আধুরা ইন্সান ! - অধ্যায় ১২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-35855-post-4101927.html#pid4101927

🕰️ Posted on December 12, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 746 words / 3 min read

Parent
ট্যাক্সি করে সোজা কোলকাতা নারসিং হোম এয়ারপোর্টের খুব কাছেই ! রাস্তায় কোনও কথা ঠিক মতো বলেন নি ফাল্গুনি দেবী ! অভি শুধু একবার জিজ্ঞাসা করেছিল কার কি হয়েছে? উনি শুধু উত্তর দিয়েছেন তোমার বাবা ! এইটুকুই বলে উনি থেমে গেছিলেন ! অভি ভেবে নিয়েছিল যে ওর বাবা অনিমেশ বাবু বোধহয় আর নেই ! একটু দুঃখ হলেও অতটা ব্যাথিত অভি হোল না ! দেবির চোখে মুখেও কোনও রুপান্তর ধরা পড়লো না ! নারসিং হোমের ভিতরে ঢুকে দেখল পাপা মানে ত্রিদিবেশ বাবু বসে আছেন মা কে জরিয়ে ধরে ! কাছে যেতেই অভির হাত ধরে বললেন " এ যাত্রায় বেঁচে গেলো অনি ! কিন্তু ......... " কোনও কিন্তুর পরয়া না করে পাপা কে আর মাকে জিজ্ঞাসা করলো অভি "তোমরা সব ঠিক আছো তো ?" ত্রিদিবেশ বাবু আর জেঠিমা পরম স্নেহে অভির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন ! "যাও একবার দেখে এসো ! আইসিইউ তে আছে ! " ব্যাগ রেখে অভিধিরে ধীরে আইসিইউতে প্রবেশ করলো ! পিছনে পিছনে দেবী !  সারা দেহে বিভিন্ন রকমের নল লাগানো ! মুখে অক্সিজেনের মাস্ক ! অজ্ঞ্যান হয়ে পরে থাকা অনিমেশ বাবুর শরীর ! একজন নার্স পাশে বসে ওনার ডিউটি রেকর্ড চেক করছে ! অভি ওনাকে জিজ্ঞাসা করলো " কেমন বুঝছেন এখন ?"  -ভয় তো কেটে গেছে কিন্তু যতক্ষণ না জ্ঞ্যান ফিরছে ততক্ষন কিছুই বলতে পারবো না ! আপনি বরন ডাক্তার ঘোষের সাথে একবার কথা বলে নিন !  অভি পিছনে ফিরে দেবিকে দেখতে পেলনা ! ধীর পায়ে বাইরে বেড়িয়ে এলো ! অদুরে দাঁড়িয়ে দেবী তার মা ফাল্গুনি দেবির সাথে চাপা গলায় কিছু বাক বিতণ্ডা করে যাচ্ছে ! অভি ওদের দিকে না গিয়ে সোজা পাপার কাছে চলে এলো !  - কি হয়েছিলো ড্যাডের ? -বার থেকে রাত্রি বেলায় বেরুনোর সময় একটা ট্যাক্সি পিছন থেকে ধাক্কা মারে ! ট্যাক্সির ধাক্কায় দূরে ফুটপাথের উপর ছিটকে পরে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিল ! ট্যাক্সির ড্রাইভার নিজেই ওকে এই নারসিং হোমে নিয়ে আসে ! অনির পকেট থেকে আমার আর ফাল্গুনির নাম্বার পেয়ে ওরা আমাদের ফোন করে ! আমরা আসার ফাল্গুনি পৌঁছে গেছিলো ! ওই সব হ্যান্ডেল করেছে ! তোদেরকেও ফোন করা হয়েছিলো ! কিন্তু তোদের ফোন বন্ধ ছিল ! পরে মনামিকে ফোন করে জানা যায় যে তোরা ফ্লাইটের ভিতরে আছিস ! তোদের ডিটেইলস নিয়ে ফাল্গুনি তোদের আনতে এয়ারপোর্ট যায় ! বাকি তো তোরা এখন এখানেই আছিস ! দূর থেকে অভি দেখে দেবী কেঁদে কেঁদে মায়ের সাথে চাপা গলায় ঝগড়া করেই চলেছে ! ফাল্গুনি দেবী ওকে কিছু বোঝাতে চেস্টা করে যাচ্ছেন ! কিন্তু অবুঝের মতো মাথা নেরে কেঁদে যাচ্ছে দেবী !  ধীর পায়ে এগিয়ে গেল অভি ! দেবির মাথায় হাত রেখে স্নেহের স্বরে বলল " কি হয়েছে দেবী? তুই এইরকম কেনও আচরন করছিস?" দেবী অভিকে জরিয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে ফেলল !  মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে অভি বলল " কেনও কাঁদছিস সেটা না জানলে আমি কি করে কি করব বল?" ফাল্গুনি দেবী বলেন  " বাবার প্রতি মেয়ের বিতৃষ্ণা ! কেনও ওই লোকটার জন্য ওকে এইখানে আনা হয়েছে ?" - ছি দেবী ! উনি তোর আমার দুজনেরই বাবা ! বাবার এই অবস্থায় কেউ এইরকম ব্যবহার করে? - কিসের বাবা ! কার বাবা? যে লোকটা জন্মের পরে ছেড়ে চলে যায় ! শুধু মাসে মাসে কিছু টাকা দিলেই বাবা হওয়া যায় না ! হয়ত তুমি মহৎ ! তুমি ওই লোকটাকে বাবা বলে মানতে পারো কিন্তু আমি পারিনা ! স্কুলের প্রতিটি প্রয়োজনে যখন বাবাকে ডাকা হতো কেউ আসতো না ! যখন দেখতাম আমার সমস্ত বান্ধবিরা বাবার সাথে ঘুরছে, আনন্দ করছে সেই সময় বাবাকে খুঁজতাম ! মায়ের সাথে ঝগড়া করতাম...... আমার বাবাকে এনে দাও ! কিন্তু মা ও কিছুই বলত না ! আজ তুমি বলছ ওই লোকটা আমার বাবা? দেবির মাথায় হাত বুলিয়ে ওকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে অভি বলে উঠল " তুই তো তবু কিছুটা হলেও ছোটবেলায় বাবার আদর পেয়েছিস কিন্তু আমি কি পেয়েছি বলতে পারবি? চোখ খুলে দেখেছি মা আর পাপা কে ! আমার জেঠা জেঠিমা ! ওরাই আমার পৃথিবী ! কিন্তু উনি ত আমাদের জন্ম দিয়েছেন ! আমার পাপা আর মায়ের শিক্ষা আজ আমাকে অনিমেশ বাবুর সন্তান হতে শিখিয়েছে ! যখন প্রথম জেনেছিলাম যে উনিই আমার বাবা সেদিন আমারও মানতে খুব কষ্ট হয়েছিলো ! কিন্তু আমি মেনে নিয়েছি ! হয়তো নিয়তির পরিহাস এটা ! যদি নিয়তির পরিহাস না হতো তুই কি আমাকে পেতিস না আমি তোকে পেতাম ? আমরা দুজনেই ভাই বোন হয়তো আমাদের মা আলাদা কিন্তু বাবা তো একজনই ! ভুলে যা সব কিছু ! মেনে নে কঠিন সত্য কে ! দেবী অভিকে জরিয়ে ধরে ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল " তুই আমার দাদা ! তুই যা বলবি তাই হবে " ওদের কথার মাঝেই  অভির বুক পকেটে রাখা মোবাইল ভাইব্রেট করতে শুরু করলো !  পকেত থেকে মোবাইল বের করে দেখল দিয়ার ফোন ! অভির মনটা ভালো হয়ে গেলো ! দেবিকে ছেরে ফোন কানে নিয়ে বলল "হ্যালো "............
Parent