SON LIFE- ছেলের জীবন - অধ্যায় ২৬
PARTXTWENTYFOUR
°
°
°
°
°
°
°
°
°
°
°
°
ভোর বেলায় মামুন উঠে কাউকে না ডেকে দোকানে চলে গেলো। আজকে থেকে জীবনের মোড় নব্বই ডিগ্রি ঘুরিয়ে ফেলবে। ওর প্রথম কাজ হলো কাকির কাছে মাফ চাওয়া..
সকাল দশটায় কাকার কাছে ফোন লাগালো,
- হ্যালো..
- কাকা..
- হ্যা বল বাপ..
- কাকি কোথায়..?
- বাড়িতেই আছে.. কেনো...?
- তুমি কোথায়..?
- আমি মাঠে..
- ওহহ!
- কিছু দরকার নাকি..?
- হ্যা কাকির সাথে কিছু দরকারি কথা ছিলো..
- তুই বাড়িতে যা তাহলে..
- ঠিক আছে..
মামুন ফোন কেটে দিয়ে, একটা মিষ্টির বক্স নিয়ে তাতে এক এক করে শাওনের পছন্দের সব মিষ্টি ভরে নিলো।
তারপর দোকান থেকে বের হয়ে বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলো।
কাকিদের বাড়ি গিয়ে দেখে কাকি রান্না ঘরে... শাওন ও আছে সেখানে মামুন রান্না ঘরে ঢুকে শাওন কে কোলে তুলে নিয়ে মিষ্টির বক্স টা হাতে ধরিয়ে দিলো,
- এই দেখ ছোট্ট ভাই কি এনেছি তোর জন্য..
শাওনের খুশি দেখে কে, এক ছো মেরে ভাইয়ের হাত থেকে মিষ্টির বক্স ছিনিয়ে নিলো।
- ইয়য়ে.. সব খাবু সব খাবু...
বলে মোচড়ামুচড়ি করা শুরু করলো নামার জন্য! মামুন শাওনকে নিচে নামিয়ে দিতেই শাওন নিচে বসে বক্স খুলে সব নিজের পছন্দের মিষ্টি দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে গেলো, ছোট হাতে তুলে খাওয়া শুরু করলো খুশি মনে,
মামুন এক দৃষ্টিতে সেই দৃশ্য টুকু উপভোগ করলো। এই ফেরেশতার মতো ছোট ভাইটাকেই ও ছাড়েনি। কতটা খারাপ হলে এই কাজ করা যায়..? মামুন চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কাকির দিকে তাকালো, কাটের মতো দাড়িয়ে রান্না করছে। শুধু হাত দুটোই নড়ছে শরীর শক্ত করে দাড়িয়ে আছে। হয়ত ভাবছে মামুন ওকে এক্ষুনি পেছন থেকে আক্রমণ করবে.. কিন্তু আজকে থেকে কাকি কে ওর নোংড়া জীবন থেকে মুক্ত করতে এসেছে,
- কাকি....
- হুম
ছোট একটা উত্তর। মামুন ভনিতা ছাড়া আসল কথা গুলো বলে দিলো,
- আমি জানিনা আমার ভিতর কি হয়েছিলো। আমি শুধু নিজের সুখ টাকে প্রাধান্য দিয়ে গেছি এতদিন। সেই সুখের খেলায় তোমাকে আমি পুতুলের মত ব্যাবহার করেছি.. তার জন্য আমি কি ভাবে ক্ষমা চাইবো জানিনা! তুমি যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো.. তবুও আমাকে ক্ষমা করতে হবে। যদি চাও তুমি আমাকে পুলিশে দিতে পারো..
মামুন কথা গুলো বলে থামলো। কাকির উত্তরের আশায় কাকির দিকে কাতর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো,
শিল্পী এবার পিছন ফিরে আগে নিজের ছেলের দিকে তাকালো, ছেলেটার এদিকে কোনো খেয়াল সেই মনোযোগ দিয়ে নিজের ফেভারিট খাদ্য গ্রহন করতে ব্যাস্ত। তারপর মামুনের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য ভরা হাসি দিলো,
- ক্ষমা..! দুঃখিত , আমি তোকে ক্ষমা করতে পারবোনা। কিন্তু এটা জেনে খুশি হলাম যে আমাকে তুই তোর নরকময় জীবন থেকে মুক্তি দিছিস.. আরো একটা কথা জানিয়ে রাখি, আমি তোকে পুলিশে দিবো না। পুলিশে আজ ধরলে কাল আবার বাড়ি ফিরবি, কি লাভ.. .? আমি আমার সকল কষ্টের অভিযোগ ওপর ওয়ালার কাছে করেছি.. এই জীবনে তোকে ছাড় দিলেও যেনো পরপারে তোকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়।
শিল্পী কথা গুলো বলেই রান্না করা ভাত তরকারি ভালো করে ঢেকে রেখে, মিষ্টি খাওয়ারত ছেলেকে কোলে তুলে নিলো,
- যাহহ! বের হ..
কাকির শক্ত কন্ঠ শুনে মামুনের ধ্যান ভাংলো। আস্তে করে রান্না ঘরে থেকে বের হয়ে বাইরে এসে দাড়ালো,
শিল্পি দরজা লাগিয়ে সোজা নিজের ঘরের দিকে হাটা দিলো। মামুন একদৃষ্টিতে কাকির দিকে তাকিয়ে রইলো। যাক.. মাফ না করলেও বেশি ঝামেলা তো করেনি এতেই ভালো। যদি এখন কাকি ওকে পুলিশে দিতো তাহলে বিচ্ছিরি একটা কাজ হয়ে হতো..
.
.
.
.
পার হয়ে গেলো আরো একটা মাস। সব কিছু স্বাভাবিক চললেও কিছুটা অস্বাভাবিকতা আছে সবার ভিতরে। মামুন মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। এমনকি সবার কাছেই চেয়েছে শুধু মাত্র কাকার কাছে ছাড়া কারন কাকার এসবের কিছুই জানেনা। মা ওর সাথে কথা বললেও বাড়তি কোনো কথা বলেনা। যেটুকু প্রয়োজন ততটুকু বলে। কিন্তু আগের থেকে অনেক স্বাভাবিক হয়ত আর কয়টা দিন গেলে আগের মতো হেসে হেসে কথা বলবে। এই আশায় পথ চেয়ে বসে মামুন। আগুন এখন মাকে মামুনের সামনে বউয়ের মতো ট্রিট করে। মনে হয় ওর বউ। এই একমাসে কত দিন যে মামুনের সামনে মাকে চেপে ধরে চুমু খেয়েছে তার ঠিক নেই। তবুও মামুন কিছুই বলেনি। কারন মামুনের বিশ্বাস মা ওকেও দিবে। কারন সেই দিন রাতে মা ওকে এমন কিছুরই আভাস দিয়েছিলো। এখন শুধু অপেক্ষা নিজের করা পাপ টাকে সবার ভিতর থেকে ভুলানো, মামুন সেই কাজ টুকু করছে। সবার সাথে ভালো ব্যাবহার করে। দেখা যাক ভাগ্য কি আছে।
.
.
রাতে দোকান বন্ধ করে মামুন বাড়ি ফিরে দেখে মা বারান্দায় বসে আছে। রাতে বাজে এখন বারোটা এখনো মাকে বসে থাকতে দেখে অবাক হলো।
- এত দেরি হলো কেনো..?
মায়ের গম্ভীর কন্ঠ, মামুন উত্তর দিলো,
- বন্ধুদের সাথে ছিলাম..
- হাত মুখ ধুয়ে আয়.. খাবার বাড়ছি..
মামুন ঘরে গিয়ে প্যান্ট শার্ট খুলে, শুধু একটা লুঙ্গি পড়ে খালি গায়ে বের হয়ে হলো। হাত মুখ ধুয়ে খাটে উঠে বসে পড়লো,
মমতা ছেলেকে খাবার বেড়ে দিয়ে বলে,
- আমি একটা সিদ্ধান্ত নিছি..
- কী.. সিদ্ধান্ত..?
- তোর বিয়ে..
মামুনের মুখ টা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো,
- মা প্লিজ.. আমি তোমার সাথেই ভালো আছি..
- তুই আমার ছেলে, আমি মরন পর্যন্ত তোর পাশে থাকবো কিন্তু তোকে আগে বিয়ে করতে হবে! তোকে বিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছিনা! আবার কখন কোন দূর্ঘটনা ঘটাবি কে জানে!
- মা আমি বিয়ে করতে পারবোনা। আমি এমনি ভালো আছি! যতদিন তোমার কাছ থেকে আগের মত ভালোবাসা না পাচ্ছি ততদিন এমন ভাবেই থাকতে চাই! আমি তোমাকে ছাড়া আমার জীবনে এখন অন্য নারী কল্পনাও করতে পারিনা!
- কল্পনা করতে পারিস কিনা তার নমুনা আমার দেখা শেষ। এখন বাপ তোর হাত দুটো ধরি, তুই আমাকে বিয়ে করে উদ্ধার কর..
মামুন এবার সিরিয়াস কথার মধ্যে মায়ের কথায় মুচকি হেসে বলে,
- তোমাকে বিয়ে করে উদ্ধার করবো..?
- হুমম!
- আচ্ছা আমি রাজি..
মমতা শান্তির শ্বাস নিলো,
- যাক শুনে খুশি হলাম..
- কাজী ডাকি এখন..
মমতা অবাক হলো,
- এখন কাজী ডেকে কী করবি..?
- বিয়ে করবো..
- কাকে..
মামুনের ঠোঁটে তখন মিটিমিটি হাসি খেলা করছে,
- তোমাকে! তুমিই না বললে, তোমাকে বিয়ে করে উদ্ধার করতে। আর তোমার মত সুন্দরী নারীকে আমি কিভাবে না করতে পারি বলো..
ছেলের রসিকতায় রাগ বা হাসি কিছুই পেলো না মমতার। স্বাভাবিকভাবেই ছেলের কথার উত্তর দিলো,
- করতাম কিন্তু তুইতো ভার্জিন না।
মামুন হাসি বন্ধ হয়ে গেলো। চেহারায় ভেসে উঠলো আফসোসের ঘনঘটা। ইস! তবুও নিজেকে দমালো না। ট্যারাচোখে তাকিয়ে মাকে বলে,
- ইসস! তুমি মনে হচ্ছে ভার্জিন...?
- হুমম! আমিও ভার্জিন না! কিন্তু আমি কি তোর মতো বিয়ে করতে চাইছি তোকে..? আমি শুধু আমার ডিমান্ড জানালাম যে আমাকে বিয়ে করতে হলে তাকে ভার্জিন হতে হবে!
মামুন আর কি করবে ভেবে পেলো না। মুখ অসহায় কন্ঠ বের হলো,
- তোমার ছেলে হিসাবে তো এই দিকটায় একটু ছাড় দিতে পারো.. আমি নাহয় একটা বড় ভুল করে ফেলেছি। আর তুমি সেটাই ধরে বসে আছো..?
মামুনের অসহায় কণ্ঠ শুনে মমতার ভিতরে হাসি আসলেও বাইরে সেটা প্রকাশ করলো না। মা ছেলের এই আলোচনা যদি বাইরের স্বাভাবিক কোনো মানুষ শুনে তাহলে হয়ত ছি ছি করতে গ্রাম পার হয়ে যেতো। কিন্তু মমতার পরিবারের এখন ওপেন অজাচার চলে। গত একমাসে মামুনের সামনে আগুন মমতাকে চুদা ছাড়া প্রায় সব ধরনের রোমান্স করেছে। সেই জন্যই এখন আর মামুনের কাছে কোনো রকম রাগ ঢাক রাখেনা মমতা। কথা বাত্রা এখন দেবর ভাবির মত চলে।
যদিও মামুনের করা পাপ টাকে মমতা এখনো মেনে নিতে পারেনি। মনে পড়লে এখনো কেমন যেনো অন্ধকার লাগে। তবুও মা তো, কিভাবে পারবে গর্ভের ছেলেকে ছুড়ে ফেলতে.. তাইতো মামুন ওকে এতো কষ্ট দেওয়ার পরেও কোনো রকম পদক্ষেপ মমতা মামুনের বিরুদ্ধে নেয়নি।
মমতা ছেলের চোখের দিকে দৃষ্টি ফেলে গম্ভীর স্বরে বলে,
- বাজে কথা রাখ। যেটা বললাম সেটার উত্তর দে! তুই বিয়ে করবি কিনা সেটা বল। যদি হ্যা বলিস তাহলে তোর জন্য ছোট্ট একটা সারপ্রাইজের ব্যাবস্তা রাখবো তোর বিয়ের দিন!
মামুন কৌতূহল বোধ করলো, মা ওকে কি সারপ্রাইজ দিতে পারে তাও আবার বিয়ের দিন..? কি হতে পারে..?
- যদি না রাজী হই..?
- তাহলে সারাজীবন একাকীত্ব বরণ করার জন্য তৈরি হ..
.
.
.
.
to be continue