সম্পর্ক- মায়ার বন্ধন (মা-শুধু একবার করবো) - অধ্যায় ৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-57985-post-5362578.html#pid5362578

🕰️ Posted on September 24, 2023 by ✍️ Xojuram (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1602 words / 7 min read

Parent
পর্বঃ ০৫  আমার এই কথাই যেন চারিদিকে নীরবতায় ছেয়ে গেলো। আমি মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকিও আর মাও আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। হঠায় মা আমার গালে ঠাস ঠাস করে চড় মারলো। মা- তুই কি বলছিস ভেবেছিস একবার? লজ্জা করেনা নিজের জন্মদাত্রী মাকে এসব বলিস?(কান্না থেকে রেগে গিয়ে) আমি- তুমি এসব কাজ করার সময় লজ্জা পাওনি তাহলে আমি বলতে লজ্জা পাবো কেন? মা- তুই এভাবে কেন বলছিস? আমি- তো কি বলবো, আমার সাথে করতে তোমার লজ্জা করবে আর অন্যকারো সাথে  মজা? আমার সাথে করতে পারবেনা কেন মা? আমি তো তোমার নিজের মানুষ, তোমার পেট থেকে বের হওয়া তোমার একমাত্র ছেলে। আমি তো তোমাকে ভালোবাসি মা। (এই কথা বলার সময় আমার চোখে জল এবং রাগ দুটোই গড়িয়ে পড়ছিল) কথাটা শুনে অনিতা একটু বেখেয়াল হয়ে যায়। তখন হয়তো শেষ লাইনটি বুঝতে না পেরে এড়িয়ে যায় বা এড়ানোর চেষ্টা করে, এরপর অঝোর ধারায় কাদতে থাকে, তার কাছে কথা বলার মতো কিছুই  অবশিষ্ট ছিল না। আকাশ যা চাচ্ছে তা দেওয়া তার পক্ষে খুব কঠিন ছিল। মা- আমি জানি আমি এটা ঠিক করিনি, তবে আমাকে এই কথা বলবিনা বাবা। তুই আমার পেটের সন্তান এসব করা তো দূরে থাক এসব কথাও বলতে পারিস না তুই। আমি-ঠিক আছে তুমি এটা করবে না তাহলে আমি আর কিছু খাবোও না আর ওই লোককে খুন করবো। তারপর আমি ঘরের ভিতরে গেলাম, আবার মা জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো। আমি ভিতরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম, মা সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল। আমার ঘর থেকে তার কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছিল।  মায়ের গলা শুকিয়ে গিয়েছিল কিন্তু সে আমাকে বাইরে থেকে ডেকেই যাচ্ছিলো।  (আনিতার করারই বা কি ছিলো, এতো এসব করতে চায়নি। সেতো শুধু তার ছেলের ভবিষ্যতের জন্যই এমন করেছে। তখন তো আনিতা আকাশকে বাইরে যেতে মানা করছিলো এই জন্য যাতে লোকটা সুযোগ নিতে না পারে। কিন্তু আকাশ তার কথা শুনলো কই! আনিতা নিজেকেই দোষী করলো, কেন সে এসব আগেই আকাশকে জানায়নি। এবার আর সে অপরাধবোধ ঘাড়ে রাখবেনা। আকাশের সাথে সব বলবে।) মা- "আকাশ বাবা, তোর বাবা মারা যাওয়াইয় তোর কাকা আর কাকী প্রতিদিন আমার সাথে জমিজমা নিয়ে  ঝগড়া করতো। তোর ঠাকুরদাদা আর ঠাম্মাও আমাকে সাপোর্ট করতো না। আমি ঝগড়া করতে চাইনি, তোর ক্ষতি হবে এই ভেবে। কারণ তুই আমার একমাত্র ভরসা, যার জন্য আমাকে বেচে থাকতে হতো। তাই তোকে একা এখানে  নিয়ে আসি যাতে তুই এখানে শান্তিমতো পড়াশুনা করতে পারিস ,  ওইসব ঝামেলায় যেন না পড়িস।  তোর বাবার কিছু ব্যবসায়িক সমস্যা ছিলো।একজন ভালো উকিলের দরকার ছিল, তখন আমার অফিসের একজন সিনিয়র সাহায্যের বাড়িয়ে দিলেন। কিন্তু বিশ্বাস কর বাবা ওই লোক আমার সাথে অনেক খারাপ কিছু করতে চাইলেও আমাদের মধ্যে এমন কিছু ঘটেনি যার জন্য তোর মা নষ্টা হয়ে যাবে। এই দেখ  আমি কাগজ পেয়েছি, ওর সঙ্গে আর দেখা হবে না, প্লিজ বাইরে আই বাবা।" আমি চুপচাপ এসব কথা শুনছিলাম কিন্তু কেন জানিনা এসবে আমার মন নরম হচ্ছিলো না। আমি- তুমি চলে যাচ্ছো না কেন? মা- বিশ্বাস না হলে এই নে বা, আমি যাচ্ছি। মা কিছু কাগজ দিল দরজার নিচ দিয়ে এরপর তার ঘরে চলে গেলো। আমি কিছু দেখতে বা শুনতে চাই না। কিন্তু মা সত্য বলছে কিনা এটা জানার জন্য কাগজ হাতে তুলি।  এটা ওইদিনের কাগজ ছিলো যেইদিন ওই আংকেল মায়ের স্তন টিপছিলো। কাগজের নীচে আদালতের কাগজ ছিল যেটা সেই লোকটির কাছে ছিল। এসব দেখেও আমি বিশ্বাস করিনি কিছুই। আমি আমার বিছানায় গিয়ে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়ি।  কখন ঘুম ভেঙ্গেছে তা মনে করতে পারিনি। মনে পড়লো আজকে মাকে একটা লাইন বলেছিলাম, যেটা আমি আগে কখনো বলতে পারিনি, “আমি তোমাকে ভালোবাসি মা”। যেটা মা ঠিকমতো শুনতে বা বুঝতে পারেনি হয়তো। ৪ দিন চলে গেল কিন্তু আমার পড়াশুনা একেবারে বন্ধ হয়ে গেল। আকাশ আনিতাকে অনেক খারাপ কথা শুনিয়েছিলো, যার জন্য সে ধীরে ধীরে অনুতপ্ত হয়। রাতদিন আকাশ এসব ভাবতে থাকে। অবশেষে আকাশ বুঝতে পারে তার মা’ই সঠিক, সে ভুল। ★ পরের দিন যখন জেগে উঠলাম, আমার মন শান্ত হয়ে গিয়েছিল, আমি আমার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিলাম। মা কাল রাতে আমাকে যা বলেছিলেন তা আমার মনে পড়েছিল। আমার চোখ কাগজের উপর পড়ল যেটা মা আমাকে দিয়েছে। আমি কাগজের দিকে গেলাম। কাগজগুলো হাতে নিয়ে দেখতে লাগলাম।  এগুলো সবই আসল, আমি গতকাল অনেক রাগে ছিলাম, সকালে আমার কাছে সব স্পষ্ট হলো, তবে মনে একটাই প্রশ্ন, মা কি সত্যি বলছে? আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম, আমি রাগে মাকে অনেক খারাপ কথা বলেছি। আমি এখন আমার ভুল বুঝতে পারছি। আমি কি আমার মাকে কি না বলতে বাদ রেখেছি!  কত খারাপ শব্দও ব্যাবহার করেছি।  মা আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু আমি কিছুই শুনিনি। এত বছর আমাকে বকেনি, মা তার কষ্ট লুকিয়ে বেঁচে ছিল। সে আমার জন্য যা করছে তার জন্যই কিনা আমিই তাকে ভুলে বুঝেছি। আমি আমকে বোঝার চেষ্টাও করিনি। আমি ভেবেছিলাম যে মা খারাপ, কিন্তু এই গল্পটাতে তো আমিই খারাপ হয়ে গেলাম। এটা আমার মায়ের  উপর কেমন প্রভাব ফেলবে! কাল রাতে যা বলেছি তার জন্য মা কি আমাকে ক্ষমা করবে? মায়ের কাছে ক্ষমা চাইবো কী করে, এই কথাটাই ভাবছিলাম কিছুক্ষণের মধ্যে মা আবার দরজায় কড়া নাড়লেন- মা- আকাশ বাবা দরজা খোল সোনা। আমি আমার মায়ের কন্ঠটা ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু দরজা খুলতেই আমার সাহস হচ্ছিলো না। আমার দেবী মাকে কতই না খারাপ কথা শুনিয়েছি কিন্তু সে তো এখন দেবীর থেকেও উপরে চলে গেছে আমার কাছে। আমার মুখ মাকে দেখাবো কি করে। কি করব, কি করব, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। অবশেষে সাহস করে গিয়ে দরজা খুললাম, মা আমার দরজার সামনে ঠায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চোখের নিচে কালো দাগ, চুল উষ্কখুষ্ক, আমার সুন্দরী দেবী মা একরাতে যেন কেমন পালটে গেছে। যাকে দেখলে মনে হাসির ফুয়ারা বয়ে যাওয়ার কথা তার চোখে আমি চোখ রাখতে পারছিলাম না। এদিকে অনিতা ভাবছে,  যে গতকাল যা হয়েছে তার জন্য সে দায়ী,  শরীরে আর কাউকে স্পর্শ করতে দেওয়া চলবে না। আনিতা বুঝতে পারছিলো, মাকে খারাপ কথা বলার জন্য আকাশ বড্ড অনুতপ্ত, তার চোখ বলে দিচ্ছে।  হয়তো সে তার ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ার চেষ্টা করছে। তাই আনিতা নিজেই কথা বলল, নাহলে ব্যাপারটা মিটবেনা।  মা- আকাশ বাবা প্লিজ খাবার খেয়ে নেই, তুই গতকাল থেকে কিছু খাসনি। আমি- ঠিক আছে (খুব ধীর কন্ঠে) মা – তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে নে। অনিতা দৌড়ে খাবার আনতে যায় এবং ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে গরম করে। আকাশ যখন বুঝতে পারে যে এখনও তার মা খায়নি। তখন তার খুব খারাপ লাগে যে তার এমনটা করা উচিত ছিল না। কষ্টে যেন তার কলিজা ফেটে যাচ্ছে। আমি আমার মায়ের সাথে কথা বলে এই সমস্যাটি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে পারতাম, কিন্তু আমি তা করিনি। যার কারণে আমার মা আমার জন্য দুঃখ পেয়েছে এমনকি খাবারও খায়নি। মা খাবারা এনে আমার সামনে রেখে মা- আমি দুঃখিত বাবা।  আমি এটা শুনে মায়ের দিকে তাকালাম। মা চোখ নামিয়ে নিলো এরপর মুখে খাবার নিয়ে তার মুখ দিয়ে  চিবাতে লাগলো।  আমি গতকালের জন্য তাকে সরি বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু কিছু বলতে পারিনি তার আগেই মা বলল, মা- আমি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছি। আমি-না, কোন দরকার নেই, তুমি চাকরি করো (ধীর স্বরে)। আমাদের দুজনের খাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর, আমি- আমি  বন্ধুর বাড়িতে পড়াশোনা করতে যাবো। মা- আচ্ছা যা বাবা। বাসা থেকে বের হলাম সাথে সাথে, কিন্তু কোথায় যাবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। কিন্তু আমার পরীক্ষা ঘনিয়ে এসেছে, তাই ভালো রেজাল্টের জন্য খুব পড়াশোনার দরকার ছিল। আমি আমার বন্ধুদের বাসায় গেলাম। সুরাজের (মানে “বন্ধু 2”) মা, আন্টি দরজা খোলে কলিং বেল বাজাতেই। আমি- হ্যালো আন্টি আন্টি- আরে আকাশ এত দিন পর এলে যে! ভিতরে এসো। আমি আমার বন্ধুদের পরিবারকে চিনি আর তারাও আমার পরিবারকে খুব ভালো করে চেনে কারণ আমরা ৩জন খুবই ভালো বন্ধু। সুরজের মায়ের নাম সীমা, আন্টি অনেক কিউট। সীমা আন্টি- সুরজ দেখতো কে এসেছে? সুরাজ এলো। সুরাজ- আকাশ, চল আমার রুমে।  আমি কিছু না বলে সুরাজের পিছন পিছন উপরের রুমে চলে গেলাম। হঠাৎ যে সুরাজের মাসির সাতে দেখা। যার নাম সুনিধি, সে দেখতে সুন্দর, আধুনিকা, বয়স ৩৩ বছর। তবে তাকে আন্টি বলা যাবেনা, মাসি বা দিদি বলা যাবে সর্বোচ্চ।  আমাদের ৩ বন্ধুকে মাসি ওরফে ফ্রেন্ড সবসময় আমাদের পড়াশুনায় সাহায্য করতো। আন্টি আমার সাথে ভাল মিশতো। আমরা অনেক কথা তার সাথে শেয়ার করতাম। আমি তাকে চিনি যখন থেকে আমি সুরাজকে চিনি। হঠাৎ আন্টি আমাকে জড়িয়ে ধরে। সুনিধি- আকাশ কত বড়  হয়ে গেছো! সুরাজ- গতবারও যা  ছিলো আজও তো তাইই আছে। সুনিধি- তুই চুপ কর। আমি- আন্টি আপনার সাথে আবার দেখা হয়ে ভাল লাগল। সুনিধি-আন্টি? তো কতবার বলেছি  দিদি বা মাসি বলবে? সুরাজ- হ্যাঁ মাসিই বলবে , এবার দয়া করব আমাদের পড়াও। সুনিধি- ঠিক আছে চল যাই। সুনিধি মশি পড়ানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়ে আমরাও মনোযোগ দিলাম পড়াশোনায়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেজ সব ভুলে মায়ের কথা ভাবছিলাম। সুনিধি- আকাশ তোমার ধ্যান কোথায়? আমি- হ্যা না মানে! সুরজ- নিশ্চয়ই প্রীতির কথা ভাবছে, তাইনা আকাশ। সুনিধি- সিরিয়াসলি, এত ভাবলে তোমার রেজাল্ট খারাপ হবে, এখন পড়ালেখায় মন দাও।  আমরা আবার পড়া শুরু করলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা হয়ে গেলো। সুনিধি- কি ব্যাপার আকাশ, তোমাকে এমন  লাগছে কেন? আমি- কিছু না মাসি। সুনিধি- কিছু ব্যাপার আছে, তোমার পড়ালেখাতেও মন নেই, ব্যাপার কি? আমি- আসলে মাসি, কারো সাথে ঝগড়া হয়েছে আর আমি রাগের বসে তাকে খারাপ কথা বলেছি। আমার কি করা উচিৎ? সুনিধি- ( আমার গাল টেনে) তাকে সরি বলো। আমি- কিন্তু আমার অনেক খারাপ লাগছে। সুনিধি- তুমি তোমার ভুল বুঝতে পারছো, এটা কি বড় কথা নয়! গিয়ে সরি বলো।  মনে মনে ভাবলাম আজ মাফ চাইবো, পড়াশুনা শেষ করে বাসায় চলে গেলাম। সারাক্ষণ ভাবছিলাম, মা আমার জন্য অনেক কিছু করেছে। আমার হৃদয়ে আবার মায়ের জন্য প্রেম জেগে উঠেছে। আগের থেকেও প্রখর। যেন তাকে না দেখলে পাগল হয়ে যাবো। আমি বাড়ি ফিরে দরজা খুললাম আর ভিতরে গেলাম। মাকে কি করে সরি বলবো, তাই মায়ের কাছে গেলাম। আমি- মা! মা- হ্যা আমি- আমি দুঃখিত মা। আমাকে মাফ করে দাও। (চোখের জল ফেলতে ফেলতে) মা তার স্নেহময় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর আমিও আমার স্নেহময় চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছি। ,আমার মন চাইছিল এখনই মাকে জড়িয়ে ধরে কাদি কিন্তু সাহস করতে পারলাম না।  (যদিও অনিতা আর আকাশ তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তবে এখন যেন তাদের মা-ছেলের সম্পর্ক নেই যেটা তারা ছিল। অনিতা এখন আগের চেয়ে একটু বেশি খুশি, যে তার ছেলেকে সে সত্য বলতে পরেছে।) আমার মতে   আমার মা এত দিন একা আমাকে বড় করেছে। আমার জন্য একা ছিলো, অন্য কাউকে তার জীবনে আনেনি। এখন আমার দায়িত্ব তাকে সেইসব সুখ দেওয়া। আমার মাকে তার প্রাপ্য ভালবাসা দেওয়া এখন থেকে আমার কর্তব্য।  ক্রমশ......... রেপু দিতে কেও ভুলবেন না।
Parent