সম্পর্ক- মায়ার বন্ধন (মা-শুধু একবার করবো) - অধ্যায় ২৯
পর্বঃ ২৭
মা- মা আজ সকালে আ... আমা... আমাদের চুমু খেতে দেখে ফেলেছে আর আমাদের সম্পর্কে সব জেনে আর বুঝে গিয়েছে।
আমি- তাহলে তুমি আমাকে বলোনি কেন? দিদা আমাদের নিয়ে কতই না ভুল চিন্তা ভাবনা করেছে এতোক্ষণে।
মা- আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সে কিছুই শুনতে রাজি হয়নি তাই আমাকে সব সত্যি কথা বলতে হয়েছে।
আমি- তোমার গালে কি হয়েছে মা, দিদা কি এমন করেছে?
(মা মাথা নেড়ে উত্তর দেয়)
আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, এখন আমি কি করব কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না? আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না, এখন এই ব্যাপারটা কিভাবে মিটিয়ে ফেলবো যেটা অসম্ভব ছিল। আমি হয়রান হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমার দিক বেদিক সব হারিয়ে গেচে যেন। আমি মাকে কি বলে শান্তনা দেবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।
মা- তোর দিদা যদি তোর দাদুকে সব বলে দেয়! কি হবে আকাশ আমাদের?
আমি- কিছু হবে না মা, বিশ্বাস কর। আমি সব ঠিক করে দেব।
মা ওখান থেকে চলে যায়, আমি ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকি। আমি মাকে সাহস দেওয়ার জন্য সাহস নিয়ে মাকে বলেছিলাম সব ঠিক করে দেব। কিন্তু ভয়ে আমি পেসাব করে ফেলবো এমন অবস্থা আমার
হিরো হয়ে মাকে তো একটু সান্ত্বনা দিয়েছিলাম, কিন্তু দিদার মুখোমুখি হওয়ার সাহস আমার মোটেই ছিল না। কিন্তু দিদা যদি দাদুকে সবকিছু বলে তাহলে সব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই ভাবলাম আমাকেই কিছু করতেই হবে। আমি বিছানায় বসে পড়ে ভাবতে লাগলাম কিভাবে সব পরিস্থিতি ঠিক করা যেতে পারে।
(দিদা হয়রান হয়ে বসে ছিলো। সে আকাশের সাথে কথা বলতে চাচ্ছিলো। মা ছেলের এই অজাচার সে কোনোভাবেই হতে দেবেনা।
রাত হয়ে গেছে, সবাই খেতে বসেছে, দিদা আকাশের দিকে একটুও তাকাচ্ছে না আর আকাশও চুপচাপ খেয়ে নেয়। কিছুক্ষণ পর সবাই খাওয়া শেষ করল। খাওয়া শেষ হতেই সবাই ঘুমানোর জন্য যারযার ঘরে চলে গেলো।
পরের দিন যখন দাদু কোন কাজে বাইরে চলে গেলো। সেই সময় আকাশ তার রুমেই ছিল তখনই আকারুমের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। সে ভাবলো সময় নষ্ট করে লাভ নেই তাই আকাশের ঘরে ঢুকে গেলো।)
দিদা - আকাশ, আমি তোর সাথে একা কিছু কথা বলতে চাই, ছাদে আয়।
আমি- হ্যাঁ চলো দিদা।
আমি ঘরের বাইরে এসে দেখি মা তার ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
মা- সব কিছু সামলে নিস।
আমি- দিদা গতকাল তোমাকে কি জিজ্ঞেস করেছিল?
মা- আমাদের কথা জিজ্ঞেস করেছিলো। আমি সব সত্যি বলে দিয়েছি কিন্তু সত্যি বলার পর মা আর কিছু বলেইনি।
তারপর আমি ছাদের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেছি আর সমস্ত সাহস জোগাড় করে এগিয়ে গেলাম। ছাদে যাওয়ার পর দেখলাম সামনে দিদা দাঁড়িয়ে রয়েছে।
আমি- দিদা বলো কেন আমাকে ডেকেছ?
(দিদা আকাশকে কি জিজ্ঞেস করবে তা বুঝতে পারছিলো না।)
দিদা- আমি তোর কাছে অনেক কিছুই জানতে চাই। তোরা দুজনেই জানিস যে তোরা যা করছিস তা ঠিক না। তুই আমাকে বল যে এই সব কি শুরু করেছিস? আমার তো বলতেও লজ্জা করছে আর তোদের এমন কাজ করতে একটুও লজ্জা করছেনা?
আমি- দিদা তুমি যা বলতে চাও, আমাকে সাফ সাফ বলতে পারো কিন্তু মাকে নিয়ে দয়াকরে বাজে কিছু বলবে না।
দিদা- তোর এখন জাওয়ান বয়স। আমি জানি তোর মা তোকে ফাসাচ্ছে। এখনও সময় আছে......
আমি- আমি সব জানি দিদা। কিন্তু মাকে নিয়ে বাজে কিছু বলবেনা। আমার মনে যখন মায়ের জন্য এমন জায়গা ছিলো মা তখন কিছুই জানতোনা। দয়া করে মায়ের চরিত্র নিয়ে কথা বলো না। যাই ঘটুক না কেন, আমিই শুরু করেছি, আমিই এসব চেয়েছিলাম, মা নয়। আমিই মাকে জোর করেছি।
(এসব শুনে দিদা চুপ হয়ে গেলো। কি জিজ্ঞেস করবে বুঝতে পারছিলো না।)
দিদা- তুই তো আনিতার ছেলে, ওর গর্ভের ছেলে, ওর পেটে ছিলি। তোর মায়ের প্রতি এমন খারাপ ফিলিংস কিভাবে রাখতে পারিস তুই? তোরা দুজন যেটা করছিস সেটা সমাজের দৃষ্টিতে, ধর্মের দৃষ্টিতে পাপ। এই পাপ তোরা করিস না। মা ছেলের এই মহাপাপ তোরা কিভাবে করে ফেললি? তোরা তো আগেই ঠিক ছিলি, একে অপরকে কতটা কেয়ার করতিস। কিন্তু এ কী হয়ে গেল! তোদের এই সব করতে একটুও লজ্জা করলো না?
আমি- আমি আমার মাকে ভালোবাসি ,দিদা। এতে কোন লজ্জা কেন হতে পারে?
দিদা - তোরা দুজন মা ছেলে। এই সম্পর্কে ভালোবাসা যায় প্রেম করা যায়না, এটা পাপ।
আমি- মা ছেলের বাইরেও আমাদের আরও একটা পরিচয় আছে। আমি একজন পুরুষ আর মা একজন নারী।
দিদা- তুই এখনো ছোটো আছিস এই জন্য এখনো এসব পাপ বুঝতে পারিসনি।
আমি- তাহলে তুমি বুঝিয়ে দাও।
দিদা- দেখ সোনা, তোরা মা-ছেলের সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ, যা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না, কেও না। এজন্য তোকে তোদের সম্পর্কের সম্মান করতে হবে।
আমি- কিন্তু আমাদের ভালোবাসায় কোনো অসম্মানের জায়গা নেই, আমরা সম্মানের সাথেই একে অপরকে ভালোবাসি।
(আকাশের দিদা কিছুই বুঝতে পারছিলো না , কিভাবে বুঝবে। আকাশ তার একমাত্র নাতী যাকে সে খুব ভালবাসত। এজন্য রেগে বা চিৎকারও করতে পারছিলো না। তাই সে শান্তভাবে কথা বলার চিন্তা করল।)
দিদা- দেখো সোনা তোর বয়সই বা কত! তুই এখন যুবক, এখনও সময় আছে, সাবধান হয়ে যা। এসব ছেড়ে দে এখনই। আনিতার সাথে আবার মা-ছেলের সম্পর্কে চলে আয়। আমিও সব ভুলে যাবো। আবার সব কিছু সুন্দর হয়ে যাবে।
আমি- দিদা, এটা অসম্ভব। আমি মাকে ভালোবাসি, আমি কিভাবে এটা ভুলতে পারি?
(আকাশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা শুরু করে তার দিদা।)
দিদা- দেখ সোনা ,আমি আনিতার সাথে কথা বলেছি। আনিতা আমাকে বলছিল যে তুই বিপথে চলে গেছিস ওর কাছে নাকি এটা করা ছাড়া কোনও উপায় ছিলো না।
আমি- মা কি বললো তাতে আমার কিছু আসে যায়না। আমি শুধু জানি আমি মাকে সত্যিই ভালোবাসি। আর তার সাথে সারা জীবন কাটাতে চাই।
দিদা- এটা তোর একটা ভুল ধারণা হয়েছে। কাম বাসনায় তুই অন্ধ হয়ে গেছিস, তাই নিজের মাকে নিয়ে উল্টোপাল্টা ভাবছিস।
আমি- দিদা, এটা আমার ভালবাসা মনে রাখবে তুমি। আমি মাকে খুব ভালবাসি, তার জন্য আমি আমার জীবনও দিতে পারি। তুমি আমার ভালবাসা বুঝতে পারবেন না দিদা, কারণ তুমি বুড়ো হয়ে গেছো।
দিদা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে।
আমি- আমি জানিনা তুমি কি ভাববে কিন্তু শোনো তাহলে সব বুঝতে পারবে...
(আকাশ বলতে লাগলো কীভাবে সে তার মায়ের প্রেমে পড়ে এবং বো কীভাবে সবার মুখে অনিতার মুখ দেখে এবং তার প্রতি তার ভালবাসা প্রকাশ করে, কীভাবে আনিতা তার কাছ থেকে দূরে চলে যায় এবং কীভাবে তার জীবন শূন্য হয়ে পড়েছিল। মাকে পেয়ে কীভাবে আবার জীবনের সব সুখ খুজে পায়। আকাশ তার দিদাকে সব বলতে লাগে।)
(দিদা চুপচাপ সব শুনছিল। দিদা বুঝতে পারলো যে এরা মা-ছেলে দুটো একই মুদ্রার দুই পিঠ। আকাশ সত্যিই আনিতাকে ভালবাসে। তাও সত্যি সত্যি।)
আমি- দিদা, আমি মাকে খুব ভালোবাসি, আমি তাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
দিদা- অনেক মেয়ে পাবি তুই। আমি তোমার জন্য অনেক সুন্দর পাত্রী খুঁজব, তুই এই সব ভুলে যা।
আমি- না, তুমি যত সুন্দর মেয়েই বেছে নাও না কেন, মায়ের সামনে তুমি আমার ভালোবাসাকে অন্য মেয়ের সাথে তুলনা করতে পারবে না। আমার কাছে মায়ের তুলনায় সব সৌন্দর্যই ফ্যাকাশে। আমার মায়ের মতো পৃথিবীতে আর কেউ নেই। সে লাখে মাত্র, না না, কোটিতে একজন। প্রাণ চলে গেলেও মাকে ভালোবাসা থেকে আমাকে কেও থামাতে পারবে না।
(আর কি বলবে দিদা! সে কিছুই বুঝতে পারছিলো না। যা বলার ছিল তাই বলেছে। সেও জানে আকাশকেও সে বুঝাতে পারছে না আর পারবেও না। কারণ দিদা যতই কঠোর হোক না কেন সে আকাশের চোখে সত্যিকারের ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছে। আকাশ দিদার চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল আর দিদাও আকাশের চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল। দিদা জানত এটা ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু নয়।)
খেয়াল করলাম দিদা ভাবুক হয়ে গেছে তাই আমিও এবার ছক্কা মারার সুযোগ নিয়ে নিলাম।
আমি- যদি দাদুকে বলতে চাও তাহলে বলো কিন্তু আমি মাকে ছাড়বোনা না। তুমি বিশ্বাস করো বা না করো আমরা দুজনই এখন এক। তুমি আমাদের ভালবাসা বন্ধ করতে পারবেন না।
(আকাশ এই বলে ছাদ থেকে চলে যায় আর আকাশের দিদা এক জায়গায়ই দাঁড়িয়ে থাকে। আকাশের কথা শুনে দিদা তার সাহস হারাতে শুরু করেছে। সে বুঝতে পারে যে জল অনেক দূর চলে গেছে। আকাশের দাদুকে বললে পরিস্থিতি নরকের থেকেও খারাপ হয়ে যাবে। দিদার আর কোন উপায় ছিল না। সে ভেবেই যাচ্ছিলো কিন্তু তার কাছে কোনো পথ ছিলো না।)
আমি নিচে এসে স্বস্তি অনুভব করলাম। আমি আমার সমস্ত সাহস সঞ্চয় করে সব কথা বলেছিলাম, আমি কি কি বলেছিলাম তাও মনে করতে পারছিলাম না। নিচে এসে মাকে খুজতে লাগি। মাকে পেয়ে তার কাছে যাই।
মা- ছাদে কি হলো আকাশ?
আমি- জানিনা কি হবে মা, কিন্তু এখন কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।
মা আমাকে জড়িয়ে ধরে এবং আমি তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করি যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
দিদা কিছুক্ষণ পর নিচে চলে আসে আর এসব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমরা এই বিষয়ে কথা বলি না। চুপচাপ বসে থাকি।
(কিছুক্ষণ পর দাদু অফিস থেকে চলে আসে। দিদাও দাদুকে কিছু বলে না, এইসব কথা নিজেদের কাছেই রাখে। রাতের খাবার খেয়ে সবাই শহরে বেড়াতে যায়, যেখানে দিদা শুধু অনিতা আর আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল।)
দিদা (ভাবতে শুরু করে)- আনিতা জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছে, যা ভুলতে ও দিল্লী গেছে। ওকেও অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। যখন আনিতা কলকাতায় ফিরে আসে, তখন সে খুব দুঃখ পেয়েছিল। কিন্তু আকাশ ফিরে আসার পর সে আবার খুশি হতে শিখেছে। আকাশের কারণেই আমি আনিতাকে খুশি হতে দেখেছি আবার সে আগের অনিতাকে ফিরে পেয়েছি। আকাশের কথা থেকে বোঝা যায় যে সেও আনিতাকে খুব ভালবাসে, আনিতা সত্যি বলছিল। যদি সে আকাশের থেকে দূরে চলে যায় তবে আকাশের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে এবং যেকোনো কিছুই করতে পারে। আমার কি এই সম্পর্ক মেনে নেওয়া উচিত? তবে দুজনেই তো মা-ছেলে। দুজন একে অপরকে ভালবাসে। ইশ, আকাশ যদি আনিতার ছেলে না হতো তাহলে কতই না ভালো হতো। কিন্তু ভালোবাসা সব সম্পর্কের আগে, আমাকে সেই সম্পর্ক মেনে নেওয়া উচিৎ। আকাশ সেই ছেলে যে আনিতাকে খুশি রাখতে পারবে, হয়তো হয়তো হয়তো।
( আকাশের দিদা বিভ্রান্তিতে ছিল। অন্য কাউকে বোঝানোর মত অবস্থা তার ছিল না এবং সে এটাও মাথায় রাখছিল যে তার অনেক বয়স হয়ে গেছে। কিছুদিন পর আকাশকেই আনিতাকে দেখতে হবে। সে জানে তার থেকেও বেশি আকাশ অনিতার যত্ন নেবে। অনিতা সবার জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছে এবং এখন আকাশ আনিতাকে সুখী করবে।)
মা আর আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ পিছন ফিরে দেখি দিদা ভাবনায় পড়ে আছে। মা আমার দিকে তাকায়। তার মুখে উত্তেজনা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম।
আমি- মিয়া বিবি রাজি তো কি করবে কাজী? মা, চিন্তা করো না।
আমার কথা শুনে মা একটু হাসলো। আমি মায়ের হাত ধরে এগিয়ে যাই।
*
পরবর্তী দিন,
(আকাশ আর অনিতা যা বলছে তা নিয়ে দিদা সারারাত ভাবছিল। প্রথমে সে ভেবেছিল অনিতা আর আকাশ যা করছে সেটা ভুল কিন্তু দুজনের সাথে কথা বলার পর সে বুঝতে পারল যে সে যা দেখছিল বিষয়টা তা নয়। তারা দুজনেই গভীরভাবে একে অপরকে ভালোবাসে। সে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না পরবর্তীতে কি করবে।
সে আনিতার সাথে কথা বলে বুঝেছিলো যে সে আকাশের প্রেমে পড়েছে। সে ভেবেছিলো আকাশকে সব বুঝিয়ে তাকে বললে সে মেনে নেবে। দিদার সব আশা শুধু আকাশের ওপরই ছিলো কিন্তু আকাশ তার মায়ের থেকেও কঠোর ছিলো নিজেদের ব্যাপারে। আকাশ আনিতাকে তার প্রাপ্য সুখ দিতে চেয়েছিল।
দিদা এখন শুধু ভাবছিল তার এখন কি করা উচিত! তার কি আকাশ ও আনিতার সম্পর্ক মেনে নেওয়া উচিত নাকি আবার দুজনের সঙ্গে কথা বলা উচিত!)
সকাল ৮টা ,
আমি ঘুম থেকে উঠলাম। আমি হলের মধ্যে চলে এলাম যেখানে দাদু বসে ছিলো আর দিদা অন্য বেডরুমে বসে ছিলো এবং মাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না কোথাও। আমরা এখানেও বাড়ির মতোই থাকতাম। সবজি, মাছ বা মাংশ খাওয়ার দরকার হলে দাদু এখানকার কেয়ারটেকারকে টাকা দিয়ে দেয় আর সে বাজার থেকে সব কিনে আনে। মা আর দিদা এসব খাবার রান্না করতো বাড়ির মত করেই।
মাকে যখন কোথাও দেখতে পাচ্ছিলাম না, তখন দাদুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
আমি- দাদু, মা কোথায়?
দাদু- ছাদে কাপড় শুকাতে দিতে গেছে।
আমি- ঠিক আছে ।
আমি ছাদে গেলাম তখন মা আমার দিকেই এগিয়ে আসছিলো। আমি মাকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে একটা চুমু দিলাম। এর পর আমি কিছুক্ষন মায়ের রসালো ঠোঁট চুষলাম, কিন্তু মাকে একটু মনমরা লাগছিল।
আমি- কি হয়েছে ডার্লিং, মন খারাপ কেন?
মা- তুই জানিস আমার কেন মন খারাপ।
আমি- দিদার কারনে?
মা- হ্যাঁ।
আমি- দিদা তোমাকে এখন কি বলল?
মা- কিছু না, কিছু বলেনি কিন্তু ওনার কারণে আমার ভালো লাগছে না। সে চুপচাপ থাকছে , কথা বলছে কিন্তু বেশি নয়।
আমি- দিদাকে সময় দাও, সে কথা বলবে। তিনি তোর মা আর আমার দিদা, সব বুঝবে দিদা।
মা- কাল তুই তোর দিদাকে কি বলেছিলি?
আমি- যা সত্যি তাই বলেছি। চিন্তা করো না।
মা- আমি কিভাবে চিন্তা না করব আকাশ? আর একবার তোর দিদার সাথে কথা বল। তোর দিদা তোকে খুব ভালোবাসে। সে তোর কথা বুঝবে।
আমি- সে তোমাকেও খুব ভালোবাসে। হ্যাঁ তুমি বলছো তাই একবার কথা বলবো, কিন্তু এবার আমি একা নই, তুমিও আসবে আমার সাথে।
মা- আমি কিভাবে ?
আমি- কেন নয় মা? আমার জান যদি আমার সাথে না থাকে তাহলে আমি কথা বলবো কিভাবে।
এই বলে আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম। মা দুঃখী ছিলো, যেমন প্রতিটি মা তার সন্তানের জন্য দুখী হয়। এ সে চাইছিল আমি দিদার সাথে কথা বলি আর আমিও তাই করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এবার আমি মাকেও দাঁড় করাবো দিদার সামনে। অন্তত কিছু না হলেও দিদার বকুনি আর গালি শোনার জন্য হলেও সঙ্গি পাবো আমি।
মা আমাকে এমনভাবে দেখতে লাগলো যেন আমি ব্যাপারটা সামলাবো সহজ ভাবেই। সে একটুও জানত না আমার ভিতরে কি ঘটছে, আমি মাকে নিয়ে নিচে চলে গেলাম এবং অপেক্ষা করতে লাগলাম সঠিক সময়ের জন্য যে কখন দাদু বের হবে আর আমি আর মা দিদার সাথে কথা বলবো।
সেই সময়ও শীঘ্রই আসলো। ১১টা বেজে গেছে।
দাদু তার কোনো কাজে বের হলে আমি সুযোগ পেলাম।
আমি- মা চল। দিদার সাথে আমরা কথা বলি!
মা- ঠিক আছে চল যাই।
আমি মায়ের হাত ধরে দিদার রুমের দিকে এগিয়ে গেল। দিদা বসে বসে কিছু একটা ভাবছিল।
আমি-দিদা!
দিদা আমাদের দিকে ঘুরে আমাদের দিকে তাকালো এবং আমাদের ধরে রাখা হাতের দিকেও তাকালো।
আমি- মা, আগে কথা বল! (ধীরে বলি)
মা- তুই আগে কথা বল। (ধীরে)
আমি- দিদা, তুমি এই কয়দিন আমাদের সাথে কথা বলছ না কেন? কোন সমস্যা হলে আমাদের জানাও।
দিদা- তোদের দুজনকে আর কি বলবো? দুজনেই নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছিস, আমি আর কি বলবো?
আমি- দিদা, এমন বলোনা।
আমি দিদার কাছে গিয়ে হাঁটু গেড়ে তার সামনে ফ্লোরে বসলাম। আমি তার হাত আমার হাতের মধে নিই আর দিদা আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
আমি- দিদা, আমি জানি তুমি আমাকে আর মাকে খুব ভালোবাসো। মাও এটা জানে। আমরাও তোমাকে খুব ভালোবাসি।
দিদা-তাহলে আমি যা বলি তোরা দুজনেই সেটাই রাজি হচ্ছিস না কেন?
আমি- আমরা তোমার সমস্যা বুঝতে পেরেছি। আমাদের সম্পর্ক মেনে নেওয়া তোমার পক্ষে খুব কঠিন। তবে তুমি আমাদের দিকে তাকাও এবং আমাদেরকে বোঝার চেষ্টা করো। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখো।
দিদা- মানে, আমি কি বুঝবো?
আমি- মানে তুমি যা দেখছো।
আমি উঠে মায়ের দিকে হাত বাড়ালাম আর মাও আমার দিকে এগিয়ে এল।
আমি- আমার দিকে তাকিয়ে দেখো, লি দেখতে পাচ্ছো?
দিদা- মা-ছেলের সম্পর্ক।
আমি- কিন্তু মাকে আমি একজন নারী হিসেবে দেখি আর মাও আমাকে পুরুষ হিসেবে দেখে। আমাদের আসল সম্পর্ক মা ছেলের হলেও আমরা একজন পুরুষ এবং একজন নারী। আমাদের প্রেমিক প্রেমিকার মত ভালোবাসা আছে। তুমি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত আমি জানি, কিন্তু আমার অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যৎ আমার মা। আমি মাকে খুব ভালোবাসি আর তাকে সব সুখ দিতে চাই যা সত্যি তার প্রাপ্য।
মা- হ্যাঁ মা, আর আমার জন্য তোমার চিন্তা করার দরকার নেই, তুমি জানো যে আকাশ আমার খুব যত্ন করে। সবসময় আমার যত্ন নেবে।
আমি দিদার দিকে এগিয়ে গিয়ে আবার হাঁটু গেড়ে দিদার হাত আমার হাতের মাঝে রাখলাম।
আমি- তুমি চিন্তা করোনা দিদা। আমি সারাজীবন মায়ের যত্ন নেবো।
মা- হ্যাঁ মা। আর আকাশের ভবিষ্যৎ এভাবেই রাঙিয়ে দেব।
আর আমরা একে অপরের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে রইলাম, দিদা কিছু বলতে পারছিল না। সে শুধু আমাদের দুজনের দিকেই তাকিয়ে ছিল। কিছুক্ষণ পর দাদু চেলা আসে যার কারণে আমরা কিছুক্ষণের জন্য এই প্রসঙ্গ ত্যাগ করি। আমরা সবাই একসাথে খাওয়া শুরু করি।
ক্রমশ......
দয়া করে ছোট আপডেট ছোট আপডেট বলবেন না। আমার এতোটুকু লেখায় অনেক সময় যায়। দয়া করে তার প্রাপ্য ক্রেডিট দেবেন। সেক্স তো হবেই গল্পে। রাতদিন আকাশ আর আনিতার সেক্স হবে তার আগে গল্পের প্লটের দরকার আছে। আমাকে সময় দিন আমিও আনিতা আর আকাশকে আপনাদের সামনে তাদের সর্বোচ্চ আবেদনময়ীভাবে তুলে ধরবো। ১০দিন পর পরের আপডেট আসবে। তার পরে ৫ দিন পর তার পরের আপডেট আসবে।