'শ্রেষ্ঠ পুরুষ' (১ম খণ্ড) - অধ্যায় ২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-70015-post-6014285.html#pid6014285

🕰️ Posted on August 21, 2025 by ✍️ Jaqlin (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2174 words / 10 min read

Parent
'শ্রেষ্ঠ পুরুষ' (২য় খণ্ড)  আমাদের বাস রাতের বুক চিরে এগিয়ে যেতে থাকে। একটানা বাতাসের শব্দ শো শো। দুরের বাড়ি ঘরে বৈদ্যুতিক বাটির আলোকছটা বিন্দুর মতো মুহূর্তেই সরে সরে যায়। শুক্লাপক্ষর ত্রয়োদশী মায়াবী রাত। ভাইয়ার স্কন্ধে মাথা রেখে আকাশের পানে অপলক তাকিয়ে থাকতে কি যে ভালো লাগছে! এই মধুর সময় কত স্মৃতি মনে নাড়া দিয়ে যায়! ভাইয়া অলস পড়ে আছে, ঘুমিয়েছে কিনা বুঝা যাচ্ছে না। শান্ত আর রিমা আমাদের সারির অন্য ২ সিটে। ঝুটিটা মানিয়েছে বেশ! শান্ত ৬ ফিট ১ ইঞ্চি, চওড়া বুক। এথলেটিক বডি পূরাই। ভাইয়ার মতো বানানো বডি না হলেও অত্যন্ত সুগঠিত আর খুব হট দেখায়! চোখে মুখে প্রচণ্ড এক ত্যাজ সর্বদা খেলা করে। ভাব সাব তার এমন যে যে কোন মেয়ে ওর চোখের সামনে ১০ মিনিট দাঁড়ালে মোমের মতো গলে যেতে বাধ্য। আবার কেউ যদি পালাতে চায়, যত দূর যাবে তত তৃষ্ণায় খাক হয়ে যাবে। দেখেই বুঝা যায় এই ছেলে এমনি এমনি আত্ম অহংকারে ভুগে না, ভিতরে মাল মেডিসিনে ভরা!  সন্ধ্যার আগে দিয়ে বিধ্বস্ত ভাইয়া গোসল দিয়ে বের হয়েছে, আমি ঢুকতে যাব এমন সময় আম্মু আবার কল দিয়েছে। তোরা কতটুকু আসলি? ভাইয়া খুব সাজিয়ে বলল, আম্মু ডাক্তার বলেছে ভয়ের কিছু নাই তবে কিছু পরীক্ষা দিয়েছে সেগুলার রিপোর্ট নিয়ে শনিবার যেতে হবে। মানে? ওপাশ থেকে প্রশ্ন ভেসে এলো। মানে, আজকে তো পরীক্ষা দিলাম, কালকে শুক্রবার, রিপোর্ট পাব শনিবার তারপর ডাক্তার। আমারও অফিসের কাজ শেষ হয়নি, তাই ভাবলাম থেকেই যাই। শনিবার কি আবার এখানে আসা যাবে নাকি? তোরা থাকবি কই? আরে আম্মু কোম্পানির রেস্ট হাউজ আছে না! একটু পরই আসল আব্বুর কল। একই বুঝপাতা তাকেও ধরিয়ে দেয়া হল। আব্বু বলল আগ্রাবাদ তার বন্ধুর বাসা আছে, থাকার জায়গা ওখানে করবে কিনা। ভাইয়া বলল আগ্রাবাদ পাহাড়তলি থেকে খানিক দুরে, তারচেয়ে এখানে কোম্পানির রেস্ট হাউজ হাঁসপাতালের কাছাকাছি। তাছাড়া সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শুধু শুধু মানুষকে উৎপীড়ন করা কি ঠিক হবে! বিছানার এক কোনায় তোয়ালে পড়া অবস্থায় কথা বলছিল ভাইয়া। আমি শুধু প্যানটি পড়ে গামছা দিয়ে মাই ঢেকে বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে ওকে দেখছি। কি অপূর্ব আমার ভাই। সদ্য গোসলের পর এত বেশি চকচক করছে যে, মনে হচ্ছে একটা আস্ত রুপার তৈরি মূর্তি সদ্য পলিশ করে কেউ ওখানটায় বসিয়ে গেছে। ভেজা চুল কপালে লুটে পড়েছে। ভাইয়া, এত এত নির্জলা মিথ্যা এই অবলীলায় কেমনে বলতে পারস? একটা কথাও ভাবতে হল না, কণ্ঠে ইতস্ততা নেই, কেমনে সম্ভব? সাগরে জীবিকা গড়ে যে নাবিক ঝড় জঞ্জা সম্পর্কে তাকে জানতেই হয় এবং সবকিছুর জন্য তাকে প্রস্তুত থাকতে হয়, ও বলল। ভাইয়া তুই কবি হয়ে যা। বেশি কথা না বলে গোসল সেরে নে, চোখের সামনে এভাবে নরখাদ্য হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে আবার বাঘের ঘুম ভাঙ্গাইস না। আমি বাইরে যাচ্ছি, কি খাবি বল। যা ইচ্ছে হয় নিয়ে আছিস কিছু একটা।   চকরিয়া পেরিয়ে আমাদের বাস একটি হোটেলে যাত্রা বিরতি করেছে। হালকা নাস্তা সেরে আমরা ২ মেয়ে বাসের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে গল্প করছি আর ২ মর্দা অদুরে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে। কত চেষ্টা করেছি ওকে সিগারেটটা ছাড়াতে, বরাবরই ফেল করেছি। দক্ষিণ দিক হতে ভেসে আসা বাতাসে কি অপূর্ব শীতলতা, গা জুড়িয়ে যায় একদম! বাস পুনরায় ছেড়ে দিল। আমরা ২ জোড়া এক উদ্দেশ্যে একই জায়গায় গেলেও পরস্পরের সাথে একদম মিশে যেতে পারছিলাম না। ওরা ২ বন্ধু ভালোই চলছিল কিন্তু আমাদের মধ্যে ঠিক জমছিল না। বিশেষত, রিমা বরফের মতো জমাট বেঁধে আছে। কিছুক্ষণ পর বাসের আলো নিভে গেলে পুরা বাস আগের মতো নীরবতার চাদরে ঢেকে যায়। খুব নিচু স্বরে পিছন দিক থেকে ২-৩ টা গলার আওয়াজ তখনও আসছিল, আরও কিছু পর সেটুকুও তীব্র গতির হাওয়ার স্রোতে মিলিয়ে গেল। দেখলাম, রিমাকে শান্ত নিবিড় আলিঙ্গনে ধরে রেখেছে, রাস্তার ধারের দোকান পেরিয়ে যেতে যেটুকু আলো পাওয়া যায় ওটুকুতে ২ জনকে স্বর্গীয় অবয়ব মনে হচ্ছিল। আমার ভীষণ রোমান্টিক হতে ইচ্ছে করে তখন। আলতো করে ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরলাম। ভাইয়া আরও কাছে টেনে নেয়, শক্ত আঁটুনি দিয়ে মাথায় চুমু খায়! বুক ভরা আনন্দ আর বগ্লা হারা প্রশান্তি নিয়ে ওর বুকে পড়ে থাকতে থাকতে কখন যে চোখে ঘুম নেমেছে টের পাইনি। ঘুম ভাঙল বাসের ব্রেকে। চারদিকে তাকিয়ে কোথায় আছি বুঝতে পারলাম না। শান্ত আর রিমাও নড়ে উঠল। আড়মোড়া ভেঙ্গে এদিক ওদিক তাকাতে গিয়ে শান্তর চোখ পড়ল আমার চোখে। কি নিস্তরঙ্গ দৃষ্টি, কি তার গভীরতা। মনে হল ও চোখের খামে কোন এক রহস্যের চিঠি পাঠিয়ে দিল আমার ঠিকানায়। আমি অর্ধেক তার বুঝেছি বাকিটা দুর্বোধ্য। পুবের আকাশ সাদা হয়ে উঠছে, সামনে সারি সারি গাড়ি দাঁড়ানো। মানে জ্যাম। মিনিট ১০ পরেই রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গেলে দুর্দান্ত গতিতে গাড়ি আবার ছুটে চলে। জানালায় হাতের বেষ্টন তৈরি করে তার উপর থুতনি রেখে বিন্দু থেকে রাশি রাশি হয়ে চড়িয়ে পড়া আলো দেখছিলাম। অন্ধকারে ডুবে থাকা পৃথিবী ধীরে ধীরে কেমন উজ্জ্বল হয়ে নিজেকে মেলে ধরছে।  আনুমানিক ৭ টার দিকে কলাতলিতে আমাদের আপাত ভ্রমণকাল শেষ হল। ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার সময় কেউ কাপড়ের স্তূপ নেয় না। আমার ভেনেটি বেগে একটা গামছা আর এক সেট জামা ঢুকান গেছে কোন মতে। প্রসাধনী তো আছেই। ভাইয়ার কাঁধ বেগে জামা নিয়েছি আরও ২ সেট এটুকুই। রিমান্তদের (রিমা + শান্ত) ইয়্যা মস্ত এক ট্রলি। আমি এইবার সহ ৪ বার এসেছি কক্সবাজার। প্রতিবারই নাগরের সাথে এসেছি এমন নয় কিন্তু। কলেজ ট্যুর প্রথমবার। তারপর ফ্যামিলি ট্যুর যখন আমরা ভাই বোন পবিত্র ছিলাম। তারপর এই ২ বার ভাইয়াকে শরীরের অধিকার দিয়ে। প্রথমবারের মতো আর কোন বারই ভালো লাগেনি, বরং মাথাটা গরম হয়। আগে কলাতলি নামলেই সাগর দেখা যেত, হিজিবিজি ছিল না কোন। এখন সাগর তো দেখাই যায় না রাস্তা থেকে, বরং আকাশও ঢেকে গেছে হাই রাইজড ভবনে। কি হত যদি সব ভবন রাস্তার একপাশে করত সি ভিউটা ঠিক রেখে! একটু হেঁটেই চলে এলাম হোটেল সি প্রিন্সেসে। রুম আগেই বুক করা। রেসিপ্সন থেকে চাবি নিয়ে ২ মেশিন ম্যান আগে আগে চলল, আমরা ওদের অনুসরণ করে চললাম। ৭ তলায় আমাদের রুম পাশাপাশি। কি সুন্দর সাজানো গোছান সব। সবচেয়ে বিস্ময়কর হচ্ছে আমাদের উভয় রুম থেকেই বিচ দেখা যায়! ব্যাগ রেখে ভাইয়া বিচানায় বসল। একটু পরই রিমান্তরা নক দিয়ে ঘরে ঢুকল। শান্ত জানালার দিকে ইশারা করে বলল, রবি কি ভাবছিস বিচ থেকে একটু ঘুরে আসবো? ভাইয়া বলল এখনই? সবাই তো ক্লান্ত তাই না? একটু রেস্ট নিয়ে তারপর যাই। রিমা বলে উঠল, সাগরে একটু পা ভেজাব না ভাইয়া! ভাইয়া আমার দিকে তাকালে বললাম, যাবই তো একটু পর। আমার চোখ কাঁটার মতো হয়ে আছে, একটু ঘুম চাই। শান্ত একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল, হুম বুঝতে পারছি আপনারা খুব ক্লান্ত। কেন আপনারা ক্লান্ত না? আমি বললাম। লম্বা জার্নিতে যতটুক ক্লান্তি আসে ওটুকু অবশ্যই, এক্সট্রা পরিশ্রম তো আমরা করিনি। আশ্চর্য হয়ে ৩ জনের দিকেই পালাক্রমে তাকালাম। আমার এই ভ্যাবাচেকা মুখ দেখে শান্ত সেই হাসি নিয়ে বলল, রবি চট্টগ্রাম যে হোটেলে উঠছিলি ওখানে আয়না ছিল না? ভাইয়া এবার আমাকে ভালো করে দেখল, গর্ব মিশ্রিত বাঁকা হাসি দিয়ে বলল আচ্ছা, তোরা যা না ঘুরে আয় ও একটু রেস্ট নিক। লজ্জায় যেন মাথা কাটা যাচ্ছিল, আমার পিছনেই ড্রেসিং টেবিল। ঘুরে তাকালাম নিজের দিকে, ঈশ... দুধের উপরের দিকে সাদা ক্যানভাসে কেউ যেন লাল গোলাপ এঁকে দিয়েছে! কোন ডেন্টিস্টের কাছে গেলে আমার বুকের এই দাগ দেখে ভাইয়ার দাঁতের গঠন এক পলকেই বলে দিতে পারবে। ধীর পায়ে শান্ত আরও কাছে এসে বলল, এত অপ্রস্তুত হচ্ছেন কেন? ফুলের উপর কোন ক্ষেপা ভ্রমর মধু খেয়ে গেলে ২-১ টা চিহ্ন থেকে যেতেই পারে! ভাইয়া হাঁক দিল তুই যাবি এখান থেকে! লজ্জা লাগল খুব, আগে কেন দেখলাম না। তাহলে ওড়নাটা গলায় না ঝুলিয়ে বুকেই রাখতাম। ভাইয়া বলল, ফেরার সময় আমাদের জন্য অমলেট আর পরোটা নিয়ে আসিস।  ঘুম ভাঙল ২ টার একটু আগে। ফ্রেস হয়ে ২ জন পাশের দরজায় নক দিলাম, মনে হল নক পেয়েই ওদের ঘুম ভেঙ্গেছে। রিমা নিজেকে যত দ্রুত পারে সামলাতে চেষ্টা করছে। কিরে লাঞ্চ করবি না? ভাইয়া বলল। হাই তুলে শান্ত মাথা নেড়ে বল্য, হুম এইতো যাচ্ছি। রিমা তাড়াতাড়ি বাথরুমে ঢুকে গেল, আমি হেঁটে চলে এলাম জানালায়। দুপুরের খা খা রোদে সাগরের পানি গলিত রুপার মতো চিকচিক করছে। প্রাণ ভরে দেখতে লাগলাম কি সুন্দর, যত দুরে দৃষ্টি যায় সীমা নাই কোন। আকাশটা যেন ওখানেই নেমে গেছে। বিচে বেশি লোক দেখা যাচ্ছে না, ছোট আকারে গুঁটি কয়েক মানুষ। অফ সিজন বলে কথা। ফিসফিসানি শুনলাম পিছন থেকে। ভাইয়া বলছে, কি এক রাউন্ড শেষ? শান্ত বলল, না বস আমার সেমি ফাইনাল দরকার নাই তোর মতো, ডাইরেক্ট ফাইনাল। কি নির্দয়রে তুই শালা, এক কামড়ই সাক্ষ্য দিচ্ছে কি অত্যাচারটাই না করেছিস, মায়া দয়া নাই। ভাইয়া বলল, বাঘ হরিণকে অবশই ভালোবাসে কিন্তু খাবার হিসেবে। হরিণের জীবন তখন পূর্ণতা পায় যখনই সে বাঘের মুখে যায়। কষ্ট হলেও হরিণ জীবন দিয়ে জীবনের পূর্ণতা আনে। বাঘের পক্ষে হরিণকে দয়া দেখান বরং হরিণের উপর অবিচার। তোর হরিণটা মামা সেই! শান্ত বলল।  খাবার শেষ করে বিচে যেতে যেতে তখন প্রায় ৪ টা। সূর্য্যি মামা আরও আগেই হেলে পড়েছে, খানিক পর ডুব দেবে সাগরে। ঐ সুদূরে অন্ত গগণে রক্ত লাল আবিরে বিদায়ী বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে। সবাই মিলে নেমে গেলাম সাগরে। ভাইয়ার কড়া হুশিয়ারি, নির্দিষ্ট একটা জায়গা দেখিয়ে বলল এর বাইরে যাবি নাহ। আমিতো সাঁতার জানি তবুও না। আমার লগের টা বড়জোর হাঁটু পর্যন্ত পানিতে নামে, তাও বড় ঢেউ আসতে লাগলে উপরের দিকে ভোঁদৌড় মারে। আমরা ৩ জন ওর এসব কাণ্ডে হেসে কুটিকুটি। শান্ত অনেক চেষ্টা করেছে একটু দুরে নিতে। ও কোনভাবেই যাবে না। ভাইয়া আর শান্ত দূর দুরে চলে যায়। বড় ঢেউ উঠলে আমরা ২ জন চেঁচামেচি করলে কুলে আসে, আবার চলে যায়। বড্ড ভয় হয়, কত দুর্ঘটনার খবর পাই। যদি আমার প্রাণনাথের কিছু হয়ে যায়! এই চিন্তা যখন মাথায় ঠিক তখনই ও এলো। তীব্র আবেগে জড়িয়ে ধরলাম। ভিতরটা প্রচণ্ড আতঙ্কে ফুফিএ উঠছে। ভাইয়া বলল এই পাগলি কি হয়েছে? বললাম তুই দুরে যাস না ভাইয়া। আরে পাগলি কিছু হবে না। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা লাল পতাকা দিয়ে মার্ক করা থাকে। তুই দেখ তো এখানে কোন নিশানা আছে? তবুও তুই যাস না। আচ্ছা ঠিক আছে যাব না। পানি থেকে উঠে বালিতে ৪ জন বসে রইলাম অনেকক্ষণ। ভাইয়ার দৃষ্টি অনুসরণ করে রিমার বুকের দিকে তাকিয়ে দেখি গায়ের টিশার্ট এমনভাবে লেপটে গেছে দুধের বোঁটা তো দেখা যাচ্ছেই, বোঁটার চারপাশে যে শনির বলয় সেটাও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। নিজের দিকে তাকালাম, একই অবস্থা। টেনেটুনে ওটাকে শরীর থেকে একটু আলগা করবার চেষ্টা করলাম এতে আলগা তো হলই না বরঞ্চ ২ জোড়া লালায়িত চোখ হামলে পড়েছে। সন্ধ্যা পুরদমে ঘনাল, ফিরতি পথ ধরলাম। রিমান্তরা আমাদের থেকে খানিক আগে আগে হাঁটছিল। হঠাৎ থেমে গিয়ে শান্ত বলল আচ্ছা ভাবি প্রায় ২৪ ঘণ্টা হয়ে এলো আমরা একসাথে। অথচ আমাদের সম্পর্ক এখনো দুধ আর শরের মত রয়ে গেল। আচমকা হচকিয়ে গেলাম, ভাইয়ারও সেম অবস্থা। ভাবি? এই সম্বদন প্রথম শুনলাম। একজন স্বামীও হয়ত তার বউয়ের শরীর এত নিখুঁতভাবে জানবে না যতটা জানে ঐ লম্বা চওড়া মানুষটা, যে আমার আপন ভাই। আমার দেহের মানচিত্রে কোথায় কোন শহর, বন্দর, কোথায় কোন গুপ্ত পথ সব ওর নখদরপে। আমার এমন কোন লোমকূপ নেই যা ওর মুখের লালা দিয়ে ভরেনি। তবুও কোনদিন আমি ওর বউ হতে পারব না, কেউ কোন দিন ওর বউ হিসেবে আমাকে ভাবি ডাকার অধিকার পাবে না। কিসের মত? রিমা প্রশ্ন করল। দেখ, শর সব সময়য় দুধের উপরেই থাকে এবং দুধ থেকেই তার উৎসরন তবুও তারা একসাথে পুরাপুরি মিশে যায় না। ঠিক যেমন আমরা কাল থেকে একই সাথে থাকলেও মিশতে পারিনি এখন পর্যন্ত। বিস্ময় কাটিয়ে বললাম আর কোন উপমা পাননি? কেন কিছু কি ভুল বললাম? না ভুল হয়ত বলেননি কিন্তু......। ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে বলল তুই সামনে যা তো। তারপর আলাপ করল শুরু। আপনার বাড়িও ত ফেণী? হুম, আপনার? বরিশাল। এই কথা ও কথা, অনেক কথা হল। বুঝতে পারলাম ছেলেটা যেরকম ভেবেছি একদম সেরকম নয়। অনেক সরল, যেটুকু দুর্বোধ্যতা আছে একটা ছেলের মধ্যে ঐটুকু থাকতেই হয়, নাহয় ছেলে হিসেবে মানায় না। ভেজা জামা কাপর ছেড়ে ওরা আমাদের রুমে আসলে বার্মিজ মার্কেট যেতে চাইলাম। ২ যুবা সমস্বরে বলে উঠল, অসম্ভব! কেন? অনেক লাফালাফি হয়েছে অলরেডি, কালকে রাত থেকে অঘুমা। শান্ত কইল, আমাদের জার্নি শুরু হয়েছে কালকে দুপুরের আগে। ত? সকাল থেকে তো ঘুমিয়েছেন, বললাম। ওটা পর্যাপ্ত নয় ভাবি, আমি এখন ঘুমামু। ভাইয়া জিজ্ঞেস করল কয়টা বাজে? শান্ত ওর দিকে তাকিয়ে বলল ৭ টা। আঙ্গুলে কি কি হিসাব করে ভাইয়া বলল ঘুম হবে এখন। রাগে আমার পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে, বললাম এখানে আমরা ঘুমাতে আসছি? কেন আসছি? ভাইয়া বলল। এখানে এসেছি একটু ঘুরব, দেখব সব, বললাম। ২ বানর হে হে করে হেসে উঠল, একজন আরেকজনকে বলে বাদ দে মেয়ে মানুষ। আচ্ছা তোমরা ঘুমাও, আমরা ঘুরে আসি, রিমা বলে। এইবার মাথাটা গরম হয়নি? দেশের অবস্থা ভালো না, তাছাড়া তুমিও কালকে দুপুর থেকে জার্নি করেছ, শান্ত বলল। তোমার জন্য আমি হেরে যেতে পারব না বলে দিলাম। শান্তর কণ্ঠ খুব ভারি। কালকে রাতে দেখা হবার পর থেকেই, বাসে উঠার আগে, হোটেল বিরতিতে এবং এখন পর্যন্ত ওর প্রতিটা কথাই আদেশের মতো শোনায়। মনেহয় ও জন্ম থেকেই কর্তিতবাদী। ওর গলায় প্রচণ্ড বেক্তিত্ত, উপেক্ষা করা কঠিন! আমার কলিজা ধুপ করে উঠল, আমরা এখানে কেন আসলেই মনে ছিল না এতক্ষণ। দিয়াকে জড়িয়ে ধরে শান্ত বলল ঘুমা বন্ধু, গেলাম। ভাইয়া প্রতিউত্তরে বলল সি ইউ সুন। ওরা চলে গেলে আমাকে কাছে ডেকে বলল শো। ভাইয়া এত তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে না আমার। আচ্ছা ঘুম না আসলে এক কাজ কর। শুয়ে শুয়ে খুঁজে দেখত সিলিঙে কোন ফাটল আছে কিনা। সারা রাত সিলিঙে ফাটলই খুঁজতে হবে, সো আগে থেকে কাজ এগিয়ে রাখ। লাইট বন্ধ করে দে। না ডিম লাইটও বন্ধ করে দে। আবার ডাকল আয় বলছি...। খাটের একপাশে গিয়ে বসলাম, ও হেঁচকা টানে ফেলে দিল। তারপর একদম বুকে নিয়ে চেপে ধরল, এক পা আমার গায়ে তুলে দিয়ে বলল এবার চোখ বন্ধ কর ঘুম চলে আসবে। পর্দার ফাঁক গলে চাঁদের মৃদু আলো আসছে অভিরাম সেসাথে সাগরের মুহুর্মুহু গর্জন! জানালা থেকে সমুদ্র পর্যন্ত টানা বালুকাবেলা, কেউ কিছু দেখার নেই তাই উঠে গিয়ে পর্দা পুরা সরিয়ে দিলাম। এক মুহূর্ত মনে হল সমস্ত রুম নীলাভ জ্যোৎস্নার জোয়ারে ভেসে গেছে। কি মায়াবী লাগছে চারপাশ! ওর বুকের বেষ্টনীতে আবার ঢুকতে ঢুকতে বললাম, বাইরে কি রোমান্টিক পরিবেশ আর তুই এই বদ্ধ ঘরে শুয়ে আছিস। বালিশ থেকে মাথা তুলে বাইরের দিকে তাকাল খানিক, বলল রোমাঞ্চের চূড়ান্ত পর্যায় কি? বললাম কি আবার! আমার চিবুক ধরে বলল এইতো কত্ত সহজে বুঝে গেছস, একটু পর তো সেটাই দেব, প্রস্তুতি নিতে দে। বুকের মধ্যে মাথাটা চেপে ধরে নিশ্চুপ হয়ে গেলাম। ধীরে ধীরে ওর নিঃশ্বাস ভারি হয়ে উঠছে, ঘুম আসছে। চলবে...... 
Parent