সুন্দরবনে মা ও ছেলের জীবনের গল্প - অধ্যায় ১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69606-post-5993212.html#pid5993212

🕰️ Posted on July 22, 2025 by ✍️ familymember321 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 876 words / 4 min read

Parent
আমি যে গল্পটা বলব এটা গল্প নয় একটা বাস্তব ঘটনা। আমাদের বাড়ি সুন্দরবনের শেষ প্রান্তে গ্রামের নাম দুলদুলি গ্রাম। আমার নাম বিজয় মালো। আমার বর্তমান বয়স এই ২০ সবে পা দিয়েছি। আমি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করেছি তবে কলেজে ভর্তি হয়েও আর পড়াশুনা করতে পারিনি কারন, আমার বাবা বিস্বমবর মালো কাজ করতে গিয়ে কুমিয়ের লেজের বারি খেয়ে নদীতে তলিয়ে যায়। তাকে আর পাওয়া যায়নি। খবর পাই আমি তখন আমি ছিলাম কলকাতায়। একটা মেচে থেকে পড়াশুনা সবে শুরু করেছি। আমার বড় দিদি তার বিয়ে হয়ে গেছে। দিদি আমার থেকে ১ বছরের বড়। দিদির বিয়ে হয়ে গেছে তার কিছুদিন পরে বাবার এই এক্সিডেন্ট হয়। যা হোক খবর পেয়ে বাড়ি চলে আসি আর পড়াশুনা করতে যাওয়া হয় নাই। আমার মায়ের নাম বাসন্তী মালো। ও দিদির নাম বলা হয়নি দিদির নাম হলো কমলা মালো। দিদির বর্তমান বয়স ২১ বছর। আর মায়ের বয়স এই ৩৮ বছর। আমার একটা ভাগ্নি হয়েছে দিদির শ্বশুর বাড়ি সামশের নগরে। আমি বাড়ি পোউছানর আগেই দিদি জামাইবাবু সবাই চলে এসেছে। মা তো অজ্ঞান হয়ে গেছে। কারন মা একমাত্র জিনি বাবাকে শেষ দেখেছেন। ওই সময় মা বাবার সাথেই ছিল। মাকে অনেক কষ্টে হুশ ফেরানো গেলেও মা কোন কথা বলতে পারেনি বেশ কিছুদিন। গ্রামের যারা গন্যমান্য ব্যাক্তি আছেন তারা বিধান দিলেন সেই ভাবে বাবার কাজ সপন্ন করলাম। দিদি জামাইবাবু কিছুদিন ছিলেন তারপর তারাওঃ চলে গেলেন। বাবার শ্রাদ্ধ শান্তি কোনমতে করে নিলাম কারন আমরা গরীব। মা আস্তে আস্তে ঠিক হতে লাগল কিন্তু তারপরে আর মায়ের মুখে আমি হাসি দেখিনি। যদি এই গ্রামে কেউ না আসে সে বুঝতে পারবেনা প্রতিটা ব্যাক্তি বাঃ পরিবার কত কষ্টে জীবন জাপন করে। কিন্তু আমাদের তো বেচে থাকতে হবে তাই সব বাদ দিয়ে বাবার কাজে নেমে পড়লাম। বাবা আমাদের কিছু জমি আছে চাশ করতেন আর অন্য সময়ে চিংড়ি মাছের পোনা বাঃ পিন ধরত। ওই দিয়েই আমাদের চলত। আগেও আমি যখন বাড়ি থাকতাম বাবার সাথে মাছ ধরতাম। বাবার ইচ্ছে ছিল আমি যেন তার কাজ না করি তাই যত কষ্ট হোক আমাকে পড়ালেখা করাতে চেয়েছে। আমিও বাবার কথা রেখে মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করেছিলাম তারজন্য আমাকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো কলেজে ভর্তি করিয়েছিল আর আমি সেখানেও ভালো রেজাল্ট করেছিলাম বলে আমাকে কলকাতা কলেজে ভর্তি করে দিয়েছিল। কিন্তু কি হল সেই তো আবার গ্রামে ফিরে আসতেই হল। আমাদের গায়ের রং মানে আমি বাবা ছিলাম না আছি তামাটে রঙের। কিন্তু আমার মা ছিল ফর্সা। দিদিও মায়ের মতন ফর্সা হয়েছে তাই বিয়ে দিতে কষ্ট হয়নি। বিনা খরচে দিদির বিয়ে হয়ে গেছে আমার জামাইবাবুরা অনেক ধনী তাই তারা সব খরচা করে দিদিকে নিয়েছে। জামাইবাবু অনেক ভালো সব সময় আমাদের খোঁজ নেয়। মা কখনো চাইত না আমি মাছ ধরি বাঃ জমি চাশ করি। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পাশে তো চাকরি হয়না। তাই আমি মাকে বললাম মা ভেবে আর লাভ নেই বেচে তো থাকতে হবে। তাই আমি বেড়িয়ে পড়লাম কাজে মানে মাছ ধরতে। এভাবে কিছুদিন ভালই রোজগার হল। দেখতে দেখতে মায়ের হাতে বেশ টাকা দিলাম আমি কারন মা আমার সবা। প্রতম দিকে মা কোন কথা বলত না কিন্তু এখন কথা বলা শুরু করেছে।  সামনে চাষের সিজন জমিতে ধান চাশ করতে হবে এতদিন মা আমার সাথে না গেলেও যখন জমি চাষ শুরু হল তখন মা আমার সাথে যেতে শুরু করল। মা- একদিন জমি চাশ করছিলাম মানে জমি তৈরি করছিলাম তখন মা বলল আমাদের কপাল খারাপ তোকে যে কাজ করতে বারন করেছি আর আজকে তোকে সেই কাজ করতে হচ্ছে বাবা আমাদের কপাল খারাপ। আমি- মা ভেব না বাবার কথা ভেবে কি লাভ বলো, যতই আমরা আফসোস করি বাবকে আর পাবনা। মা- সে আমি জানি সে আর কোনদিন ফিরবেনা না ফেরার দেশে চলে গেছে আমাকে এইভাবে ফেলে একা চলে গেল কেন আমাকে নিয়ে গেলনা। ওই কুমির কেন আমাকে নিয়ে গেলনা। আমি- মা দুখ করনা মা বাবা নেই তো আমরা কি করতে পারি তবে আমাদের তো বেচে থাকতে হবে। মা- বেঁচে আর লাভ কি কি হবে এই জীবন দিয়ে, আমি কিছুই করতে পারলাম আমার চোখের সামনে থেকে নিয়ে চলে গেল। কি কষ্ট পেয়েছে উঃ আমি ভাবতেই পারিনা এমন আমাকে দেখতে হবে। আজ প্রায় তিন মাস লোকটা নেই আমি একবারের জ্জন্য ভাবতে পারিনা। ইচ্ছে করি গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাই পারিনা শুধু তোর জন্য বাবা। তোকে আবার হারাতে হবেনা তো বাবা। আমি- না মা তোমার আশীর্বাদ আছেনা আমার কিছু হবেনা। মা- আমাকে বলেছিল তোকে একটা বড় মোবাইল কিনে দেবে তাই রাত দিন কাজ করত, টাকাও জমিয়েছিল আর সেই টাকা ওর নিজের শ্রাদ্ধে লেগে গেল। কি করে আমরা বাঁচব বাবা প্রতি বছর বন্যা আছে এত কষ্ট করছিস ফসল হবে কিনা কে যানে। আমি- হবে মা তুমি চিন্তা করনা ভালই টাকা জমিয়েছি এই তিনমাসে। তোমার এত ভাবনা কেন। যা হোক এইভাবে চাষ শুরু করলাম মা আর আমি রাত দিন কাজ করে চলেছি। আমাদের মাটির ঘর উপরে খরের চাল যা বাবা বানিয়ে গেছে। বাড়ির চারপাশ নেট দিয়ে ঘেরা, বাঘের ভয় আছে মাঝে মাঝে আসার চেষ্টা করে। তাই একটা কথা আছে এখানে জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ এই নিয়েই আমাদের জীবন। কলকাতায় যে তিনমাস ছিলাম ওখানে সবাই আমাকে ভালো বাসত। পড়াশুনা করে কাজ পেতাম সে জানি কিন্তু আর হলনা। তবে ওখানে গেলে আমি কাজ পেতাম অনেক কাজ আছে কিন্তু বাড়িতে মাকে একা রেখে থাকা সম্ভব তাই মাকে কিছু বলিনি। এই চারমাসে আমিও বিরক্ত হয়ে গেছে জমি চাষ করতে আর মাছ ধরতে কিন্তু আমি চলে গেলে মা একা কি করে থাকবে। পাশেই একটা জমি আছে নিচু কয়দিন পরে ওটা চাষ করব। ওটায় ধান ভালো হয় কিন্তু খুব খাততে হয় ওই জমিটায়। বাবা আমি মা সবা চাষ করতাম ওই জমিতে। ওতার সমস্যা হছে জল জমে যায় তাই খিচি দিয়ে প্রায়ই জল বের করে দিতে হয় এই একটা বড় সমস্যা।
Parent