সুমনের পরবর্তী জীবন - দ্বিতীয় অধ্যায়। - অধ্যায় ৫৫
সুমনের পরবর্তী জীবন - দ্বিতীয় অধ্যায়-পর্ব-৫৪
হঠাৎ আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো একটা কালো জরুলের দৃশ্য ডেপুটির পিএর হাতে আমি জরুল দেখেছি। আমি তানিয়াকে বললাম - তোমার ড্যাডি কোথায় একবার তাঁকে ডাকবে ? টানিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল - আমি এখুনি ডেকে আনছি। একটু বাদে তানিয়া ওর বাবাকে সাথে নিয়ে এলো। ডেপুটি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন - কি ব্যাপার সুমন কোনো দরকারি কথা ? সবাইকে ঘর থেকে চলে যেতে বলতে সবাই চলে গেলো। আমি দরজা বন্ধ করে ওনাকে বললাম - একবার আপনার পিএকে ডেকে পাঠান না। শুনে উনি বললেন - ও এখুনি আসবে তোমার টিকিট নিয়ে আর ওকে আজকেই বলে দিয়েছি হোটেল থেকে চেক আউট করিয়ে তোমার জিনিস পত্র এখানে নিয়ে আসতে।
বললাম - ও এলে আমাকে একবার ডাকবেন। ডেপুটি জিজ্ঞেস করলেন কেন কি এমন করেছে আমার পিএ ? আমি দরজা খুলে দিলাম বললাম ও এলেই বুঝতে পারবেন আর এখানকার পুলিশ স্টেশনের কাউকে আপনি চেনেন ? বলল - কেন চিনবো না সিআই আমার বিশেষ পরিচিত। বললাম - ওনাকে আগে থেকে জানিয়ে রাখুন যাতে আমি বললেই ওনাকে এখানে আসতে বলে দেবেন। ডেপুটি খুব চিনতো মুখে বেরিয়ে যেতে যেতে বললেন - আমি এখুনি জানিয়ে রাখছি ওকে। আমি ঈশিতা আর তানিয়াকে বললাম - এখন আমাকে বসার ঘরে যেতে হবে যা কথাবার্তা হবার সব রাতে হবে। তানিয়া শুনে বলল - শুধু কথাবার্তা কোনো একশন হবেনা ? আমি ওকে বললাম আগের একশনটা তো হোক তারপর তোমাদের সাথে একশন হবে।
আমি বসার ঘরে এসে বসলাম। ডেপুটির স্ত্রী আমার কাছে এসে বলল - কি হলো তুমি আবার এখানে এলে ? বললাম বিশেষ একটা দরকার আছে ওই পিএ বাবুর সাথে। মেন্ গেটের বেল বাজতে সোনিয়া উঠে গিয়ে খুলে দিলো। পিএ ঢুকলো আমাকে দেখে নমস্কার জানিয়ে আমার হাতে টিকিট আর সুটকেস দিয়ে বললেন কালকে এগারোটা দশের ফ্লাইট। টিকিট নিয়ে দেখার ভান করে আমি ওর হাতটা দেখতে লাগলাম। ওর দেন হাতে তানিয়ার কথা মতো একটা জরুল রয়েছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার জড়ুলটা তো বেশ সুন্দর। শুনে উত্তর দিলো কি করবো বলুন এটা আমার জন্মের থেকেই আছে। তানিয়ে ঘরে ঢুকে আমার পাশে বসল আমি ওর কানে কানে বললাম - ওর হাতের জরুলতা তুমি চিনতে পারছো। তানিয়া দেখে আমার কানে কানে বলল - এই হাতটাই আমি দেখেছি দাড়াও বাবাকে ডেকে নি। ডেপুটি ঘরে ঢুকে আমার দিকে তাকাতেই আমি ফোন করে কথা বললাম। ওখানে দাঁড়িয়েই উনি ফোন করে আসতে বললেন সিআই কে। ডেপুটি ওকে বললেন - অরে তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেন বস একটু চা-কফি খেয়ে তবে যাবে। বেচারি জানে না যে ও কি ফাঁদে পড়তে চলেছে। পিএ মশাই যখন চা খেতে ব্যস্ত ঠিক সেই সময়েই সিআই এসে হাজির। ডেপুটি ইশারাতে পিএর দিকে দেখিয়ে বললেন - কিডন্যাপের এ হচ্ছে মেইন লোক এনাকে এরেস্ট করুন। সাক্ষী দিতে হলে আমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করুন। তানিয়া বলল - হ্যা স্যার এই ছিল আর আমার সাথে অসভ্যতাও এই লোকটাই করেছিল আমি করতে সাক্ষী দিতে রাজি আছি। সিআই ওর কলার চেপে ধরে দাড়করিয়ে একটা ঠাসিয়ে চর মেরে জিজ্ঞেস করল - কিডন্যাপ করার খুব শখ তোর চল একবার থানায় তোর পিছন দিয়ে রুল ঢুকিয়ে শিখিয়ে দেব কিডন্যাপ কি ভাবে করতে হয়। বেচারি ভাবতেই পারেনি যে কি ভাবে ও ধরা পড়লো আর ধরা পড়ার কথা ও মনেও আনেনি। সিআই ওকে নিয়ে চলে গেলেন। ডেপুটি আমার কাছে এসে আমার কাঁধে দুই হাত রেখে বললেন - সত্যি সুমন তোমার অসাধারণ অব্জার্ভেশন তাই আজ ওকে ধরতে পারলাম। কি করে জানলে তুমি ? বললাম - আমি তানিয়াকে জিজ্ঞেস করছিলাম যে ও কাউকে চিনতে পারবে কিনা ও আমাকে একটা লোকের হাতে জরুল দেখেছিলো সেটা বলতেই আমার আপনার পিএর কথা মনে হলো তাই আপনাকে আমি ওকে ডাকতে বলেছিলাম আর ও আসতেই আমি তানিয়াকে ইশারাতে জিজ্ঞেস করতে ও কনফার্ম করলো। ও যে আর কি কি করেছে ওর মেয়ের সাথে সেটা আর বললাম না। জানিনা রাতে হয়তো ওকেও আমি সেগুলোই করবো।