তুমিই আমার মা.... - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69905-post-6038093.html#pid6038093

🕰️ Posted on September 19, 2025 by ✍️ Xojuram (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2177 words / 10 min read

Parent
পর্বঃ ০৮ সুমিতা সাদা শাড়ি পরে বাথরুমের ভিতর প্রবেশ করে। শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে ইচ্ছা মত কান্না করে। জলের ধারা দেহে পড়তেই দেহের সমস্ত ভাজ উন্মুক্ত হয়ে যায়।  যেন কোনো ৪১ বছর বয়সী যুবতী তার সৌন্দর্যের আভা ছড়িয়ে যাচ্ছে। সুমিতার সেসব দিকে খেয়াল নেই, সে কান্না ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেনা। গতদুইদিন স্নান পর্যন্ত করতে পারেনি সে। আজকের স্নানের সাথে আজীবনের জন্য বিধবার তকমা গায়ে মাখিয়ে নেবে সে।  আলতো হাতে ব্লাউজের হুক খুলতে থাকে সুমিতা। পট পট শব্দে একে একে ব্লাউজে সমস্ত হুক খুলে ফেলতেই তা ফ্লোরে ছুরে ফেলে।  সাদা শাড়ি যেন সাদা পলিথিনের মত হয়ে গেছে। দেহের প্রতিটা ভাজ, প্রতিটা বাক আর প্রতিটা অঙ্গ স্পষ্ট দৃশ্যমান।  ছোট স্তনাগ্র যেন শাড়ি ফুড়ে বাইরে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। সুমিতার দেহের সমস্ত সৌন্দর্য বাথরুমে প্রতিটা জড় পদার্থ দেখতে থাকে। এই সুন্দর দেহ সুমিতা তার স্বামীকে গত ১৪ বছর দেখতে এবং স্বাদ নিতে দেয়নি। নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আজ সুমিতা যেন হেরে গেছে। সামনে যে নতুন বাধা আসতে চলেছে তা সে কিভাবে মোকাবেলা করবে নিজেও জানেনা। সুমিতা গত তিনদিন আগে ঠিক করেছিলো যে সে এবার অর্জুনের সাথে সঙ্গম করবে, তার নিজের জন্য। কিন্তু সেসব ভাবনা বাস্তবে রূপ নেওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেলো। নিজের মনকে আর শরীরকে কিভাবে সান্ত্বনা দেবে তার কোনো উত্তর বা উপায় কিছুই সুমিতার কাছে নেয়। সুমিতা স্নান সেরে আবার সাদা শাড়ি পরে নেয়। —------------------------- বাড়িটা এখনও ভারী হয়ে আছে শোকের ছায়ায়। বাবা চলে গেছে—এক্সিডেন্টে পুড়ে চেহারাটাও চেনার মতো ছিল না। দাহক্রিয়ার পর থেকে যেন সবকিছু স্তব্ধ হয়ে গেছে। চারদিকে আতপ চালের গন্ধ, প্রদীপের ধোঁয়া, শোকসভায় আসা-যাওয়া করা মানুষজনের ম্লান মুখগুলো—সবই অর্নবের মাথার ভেতরে রয়ে গেছে। চৌদ্দ দিনের গৃহশোক শেষ হলো আজ। আত্মীয়-স্বজন যারা ছিল ধীরে ধীরে ফিরে গেছে। বাড়ি এখন অনেকটাই ফাঁকা। শুধু মায়ের ক্লান্ত, অবসন্ন চেহারা আর অর্নবের অদ্ভুত নিঃসঙ্গতা। রাতের খাবার শেষ করে অর্নব বিছানায় শুয়ে পড়েছিল। কিন্তু চোখে ঘুম আসছিল না। জানলার বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, দূরে কুকুরের হাহাকার, আর ভেতরে ভেতরে এক অদৃশ্য শূন্যতা। সে যেন বাবার মৃত্যুর সত্যিটা এখনও মানতে পারছে না। মা—সুমিতা—এই ক’দিন একেবারেই অন্যরকম হয়ে গেছে। কারো সাথে কথা বলেন না, বেশিরভাগ সময় চুপচাপ। দিনের বেলা রান্নাঘরে বা বারান্দায় বসে থাকেন, আর রাত নামলেই দরজা বন্ধ করে ঘরে চলে যায়। আজ রাতও তাই হলো। অর্নব শুনতে পেল দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ। সে পাশ ফিরে শুয়ে চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করছিল, হঠাৎই কানে এলো হালকা কিছু শব্দ। প্রথমে মনে হলো, হয়তো জানালার বাইরে বাতাসে কোনো কিছু ঘষে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর স্পষ্ট বোঝা গেল—ওটা ঘরের ভেতর থেকেই আসছে। শব্দগুলো অদ্ভুত। চাপা নিশ্বাসের মতো, মাঝে মাঝে এক ধরনের দীর্ঘশ্বাসের মতো। অর্নব চমকে উঠে বসল। “মা কার সাথে কথা বলছে?”  প্রথমেই এই প্রশ্নটা মাথায় এলো। সে কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করল। না—কথোপকথনের শব্দ নেই। তবে কিছু একটা হচ্ছে, যেটা তার কানে কেমন যেন অস্বস্তিকর লাগছে। সে বিছানা থেকে উঠে দরজার দিকে এগোল। ঘরের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ শোনে। শব্দ আরও পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে। যেন চাপা কণ্ঠে কারও কষ্ট বা অদ্ভুত এক ধরণের যন্ত্রণা। অর্নবের বুক ধড়ফড় করতে শুরু করল। “কেউ কি এসেছে? মা কি কাউকে লুকিয়ে ঘরে ঢুকিয়েছে?” ভাবনাটা মাথায় আসতেই রক্ত হিম হয়ে গেল। এই শোকের সময়, এই পরিস্থিতিতে মা এমন কিছু করতে পারে? তার মাথা যেন কাজ করছিল না। সে দরজার কাছে গিয়েও থেমে গেল। ভেতরে ঢোকার সাহস হলো না। সারা শরীর কেমন অসাড় হয়ে আসছিল। হঠাৎ আবার শুনতে পেল—একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস, তারপর নিস্তব্ধতা। অর্নব ধীরে ধীরে নিজের ঘরে ফিরে এল। বিছানায় বসে কপালে হাত রাখল। ঘাম জমে গেছে। “না, আমি ভুল শুনছি। হয়তো মা কাঁদছিলো। কষ্ট পাচ্ছে। বাবাকে ছাড়া ঘুমাতে পারছে না।” এই ভেবে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করল। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা অদ্ভুত অস্বস্তি জমে উঠল। এরপরের রাতেও একই ঘটনা ঘটল। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে মা দরজা বন্ধ করে ঘরে ঢুকলো। অর্নব চেষ্টা করল নিজের মতো পড়াশোনা বা মোবাইলে ব্যস্ত থাকতে। কিন্তু রাত গভীর হতে না হতেই আবার সেই শব্দগুলো কানে এলো। এইবার আরও স্পষ্ট। উফফফফফফফফফ আম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মম হুউউউউউউউউউ ধরনের শব্দ। অর্নব কাঁপতে কাঁপতে দরজার কাছে গেল। ভেতরে মা একা না অন্য কারো সাথে—এই প্রশ্ন তাকে পাগল করে দিচ্ছিল। কিন্তু দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। যদি মা হঠাৎ দেখে ফেলে? সে শুধু দরজার পাশে দাঁড়িয়ে শুনতে লাগল। প্রতিটি শব্দ যেন তার বুকের ভেতরে ছুরি চালাচ্ছে। আহহহ আহহহহ আহহহহ আহহহহহ উফফফফফ আহহহহহহ “মা কেন এমন করছে? বাবার মৃত্যু মাত্র ১৪ দিন হলো… মা কি এত দ্রুত সব ভুলে গেলো?” অর্নবের চোখ ভিজে গেল। রাগ, ঘৃণা আর বেদনায় ভরে উঠল। সে দরজা ঠেলে ঢুকে যেতে চাইল। কিন্তু পা যেন কাজ করছিল না। হঠাৎ ভয় হলো—যদি সত্যিই কাউকে পায়? তখন কী হবে? সে হাল ছেড়ে দিয়ে ফিরে এল। কিন্তু মাথার ভেতরে শব্দগুলো বাজতেই থাকল। পরদিনেও একই ঘটনা। অর্নব এবার আর সহ্য করতে পারল না। ভেতরে ভেতরে ঘৃণা জমে উঠছিল মায়ের প্রতি। “কীভাবে মা এমন হতে পারে? এতদিন ধরে যাকে আমি শ্রদ্ধা করেছি, ভালোবেসেছি… উনি যদি সত্যিই…” কথাটা শেষ করতে পারল না। গলা আটকে এল। সে সিদ্ধান্ত নিল—আর নয়। পরদিন সে হাতেনাতে ধরে ফেলবেই। পরদিন রাতে আবার সবকিছু একই রকম হলো। মা দরজা বন্ধ করে ঘরে গেলো। কিছুক্ষণ পরই সেই চাপা দীর্ঘশ্বাস, অদ্ভুত শব্দ। উম্মম্মম্মম্মম্ম আহহহহহহহ উফফফফফফফ অর্নব এবার চুপচাপ উঠে দাঁড়াল। বুক ধড়ফড় করছে, কপালে ঘাম। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল মায়ের ঘরের দিকে। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে গভীরভাবে শোনে। শব্দ স্পষ্ট হচ্ছে। সে আস্তে করে হাত বাড়িয়ে দরজার কপাটে চাপ দিল। আধখোলা হয়ে গেল দরজা। অর্নব নিঃশ্বাস আটকে ভেতরে উঁকি দিল। এবং মুহূর্তেই তার চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেল। যা দেখল, তাতে তার বুক কেঁপে উঠল। ঘরে কোনো পুরুষ নেই। কাউকে দেখা গেল না। শুধু ম্লান আলোয় বিছানার ওপর আধশোয়া হয়ে আছে মা—সুমিতা। তার শাড়ির আঁচল একপাশে সরানো, চুল এলোমেলো, চোখ বন্ধ। ঠোঁট থেকে চাপা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসছে। আধো আলোয় খেয়াল করলো মায়ের হাত ঠিক তার দুই মাঝে মাঝে নাড়াচাড়া করছে। আর বুক যেন ছিড়ে উপরে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। অর্নবের বুক কেঁপে উঠল। প্রথমে সে বিশ্বাসই করতে পারছিল না। এতক্ষণ ধরে যে শব্দগুলো শুনছিল, ভেবেছিল মা অন্য কারও সাথে আছে। অথচ মা একাই… সে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে রইল। মায়ের শরীরের প্রতিটি নড়াচড়া, ঠোঁটের কোণে বেরিয়ে আসা চাপা শব্দ—সবকিছু অর্নবের বুকের ভেতরে বিদ্যুৎ খেলে যাওয়ার মতো অনুভূতি জাগাল। “না… এটা সম্ভব না।”  সে মনে মনে বলতে লাগল। কিন্তু চোখ অন্যদিকে ফেরাতে পারছিল না। এক অদ্ভুত কিছু তাকে টেনে ধরে রেখেছিল। মায়ের নিঃশ্বাস ক্রমেই ভারী হচ্ছিল। মাঝে মাঝে ঠোঁট কেঁপে উঠছিল। ঘরের নিস্তব্ধতার মধ্যে শুধু সেই চাপা সিতকার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। আহহহহ উফফফফফ উম্মম্মম আহহহহ আহহহহ আহহহহ উফফফফ কি জ্বালা! আহহহ আহহহ উফফফফ। অর্নবের চোখে জল চলে এলো। বাবার মৃত্যুর মাত্র চৌদ্দ দিন। অথচ মা… কিন্তু এবার ঘৃণা যেমন জমল, তেমনি ভেতরে ভেতরে একটা অজানা কৌতূহলও দানা বাঁধল। “মা কেন এমন করছে? এটা কি ওর ইচ্ছে? নাকি কোনো……?” তার বুক ধড়ফড় করতে লাগল। একটা মুহূর্তে সে ভেবেছিল দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে চিৎকার করবে—“তুমি এমন কেন করছো?” কিন্তু পা এগোল না। সে শুধু দাঁড়িয়ে রইল।। কিছুক্ষণ পর সবকিছু থেমে গেল। মায়ের শরীর নিস্তেজ হয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়ল। নিঃশ্বাস এখনও ভারী, কিন্তু আগের মতো নয়। শাড়ি, আচল ঠিক না করেই সুমিতা ঘুমে ঢলে পড়ে। মায়ের নগ্ন থাই অর্নব চাইলেই লাইট জ্বালিয়েই দেখতে পেতো কিন্তু সে মাকে প্রচন্ড সম্মান করে।  অর্নব তাড়াহুড়ো করে পিছিয়ে গেল। দরজা আস্তে বন্ধ করে নিজের ঘরে দৌড়ে এল। বিছানায় বসে হাঁপাতে লাগল। বুকের ভেতরে যেন আগুন জ্বলছে। “আমি কী দেখলাম? মা… মা একা… এটা কেন?” তার চোখ ভিজে গেল। মায়ের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, আর হঠাৎ জন্ম নেওয়া ঘৃণা—সব একসাথে মিশে মাথার ভেতরে ঝড় তুলল। সে সারা রাত ঘুমাতে পারল না। বারবার সেই দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠল। পরদিন সকালে মা যেন স্বাভাবিক। রান্নাঘরে গিয়ে নাশতা তৈরি করছেন। চোখের নিচে হালকা ক্লান্তি আছে, কিন্তু মুখে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। অর্নব চুপচাপ টেবিলে বসে রুটি খেল। মায়ের দিকে তাকাতে পারছিল না। “মা কি জানে আমি সব দেখেছি?”  এই প্রশ্নটা বারবার মাথায় আসছিল। কিন্তু মা একবারও কোনো অস্বাভাবিক আচরণ করলেন না। শুধু আগের মতো শান্ত, নির্লিপ্ত। অর্নবের ভেতরে কেমন যেন ক্ষোভ জমে উঠল। “কীভাবে মা এত স্বাভাবিক থাকতে পারে? গত রাতে সে… আর আজ এমন ভান করছে যেন কিছুই হয়নি।” দিন কাটল। রাতে আবার একই ঘটনা ঘটল। এইবার অর্নব আরও কাছে গিয়ে শুনল। আগের চেয়ে আরও প্রবল শব্দ আসছিল। সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁপছিল। চোখ দিয়ে জল পড়ছিল। “মা কেন? কেন?” কিন্তু এবার আর তাকানোর চেষ্টা করল না। বরং বিছানায় গিয়ে কান ঢেকে শুয়ে রইল। কিন্তু শব্দগুলো যেন তার মাথার ভেতর ঢুকে যাচ্ছিল। পরের রাতেও একই দৃশ্য। সে এক মুহূর্তের জন্য ভাবল, মা যেন অন্য কেউ হয়ে গেছে। এত চেনা মানুষ অথচ এত অচেনা। ঘৃণা এবার আরও গভীর হলো। কিন্তু সেই ঘৃণার ভেতরেই অদ্ভুত কৌতূহল—“মা এটা কেন করছে? কী দরকার আছে?” সে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে নিজেকেই প্রশ্ন করতে লাগল। উত্তর পেল না। সকালে মা রান্নাঘরে গেলেন। মুখে ক্লান্তি, কিন্তু তিনি যেন কিছু হয়নি এমন ভান করছেন। অর্নব খাওয়ার সময় হঠাৎ বলল,  – “মা… তুমি ঠিক আছো তো?” সুমিতা একবার তাকালেন, মুচকি হেসে বললেন,  – “হ্যাঁ অর্ণব, কেন?” – “না… মানে… আমি ভাবলাম তুমি খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছো।” – “ক্লান্ত তো হবই। এত কাজের চাপ, বাবার মৃত্যুর পর সব দায়িত্ব এখন আমার আর তোর কাঁধে।” অর্নব চুপ করে গেল। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যেন ঝড় বয়ে চলল। “মা ভান করছে। সব ঢেকে রাখছে। কিন্তু আমি জানি…” এভাবেই চলতে থাকল কয়েকদিন। প্রতিদিন রাতে অর্নব শুনত মায়ের সেই চাপা দীর্ঘশ্বাস, সিতকার। প্রতিদিন ঘৃণা জমত। প্রতিদিন তার কৌতূহলও বাড়ত। সে একদিন ঠিক করল—মায়ের সত্যিটা একবারেই প্রমাণ করবে। কৌতূহল, প্রশ্ন আর অজানা আকর্ষণ মিশে মাথার ভেতরে এক অদ্ভুত ঝড় তুলছিল। “আমি মাকে বুঝব। আমি খুঁজে বের করব, আসলে কেন সে এমন করে।” এই সিদ্ধান্ত নিয়েই সে ঘুমিয়ে পড়ল। ভোরের আলো জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকছিল। পাখির ডাক শোনা যাচ্ছিল দূরে কোথাও। কিন্তু অর্নবের মনে শান্তির কিছুই ছিল না। সারারাত ঘুমাতে পারেনি। বারবার মায়ের সেই চেহারা ভেসে উঠছিল চোখে—চোখ বন্ধ, ঠোঁট কাঁপছে, শরীর কাঁপছে। অথচ পাশে কেউ নেই। অর্নব বিছানায় বসে বুক চেপে ধরল।  “এটা কি সত্যিই মা? না কি আমি ভুল দেখেছি?” কিন্তু না, ভুল নয়। চার রাত ধরে একই দৃশ্য। তার বুকের ভেতরে ঘৃণা যেমন জমে আছে, তেমনি প্রশ্নও বাড়ছে। দিনগুলো যেন ভারি হয়ে উঠছিল। মা আগের মতোই স্বাভাবিক। রান্না করেন, বাজার করেন, তার খেয়াল রাখেন।  কিন্তু অর্নব জানে—রাতে তিনি অন্যরকম হয়ে যান। একদিন দুপুরে মা ঘুমিয়ে ছিলেন। অর্নব আলমারির দিকে তাকাল। ভেতরে কী আছে জানার একটা অদম্য টান অনুভব করল। আলমারি খুলে দেখল কাপড়চোপড়, কিছু নতুন ফাইল, কিছু ওষুধের প্রেসক্রিপশন। তার চোখ এক জায়গায় আটকে গেল—একটা ফাইলের মধ্যে কিছু মেডিক্যাল রিপোর্ট। অর্নব হাত কাঁপতে কাঁপতে বের করল। কাগজে ডাক্তারের নাম, কিছু মেডিক্যাল টার্ম। সে ঠিক বুঝতে পারছিল না। তবে একটা শব্দ তার চোখে আটকে গেল—“Hormonal Imbalance”। আরেক জায়গায় লেখা—  “Release required in every 15 days. Otherwise physical complications may arise.” অর্নবের বুক কেঁপে উঠল। “মানে… মা অসুস্থ? তাই সে…?” তার মাথা ঘুরে গেল। চোখে জল চলে এল। এতদিন ধরে যে ঘৃণা জমাচ্ছিল, এখন তা মিশে গেল এক অদ্ভুত কষ্টে। বিকেলে মা তাকে ডাকলেন,  – “অর্ণব, চা খাবি , সোনা?” অর্নব মায়ের দিকে তাকাল। আজ যেন তাকে নতুন চোখে দেখছিল। মা শান্তভাবে হাসছেন, কিন্তু তার চোখের নিচে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। অর্নবের বুক হুহু করে উঠল। সে চুপচাপ মাথা নেড়ে হাঁ করে চায়ের কাপ হাতে নিল। কিন্তু কোনো কথা বলতে পারল না। সেদিন রাতে আবার একই শব্দ শোনা গেল। অর্নব এবার কান ঢাকল না। বরং বিছানায় বসে শুনতে থাকল। মায়ের সেই চাপা সিতকার এবার তার কানে ভিন্নরকম লাগছিল। ঘৃণা নয়, বরং করুণা। যেন তিনি যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। অর্নবের বুক ভেঙে যাচ্ছিল। সে বিছানায় বসে ফিসফিস করে বলল,  – “মা, তুমি যদি চাও আমাকে বলো। আমি পাশে আছি।” কিন্তু ঘরের ভেতরে কেউ শোনেনি সেই কথা। কয়েকদিন কেটে গেল। অর্নব আলমারির ভেতর থেকে আবার রিপোর্ট বের করে পড়তে লাগল। যত পড়ছিল, তত বুঝতে পারছিল—এটা কোনো খেয়ালখুশির ব্যাপার নয়। মায়ের শরীরের একটা জটিল রোগ আছে, যেটা তাকে বাধ্য করছে এসব করতে। অর্নব বুকের ভেতর হাত মুঠো করে প্রতিজ্ঞা করল—  “আমি মাকে বুঝব, তাকে সাহায্য করব। যেভাবেই হোক।” কিন্তু এখনও মাকে কিছু বলেনি। একদিন রাতের খাবার খেতে খেতে হঠাৎ বলে ফেলল,  – “মা, তুমি কি একা থাকতে ক্লান্ত হয়ে গেছো?” সুমিতা চমকে তাকালেন।  – “কী বলছিস অর্ণব?” কথা ঘুরিয়ে অর্নব বললো, – “মানে… বাবার মৃত্যুর পর সব দায়িত্ব তো একাই সামলাচ্ছো।” মা মুচকি হেসে বললেন,  – “দায়িত্ব সামলাতে সমস্যা নেই। তবে হ্যাঁ, মাঝে মাঝে একাকিত্ব কষ্ট দেয়।” অর্নবের বুক কেঁপে উঠল। মনে হলো মা যেন ইশারায় অনেক কিছু বলে গেলেন। কিন্তু সে চুপ করে রইল। এরপর কয়েক রাত ধরে অর্নব দূর থেকে শুধু দেখল, শুনল। ঘৃণা নেয় , এবার এক অদ্ভুত দয়া হলো মায়ের প্রতি। “মা আসলে অসুস্থ। সে চায় না এমন হোক। শরীর তাকে বাধ্য করছে।” এই উপলব্ধি তাকে নরম করে দিল। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেল—এখন কী হবে? মা কি সারা জীবন এমনই কষ্ট পাবেন? নাকি কোনো সমাধান আছে? অর্নব বুঝতে পারল, আসল পথ খুঁজতে হলে তাকে সরাসরি ডাক্তারদের সাথে কথা বলতে হবে। এক রাতে সে আলমারির কাগজপত্র গুছাতে গিয়ে নতুন একটা প্রেসক্রিপশন পেল। নিচে মোটা হরফে লেখা—  “If unable to maintain, patient may fall into severe depression.May Cause Serious Organ Failure  ” অর্নবের চোখ ছলছল করে উঠল। “মা বিপদের মুখোমুখি হচ্ছে। কিন্তু ছেলে হয়েও আমি কিছু করতে পারছিনা। আমাকে কিছু একটা করতেই হবে।” তার বুকের ভেতর কেমন এক সিদ্ধান্ত পাক খেতে শুরু করল। “আমি মাকে যেভাবেই হোক সুস্থ করে তুলবো, নিজের জীবন দিয়ে হলেও।” কিন্তু ভেতরে ভেতরে এক চাপা দ্বন্দ্বও রয়ে গেল। প্রতিদিন রাতের সেই শব্দ তার ঘুম ভাঙিয়ে দিচ্ছিল। মায়ের সিতকারে সে কখনো ঘৃণা বোধ করছিল, কখনো করুণা, আবার কখনো… কেমন যেন অদ্ভুত টান। অর্নব নিজের মাথা চেপে ধরত—  “না, এসব ভাবা যাবে না।সে মা, আমার মা।” তবু মনে হতো, ধোঁয়ার মতো সেই শব্দ তার ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। পরদিন সকালে সে সিদ্ধান্ত নিল। মাকে কিছু না জানিয়ে একাই যাবে ডাক্তারের কাছে। মায়ের রিপোর্টগুলো হাতে নিয়ে সে বাইরে বেরিয়ে পড়ল। বুকে একটাই প্রতিজ্ঞা—  “আমি সব জানব। কেন মা এমন করছেন, কীভাবে তাকে বাঁচানো যায়।” চলবে………
Parent