সম্পর্ক- মায়ার বন্ধন (মা-শুধু একবার করবো) - অধ্যায় ২৮
পর্বঃ ২৬
ততক্ষণে সকাল হয়ে গেছে। আমি অনুভব করলাম কেউ আমাকে ঘুম থেকে তুলে দিচ্ছে। চোখ খুলে দেখলাম মা। মা আমাকে জাগাচ্ছিলো তার শাড়ি পরে।
মা- ওঠ, তোর দাদুর সাথে একটা মিটিং এটেন্ড করতে হবে না, তাড়াতাড়ি ওঠ!
আমি- হ্যাঁ, দাদু আর দিদা কোথায়?
মা- বাইরে , হলরুমে বসে আছে।।
দেখি বাইরে দরজার সামনে একটা পর্দা দেওয়া আছে। একটু দুষ্টুমি করার মন হলো তাই মাকে বললাম,
আমি- তোমার হাতটা দাও তো মা।
মা- নে হাত ধর, ধরে শোয়া থেকে ওঠ। (মা আমার দিকে হাত বাড়িয়ে)
মা আমার দিকে হাত বাড়ায় আর তখনই আমি মায়ের হাত না ধরে মায়ের শাড়ির আচল ধরে টান দিই যার ফলে আমার সামনে স্বর্গের দরজা খুলে যায়। আর মায়ের গরম গরম ক্লিভেজ দেখে ফেলি।
মা-তুই একটা বদমায়েশ। (মা তার শাড়ির আচল আমার থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে)
আমি- তুমি আমাকে, এই সকালেও গরম করে দিয়েছো মা।
মা-চুপ, তাড়াতাড়ি ওঠ।
আমি- আমাকে একটা চুমু দাও।
মা- এই নে, উম্মম্মাআহ
(আকাশ উঠে স্নান করতে যায়। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে খাবার খেয়ে রেডি হয়। রেডি হওয়ার পর আকাশ আনিতাকে তার বেডরুমে ডাকে।)
আমি- মা, দেখো তো আমাকে কেমন লাগছে?
মা- খুব ভালো লাগছে আমার সোনাকে, একদম হিরোর মতো।
আমি- হুম আর আমি হিরো হলে তুমি আমার হিরোইন।
মা- ঠিক আছে, তুইও না......
আমি- আমি আমার এবং তোমার জীবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মা।
মা- কি, কোন সিদ্ধান্তের কথা বলছিস?
আমি- আমি তোমাকে এখানেই বিয়ে করতে চাই।
মা- কি? কিন্তু সেটা কিভাবে?
আমি- শুনেছি এখানে, রাজস্থানে বিয়ে করার বিষয়টা কঠিন নয়। আমাদের বিয়ে হবে এখানকার মন্দিরে।
মা- কিন্তু এত তাড়াতাড়ি?
আমি- তুমি কি রেডি না?
(মা লজ্জা পায়)
মা- আমিও তোকে বিয়ে করতে প্রস্তুত। (লাজুক হয়ে)
আমি- ওহ আমার লজ্জাবতী মা, বিয়ের নাম শুনেই লজ্জা পাচ্ছে। বিয়ের পর তাহলে কি হবে, ফুলসজ্জায়ই বা কতই না লজ্জা পাবে তুমি!
(আনিতা লজ্জায় ওর নামিয়ে রাখে, লজ্জায়(ভালোভাসার লজ্জা) মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে।)
মা- তুই কি এই বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত?
আমি- হ্যাঁ পুরোপুরি, আমি মিটিং সেরে আসার সাথে সাথেই আমরা বিয়ের পরিকল্পনা শুরু করবো, ঠিক আছে?
(আনিতা লাজুকতা বোধ করছিল বেশ, আকাশ আনিতার চিবুকে হাত দিয়ে তার মুখ আকাশের দিকে ফেরায়। আনিতা লজ্জায় আকাশের চোখের দিকে তাকাতে পারছিলো না। আকাশও সুযোগ বুঝে ধীরে ধীরে আনিতার দিকে এগিয়ে যায় এবং তার ঠোঁট দিয়ে আনিতার ঠোঁট স্পর্শ করে এবং ঠোঁট চুষতে থাকে।
ঠিক তখনই আকাশের দিদা বাইরে থেকে আকাশকে ডাকতে আসে এবং দরজাটা একটু খুললেই দেখতে পায় আনিতা আর আকাশ একে অপরের ঠোঁট চুষে যাচ্ছে পাগলের মত।
এটা দেখে সে হতভম্ব হয়ে যায়। সে তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। সে সেখান থেকে সরে গিয়ে চেয়ারে বসে, তার এসব কথা ভাবতেই যেন তার হুঁশ উড়ে যায়। সে বুঝতে পারছিল না কী ঘটছে এসব। সে তার ইন্দ্রিয় শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল যেন। আকাশ আর অনিতা ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। আকাশ দাদুর সাথে চলে যায় আর আনিতা দরজা বন্ধ করে নিজের ঘরে চলে যায়। আকাশের দিদা ১ ঘন্টা এক জায়গায় বসে রইল।
তারপর হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেয় যে সে আনিতার কাছে এই বিষয়ের উত্তর চাইবে, সে আনিতার সাথে কথা বলতে আনিতার রুমে যায়।
*
আকাশের দিদার মনটা অসাড় হয়ে গিয়েছিল যেন সে কিছুই বুঝতে পারছিল না কি করবে আর কি করবে না। সে শুধু এক জায়গায় বসে আনমণে কোথাও যেন তাকিয়ে ছিলো। স্বামী বাদে পৃথিবীতে তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ মাত্র দুজন। একজন তার মেয়ে আনিতা এবং অন্যজন তার নাতী আকাশ। যাদের একে অপরকে চুমু খেতে দেখেছে। একজন মা এবং ছেলেকে একে অপরকে চুম্বন করতে দেখা গেছে, যেটা কোনো স্বাভাবিক বিষয় নই। আকাশের দিদা ভিতরে ভিতরে একদম দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিলো।।
দিদা (মনে মনে)- আমি ভুল কিছু দেখিনি। আমি ঠিক দেখেছি মা আর ছেলে কি করছিলো। আনিতা, হ্যাঁ আনিতা, ও এইটা কিভাবে করতে পারে? নিজের গর্ভের ছেলেকে চুমু খাচ্ছিলো কিভাবে! এটা কেউ কিভাবে করতে পারে। আমার মেয়ে যে কিনা এতো বিয়ের প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও বিয়ে করলো না, কিন্তু শেষমেশ নিজের ছেলের সাথেই......... কিন্তু কেন কেন কেন?
দিদা মাথায় হাত দিয়ে বসে বসে থাকে। এভাবে সময় কেটে গেল।
রাত বারোটা,
যখন আনিতা তার মাকে রাতের খাবারের জন্য ডাকতে এল।
কিন্তু তার ক্ষুধা হারিয়ে গেছিলো যেন। তাই সে আনিতাকে বললো খাবেনা। আনিতাও এই বিষয়টাকে খুব বেশি গুরুত্ব না দিয়ে নিজেই খাবার খেয়ে নিলো কারন সেতো আসল ঘটনা জানেই না। তাই খাওয়া শেষ করে নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে ছিলো।
অন্যদিকে, আকাশের দিদা হতভম্ব হয়ে রইলো এখনো। সে জানতে চাচ্ছিলো কেন আনিতা এমনটা করল। তাই আকাশের দিদা এবার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আনিতা তার রুমের দিকে চলে যায় অনিতার সাথে কথা বলার জন্য।
দিদা প্রচুর রেগে ছিলো কিন্তু মনে মনে বললো " আনিতার সাথে এই বিষয়ে ঠান্ডা মাথায় কথা বলার লাগবে, তাহলে হয়তো ও সত্যটা বলবে"। এসব মনে অরতে করতে দিদা আনিতার রুমের দিকে এগিয়ে যায়।
আনিতা বিছানায় শুয়ে তার স্বপ্ন লালন করছিল। তার মনের মধ্যে আকাশের বলা বিয়ের কথা ঘুরপাক খাচ্ছিলো, যা মনে পড়তেও আনিতা লজ্জা পায় আবার। আনিতা মনে মনে ঠিক করেছিল, " হ্যা আমি আকাশকে বিয়ে করবে, হ্যাঁ আকাশ সোনা, তোর মা তোকে বিয়ে করবে।
ওর বিয়ে করার কতই না তাড়া আছে! বলছে যে এখানেই বিয়ে হবে। বদমায়েশ একটা। আমি ওকে এখানেই গোপনে বিয়ে করব তারপর ওর জীবন গুছিয়ে দেবে। আমি ওর পাশে থাকলে যদি ওর সব কিছু ঠিকঠাক চলে তাহলে আমি তাই করবো। আমি চাই আমার আকাশ যেন সারাজীবন ভালো থাকে।"
ঠিক তখনই আকাশের দিদা আসে
দিদা- আনিতা!
আনিতা- হ্যা মা (বিছানা থেকে উঠে বসে)।
দিদা - তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
আনিতা- হ্যাঁ মা বল।
দিদা- তুই কি আমার কাছে কিছু লুকাচ্ছিস, নাকি আমাকে বলতে চাস?
আনিতা- না মা, এমন কিছু হয়নি তো।
আকাশের দিদা ভিতরে ভিতরে রেগে যায় এবং ভাবে, "দেখো দেখো,
কতটা মিথ্যাবাদী, কিছুই বলছেনা, স্বীকার করছেনা।"
দিদা- তুই আসলে আমাকে কিছু বলতে চাস না?
আনিতা- না তো ,মা।
দিদা- তোর আর আকাশ নিয়ে কিছু.........
আনিতা মনে মনে ভাবে "আমাকে আর আকাশের কথা কি জিজ্ঞেস করছে মা!
আনিতা- না মা, তেমন কিছু না।
দিদা উত্তর শুনে একদম দুমড়ে মুচড়ে যায় এরপর কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে।
তারপর জিজ্ঞাসা করে,
দিদা- তোর আর আকাশের মধ্যে কি চলছে?
(আনিতা একটু গম্ভীর হয়ে যায়, "মা, কি বলতে চায়?")
আনিতা- আমি কিছুই বুঝলাম না মা?
দিদা-তোর আর আকাশের নাজায়েজ সম্পর্কের কথা বলছি?
এটা শুনে আনিতা চমকে ওঠে, বুকে একটা ধাক্কা লাগে, "মা কেমন করে এটা জানে?
আনিতা- কি বলছ এটা !!!?
দিদা- আমি নিজের চোখ দিয়ে সব দেখেছি। তুই আর আকাশ একে অপরকে চুমু খাচ্ছিলি।
অনিতা- তুত তু তুমি নিশ্চয়ই কিছু ভুল দেখেছ, সেরকম কিছুই হয়নি মা।
এটা বলার সময় আনিতার তোতলাতে থাকে। আকাশের দিদা সব জেনে গেছে বলে তার মন খারাপ হয়ে যায়। এখন কি করবে সে। তার অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যায় আর সারা শরীর ঘামতে থাকে।
দিদা- আমি কিছু ভুল দেখেছি বলে মনে হয় না (সে জোয়ারের সাথে এই কথাটা বলে।)
এই বলে সে উঠে দাঁড়ায়। আনিতা তার মায়ের মুখে স্পষ্টভাবে প্রচন্ড রাগের ছাপ দেখতে পারছিলো।
*
আনিতা- কিন্তু মা ওটা তো শুধু একটা চুমু ছিলো, মা ছেলের চুমু।
দিদা- মা ছেলের ঠোটে ঠোঁট দিয়ে তা চোষে না। আমাকে মা ছেলের চুমু শেখাস না। তুই একটুও লজ্জা পাচ্ছিস না? এটা মা ছেলের চুমু? তুই আকাশের সাথে এসব কিভাবে করতে পারিস আনিতা? কেও তার নিজের ছেলের সাথে এসব কিভাবে করতে পারে? তোর আর আকাশের ঘনিষ্ঠতা আগেও দেখেছি, তখন মা-ছেলে ভেবেছি কিন্তু আজ মা-ছেলের এমন নোংরামিও দেখে ফেললাম। হে ভগবান এসব দেখার আগে আমার মরণ কেন হলো না! (আকাশের দিদা বিলাপ করতে থাকে)
আনিতা চুপচাপ এইসব শুনছিল কারণ তার কাছে এর কোনো উত্তর ছিলো না। আকাশের দিদার এসব কথা শুনে আনিতার চোখ ভিজে ওঠে, চোখে জল আসতে শুরু করেছে যা এখনও চোখ থেকে বের হয়ে গাল পর্যন্ত পৌছায়নি।
দিদা- আরে, তোর একটুও লজ্জা হয়না, নিজের ছেলের সাথে এসব করতে লজ্জা হয়না? আমাদের ভালোবাসায় কি কম ছিলো যে তুই নিজের ছেলের সাথেই নোংরামি করলি? তোর বিয়ের তো অনেক প্রস্তাব এসেছিলো কোলোকাতা থেকে, সেখানে কেন বিয়ে করলিনা? ওখানে বিয়ে করে তো এসব করতে পারতিস? কিন্তু নিজের যোবনের জ্বালা তোকে এতোটাই বেবশ করে দিলো যে নিজের ছেলের কাছেই নিজেকে বিলিয়ে দিলি? না জানি আমার অজান্তেই আকাশের সাথে কত কিছুই না করেছিস!
শেষ লাইনটি শোনার সাথে সাথে আনিতার চোখের জল যেটা কান্নায় পরিণত হয়েছিল তা পালটে যেতে থাকে। দুঃখ আর কষ্টের জায়গায় প্রচন্ড রাগ হতে থাকে। মায়ের এমন কথা শুনে আনিতা আর নিজেকে সামলাতে না পেরে বিছানা থেকে উঠে চিৎকার করে বলে,
আনিতা- যথেষ্ট, যথেষ্ট বলেছো মা, এবার থামো। হ্যা আমি আকাশকে ভালোবাসি, কিন্তু নোংরামি করিনি এটা দেখেছো ওটা ভালোবাসা ছিলো। তুমি ভালোবাসার কি বোঝো? এই ভালোবাসায় যদি আমাকে আকাশের বিছানায় যেতে হয় তাও.........
কথাটা শেষ না হতেই আকাশের দিদা আর কিছু না ভেবে আনিতাকে ঠাসসসস করে কড়া থাপ্পড় মারে। যার প্রতিধ্বনি সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। আনিতার ধবধবে ফর্সা গাল লাল হয়ে যায়।
দিদা- আনিতাআআআআ! (চিল্লিয়ে)
আনিতা তার মায়ের হাতে থাপ্পড় খেয়ে কাদতে কাদতে বলে,
আনিতা- আমি সত্যি বলছি, আমি আকাশকে ভালোবাসি আর আকাশ আমাকে ভালোবাসে। আমি এমনটা এমনি বলছিনা, ও আমাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে আর আমিও ওকে ভালোবাসি। তুমি এসব জানোনা এজন্য তোমার কাছে এসব নোংরামি মনে হচ্ছে। তুমি বিশ্বাস করো বা না করো, আমি আকাশকে সবসময় ভালোবাসবো আর আকাশ আমাকে সবসময় ভালোবাসবে। (কান্নার সাথে জোরে বলে)
(আনিতা একদমে এসব বলে দেয়। অনিতার উত্তরে দিদা অবাক হয়ে যায়, কারণ অনিতা কখনো তার সাথে এমন রাগে রাগে কথা বলেনি আর আজ আনিতা তার সাথে রাগে রাগেই কথা বললো। আনিতার কথায় সত্যতা ছিলো যেটায় আকাশের দিদার চোখও ভিজে ওঠে। দিদা আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে যায়। নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় বসে। তার মাথা কাজ করছিল না। খুব ধীরে ধীরে সে শান্ত হতে শুরু করে আর মনে মনে বলে, " এসব কি বলছিলো আনিতা, আকাশ ওকে ভালোবাসে এবং আনিতাও আকাশকে ভালোবাসে?"
অন্যদিকে আনিতাও নিজের কাজে অবাক হয়ে যায়। আকাশের ভালোবাসা তাকে এতোটাই ঘিরে ধরেছে যে আজ প্রথমবার সে তার মায়ের সাথে উচু গলায় কথা বলেছে। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আনিতা তার মায়ের সাথে কথা বলতে চায়। প্রায় ২ ঘন্টা পর আনিতা ধীরে ধীরে তার মায়ের ঘরে যায়। সেখানে দেখে তার মা বিছানায় চুপচুপ বসে আছে।
অনিতা-মা?
দিদা কোন উত্তর দেয়দিল না, তারপর আনিতা দিদার কাছে গিয়ে তার সামনে মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে। আকাশের দিদার চোখেও জল ছিল। সে কিছু বলছিলো না। আনিতা তার মায়ের সাথে কথা বলতে চাইছিলো কিন্তু তার মা কিছু বলছিলো না যার জন্য সে অনেকক্ষন এভাবে মাটিতে বসে রইলো ।
আনিতা- মা, আমি দুঃখিত যে আমার ভালবাসার কথা তোমার থেকে লুকিয়ে রেখেছিলাম। আর কিভাবেই বা বলতাম আকাশ আর আমি একে অপরকে ভালোবাসি, মা ছেলের ভালোবাসা কি কাওকে বলা যায় মা? এজন্য আমরা নিরূপায় হয়ে আমাদের সম্পর্কের কথা লুকিয়েছি।
দিদা- কিন্তু তুই এটা কেন করলি মা? তোর কি এতো বাধ্যতা ছিল যে তুই আকাশের সাথে এসব কিছু করছিস?
আনিতা চিন্তায় পড়ে যায় এবং সে তার মাকে সব কিছু বলতে শুরু করে। তার জীবন সম্পর্কে বলতে শুরু করে, আনিতা এবং আকাশ দিল্লিতে থাকতো। কিভাবে সে আকাশকে ছেড়ে কোলকাতা চলে যায় আবার কিভাবে আকাশের কাছে আসে। কিভাবে তাদের ভালোবাসা হয়। এই দুবছর কিভাবে তাদের দিন গেছে সব আনিতা একে একে তার মাকে বলতে থাকে। আকাশ তাকে কতটা ভালোবাসে সেটাও বলে। প্রায় ১ ঘন্টা আনিতা তার সব কিছু বর্নণা করে যাচ্ছিলো।
সম্পুর্ন কথা বলার পর আনিতা একদম চুপ হয়ে যায়।
দিদা- আকাশ এখনো সব কিছু বুঝে ওঠেনি কিন্তু তুই তো বুদ্ধিমতি। তুই তাকে বুঝাতে পারতিস যে এটা তার ভুল।
আনিতা- আকাশকে অনেক বুঝিয়েছি মা, অনেক বুঝেছি কিন্তু আকাশকে বোঝানোর চেষ্টা করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই নিজেকে জড়িয়ে ফেললাম ওর সাথে।
আমি ওর ভালোবাসাটা ভুল প্রমাণ করতে গিয়ে নিজেই এই ভুল ভালোবাসায় জড়িয়ে গেলাম।
দিদা- তুই জানিস এসব ভুল, পাপ।
আনিতা- হ্যা মা, জানি। কিন্তু এখন কিছুই করার নেই।
দিদা- করার আছে। সব হবে।
আনিতা- কি হবে মা?
*
দিদা- তুই আকাশকে সবকিছু থেকে বারণ করে দে আর হ্যাঁ, এই সম্পর্কটাও ভেঙে ওর থেকে আলাদা হয়ে যা।
আনিতা- কি করে আমি আকাশকে প্রত্যাখ্যান করবো মা? তুমি বুঝতে পারছো না। আমি যদি এটা করি তাহলে সে তার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে ফেলবে। সে আগেই তার ভবিষ্যৎ অর্ধেকটা নষ্ট করে ফেলেছিল। তুমি কি এটা চাও যে সে এবার সম্পূর্ণ লাইফটাই নষ্ট করুক। তুমি কি চাও সে এখানই তার বাকি জীবনটা নষ্ট করুক?
দিদা- না, তবে তুই অন্য কোনো উপায় বের কর।
আনিতা- আর কোন উপায় নেই মা, আমি অনেক এগিয়ে গেছি আর ফিরে যেতে পারবো না। আকাশকে বোঝাতে চাইলেও ও বুঝবেনা। ওর সিদ্ধান্ত যাই হোক, এখন আমার সিদ্ধান্তও তাই হবে।
আনিতা সেখান থেকে তার ঘরে চলে যায় তবে আনিতা অনেকটায় চিন্তিত হয় যে আকাশের দিদা হয়তো তার দাদুকে সব বলে দেবে।
আনিতার পুরো ঘটনা শোনার পর দিদা বুঝতে পারে যে মলমা সে যা ভাবছে তা নয়। এটি ভালবাসার বিষয়। সে এটাও বুঝে গেছিলো যে সে আনিতাকে আর এই বিষয়ে কিছুই বোঝাতে পারবেনা আর বোঝাতে চাইলেও আনিতা কিছুই বুঝবেনা।
আকাশের দিদা ঠিক করলো সে আকাশকে বোঝাবে। আকাশকে বোঝালেই হয়তো আনিতাও বুঝে যাবে। এভাবেই সে মা ছেলেকে সঠিক পথে আনবে।
দিদা আনিতাকে অভিশাপ দিচ্ছিল যে সে আকাশকে নিজের জন্য জালে ফাসিয়েছে কিন্তু আনিতার সাথে কথা বলার পর দিদার সব ভাবনা উল্টে গেল। ব্যাপারটা বেরিয়ে এল প্রেমের। । তাই এখন আকাশকে বোঝানো ছাড়া তার আর কোনো উপায় ছিল না তার। আকাশের দিদা ভাবলো বিষয়টা তার স্বামীকে বলবে কিন্তু পরমুহুর্তে ভাবলো স্বামীকে বললে সব উলটা হয়ে যেতে পারে তাই সিদ্ধান্ত নিলো নিজেই এসবের সমাধান করবে।
অন্যদিকে, আকাশ এবং তার দাদু মিটিংয়ের কাজে ব্যাস্ত ছিলো। আর ভাবছিলো কিভাবে সে তার বাবার জায়গা নেবে আর তার মায়ের নরম শরীরটা কিভাবে দলাইমলাই করবে। সে তার মাকে তার প্রাপ্য বিশ্বের সমস্ত সুখ দেবে, এসব স্বপ্নে ব্যস্ত ছিল আকাশ। এতদিন আনিতা তাকে সুখ দিয়েছে, যত্ন করেছে, এখন তার সুখ দেওয়ার পালা, সে আনিতার সাথে নতুন সম্পর্কের কথা ভাবছিল। যখন সে তাকে কাজ থেকে বাড়ি নিয়ে আসবে এবং আনিতা তার জন্য বাড়িতে থাকবে তখন কী হবে। আনিতাকে তার বাহুতে নিবে এবং তার ক্লান্তি প্রশমিত করবে।
আকাশের জন্য আনিতা ছিলো একজন নিখুঁত মহিলা যাকে সে ভালোবাসে, নিজের জীবনের চেয়েও এবং বিয়ে করতে চলেছে।
মিটিং শেষ হতেই সন্ধ্যা হয়ে গেল। দাদু আর আকাশ বাংলোর দিকে রওনা দিল। ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছিল। আকাশ জানালার পাশে বসে বাইরে তাকিয়ে আছে। বাইরের দৃশ্য দেখছিলো আর তার মাকে নিয়ে স্বপ্ন লালন করছিল। )
ড্রাইভার- দাদা, আপনি কি গাড়ি চালাতে জানেন?
আমি- হ্যাঁ অবশ্যই, তবে আমি শহরে একটু ভয় পাই।
ড্রাইভার- ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আপনি চাইলে এখন গাড়ি চালাতে পারেন।
দাদু- না, ওর ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।
ড্রাইভারন- স্যার, এখানে লাইসেন্সের কি দরকার, আমরা শহর পার হয়ে গেছি, সেখানে কেউ বাধা দেবে না।
আমি- আচ্ছা আমাকে চালাতে দাও , আমি রেডি।
আমি ড্রাইভারের সিটে বসে গেলাম এবং ও পাশের সিটে বসল এবং আমরা গ্রামের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। ড্রাইভারকে তার বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আমরা বাংলোতে চলে গেলাম।
দাদু- বাহ আকাশ, তুই তো ভালোই চালাতে জানিস।
আমি- তোমার বিশ্বাস হলো তো?
দাদু- হ্যাঁ অবশ্যই বিশ্বাস হয়েছে।
কিছুক্ষন পর বাংলোতে পৌছে গাড়ি দাঁড় করিয়ে বাড়িরভিতরে গিয়ে দেখি মাকে খুজি। মাকে তার ঘরে পাই। আমি সোজা গিয়ে মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
আমি-হাই মা।
(মা কিছু বলে না)
আমি- চুপ কেন ডার্লিং, আমাকে দেখলে এতো লজ্জা কেন? (আস্তে আস্তে)?
মা এখনও সাড়া দেয় না, তাই আমি মাকে আমার দিকে ঘুরিয়ে দেখি যে তার মুখ শুকিয়ে গেছে।
আমি- কি হয়েছে মা, মুখ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে কেন মা?
মা- আকাশ বিপদ হয়ে গেছে।
আমি- কি হয়েছে ডার্লিং?
মা- তেরে দিদা......
আমি- দিদা কি?
মা- তোর দিদা আমাদের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে গেছে।
আমি- কি?, কিভাবে। (আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করি, এটা শুনে আমার হোশ উড়ে যায়।)
ক্রমশ......
যৌণ মিলন হবেই। আকাশ আনিতাকে নিয়ে সুখের সাগরে ভাসবেই। সেটার জন্যও গল্পের একটা মোমেন্টাম লাগে। এতোটুকু অপেক্ষা করতেই হবে। যায়হোক পরবর্তী আপডেট ১০ দিন পর আসতে পারে।