SON LIFE- ছেলের জীবন - অধ্যায় ৪
FOUR
.
.
মমতা দুপুরে জেরিন ডেকে নিলো আগুন কে গোসল করাবে বলে,
- ইসস! কি নোংড়া!
জেরিনের নাক সিঁটকানো দেখে আগুন ক্ষেপে গেলো,
- মা তুমি এই ডাইনি কে কেনো ডেকেছো..! ভাগাও একে..
- ইসস! এসেছে আমার রাজপুত্তুর। সামান্য ওয়াশরুমে যেতে পারেনা তার আবার ডায়লগ।
আগুনের হাত নিশপিশ করে উঠে জেরিনকে মারার জন্য,
- মা আমার কিন্ত রাগ হচ্ছে..!!
মমতা বাইরে গোসলখানায় দুটো চেয়ার রেখে আসলো। এসে দেখে দুটোর অবস্তা এই,
- এ তোরা থামবি.. সব সময় দুটো লেগে থাকিস!! জেরি ধর তো। আর সাবধানে ধরবি।
মমতা আর জেরিন আগুন কে হুইলচেয়ার বসালো, তার পর নিয়ে চলল গোসলখানায়। গোসল খানাটা টিন দিয়ে ঘেরা।
সেখানে দুটো চেয়ার পেতে রাখা, মমতা আর জেরিন আবার ধরে চেয়ারে বসালো, ব্যান্ডেজ করা পাটা অন্য চেয়ারে উঠিয়ে দিলো, তারপর মমতা ভালো করে পা টায় পলিথিন পেচিয়ে দিলো যেনো পানি না ঢুকে যায়।
আগুনের গা থেকে গেঞ্জি খুলে নিলো, তারপর মগ দিয়ে পানি দিতে শুরু করে..
আগুন মাকে থামিয়ে বলে,
- মা.. ও যাচ্ছে না কেনো..?
জেরিন কে দেখিয়ে বলল কথাটা।
মমতা ছেলের গায়ে পানি দিতে দিতে বলে,
- জেরি আজকে তোকে ঘসে ঘসে পরিষ্কার করবে.. আমার হাত ব্যাথা..!!
আগুন এবার চেচিয়ে উঠে,
- জীবনেও না..!! আমি মরে গেলেও ওকে আমার গায়ে হাত দিতে দিবোনা.. পারলে তুমি দাও না পারলে থাক..!
মমতা হাতের ইশারায় জেরিন কে চলে যেতে বলে,
- নে এবার হয়েছে। মায়ের কষ্ট তোরা জীবনেও চোখে দেখবি না..!!
মমতা ছেলের সারা গা ভিজিয়ে সাবান নিলো,
- আজকে ও কি.. বারন করবি..?
আগুন লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলে। মা আজকেও ওর বাড়ায় হাত দিবে, শুধু দিবেই না ডলে ডরে পরিষ্কার ও করবে। আগুনের লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করে মাকে ওর বাড়ায় হাত দিতে দেখলে।
আগুন মাথা নাড়ে.. নাহহ! দিবেনা।
মমতা সাবান ছেলের পা থেকে মাথা পর্যন্ত চুল পরিমান ও বাদ রাখলোনা। সব জায়গায় ঘসে ঘসে সাবান দিয়ে দিলো,
এবার সেই ছোটা খোকা পরিষ্কার পালা এলো, মমতা হাতে সাবান নিয়ে ছেলের লুঙ্গির ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিলো, এমনিতেই ছেলের এক্সিডেন্টের পরে অনেক বার ছেলের বাড়া বা ন্যাংটা দেখেছে। এমন কি পায়খানা করার পর ছেলের পাছাও ধুয়ে দিতে হয়েছে ওকে। ওর মনে এটা নিয়ে কোনো রকম খারাপ চিন্তা আসেনা, অসুস্থ ছেলেকে মা না দেখলে কে দেখবে..?
মমতা সাবান ছেলের কুচকি তে ভালো করে মাখিয়ে ঘসে দিলো,
- আহহ! মা ব্যাথা করছে.. আস্তে করো।
আগুন মাথা নিচু রেখেছে, ও পুরুষ মানুষ এটা কি মা বোঝেনা। একজন পুরুষের বাড়ায় নারী ছোয়া পেলে দাড়াবেই, তা সে যেই হোক। মায়ের হাত এখনো বাড়ায় লাগেনি তবুও বাড়াটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে।
- এই জন্যই বলি একটু নিয়মিত গোসল করতে। তাহলে তো আমাকে এমন কষ্ট করতে হয়না৷ ময়লা জমে আস্তরণ পড়ে গেছে।
মমতা এবার ছেলের বাড়ায় সাবান দিলো, ছেলের বাড়াটা ভালোই বড়। একটু বেশিই বড় বলা যায়,বউকে ভালোই সুখ দিতে পারবে।
- ইসস! লোম গুলোর কি অবস্থা এ। কাটতে পারিস না..?
বাল গুলো মমতার হাতে জড়িয়ে যাচ্ছে, ছেলের বাড়া সম্পুর্ন দাড়ানোর আগেই কাজ সাড়তে হবে। তাই তাড়াতাড়ি ডলে দিয়ে হাত লুঙ্গির ভিতরে থেকে বের করে আনলো।
তারপর পানি দিয়ে ভালো করে গোসল করিয়ে দিয়ে। গামছা দিয়ে গা মুছিয়ে দিলো।
লুঙ্গি টা পরিবর্তন করে, জেরিন কে ডাকলো।
জেরিন এসে আগুন কে বলে,
- একটা গরুকেও এতো ডলে গোসল করানো লাগেনা, যতটা এই ষাঁড় কে লাগে।
মমতা তাড়া দিলো,
- জেরি আগে ধর, বাইরে গিয়ে যত পারিস ঝগড়া করিস।
আগুন রাগে কিড়মিড় করছে। এই শালির বেটিকে কি যে করবে ও নিজেও জানে না।
আগুন কে নিয়ে বাইরে উঠানে বড় গাছের ছায়াতে রাখলো, সামনে আরেক টা চেয়ার দিয়ে পা তুলে দিলো। তারপর মমতা বলে,
- আমি ঘর পরিষ্কার করবো,তত সময় এখানে থাক।
মমতা চলে গেলো,
জেরিন ও চুপচাপ আরেকটা চেয়ার নিয়ে এস বসল আগুনের পাশে।
- তোমার লজ্জা করেনা.. মাকে দিয়ে এতো কষ্ট করাতে..?
আগুন জেরিনের দিকে চাইলো,
- কেনো...?
- যে কাজ গুলো তোমার বউ দিয়ে করানোর কথা, সেখানে তুমি মা দিয়ে করাচ্ছো।
- তাতে তোর কি..? আমার মা আমার জন্য কষ্ট করে তাতে তোর ফাটছে কেনো..?
- কারন আমি বড় মার কষ্ট দেখতে পারিনা..
- দেখতে বলে কে তোকে..? যাহহ! ফট! নিজের পথ দেখ।
জেরিন মুখ ভেংচি দিয়ে বলে,
- তাড়িয়ে তো দিচ্ছো,কিন্ত একটু পর আবার তো আমাকে তোমার লাগবে.. তখন কি করবে..?
- লাগবেনা তোকে যাহ!
জেরিন সে কথা শুনলো না মনে হয়। ও এবার আগুনের ব্যান্ডেজ মোড়ানো পা টা আলতো করে আকড়ে ধরে, যেনো আগুন ব্যাথা না পায়।
শুধু পায়ের আঙুল কয়টা বাইরে, নক গুলো বড় হয়ে গেছে। জেরিন চুপচাপ উঠে গেলো, একটু একটা নেইল কাটার এনে আগুনের পায়ের কাছে বসে পড়লো।
যত্নের সহিত নক গুলো কেটে দিলো, শুধু একপা হাত পা সব নক কেটে দিলো। আগুন কিছুই বললনা,বলেও কোনো লাভ হবেনা।
জেরিন এবার নিজের চেয়ারটা আগুনের হাটুর কাছে রেখে মুখোমুখি বসলো,
- আজ তোমার বউ থাকলে এসব কাজ করে দিতো।
জেরিন কথা শুনে হাসলো আগুন,
- যেখানে তুই সব করছিস তাহলে বউয়ের দরকার কি..?
- আমি সব সময় তোমার সাথে থাকবো..?
- কেনো.. তুই কোথায় যাবি..?
- বিয়ে করে পরের ঘরে যেতে হবেনা..!! তখন কি আর চাইলেও তোমার সেবা করতে পারবো..?
আগুন মুখটা পানসে হয়ে গেলো,
- তুই এখনো ছোট,বিয়ের কথা আসছে কেনো..?
জেরিন আগুনের চুপসানো মুখ দেখে খুশি হলেও প্রকাশ করলোনা,
- গ্রামের মেয়ে দের আমার মতো বয়সেই বিয়ে হয়।
আগুন ধমক দিলো জেরিন কে,
- অন্য মেয়ে দের কিন্ত তোর হবেনা.. তুই রাজি হবিনা..! বলবি আমি পড়ালেখা করতে চাই।
জেরিন এবার আগুনের কোলে রাখা হাতটা নিজের হাতে নিয়ে নিলো, হাতের বাঁধন শক্ত করে বলে,
- কেনো..? আমি রাজি হবোনা কেনো..! আর কার জন্য পড়ালেখা করবো..?
আগুন নিষ্পলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল, পরির মতো দেখতে মেয়েটার দিকে।
ঠিক তখনি হাজির হলো মামুন, সকালে বের হয়েছিলো এখন আসলো।
জেরিন কে আগুনের এতো কাছে বসে হাতে হাত রাখা দেখে ওর রাগে শরীর জ্বলে উঠল।
কিন্ত কিছুই বলতে পারলো না, কারন জেরিন আগুন চাচাতো ভাই বোন। বসতেই পারে খারাপ কিছু নেই। কিন্তু মামুন জেরিনের খবর পা থেকে মাথা পর্যন্ত জানে, এই মেয়ে আগুনের জন্য পাগল।
মামুন এগিয়ে গিয়ে জেরিনের পিছে দাড়িয়ে বলে,
- কিরে এখানে বসে কি করিস তোরা..?
মামুন কে দেখেও জেরিন হাত ছাড়লোনা,আরো শক্ত করে ধরে রাখে। আগুন টানাটানি করেও ছাড়াতে পারলোনা।
- ভাইয়া মা আমার রুম পরিষ্কার করছে তাই বাইরে বসে আছি।
মামুন এবার জেরিনের ঝুটি করা চুলটা হালকা টেনে দিয়ে বলে,
- তুই এমন ওর হাত ধরে বসে আছিস কেনো..? ছাড় ওর হাত।
জেরিন একটুও ছাড়লো না, মিষ্টি হেসে বলে।
- তোমার ছোট্ট ভাইয়ের খুুব হাত ব্যাথা করছে তাই বসে বসে টিপে দিতে বলল বড়মা।
আগুন চোখ বড় বড় করে তাকালো জেরিনের দিকে, এই মেয়ে তো বহুত চিজ।
মামুনের মনে জ্বলন দেখা দিলো, জেরিন কেনো আগুনের হাত টিপে দিবে..? জেরিন শুধু ওর..!
হনহন করে চলে গেলো ভিতরে, আগুনের রুমে গিয়ে দেখলো মা শাড়ি কোমরে বেঁধে আগুনের বিছানা উল্টে ফেলেছে। ভারী বুকটা আটকে রেখেছে। মায়ের নরম পেটটা আঁচলের তলা দিয়ে উকি দিচ্ছে। ঘামে সারা শরীর ভেজা। সকালে কাকির কথা মনে পড়লো। কাকি বলেছিলো মায়ের সাথে করতে, আসলে কি মাকে কেউ করে..?
মমতা কাজ করতে করতে ছেলেকে দেখে বলে,
- এখানে কি..?
মামুন কোনো কথা না বলে, মায়ের হাত ধরে নিজের সামনে দাড় করালো।
- তুমি আজকেই কাকাকে বলবে.. যদি রাজি না হয় তাহলে আর তোমাকে জ্বালাবো না।
মমতা একটা দীর্ঘশ্বাস নিলো,
- আচ্ছা ঠিক আছে বলবো..
মামুন খুশি তে মাকে ঘামন্ত শরীরটা বুকে জড়িয়ে নিলো। কি নরম..! মমতার ভারী বুকটা মামুনের শক্ত বুকের চাপে পিষ্ঠে গেলো।
মমতা মোচড়ামুচড়ি করছে ছেলের বুক থেকে ছাড়িয়ে নিতে।
- ওইই! ছাড় বেয়াদব ছেলে..?
মায়ের ধমক খেয়ে না চাওয়া সত্তেও ছেড়ে দিলো মামুন।
.
.
বিকালে মমতা কায়নাল কে মামুনের কথা বলল, কায়নাল তৎক্ষণাৎ কোনো সিদ্ধান্ত না দিলেও, আশ্বাস দিয়ে রাখলো ভেবে দেখবে।
মামুন শুনে খুশি হলো, যে তাকে ফেরায় তো নি। সন্ধায় চলে গেলো আবার ঢাকায়।
তারপর থেকে নিয়মিত আবার টাকা পাঠাতে শুরু করে বাড়িতে।
এইভাবে কেটে গেলো আরো তিন মাস,
এখন আগুনের পা ঠিক হয়ে গেছে কিন্ত পুরোপুরি না। পায়ে খুট দিয়ে হাটে।
মমতা স্বামির জমি জায়গা যা ছিলো, সব ভাগে দিয়ে দিছে। সেখান থেকে ভালোই টাকা পায় ও।
আগুন কে কলেজে ভর্তি করিয়েছে।
সব কিছু ঠিক ঠাক চললেও, এর মাঝে মামুন তোড়জোড় শুরু করে।
- হ্যালো মা.. কেমন আছো..?
- ভালো.. তুই কেমন আছিস বাবা..?
- ভালো.. সব ঠিকঠাক চলছে বাড়ি..
- হুমম
মামুন এবার কিছু সময় চুপ থেকে বলে,
- কাকা আর কত দিন অপেক্ষা করাবে..?
- আমাকেও তো কিছু বলেনি তোর কাকা..
- তুমি আজকে আবার জিজ্ঞেস করবা..
- তুই তাহলে কয়দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি আয়।
- ঠিক আছে আসবো তার আগে আমাকে কাকার মতামত জানাও।
- আচ্ছা আমি আজকে বলবো..
- হুমম! তাহলে রাখি এখন..
- রাখ, ভালো থাকিস..
টুটটুট..
মমতা ভুলেই গেছিলো মামুনের সাথে জেরিনের বিয়ের কথা। আচ্ছা কায়নাল যদি রাজি না হয়। তাহলে কি আর টাকা পাঠাবে বাড়ি মামুন..?
.
সেদিন সন্ধ্যায় কায়নাল স্ত্রি সহ মমতার সাথে বসলো,
মমতা সরাসরি প্রস্তাব দিলো। কিন্তু কায়নাল রাজি হলেও শিল্পি মুখের উপর না করে দেয়, এমন কি অতিতের করা মামুনের সকল ঘটনা স্বামিকে খুলে বলে।
এসব শুনে কায়নাল রাগে ফেটে পড়ে ভাইপোর উপর। এত বড় সাহস মামুনের।
মমতা আর কথা বলার সাহস পায়না,মাথা নিচু করে বসে বসে নিজের ছেলের কুকীর্তি শোনে।
.
রাতেই আবার কল আসলো মামুনের, মমতা ছেলেকে সন্ধ্যার সব ঘটনা খুলে বলল,
মামুন কিছু না বলে ফোন কেটে দিলো।
.
.
.
.
ওই মাস থেকেই টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলো মামুন। এমন কি মা ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ ও করে না। মমতা অনেক চেষ্টা করেছে,কিন্ত সফল হয়নি।
এভাবেই দিন কাটতে লাগলো বিধবা মমতার, মাঝে মাঝে খুব কান্না পায়। কি আছে এই জীবনে..?
জমির ভাগের টাকা দিয়ে, অনেক কষ্টে দিন কাটতে লাগলো, ছোট্ট ছেলেটাও আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠছে।
.
.
দুই বছর পর....!!!
মামুন আজকে বাড়ি যাচ্ছে, এই দুই বছর বাড়ির কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এমনকি মায়ের সাথে ও না।
বাড়ির আঙিনায় যখন ঢুকলো সব কিছু পরিবর্তন মনে হলো।
সব কিছু নতুন নতুন মনে হচ্ছে। মামুন গিয়ে নিজেদের বাড়ির সামনে দাড়ালো। যেরকম দেখে গেছিলো এখনো তেমনি আছে। কিন্ত এখন সব কিছু কেমন চকচক করছে। যা একটা সুখি পরিবারের চিহ্ন বহন করে।
এখন বাজে দুপুর দুইটা কিন্তু কারো দেখা নেই বাড়িতে,কারন কি..? সবাই কই..?
মামুন এগিয়ে বারান্দায় উঠলো, ওদের বাড়িতে দুটো রুম কিন্তু দুটো রুমের দরজা বন্ধ।
আস্তে করে মায়ের রুমে নক করলো,
- মা.... মাহহহ
কোনো সাড়াশব্দ এলোনা, আবারও ডাকলো কিন্ত এবারও তাই,
এবার একটু জোরে ডাকলো, খুট করে দরজা খুলে গেলো কিন্তু। মায়ের রুমের নাহ! আগুনের রুমের..? আগুন চোখ ডলতে ডলতে দরজার সামনে দাড়ালো। বোঝায় যাচ্ছে গভীর ঘুমে ছিলো।
মামুন মনে করেছিলো আগুন ওকে দেখে খুশি হবে কিন্তু না। আগুনের শক্ত কন্ঠে ওর ধারনা ভুল হলো,
- মাকে কেনো খুঁজছেন..?
মামুন অবাক হয়ে গেলো ভাই তাকে আপনা আপনি করে কথা বলছে..?
মামুন কাঁধের ব্যাগটা নিচে রেখে আগুন কে জড়িয়ে ধরতে গেলো, কিন্তু ও বাধাপ্রাপ্ত হলো..
আগুনের বিরক্তিকর কন্ঠ,
- দূরে থেকে কথা বলুন..!
মামুন অবাক হলেও কিছু মনে করলোনা।
- মা কোথায়..?
আগুন ইচ্ছা না থাকা সত্তেও বলে,
- বাজারে..
মামুন মনে করলো, মা বোধায় বাজার করতে গেছে..
- ওহহ! আসবে কখন..?
- জানিনা..
- জানিস না মানে..?
আগুনের রাগ হলো ব্যাপক, শক্ত কন্ঠে বলে,
- জানিনা মানে জানিনা..!! সে কৈফিয়ত আপনাকে দিবো কেনো..
একতো আমার কাঁচা ঘুম ভেঙে দিয়েছেন, আবার জোর গলায় কৈফিয়ত চাচ্ছেন। যান যার কাছে এসেছেন তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। আমাকে আর ডিস্ট্রাব করবেন না প্লিজ, এখন আমার ঘুমানোর টাইম। না ঘুমালে মায়ের বকা শুনতে হবে।
কথা শেষ করেই ধপ করে ভিতর থেকে দরজা লাগিয়ে দিলো আগুন।
মামুন হতভম্বের মত দাড়িয়ে থাকলো ছোট্ট ভাইয়ের দরজার সামনে। এই সেই আগুন..? যে ওর সামনে কোনো দিন উচু গলায় কথা বলেনি। আর এখন ওর চোখে চোখ রেখে কথা বলছে..?
এত সাহস কোথায় পেলো..?
মামুন বারান্দায় রাখা খাটে গিয়ে বসে পড়লো, দীর্ঘ জার্নি করার পর ক্লান্ত লাগছে অনেক..!
বিছানায় গা এলিয়ে ওখানেই ঘুমিয়ে পড়ে মামুন।
.
.
.
রাতে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো মামুনের,
- এখানে ঘুমিয়ে আছিস কেনো..?
বিকাল পর্যন্ত মায়ের অপেক্ষায় বসে ছিলো মামুন, কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে টের পাইনি। এখন কত বাজে..?
চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে বসে, মা দাড়িয়ে আছে। পড়নে একটা লাল শাড়ি, মাথায় ঘোমটা দেওয়া। খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
- কি হলো কথা বলছিস না কেনো..?
- কেমন আছো মা..?
মমতা হাসলো,
- ভালো, অনেক ভালো..
- তুমি জানো তোমার জন্য সেই দুপুর থেকে বসে আছি এখানে..?
- হুমম জানি.. আমার ছেলে বলেছে।
মামুন মায়ের কথায় আশ্চর্য হচ্ছে,মা কি ভাবে ওর সাথে এতো স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে..?
- কোথায় ছিলে তুমি..?
- বাজারে..
- এতক্ষণ..?
- হুমম
- কি করো বাজারে তুমি..?
- দোকান চালাই..
কিহহ! ওর মা বাজারে দোকান চালাই..? একটা ভদ্র ঘরের গৃহবধূ কেনো এই কাজ করবে..?
মামুন এবার উঠে দাড়ালো, মাকে ভালো করে খেয়াল করে। মায়ের আচরণ বলে দিচ্ছে, মা ওকে দেখে খুশি হয়নি। এই জন্য কোনো রকম কাট ছাট না রেখে কথা বলছে।
- ওসব কথা থাক, আমার খিদা লাগছে ভাত খাবো আমি.. তুই কি খাবি..?
- হুমম!
মা চলে গেলো,
মামুন আবার বসে পড়ে বিছানায়। মা ওর সাথে অচেনা আচরণ করছে। আচ্ছা ওর কি দোষ..? মায়ের কাছে সামান্য আবদার করেছিলো, যেটা মা ওকে দিতে পারেনি.. তাহলে রাগ না হয়ে পারে। দুবছর আগে যদি জেরিনের সাথে ওর বিয়ে হত তাহলে তো সবকিছু ঠিকঠাক চলতো।
একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে চুপচাপ বসে থাকলো, আচ্ছা আগুন কোথায়..? ওকে দামই দিচ্ছেনা ওর ছোট ভাই।
মা এসেছে.. হাতে ভাতের প্লেট..
- পা উঠিয়ে বস..
মামুন উপরে উঠে বসলো, মা খাবার রেখে পানি দিয়ে আবার চলে গেলো। মামুন বোকার মত বসে থাকলো।
একটু পর মা আবার আসলো। হাতে আরেকটা প্লেট কিন্ত ভাত অনেক বেশি।
- কি হলো খাসনা কেনো..? ওই এক ভাগেই তরকারি আছে এখন। আর কিছু নেই।
কথা শেষ করে মা আগুনের রুমে চলে গেলো।
রুমের দরজা হা করে খোলা রাখা। মায়ের কথা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে মামুন,
- আব্বা আয়.. অনেক পড়েছিস এখন খেয়ে নে..!!
- তোমার সাথে খাবো আম্মু..!!
- আমিও খাচ্ছি তোর সাথে আয়। দেখছিস না ভাত অনেক বেশি করে এনেছি..
তারপর আর কোনো শব্দ পাওয়া গেলোনা..
মামুর একটা হতাশার নিঃশ্বাস ফেলে মুরগির মাংস দিয়ে খাওয়া শুরু করে..!
.
.
.
to be continue