ট্যাবু ১ - নিজেরে হারায়ে খুঁজি - নতুন পর্ব ছয় - পেইজ পনেরো - অধ্যায় ৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-48651-post-4906779.html#pid4906779

🕰️ Posted on August 8, 2022 by ✍️ nandanadasnandana (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2298 words / 10 min read

Parent
বাইরের কোলাহলে ঘর থেকে ক্যারোলের সাথে কীট আর মালিয়া ও বেড়িয়ে এসেছে। মা ও বেরিয়ে এসেছে। চিৎকার করছি ওদের কে ঘরে যেতে বলে। কিন্তু বাইরের এই আর্তনাদে কেউ আমার কথা শুনতে পারছি না। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেছি আমি। আমাদের ঘরের সামনেই, আলো দেখে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী ঘরে ঢোকার চেষ্টা করছে। ক্যারোল হাত দিয়ে বন্দুকের নল দিয়ে ওদের কে সরিয়ে দিচ্ছে। জকি একেবারে আমার আর ইভানের কাছে এসে পরিত্রাহি চিৎকার করছে। ওর আওয়াজে এমন ভয় আমি কোন দিন অনুভব করি নি। ততক্ষনে মনে হয় চারদিকে ইকারা পুরুষ রা নিজেদের বন্দুকে গুলি ভরে ফায়ার করতে শুরু করেছে। বিচ্ছিন্ন ভাবে ভেসে আসা গুলির আওয়াজ পেলেও ক্যারোল বা ইভান কোন ফায়ার করল না। ক্যারোল কীট আর মালিয়া কে নিয়ে, আমাদের স্টর্ম শেল্টার এ ঢুকিয়ে দিলো কোন রকমে। তার পরে মা আর পিন্টো কে নিয়ে ও ওই শেল্টার এ ঢোকাল। এতো পাখি আর পতঙ্গ এর ভিড় আমাদের উঠোনে যে ক্যারোল কে এক ফুট এগোতেও রিতিমতন হাত চালাতে হচ্ছিল। আমি তো ভাবতে পারছি না, কি হচ্ছে। সুনামী? কিন্তু তাহলে তো লেকের দিক থেকে সবাই ছুটে আসবে। কিন্তু উল্টো দিকে ছুটে চলেছে সবাই। জলের দিকে যাচ্ছে কেন? এদিকে ক্যারোল আমাকে আর ইভান কে ডাকছে শেল্টার এ যাওয়ার জন্য। ইভান আমার মাথা চেপে তখন ও ধরে আছে। আমি ইভান কে ইশারা করলাম শেল্টার এ নিয়ে যেতে আমাকে। ভীর বাড়ছে পাখীদের। সাথে নানা রকম পতঙ্গের ও ভিড়। আমার লক্ষন ভালো ঠেকছে না একদম। এই রকম ব্যাপার তো আমি কোন দিন ও দেখিনি। শুনিও নি আমাদের কোন ইকারা ইতিহাসে। পাখী গুলো এখানে সেখানে ধাক্কা খাচ্ছে মারাত্মক। উঠন জুড়ে ধাক্কা খাওয়া পাখীদের দেহ ছড়িয়ে রয়েছে। -       আউ আমার গায়ে , ইভানের গায়ে পাখীদের দেহ খসে খসে পরছে। আমার পিঠে পাখী দের নখের আঘাত লাগছে। আমার জামা ফুঁড়ে ওদের নখ যেন বসে যাচ্ছে পিঠে। অন্যান্য সময় হলে জকি মুখে করে তুলে সরিয়ে দিত বা খেয়ে নিত। আজকে যেন ওর সে রকম কোন ইচ্ছেই নেই। ভয়ে পরিত্রাহি চিৎকার করছে জকি। লাফাতে লাফাতে খপ করে ধরে নিচ্ছে মুখে সামনে আসা কোন পাখী কে। আতঙ্কে লেজ একেবারে গুটিয়ে নিয়েছে জকি। প্রচণ্ড ভয় লাগছে আমার। ইভানের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, ওর চোখে মুখেও আতঙ্ক।ইভান আমাকে কোনরকমে তুলে নিয়ে শেল্টার এর কাছে পৌঁছে দিতেই ক্যেরোল আমাকে ভিতরে টেনে নিল। আমি ইভানের হাত টা ধরে রইলাম। ইচ্ছে ইভান ও চলে আসুক শেল্টার এ। ইভান এলো না। ওর ওয়াগনে যাবে কিছু জিনিস নিতে। জকি কেও আনতে হবে। ও বলল আমাকে, -       মা আমি আসছি চিন্তা কোর না একদম । জকি কে নিয়ে আসছি। ও চলে গেল কোথায় দেখি।  -       যাবি না ইভান। আমার দিব্যি তুই এখানে এসে ঢুকে পর। ভয়ে আমার প্রান টা বেরিয়ে যাবে এবারে। ও শুনল না আমার কথা। ভালো লাগে না। ইকারা ছেলে রা এমনিই অবাধ্য হয়। ক্যারোল বন্ধ করে দিল শেল্টার এর শাটার টা। ঠিক সেই সময়েই দুম দাম করে বেশ জোরে দু তিনটে আওয়াজ হলো। মনে হল বোম ফাটল কোথাও। আর সাথে সাথেই কারেন্ট চলে গেলো। ক্যারোল বলল, -       বুঝতে পেরেছিলাম। আমি ভয় গেছি খুব। বললাম ওকে, -       কারেন্ট কেন গেলো? ক্যারোল বেশ চিন্তার সাথে জবাব দিলো, -       যাবার ই কথা। এখানেই এতো পাখী। ভাব সাব স্টেশনে ওই রকম ফাঁকা জায়গায় কত পাখী জড়ো হবে? শর্ট সার্কিট হয়েছে কোন বড়সড়। কি জানি এই সব মিটে গেলেও তিন চারদিন পাওয়ার এলে হয়।  যখন বিপদ আসে একসাথেই আসে। ইকারা বাসীর অভ্যেস আছে বিপদের। যত সময় যাচ্ছে আমার ভিতরের ভয় টা কমে সন্তানদের চিন্তা বাড়ছে। ছোট্ট দুটো জানালা আছে, শেল্টার এর ভিতরে। ঝড়ের সময়ে আমরা ঢেকে রাখি জানালা দুটো স্টিলের শাটার দিয়ে। জানালা দুটো ছোট আর মারাত্মক শক্ত রড দিয়ে গার্ড করা বাইরের দিকে। ক্যারোল কে বললাম, বেঁচে থাকা মাংস নিয়ে চলে আসতে। অল্প শাটার তুলে বেরিয়ে গেল ক্যারোল। আর আমি মালিয়া আর কীট কে জড়িয়ে ধরে রইলাম। আর জানালার ছোট শাটার খুলে দেখতে লাগলাম। বাইরে পাখীদের ভিড় যেন বেড়েছে। কুয়াশা কেটে গেছে পাখীদের ডানা ঝাপটানো তে। ধুপ ধাপ আওয়াজ আমাদের শেল্টার ওয়াগনের ছাদে। পাখীদের আহত বা নিহত দেহ খসে পরার আওয়াজ। সেই ফাকেই ক্যেরোল নিয়ে চলে এলো একটা বিশাল বাকেট এ করে বেঁচে থাকা তন্দুরী। সাথে টর্চ আর রেডিও টা নিয়ে এলো। আমি খাবার আনিয়ে নিলাম, কি জানি যদি আজকে বের হতে না পারি এখান থেকে। এখন আমার কাজ হবে ইভান কে নিয়ে আসা এখানে। জানালা দিয়ে দেখলাম, ইভানের ওয়াগনের শাটার দিয়ে আলোর ছটা। মানে ও আলো জ্বালিয়েছে। জানালা দিয়ে চিৎকার করলাম আমি, -       ইভান, সব ঠিক আছে তো? ইভান ইভান!! ইভান!! চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।কেন যে কোন কথা শোনে না ছেলেটা। ভাগ্যিস ছুটে এসে তখন আমাকে নিয়ে মাটিতে চেপে ধরল না হলে এমন বিহ্বল হয়ে গেছিলাম আমি, নিশ্চিত ভাবে আহত হতাম আমি। আমার আওয়াজ মনে হয় ইভান শুনেছে। আওয়াজ পেলাম খুব দূর থেকে -       হ্যাঁ মা আমি ঠিক আছি। এই সব কমলে আমি আসছি। সিনিয়র ব্রুনো ঢুকেছে শেল্টার এ? এই বিপদের মাঝেও হাসি পেয়ে গেল আমার। ভাবলাম ঠিক ই। এ বাড়িতে এখন সিনিয়র ব্রুনো, আমার স্বামী ই। ক্যারোলের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, ক্যারোল ও হাসছে। চিৎকার করলাম শাটার দিয়ে মুখ বাড়িয়ে। -       হ্যাঁ, তুই সাবধানে থাক। শাটার খুলিস না এখন। জকি ঠিক আছে? -       ওকে মম। কিছুক্ষন পরে আবার শুনলাম ও বলছে, -       হ্যাঁ জকি ঠিক আছে এখন। উত্তর টা পেয়ে আমার একটু ভালো লাগল। পিন্টো কে মায়ের কোল থেকে নিজের কোলে নিলাম। আহারে ছেলেটা আমার ভয় পেয়ে গেছে। কীট কে আর মালিয়া কে বুকে টেনে নিলাম। এক হাত বাড়িয়ে মায়ের হাত টা আমি হাতে নিলাম। ক্যারোল আমাদের সবাই কেই জড়িয়ে ধরল উপর থেকে। ইশ ইভান টাই নেই আমার কাছে। একবার ও শেল্টার এ এসে ঢুকুক, এবারে পাকামো করলেই আমার কাছে বকা খাবে ও। না বাবা আর ছাড়ব না আমি ওকে। জানিনা কতক্ষন ওই ভাবে কেটেছে আমাদের। শেল্টার টা ছোট একটু আমাদের সবার জন্য। কিন্তু এটাই বেস্ট। কারন লাগোয়া বাথরুম আছে। ইভানের ওয়াগন টা বড় হলেও, কোন বাথরুম নেই। ক্যারোল বানিয়েছিল এটা সেই ভাবেই। একবার শীতে ভয়ঙ্কর তুষার ঝড় হয়েছিল প্রায় তিন চার দিন। প্রায় তিন ফুট তুষারে চাপা পরে গেছিল ইকারা শহর। তখন সবে কীট আমার পেটে এসেছিল। চারদিন ছিলাম সবাই মিলে এই শেল্টার এই। কিন্তু এই রকম জীবন হানি হয় নি। পাখীদের কি হলো আবার? সবাই মিলে লেকের দিকে ছুটে আসার কি হলো। কিছুর ভয় পেয়েছে নাকি? আমার মনে এই সমস্ত কথা চলছে আর বাইরের ঘটনার আতঙ্কে আমরা সবাই বসে আছি একে অপর কে ধরে। সময় এখন রাত্রি নটা। হাড় হীম করা ঠান্ডা এখন। মনে হচ্ছে আমাদের শেল্টার এ পাখীদের দেহ পরার আওয়াজ কমল। ধুপ ধাপ আওয়াজ টা বেশী পাই কারন এই ওয়াগন গুলো স্টিলের। আওয়াজ টা একটু বেশি ই আসে। বাইরের শনশনানি আওয়াজ টা ও কমল। ঠাণ্ডার তীব্রতা বলে বোঝাতে পারা যাবে না। ক্যারলের নিয়ে আসা কম্বল গুলো দিয়ে ছেলে মেয়ে গুলো কে ঢাকলাম আমি। বাইরে অখণ্ড নীরবতা। একটা বাতি জ্বাললাম। দরজা টা না খুলে, জানালার শাটার গুলো কে খুললাম আমি। ক্যারোল ততক্ষনে খবর শুনতে রেডিও টা চালিয়েছে। বাইরের নীরবতার উপরে ভরসা করে আমি ইভান কে ডাক দিলাম। -       ইভান !! ইভান !!! চলে আয় এখানে। দেরী করিস না আর। সব থেমেছে। বাইরের আর আওয়াজ নেই। ইভান সহজেই শুনল মনে হয় আমার কথা। ও সাড়া দিল, -       মা আমি ঠিক আছি। আসছি, আমি আর জকি। তুমি বেরিও না। ড্যাড কে বল বড় গান টা নিয়ে বেরোতে। ক্যারোল শুনতেই পেল। ও চেঁচিয়ে ইভান কে বলল -       ঠিক আছে আমি বেরোচ্ছি। তুই ও তোর পিস্তল টা নিয়ে বের হয়ে আয়।এমুনেশন যা আছে নিয়ে নে সাথে। ভয় নেই আমি বেরোচ্ছি। ওদিক থেকে আওয়াজ এলো, -       ওকে ড্যাড। রেডিও ও চালিয়ে দিয়েছিল ক্যারোল। খবর শুনতেই। ততক্ষনে খবর ও শুরু হয়েছে। একটি মেয়ে খবর পড়ছিল। সম্ভবত, এটা আটলান্টিস শহরের ওয়েভ্লেন্থ এ খবর টা হচ্ছে। ইকারা র খবর ও বলে এখানে। বুঝতে পারছিলাম না কি বলছে। ঠিক ঠাক ধরে নি স্টেশন টা। নব টা একটু ঘোরাতেই আওয়াজ টা পরিষ্কার এল এবার। শুনতে পেলাম বলছে মেয়েটি পাখী দের উৎপাতের কথা। মাঝখান থেকে শুনতে শুরু করলাম। -       সবাই কে বলা হচ্ছে ঘর থেকে না বের হতে। কোন শক্ত শেল্টার এর ভিতরে ঢুকে পরতে। অজস্র জীবন হানি হয়েছে। আটলান্টিস এর রাস্তা রক্তে লাল। নালা দিয়ে জলের বদলে রক্তের স্রোত। ছাদ থেকে রক্ত টপিয়ে পরছে। রাস্তায় চলতে থাকা গাড়ি গুল রক্তে মাখামাখি হয়ে গেছ। অ্যাঁ? পাখীদের এমন কান্ডে রাস্তা রক্তে লাল হবে কেন? শুনি তো ভালো করে, -       বার বার বলছি সবাই কে শেল্টার এর ভিতরে থাকতে। সরকার থেকে এইড আসতে সময় লাগবে এখনো। শুধু আটলান্টিস বা ইকারা নয়, পুরো ট্রিভিয়ার সমস্ত বড় শহরেই এই আক্রমন হয়েছে। আক্রমন? কীসের আক্রমন? ওদিকে বলেই চলছে মেয়েটি রেডিও তে, -       দেখতে একটি লাল পিঁপড়ে একটা পূর্নাংগ মানুষের আকৃতির হলে যেমন হয় ঠিক তেমন দেখতে। খুব সাবধান। চারটি পায়ের একটির আঘাত ও যথেষ্ট হাতির শুঁড় ছিঁড়ে ফেলতে। ভয়ঙ্কর দ্রুতগামী। ছোট শব্দ ও অনেক দূর থেকে শুনে ফেলে। পঙ্গপালের মতন শহর কে দখল করে ফেলেছে এরা। হয়ত পুরো ট্রিভিয়াই এদের দখলে চলে গেছে।  লোহা কে ভয় পায়। জল কে ভয় পায়।  আপনারা সাবধানে থাকুন। আমি সময়ে সময়ে আপনাদের আপডেট দিতে থাকব। কীসের কথা বলল রেডিও তে? এরা কারা?  ততক্ষনে বাইরে বেরিয়ে গেছে ক্যারোল। বুক টা আমার ভয়ে শুকিয়ে গেল। ওদিক থেকে ইভান ও তো বেরিয়ে আসবে। বাইরে টা অস্বাভাবিক শান্ত কেন? এতোক্ষনে তো ওদের চলে আসার কথা শেল্টার এ। হে ভগবান!!!!! আমি পিন্টো কে মায়ের কাছে দিয়ে বেরিয়ে এলাম শেল্টার এর বাইরে। বেরিয়ে এসে যা দেখলাম তাতে আমার বুক উড়ে গেল। ভয়ে আমি ওখানেই থ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছি। দেখলাম ইভান আমাদের দিকে আসতে আসতে যেন থমকে দাঁড়িয়ে গেছে। আর ক্যারোল ও ইভানের দিকে যেতে যেতে যেন থমকে গেছে। ইভান নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে বাবা কে একদম শব্দ করতে মানা করছে। আর অন্য হাতে পিস্তল টা ধরা। কেন না, ক্যারোলের পিছনেই একটা অদ্ভুত আকৃতির প্রানী। ক্যারোল এর থেকে খুব বেশি হলে মিটার দুই দূরে। রেডিও র আন্যাউন্স মনে পরল, পিঁপড়ে র মতন দেখতে মানুষের মতন বড় কোন প্রানী আক্রমন করেছে। প্রানী দুই পায়ে দাঁড়িয়ে আছে সামনের দুটো পা কে হাতের মতন তুলে। বেশ লম্বা লম্বা আর শক্তিশালী হাত পা। ওদের জোরে দৌড়তে পারার কারন টা বুঝলাম আমি। আমি থরথর করে কাঁপছিলাম। আমাকে যে দুজন কেই বাঁচাতে হবে। ওদের দুজনের একজনের কিছু হয়ে গেলে আমি আর বাঁচব না। মনে পরল রেডিওর কথা গুল। এক থাবা তে হাতির শুঁড় ছিঁড়ে ফেলতে পারে পোকা গুলো। ভয়ে মনে হলো আমার শরীরের প্রতিটা অঙ্গ আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। আমার ভয় পাওয়ার বাকি ছিল আরো। ভয় তখন পেলাম যখন দেখলাম, ইভানের পিছনে ওয়াগনের ছাদে একটা ওই রকম প্রানী ওঁত পেতে রয়েছে পিছন থেকে ইভানের উপরে ঝাপাবে বলে। ওয়াগনের উপরের প্রাণী টা যেন ঝাঁপিয়ে পরবে সেই ভাবে দেখছে ইভান কে। ইভান পিছনের টা কে দেখতে পাচ্ছে না। ক্যারোল ইভানের দিকে চেয়ে আছে আর ইভান ক্যারোলের দিকে। দুজনে দুজনের পিছনের টা কে দেখতে পেয়েছে। তাই দুজনেই দুজনের দিকে চুপ থাকার ইশারা করছে। কেমন একটা আওয়াজ হচ্ছে দুটো পিশাচের কাছে। অনেক মানে অনেক, লাখ লাখ কোটি কোটি পোকা একসাথে কিলবিল করলে যেমন আওয়াজ হয় তেমন ই আওয়াজ টা। আমিও নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে। গা গুলিয়ে উঠছে আমার। ব্রহ্মতালুর কাছে একটা সুরসুর ভাব। খুব ভয় পেলে আমার হয় এমন।  ভাবছি, -       হে শক্তিশালী প্রভু আমাকে শক্তি দাও। আমার জীবনের সব থেকে কাছের দুটো মানুষ কে বাঁচানোর ক্ষমতা আমাকে আমাকে। একজন আমাকে মা বলে আর একজনের সন্তানের মা আমি। হে ঈশ্বর!!!! নীচে পরে থাকা একটা চ্যাপ্টা স্টিলের পাত তুলে নিলাম আমি হালকা নীচু হয়ে। ভাবছি নিজের প্রান যায় যাক, এদের একজন কেও আজকে আমি কিছু হতে দেব না। ঠিক সেই সময়ে ইভানের পিছনের টা নড়াচড়া শুরু করল, মনে হল ঝাঁপাবে। আর আমি বুঝে গেছি, একবার ইভান কে হাতের কাছে ও পেলে এক লহমা তেই সব শেষ করে দেবে। আর সময় নেই আমার হাতে। হাতের স্টিলের পাত টা নিয়ে দৌড়ে গেলাম আমি যতটা সম্ভব। জানিনা কি করে সম্ভব হলো, ওই প্রানী টা ইভান কে পিছন থেকে আক্রমন করলেও ততক্ষনে আমি পৌঁছে গেছিলাম, আর সজোরে চালিয়ে দিয়েছিলাম প্রাণি টার মাথা লক্ষ্য করে। কোন একটা নরম কিছু তে যেন ধারালো পাত টা বসে গেল। আর পাতের শেষ ভাগ টা ওয়াগনে লেগেই একটা আওয়াজ হলো। ঢং……………………… আমি আসলে ঝাঁপ দিয়েছিলাম ইভান কে বাঁচাতে। ইভান বসে পরেছিল। আমি তো পরে গেছিলাম তখন, আর ইভান ওর বাবার পিছনে থাকা প্রানী টার মাথা লক্ষ্য করে পিস্তলের গুলি টা চালালো। যখন আমি চাইলাম ওদের দিকে দেখলাম ওর বাবা একেবারে থ হয়ে দাঁড়িয়ে পরেছে। পিছনের প্রানী টা মরে পরে আছে। ইভান একেবারে সঠিক ভাবেই গুলি টা চালিয়েছিল প্রানী টার মাথা লক্ষ্য করে। আর নেই মনে হয় আশে পাশে । আমি উঠে বলতে যাব এবারে চল সবাই মিলে, ঠিক তখন ই একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম, মনে হলো হাজার ভোমরা খুব দূরে গুনগুন করলে যেমন আওয়াজ হয় ঠিক তেমন আওয়াজ। আমার বলা শুরু হলো না, কিন্তু ইভানের ওয়াগনের মাথা থেকে একটা ঠিক ওই রকম প্রানী লাফ দিল একেবারে আমার উপরে। আমি তো শুয়ে আছি পরে গিয়ে।  ঠিক তেমন আওয়াজ টা আবার পেলাম। অনেক অনেক পোকা কিলবিল করার শব্দ। ঘেন্নায় আমার সর্বাংগ গুলিয়ে উঠছে। আর একটা কি বিশ্রী গন্ধ। ওই শয়তান টা আমাকে না মারলেও এই গন্ধে আমি মরে যাব এবারে। ভয়ে চোখ বুজে ফেললাম আমি। জানি মৃত্যু আমার অবশ্যম্ভাবী। আর কিছু পরেই হয়ত আমার মাথাটা ধড় থেকে আলাদা করে দেবে এই পিশাচ টা। তার আগে চাইছিলাম ব্রুনো রা ঢুকে যাক শেল্টার এ। ঠিক সেই সময়েই বাঘের মতন আওয়াজ করে জকি লাফ দিল প্রানী টার উপরে। কোথায় ছিল কে জানে? মায়ের বিপদে যেন দেবতার মতন আবির্ভাব হলো ওর। জকির সারা গায়ে জল। মনে হলো লেক থেকে উঠে এলো জকি। আর সাথে সাথেই ইভানের পিস্তল চলল - গুড়ুম। আমি চোখ বুজে ছিলাম। মনে হলো প্রানী টা আমার উপর থেকে সরে গেল। আমি চোখে খুলতেই দেখলাম, ইভান লেকের দিকে দৌড় দিল আর পিছনে জকি। আমার উপরে থাকা প্রানী টাও ওই দিকেই দৌড়ল। ইভানের গুলি টা বোধ করি লাগে নি ওর মাথায়। পায়ে লেগেছে, আর তাতেই প্রানী টার দৌড় দেখার মতন। জলে ঝপাং করে তিনটে আওয়াজ হলো পরপর… ঝপাং… ঝপাং…………………………………………………ঝপাং। বুক টা আমার খালি হয়ে গেল। ততক্ষনে ক্যারোল আমাকে পাগলের মতন টানছে শেল্টার এর দিকে আর আমি লেকের দিকে নিজেকে টানছি। আমি ইভান কে ছাড়া শেল্টার এ যাবই না। প্রান গেলে যাক। আমার ছেলেকে আমি এই নরখাদক দের কাছে ছেড়ে দিয়ে কোন মতেই শেল্টার এ যেতে পারব না ……………। চিৎকার করে উঠলাম আমি, -       নাআআআআআআআআআ… আমাকে ছেড়ে দাওও ও ও। ওগো আমার ইভান কে ওরা মেরে ফেলবে গো। আমি যাবই। যুদ্ধ করছি আমি ক্যারোলের সাথে। আমাকে ও আটকে রাখে দিয়েছে। আমি ক্যারলের হাত নখের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত করছি। চিৎকার করছি পাগলের মতন।  -       না আ আ আ আ আ আ আ আ আ আ আ । ইভান !!!!! ইভা আ আ আ আন ফিরে আয় সোনা!!!!!  ইভাআআআআআন!!!!!!!!!!!!!! কান্নায় ভেঙ্গে পরলাম আমি। -       আআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআআ
Parent