কেউ বলে সাধু-সন্ন্যাসী হয়েছে, কেউ বলে বাংলা মুলুকের অন্য কোথাও গিয়ে সংসার পেতেছে। মৃদুলার মন সেসব কিছুই ভাবতে পারেনা | প্রথম এক বছর অনেক খুঁজেছিল তার স্বামীকে। নিজের থেকেও বেশি ছেলেটার ভবিষ্যতের মুখ চেয়ে | তারপর একসময় হাল ছেড়ে দিয়েছে | বুকে জড়িয়ে ধরেছিল একমাত্র ছেলেকে | বর্তমানে ২৩ বছর বয়সী তরুণ শ্রীমান মেঘমল্লার সমাদ্দার (যাকে মেঘ ডাকনামে আপনারা ইতোমধ্যে চিনে ফেলেছেন) এর বয়স তখন আর কতই বা! সবে ১৮ বছর বয়স হবে তখন মেঘের | মৃদুলার শেষ আশা-ভরসা বলতে ওই ছিলো | ওর নিজেরই বা কত বয়স হবে তখন? ৩৪ বছর পার হয়েছিল মাত্র। মৃদুলা তার স্বামীকে বিয়ের পর থেকেই দেখেছে সংসারে মন নেই, কৃষিজমির চাষবাসের খেয়াল নেই, খালি গানবাজনা আর ঢোল করতাল একতারা নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকত। মৃদুলা ধারণা করে, সংসার ফেলে কোন গানের দলে যোগ দিয়েছে তার স্বামী। পরিত্যাক্তা স্ত্রী হিসেবে স্বামীর ভিটে থেকে প্রতিবেশীদের দ্বারা উৎখাতের শিকার হয়ে সোজা মালদা সদরে নিজের বাবা মায়ের পৈতৃক ভিটায় মেঘকে নিয়ে পাকাপাকি উপায়ে চলে আসে মৃদুলা। তবে, একমাত্র সন্তান ছাড়াও তার পেটে আরেকটা বাচ্চা পুরে দিয়েছিল মৃদুলার স্বামী। তখন ও সবে দু'মাসের পোয়াতি। এর ঠিক আট মাসের মধ্যে জন্ম নেয় মেঘের একমাত্র বোন মিলা। তার ভাই বোনদের একান্নবর্তী পরিবারের কাজের বুয়া হিসেবে খাটাখাটুনির ফাঁকে ফাঁকে সদ্য জন্মানো ছোট বাচ্চার আদরযত্ন করতো মেঘের মা। সেই সময় মালদা শহরের স্থানীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'মালদা কলেজে' ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয় মেঘ। তার দাদু দিদার বাড়িতে থেকেই পড়ালেখা করছিল। এই কলেজটি ব্রিটিশ শাসনের অবসানের আগে ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি শহরের লাগোয়া শিবমন্দিরের রামমোহনপুরে অবস্থিত সরকারি 'উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের: অধিভুক্ত মালদা কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকের ছাত্র ছিল মেঘ। সে পড়ালেখায় বরাবরই খুবই ভালো ও মেধাবী ছাত্র। কলেজে পড়া অবস্থায় পড়ালেখার ফাঁকে প্রথম বর্ষের ছাত্রাবস্থায় কলেজের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংস্পর্শে আসে। এসব বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মধ্যে উগ্র বামপন্থী ধারার রাজনীতি বা চীনের বিপ্লবী নেতা মাও সে তুং পন্থী আন্দোলনে উজ্জীবিত হয়ে বছর খানেকের মধ্যেই মেঘ কট্টরপন্থী সর্বহারা নকশাল আন্দোলনে যোগ দেয়। মৃদুলার কোলে তখন এক বছরের শিশু কন্যা। মাকে একলা করে বাড়ি থেকে পালিয়ে আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হিসেবে দূরদূরান্তে পাড়ি জমায়। স্বামীর প্রস্থানে যতটা না কষ্ট পেয়েছিল মৃদুলা, একমাত্র ছেলের প্রস্থানে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি কষ্ট পায় মা। নিজের ভাগ্যকে নিজেই ধিক্কার জানায়, ছেলের প্রতি আরো বেশি যত্নশীল হওয়া দরকার ছিল। এই পরনির্ভর জীবনে ছেলেটাকে পড়ালেখা করে বড় অফিসার বানালে তার নিজের জীবনটাই সুখের হত। সেসব আশা ধূলিসাৎ করে পালালো মেঘ। মৃদুলার আপন ভাই বোন অর্থাৎ মেঘের মামা মাসী সবাই অপবাদ দিতে লাগলো, "মৃদুলা মেয়ে নয়গো, ডাকিনী পিশাচিনী, নাহয় স্বামী সন্তান দু দুটো মরদ তাকে ছেড়ে পালাবে কেন! নিশ্চয়ই অত্যাচার করে পুরুষ দুটোর হাড় মাংস জ্বালিয়ে খেয়েছে মৃদুলা!" কুসংস্কারাচ্ছন্ন ১৯৭৪ সালের পশ্চাদপদ গ্রামীণ সমাজের প্রচলিত রটনা রটিয়ে আপন বোনের উপর পুরো পরিবার মিলে আরো বেশি অত্যাচার করে কাজের চাপ বাড়িয়ে দিল তারা। অসহায় মা কোনকিছু না করেই ডখন অপরাধী, তথন নতমস্তকে তাদের সমস্ত অপবাদ কুৎসা নীরবে সয়ে গিয়ে মনে মনে কেবল ভগবানের কাছে ছেলের প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রার্থনা করে মৃদুলা। এদিকে, মৃদুলা হাজার হোক ভদ্র বাড়ির বউ ছিল একসময়, পৈতৃক ভিটায় গৃহকর্মী হিসেবে মর্যাদার অবনয়ন মেনে নিতে কুন্ঠা হয়েছিল  তার। বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের থেকে হাত পেতে দয়া আর কটাক্ষ সয়ে আসতে হয়েছে সবসময়। এমনকি বাড়ির দারোয়ান চাকরগুলোও মৃদুলাকে লক্ষ্য করে বিশ্রী কামলালসাপূর্ণ ইঙ্গিত দিত। বাড়ির মেয়ে হলেও কাজের মাতারিদের মত 'খানকির ঝি' বলে তাকে ডাকতো! বিভিন্ন প্রলোভন দেখাত। কিন্তু মেঘের বাড়ি থেকে পালানোর পর গত চার বছর ধরে মৃদুলা কোনো প্রলোভনে পা দেয়নি | সধবার বুকের মধ্যে কোথাও একটা সুপ্ত আশা বোধহয় চিরদিন ছিল, স্বামী নাহোক তার ছেলে একদিন না একদিন ফিরে আসবেই | সম্পূর্ণ সধবার মত সব আচার-আচরণ পালন করে এসেছে মা | হাতে শাঁখা-পলা, সিঁথিতে সিঁদুর দেয় নিয়মিত | নিজের শরীর-মন পরিষ্কার রেখে ছেলেকে সাধ্যমত পড়াশোনা করিয়েছে এতদিন, সাসনে সুযোগ বলে আরো ভালো মত যত্ন নেবে মেঘের | মেঘ নিরাশ করেনি ওর মা'কে | ঠিকই চার বছর পর নকশাল আন্দোলন ছেড়ে সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় মালদার নিকটবর্তী মহেশপুর গ্রামে আত্মসমর্পণ করে ও নিজের ভরনপোষণের জন্য সরকারের দেয়া পুলিশের কনস্টেবল এর চাকরি গ্রহণ করে। অর্থনীতিতে স্নাতক শেষ না করেই আন্দোলনে যাওয়ার জন্য এছাড়া অন্য কোন কাজকর্ম বা জীবিকার সন্ধান জানা ছিল না মেঘের। খবরটা লোক মারফত পাওয়া মাত্র মৃদুলা তার বাবা মায়ের বাড়ির সাথে সমস্ত চিহ্ন ও যোগাযোগ ছিন্ন করে একেবারে সারা জীবনের জন্য ৪ বছর বয়সী কোলের মেয়ে মিলাকে নিয়ে মহেশপুর গ্রামে ছেলের পুলিশের কোয়ার্টারে দুই রুম, এক কিচেন ও বাথরুমের ছোট্ট বাসায় চলে আসলো। প্রকৃতি ও জীবনে ঝড়বৃষ্টি যাই ঘটুক, মৃদুলা তার জীবন থেকে আবার ছেলেকে হারিয়ে যেতে দেবে না বলে মনস্থির করল। ছেলেন ব্যাচেলরস্ কোয়ার্টারে এসে গত একমাসে মেঘের যত্নআত্তির দিকে মায়ের নজর সর্বক্ষণ। সংসারের হাল ধরে রান্না থেকে কাপড় ধোয়া বা বাজার করা - এমন যাবতীয় সবকাজ একা হাতে সামলে নিচ্ছে মৃদুলা। সে আসার পর আর কোন কাজের বুয়া রেখে অযথা ছেলের পয়সা খরচ হতে দেয়নি। মায়ের মমতাময়ী যত্নে মেঘের জীবনটা মন্দ চলছিল না বলা যায়! জ্বালা হয়েছে একটাই। মা থাকাতে গৃহকর্মী রাখা যাচ্ছে না। ফলে সারাদিন পুলিশের কাজ করে রাতে যে একটু আরাম করে দেহসুখ নিবে সেটার আর উপায় নেই! মহেশপুর খুবই ছোট গ্রাম। তার মত নামপরিচয় বিহীন নকশাল করা ছেলের সাথে গ্রামের কেও মেয়ের বিয়ে দেবে না। ছোট গ্রামটায় কোন বেশ্যাবাড়িও নেই যে সেখানে গিয়ে সময় কাটাবে। তাই গত পাঁচ মাসে বান্দা কাজের ঝি রেখে রাতে সেই মাঝবয়েসী বুয়াকেই বিছানায় তুলতো মেঘ। অন্যদিকে, ছেলের গত পাঁচ মাসের এমব কুকীর্তি আশেপাশের প্রতিবেশী কোয়ার্টারের বুয়া বা ঘরের বউদের কাছে সবিস্তারে শুনে মেঘের প্রতি রাগ হচ্ছিল মৃদুলার! নকশাল আন্দোলন করা পড়ালেখা জানা মেধাবী ছেলের এত অধঃপতনের কারণ কি! কিসের জন্য মাঝবয়েসী বুয়াদের প্রতি ছেলের এত আবেগ! এই প্রশ্নের উত্তর খানিক আগে ছেলের মুখেই শুনেছে মৃদুলা। ছেলেকে দেখেও মনে হয় মায়ের জন্য তার সত্যিকারের ভালোবাসা। মাকে মনের নারী হিসেবে আরাধনা করে মেঘ। ছেলের খুশিতেই এতদিন নিজের খুশি খুঁজে পেয়েছে মা| তাও কেন যেন কিছুতেই নিজেকে ছেলের হাতের পুতুল হিসেবে তুলে ধরতে তার মন চাইছে না। আবার সেটা না করলে কোথায় না কোথায় কোন না কোন দাসীবাঁদীর যৌনদাসত্ব করে অসুখ বাধায় মেঘ সেটার দুশ্চিন্তা! গ্রামের এসব কাজের বেটির চরিত্র মোটেই ভালো না, অভিজ্ঞতা থেকে সেটা জানে মৃদুলা। তাহলে এই মুহুর্তে তার করণীয় কি? নিজের মনের মধ্যে হাতড়ে হাতড়ে উত্তর খোঁজে মৃদুলা | মনের মত কোনো উত্তর না পেয়ে নিজের উপরই ক্রমশ রাগ উঠে তার! আজকে একটু আগে এটা কী করল সে? এত কষ্ট করে কোথা কোথা থেকে খুঁজে খুঁজে মায়ের জন্য শাড়ি কিনে এনেছিল ছেলেটা | অথচ ও সব নষ্ট করে দিল ! এরকম কিন্তু ও করতে চায়নি আদৌ! কিন্তু ছেলেটা এমন নির্লজ্জভাবে কাপুরুষের গৃহকর্মীর সাথে সম্পর্ক থাকা অস্বীকার করছিল যে রাগে হঠাৎ কি থেকে যে কি হয়ে গেল ! এখন কি হবে? খোকাটা রাগ করে থাকলে মা হয়ে তার যে কিছুই ভালো লাগছিল না ! মেঘ ছাড়া তার যে আর কেউ নেই ! এই কাজের বুয়ার দল তাকে কুমন্ত্রনা দিয়ে পেটের ছেলেকে তার থেকে দূরে সরিয়ে নেবার মতলব আঁটছে নাতো! মা হয়ে বোকার মত কুচক্রী বুয়াদের ফাঁদে পাড়া দিল! মৃদুলার এত কষ্টে বড় করা ছেলের এই সংসারের গৃহকর্ত্রী হয়ে বিরাজ করবে কোথাকার কোন বয়স্কা কাজের বেটি! আর মা হয়ে মৃদুলা হবে ছেলের সংসারের কৃতদাসী ! তার এই রূপ-যৌবন একসময় সব ধুয়ে মুছে যাবে | তখন মাকে ঘরের এক কোনায় অবহেলায় ফেলে রাখবে ছেলে! মরে যাবে তার এক বুকভর্তি জমানো স্বপ্ন | না না, মৃদুলা এমনটা কিছুতেই হতে দিতে পারে না ! ভেবে ভেবে পাগলপ্রায় অবস্থা হয়ে উঠল মৃদুলার | চোখ দিয়ে জলধারা বেরিয়ে এলো তার। রান্নাঘরের মেঝেতে পাতা তার বিছানায় বালিশে মুখ গুঁজে উপুড় হয়ে শুয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল| অভিমানে বুক ফেটে যেতে লাগল। মা হয়ে ছেলেকে এতটা দুঃখ দিল সে! অনেকক্ষণ কেঁদে চোখমুখ ফুলিয়ে মৃদুলা উঠে বসল| একটা রাস্তা খুঁজে পেয়েছে ও। মনের উপর এই অত্যাচার সে কিছুতেই সারাজীবন ধরে সহ্য করবে না। আজ অবধি অনেক কষ্ট সয়েছে। যথেষ্ট হয়েছে তার কষ্টের দিন! মৃদলার খুশির শেষ সঞ্চয় মেঘ। অসহায় হয়ে বসে থেকে ছেলেকে অন্য কেও এসে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে দেখতে পারবে না সে! আজকেই, হ্যাঁ আজকেই এসপার নয় ওসপার করবে। এর শেষ দেখে ছাড়বে। হয় ছেলের মন থেকে বুয়াদের দল চিরদিনের মত ভুলিয়ে দেবে, নয়তো নিজের বুকের আগুনে ধ্বংস হয়ে যাবে নিজেই | আলুথালু বেশে মৃদুলা বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াল। ===============  (চলবে)  ==============
Parent