সুমনের পরবর্তী জীবন - দ্বিতীয় অধ্যায়। - অধ্যায় ৮৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-59539-post-5570059.html#pid5570059

🕰️ Posted on April 18, 2024 by ✍️ gopal192 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1507 words / 7 min read

Parent
পর্ব-১৬   সোমু ওদের  ওখান থেকে বেরিয়ে হোটেলে ঢুকতেই সমরদা ওকে ধরে জিজ্ঞেস করল - তুই রোজ রোজ কোথায় উধাও হয়ে যাস না বললে আমি  বাড়িতে রিপোর্ট করবো।  শুনে সোমু হেসে বলল - তার আর দরকার  হবে না বাড়িতে সবাই জানে যে আমি কোথায় যাই কার সাথে দেখা করি।  সমরদা বলল - আমি তো জানিনা যে তোর কোনো  মানুষ এই মুম্বাইতে থাকে। সোমু বলল- তা থাকে না  এখন ওরা আমার পরম অনাত্মীয় হয়ে উঠেছে।  সমরদা কে সোমু সব খুলে বলতে বলল বেশ তা কবে বিয়ে করবি ? সোমু - আমি জানিনা সবাই যখন বলবে তখনি  করতে হবে তবে তোমাকেও আসতে  হবে এখানে  সাথে।  সমরদা - বলল সব কিছু ঠিক থাকলে এই ম্যাচের পর তোর চাকরি পাকা হয়ে যাবে আমার সাথে কথা হয়েছে।  তবে তোকে চ্যাম্পিয়নের মতো খেলতে হবে।  সোমু এবার একটু উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল কোথায় চাকরি হবে সেটা বলো খুব জানতে ইচ্ছে করছে।  সমরদা বলল - এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া -তে তবে পোস্টিং কোথায় দেবে জানিনা। সোমু সমরদার হাত ধরে বলল - তোমাকে  ধন্যবাদ এই সুখবরটা দেবার জন্য আমার খুব চিন্তা হচ্ছিলো যে বিয়ের কথা হয়ে গেছে অথচো কোনো রোজগার নেই আমার।   পরদিন সকাল থেকেই স্টেডিয়ামে গিয়ে প্রাকটিস চলছে।  সোমু দুটো পাস্ জোগাড় করে রিঙ্কিকে দিয়ে দিয়েছে, দুই বোন আসবে খেলা দেখতে তাই ও খুব মন দিয়ে প্রাকটিস করছে সমরদাও ওকে মন প্রাণ দিয়ে দেখাচ্ছে বিশেষ টেকনিক গুলো কি ভাবে সংঘর্ষ এড়িয়ে গোল করা যায়। দুপুরে ক্লাব হাউসেই স্নান খাওয়া সাড়া হতে সমরদা বলল - তোরা এবার সবাই একটু বিশ্রাম নে এখন আর প্রাকটিস করতে হবে না শুধু একটু  জিমে গিয়ে ব্যায়াম করে নিবি।  ঠিক সাড়ে ছটায় আমার মাঠে নামবো মনে রাখিস।  একটু বাদে সোমু সমরদাকে গিয়ে বলল - আমার ফোনটা একবার দাও না একবার মায়ের সাথে কথা বলি।  সমরদা ফোন দিতে সোমু ওর মাকে কল করল।  শিবানী ফোন ধরে জিজ্ঞেস করল - শরীর ঠিক আছে তো রে খোকা ? সোমুকে আদর করে মা মাঝে মাঝে খোকা ডাকে। সোমু বলল - মা এই ফাইনাল ম্যাচের পরে আমার চাকরি হয়ে যাবে পোস্টিং কোথায় জানিনা তবে চাকরি হবে নিশ্চই। শিবানীর চোখে জল চলে  এলো আশুবাবু শিবানীর চোখে জল দেখে জিজ্ঞেস করল - কি হলো সোমু ভালো আছে তো ? শিবানী ফোনটা ওকে দিতে হ্যালো বলতে  সোমু জিজ্ঞেস করল মা কথা বলল না কেন। ওর বাবা বলল - তুই কি এমন বলেছিস যে তোর মা কেঁদে ফেলল।  সোমু ওর বাবাকে ওর চাকরির কথা বলতে  উনি বুঝতে পারলেন যে এ শিবানীর খুশির কান্না। আশুবাবু বললেন  বাবা খুব ভালো করে খেল খুব ভালো জায়গায় চাকরি হবে তোর।  এখন রাখ রাতে ফোন করবো আমি।  সোমুর চোখেও জল ছিল সমরদা দেখে জিজ্ঞেস করল - কি হলোরে আমার বীরপুরুষের চোখে জল।  সোমু চোখ মুছে বলল -মা আমার এখানে আসতে  চাইছে আর আসতে পারছে না বলে কান্না করছে মা। সমরদা শুনে বলল - দাঁড়া আমি তোর মা-বাবাকে এখানে আনার ব্যবস্থা করছি।  ফোন বের করে কাকে যেন ফোন করল কথা হয়ে যাবার পর সোমুকে বলল - তুই আবার ফোন কর তোর মাকে আর বল বাবাকে নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে আসতে সেখানে একজন ওদের ফ্লাইটের টিকিট করে ওদের প্লেনে তুলে দেবে।  সোমু কথাটা শুনে সমরদার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। সমরদা তারা দিলেন কিরে ফোন কর। সোমু যথারীতি  অবাক হয়েই ওর বাবাকে ফোন করে সব বলতে উনি বলল - এতো তাড়াতাড়ি কি করে হবে। এবার মায়ের গলা পেলো মাকে বলতেই বলল - খোকা এখন রাখছি বাবা তৈরী হয়ে  বেরোচ্ছি। সমরদা আমার হাত ধরে বলল - এবার নিশ্চিন্তে থাক তবে এখানকার এয়ারপোর্ট থেকে ওনাদের এই স্টেডিয়ামে আনাটাই একটা সমস্যা হবে।  তুই বা আমি কেউই যেতে পারবোনা।  সোমু শুনে বলল - দাড়াও আমি মা-বাবাকে আনার ব্যবস্থা করছি। চল্লিশ মিনিট বাদে ওর মা আবার ফোন করল আর বলল - খোকা আমার এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেছি তবে এখনো  কেউ আমাদের কাছে আসেনি।  সমরদাকে কথাটা বলতে বলল ভিস্তারার টিকিট কাউন্টারে গিয়ে ওনাদের নাম বলতে বল আর সাথে আই কার্ড তাহলেই কাউন্টার থেকে টিকিট দিয়ে দেবে আর ওই কাউন্টারেই বলা আছে ওরাই সব ব্যবস্থা করে দেবে। সোমু নিশ্চিন্ত হলো একটু বাদেই সমরদা বলল - ফ্লাইট এখানে ৬:৪৫সে পৌঁছবে তোর লোককে বলেদে।  সোমু রিঙ্কিকে ফোন করে সব বলতে রিঙ্কি বলল - তুমি চিন্তা করোনা আমি ঠিক আন্টি আংকেলকে নিয়ে স্টেডিয়ামে পৌঁছে যাবো।  সোমু এবার একদম নিশ্চিন্ত হয়ে চুপ করে একটু বসে থেকে  জিমে চলে গেলো। ওদিকে শিবানী আর আশু দুজনে টিকিট নিয়ে ভিতরে ঢুকতেই একটি এয়ারপোর্টের ছেলে এগিয়ে এসে ওদের লাগেজ দেখে বলল - ইটা আপনাদের সাথেই নিয়ে নিতে পারবেন।  বোডিং পাশ নিয়ে সিকিউরিটি চেক করিয়ে ছেলেটি বলে দিলো ১৫ নম্বর গেটে গিয়ে টিকিট দেখলেই ওদের ভিতরে নিয়ে যাবে। শিবানী আশু গেটে যেতেই ফাইনাল কল হয়েছে ওদের মরডিং পাশ দেখে বলল - তাড়াতাড়ি যান বেশি সময় নেই।  ওঁরা ভিতরে ৱ্যাম্পের ভিতর দিয়ে সোজা এয়ারক্রাফটে পৌঁছে গেলো।  ওদের জীবনের প্রথম বার প্লেনে চড়া তাই দুজনেরই একটু ভয়  করছিলো।  এয়ার ত্রু এগিয়ে এসে ওদের বিজনেস ক্লাসের টিকিট দেখে বসিয়ে দিল , একজন ডিংক্স নিয়ে এলো  ওদের জন্য। শিবানী সব দেখে বলল - যেন নিজেকে কেমন যেন বড়লোক মনে হচ্ছে।  আশু হেসে বলল - এ সবই তোমার ছেলের জন্য আর ওর চাকরি তো এই এয়ারপোর্টেই হবে। শিবানী শুনে জিজ্ঞেস করল - তাহলে বল মাঝে মাঝে আমরাও প্লেনে করে যাতায়াত করতে পারবো। ওদিকে রিঙ্কি আর সোহিনি দুজনেই এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেছে যদিও প্লেন ল্যান্ড করতে এখন একটু দেরি আছে।  ওদের বড় গাড়িটাই নিয়ে  এসেছে  অবশ্য বাবাই এই গাড়িটা পাঠিয়ে দিয়েছেন আর বলে দিয়েছেন খেলা দেখে ওঁদের নিয়ে ওনার ফ্ল্যাটে গিয়ে উঠতে হোটেলে উঠতে  মানা করেছেন। প্লেন ঠিক মতো ল্যান্ড করলো সবার সাথে শিবানী আর আশু দুজনে বেরিয়ে এলো।  ওদের কে নিতে আসবে জানেনা রিঙ্কি একটা বোর্ডে শিবানী আর আশুর নাম লিখে দাঁড়িয়ে ছিল।  দূর থেকে দেখে শিবানী বলল - ওই দেখো আমাদের নাম লেখা একটা বোর্ড নিয়ে খুব সুন্দরী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।  শিবানী ওদের কাছে গিয়ে বাংলাতেই জিজ্ঞেস করল।  কিন্তু রিঙ্কি আর সোহিনি কিছুই বুঝতে পারলোনা।  রিঙ্কি হিন্দিতে জিজ্ঞেস করল -আপ দোনো সামনি মাম্মি ড্যাডি হো? আশু হিন্দিতে বলল -হাঁ।  বেশ রিঙ্কি আর সোহিনি দুজনে ওদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে  নিজেদের নাম বলতে শিবানী বুঝতে পারলো আর রিঙ্কিকে জড়িয়ে ধরলো। রিঙ্কি বলল - মা চলো সোমুর খেলা  শুরু হয়ে যাবে তোমার ছেলের খেলা দেখবে না।  শিবানী ওকে ছেড়ে দিয়ে গাড়িতে উঠতে গাড়ি তীব্র গতিতে ছুতে চলল।  মাঝখানে  কিছুটা  ট্রাফিক জ্যাম থাকায় আটকে পড়তে হোলো। শেষে স্টেডিয়ামে পোঁছে রিঙ্কি সোহিনি ওদের নিয়ে নেমে গাড়ি পার্কিং করতে বলেদিলো  ড্রাইভারকে। সোমুর ম্যাচের কিক অফ হয়ে গেছে আর মাঝে মাঝেই ভিআইপি গ্যালারির  দিকে দেখছিলো ওরা  এসেছে কিনা। সোমুর পায়ে বল ও এগিয়ে যাচ্ছে  বল নিয়ে গোলের কাছে পৌঁছে গেছে একবার শুধু পাশের গ্যালারির দিকে চোখ যেতেই রিঙ্কি হাত নাড়াচ্ছে দেখে নিশ্চিন্ত হয়ে গোলে শট মারলো আর সোজা গোলে ঢুকে গেলো বল।  সবাই হৈ হৈ করে ওকে জড়িয়ে ধরল সমরদা আনন্দে লাফাতে লাগলো। হাফটাইম পর্যন্ত আর কোনো গোল হয়নি মুম্বাই টিম অনেক চেষ্টা করেও একটাও গোল দিতে পারেনি। সোমুর টিম মাঠের বাইরে গিয়ে বসে  বিশ্রাম নিতে লাগলো।  কিন্তু সোমু সোজা ওর মা-বাবার কাছে গিয়ে প্রণাম করে বলল - আমি খুব খুশি হয়েছি তোমরা এসেছো। শিবানী সোমুর  মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করল। দ্বিতীয় হাফের খেলা শুরু হলো।  সোমুর শরীরে মনে স্ফূর্তি খেলে বেড়াচ্ছে ফুটবলকে নিয়ে ছেলে খেলা করছে  প্রতিপক্ষের সাথে।  গোলের কাছে একই বল নিয়ে এগিয়ে গেলো ওর আসে পাশে ওর টিমের কাউকে দেখতে পেলো না তাই নিজেই দূর থেকে  একটা শট মারল আর সেটা ধনুকের মতো বেঁকে গোলে ঢুকে গেলো।  এভাবে সোমু একই তিনটে গোল করে নিজের দলকে জিতি দিলো।  শেষ বাঁশি বাজার পরেই সমরদা দৌড়ে  সোমুকে বুকে জড়িয়ে ধরে তুলে নিলো।  অপোনেন্টের কোচ এগিয়ে এসে  সোমুকে জিজ্ঞেস করল এরপর কি ও মুম্বাই টিমে যোগ দিতে চায় কিনা।  সোমু হাত জোর করে বলল - আমি জানিনা যা জিজ্ঞেস করার আমার কোচকে জিজ্ঞেস করুন। ড্রেসিং রুমে গিয়ে ঘামে ভেজা জার্সি খুলে ফেলে স্নান করে নিয়ে নতুন জার্সি পরে বেরিয়ে এলো।  সমরদা ওকে নিয়ে গেলো ট্রফি নেবার জন্য।  ওর টিমের সবাই হাজির ট্রফি ওর হাতে তুলে দিলো চারিদিকে পটকা ফাটতে লাগলো। ওর হাতে ম্যান অফ  ম্যাচ আর টুর্নামেন্টের দুটো চেক তুলে দিলো। ধীরে ধীরে গ্যালারি ফাঁকা হয়ে এলো কিন্তু কিছু লোকের সাথে ভিআইপি গ্যালারিতে ওর মা-বাবা আর রিঙ্কি সোহিনি বসে আছে।  ওদের কাছে  গিয়ে দাঁড়াতেই  রিঙ্কি সব ভুলে লাফিয়ে সোমুর কোলে উঠে পড়ল।  যদিও একটু সময়ের জন্য তারপর নেমে পরে লজ্জ্যা দু হাতে মুখ ঢাকলো।  শিবানী ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে বলল- ওর এতে লজ্জ্যা পাবার কিছু নেই আমার ইচ্ছে করছিলো আমার ছেলেকে কোলে তুলে নিতে  কিন্তু সেটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।  সমরদা সোমুর মা-বাবাকে প্রণাম করে বলল - দাদা আপনার ছেলে একটা জিনিয়াস ও যে আরো কতো খেল দেখাবে  সবেতো শুরু।  সোহিনী সোমুকে ওর বাবা-মাকে নিয়ে ওদের বাড়ি যেতে চাইলো সেটা শুনেই সোমুর মন খারাপ হয়ে গেলো।  বলল - আমি আঙ্কেলের সাথে কথা বলছি বাবা-মা আমার সাথে হোটেলেই থাকবে। রিঙ্কি শুনে বলল -আগে তো আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাই  ড্যাড -মম আজকে তাড়াতাড়ি ফিরবে ওদের সঙ্গে তো একবার আলাপ করাবে। সমরদা শুনে বলল - ঠিক আছে তুই যা ওদের বাড়িতে  আমি হোটেলে ফিরে রাম বুক করে রাখছি। সবাই মিলে রিঙ্কিদের বাড়িতে গেলো। সোহিনি সবাইকে বসিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে সবার জন্য চা করে নিয়ে এলো সাথে কিছু স্ন্যাক্স।  শিবানী সোমুর কানে কানে বলল - এরা তো খুব বড়লোক রে বাবা আমি তোর কথা শুনেও বুঝতে পারিনি।  এখন চোখে দেখে আমরাও খুব চিন্তা হচ্ছে যে এই মেয়ে আমাদের মতো বাড়িতে গিয়ে থাকতে পারবে কিনা। শুনে সোমু বলল - মা তুমি চিন্তা করোনা আমি তো প্রাইজ মানি চল্লিশ লক্ষ টাকা পেয়েছি  এরপর চাকরিও পাবো।  আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না তবে সব কিছু আগে রিঙ্কিকে জানাতে হবে ওর মতামত নিয়ে যা করার করতে হবে।
Parent