সুন্দরবনে মা ও ছেলের জীবনের গল্প - অধ্যায় ২২
আমি- মা সত্যি কি বিচিত্র জগত তাইনা, ওদের মধ্যে কোন ব্যাপার না কিন্তু অন্য বেলায় বিয়ে দিতে হবে তবে বাচ্চা হবে তাইনা।
মা- কি যে বলিস তুই বাচ্চা হতে আবার বিয়ে লাগে নাকি, দুইজনে মেলামেশা করলেই বাচ্চা হয় ওটা একটা সামাজিক প্রথা। মানুষ কে খাওয়াও আর কিছু না। সব ব্রামনের বানানো জিনিস আমার বাবা একদম ওদের সইতে পাড়ত না। না আমার ঘুম পাচ্ছে এবার তবে ঘুমাই। এখনও অনেক ভালো আছি। এখন আর কাথা গায় দিতে হবেনা, জ্বর নেই।
আমি- না তবুও জল নিয়র রেখেছি আর কাথাও রেখেছি রাতে আবার কি হয় কে যানে কালকে যা করছিলে ভয় পেয়ে গেছিলাম। মা আমাদের কিন্তু মন্দিরে গিয়ে একটা পুজা দিতে হবে তুমি সুস্থ হলে। চাষ হয়ে যাক তারপর একদিন তুমি আমি যাবো পুজো দিতে। আমি জানি বাবা মাকে পুজা করলে আর কোন পুজা লাগেনা তবুও মানত করেছি তোমাকে নিয়ে যাবো।
মা- নিজে শুয়ে পরে আয় বাবা আমার কাছে আয় দুজনেই একসাথে শুয়ে পরি। জ্বর না আসলেই ভালো। আর যদি আসে তবে তুই আমাকে ধরিস বাবা। আগে আমার এমন হত না কাপুনি দিয়ে জ্বর কিন্তু কালকে বেশী হল তাই না।
আমি- ওমা গরুটা যে আবার ডাক দিল টের পেলে।
মা- আসলে কি জানিস ওই গরুটা আমাদের পয়া গরু। ওর অনেক কটা বাচ্চা দিয়েছে তার থেকে আমরা অনেক দুধ পেয়েছি, মেয়ে বাচ্চা দুটো আর ছেলে বাচ্চা একটা ঐ যে ষাঁড়টা। দুধ তো ভালই দেয় এখনও অনেক. দুধ বেচেছি আমরা।
আমি- হ্যা জানো তোমার শরীর খারাপ বলের মনে হয় ওইরকম ডাকে আর কিছু না। না হলে মেজো যা বলেছে তাতে আর লাগবেনা আমাকে একদম নিশ্চিন্ত থাকতে বলেছে, আর আমিও দেখেছি, তারমানে ওর মনিবের শরীর খারাপ তারজন্য ডাকতে পারে। কিন্তু মা অতটা লালা বেড়িয়ে ছিল কিসের জন্য। থাক থাক লেগেছিল একদম ওখানে।
মা- কি জানি আমি জানিনা এসব তোর বাবা ভালো বুঝত সেই দেখত, জানিস না তো তোর বাবা মারা গেলে দুইদিন কিছু খায়নি গরুটা।
আমি- সে তো আজকেও খায়নি দিয়েছি না পেট চেপে আছে তোমার শরীর খারাপের জন্য। তা ছাড়া আর কিছু না। মা এখন কেমন লাগছে তোমার।
মা- না বেশী ভালো না মনে হয় জ্বর উঠবে যা মনে হচ্ছে। ধরে দেখ তো আমার কপাল।
আমি- মা সত্যি তো গরম গরম লাগছে কপাল। কিন্তু স্নান করার পর তোমাকে দেখে মনে হয়নি তোমার জ্বর হয়েছিল একদম ফ্রেস লাগছিল।
মা- সে তো আমারো কিন্তু এখন কেন আবার এমন হচ্ছে রাতে জ্বর আসছে কি হবে বাবা আজকেও জ্বর এলে। কালকে কি করে কি হল একবারে জ্বর পরে গেল আজকে কি আর পড়বে। এই বলে গালে হাত বুকিয়ে দিয়ে বাঃ সুন্দর তোর গাল দাড়ি কাটেনা দেখতে ভালো লাগে আজকে কত সুন্দর লাগছে। এই নারে আমার জ্বর আসবে বাবা। দে কাথা দিয়ে ঢেকে দে। কি যে করব আমি। কোন অশুধে তো কাজ হচ্ছেনা বাবা। ডাক্তার পালটাতে হবে ওর ওশধে কাজ হয় না। দিনে ভালো থাকি আর রাতে বারে। কি করবি আজকে।
আমি- মা তোমার কি আর কোন সমস্যা আছে কেন এমন হবে। বাবার কথা ভাবো না তো। আগে প্রায়ই শুনতাম তুমি কান্না করছ কেন মা।
মা- তুমি যদি বুঝতে তবে তো কোন সমস্যা থাকতো না বাবা। সে আজ ৬ মাস নেই এই বুকটা একদম শুন্য বাবা, সব সময় তার কথা মনে হয়। একজন মহিলার স্বামী শেষ কথা কিন্তু আমার সে নেই কি করে তোমাকে বোঝাবো আমি।
আমি- মা তুমিই তো বলো ছেলে ছোট সব বোঝে তাই বুঝে আমাকে বুঝিয়ে বলতে পারোনা। ছেলেকে তোমার বড় করতে হবেনা।
মা- চেষ্টা তো করি পারি কই। বাদ দাও ল্যঠা মাছ ভালই ধরেছিলে আজকে কয়টা ধরে আনতে পারতে। প্রত্যেকটার সাইজ ভালো ছিল আর খেয়েও বেশ তৃপ্তি পেয়েছি।
আমি- হ্যা তোমার সাথে আর ল্যঠা মাছ ধরি যা করেছিলে আমার সাথে।
মা- একটু মুচকি হেঁসে দিয়ে ও ওই কথা আমি তো বুঝতে পারিনাই। যাক কেউ ছিলনা দেখতে তো পায়নি। তবে তোমার খুব লজ্জা দেখ আমার কিন্তু অত লজ্জা নেই।
আমি- হুম তবে হাসি তোঁ আটকাতে পারোনি একবারের জন্য।
মা- কি হয়েছে তাতে তুমি তো আজকে আমাকে যেভাবে চেয়েছ সেই ভাবেই স্নান করিয়ে দিয়েছ তাইনা। তবে ভালো লাগছিল স্নান করার পরে। আর আজকে এইযে নতুন শাড়ি এনেছ সাথে ব্লাউজ আর ব্রা ভালই এনেছ কেমন লাগছে আমাকে বললে নাতো।
আমি- মা আসলে তোমাকে দারুন লেগেছে স্নান করার পরে এত ফ্রেস লাগছিল তারপর এই শাড়ি পড়েছ সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে। ওই দেখ আবার ডাকছে গরুটা কি হল দেখে আসবো নাকি।
মা- না যেতে হবেনা প্রথম বীজ গেলে এমন হয় খেতে চায়না যেতে হবে কালকে খেলে ঠিক হয়ে যাবে। পেট খালি তো তাই অমন ডাকছে কিন্তু দিলে খাবেনা।
আমি- মা বাদ দাও তবে আমাকে তুমি কি বুঝিয়ে বল্বেনা।
মা- কি বোঝাবো।
আমি- কেন বাবাকে তুমি ভুলতে পারছ না। যদি এখানে থাকতে ইচ্ছে না করে বল আমি তোমাকে নিয়ে কলকাতা গিয়ে থাকবো সেখানে শুধু তুমি আর আমি থাকবো, আমি কাজ করে ইনকাম করব তুমি ঘরে থাকবে।
মা- বাবা দুধের স্বাদ কি ঘোলে মেটে। তোমার বাবাকে আমি ভুল্ব কি করে। ২০বছর সংসার করেছি।