অবৈধ - অধ্যায় ৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30175-post-2351630.html#pid2351630

🕰️ Posted on August 28, 2020 by ✍️ Max87 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1018 words / 5 min read

Parent
আপডেট ৩:  সারাদিনের ধকলের পরে নাগেশ্বর নিজের শোবার ঘরে বসেছিল। রিসেপশনের ধড়াচুড়ো এখনো খোলা হয়নি। একটু জিরিয়ে তারপরে চেঞ্জ করে শোবার প্ল্যান করেছিল নাগেশ্বর। অতিথি বিদায় করে সব কিছু মোটামুটি মেটাতে মেটাতে রাত সাড়ে বারোটা হয়ে গেছে। তবে ছেলে-বৌ কে আগেই ফুলশয্যার জন্য বাড়ির ভেতরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। মনে মনে একটু ইমোশনাল হয়ে পড়েছিল। ভাবছিল, তার ছেলের আজ থেকে নতুন জীবন শুরু হবে। নতুন ভাবে আজ সব কিছু তার কাছে ধরা দেবে। জীবনের নানা রঙে রঙ্গিন হয়ে উঠবে তার ছেলের জীবন।  ভাবনায় ছেদ পড়লো। বাড়ির পুরানো কাজের পরিচারিকা মালতির ডাকে। যদিও মালতিকে নাগেশ্বর এখন নিজের বাড়ির একজন ভাবে।  মালতি দেখলো তার দাদাবাবু ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে। একটু ইতস্তত করে ডাকলো সে - দাদাবাবু, জেগে আছো?  - কে? মালতি! কি হয়েছে। এতরাতে আবার ডাকাডাকি করছিস কেন? ক্যাটারার কে তো বললাম কাল সকালে কথা বলবো!  - না, ক্যাটারার নই গো দাদাবাবু, বৌদিমণি, তোমাকে একবার ডাকছে। বলছে তোমার সাথে খুব দরকারি কথা আছে।  - এত রাতে বৌমা ডাকছে !  নাগেশ্বর রীতিমতো অবাক হলো। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে বললো - তোর ছোড়দাবাবু কোথায়? - তিনিও ঘরে আছে।  - তাহলে এত রাতে কেন ডাকছে। আজকের রাতটা বাদ দিয়ে কাল সকালে কথা বলবো বল।  - আসলে দাদাবাবু, বৌদিমণি বললেন খুব জরুরী। আমি কি এখানে আসতে বলবো।  মালতির কথায় একটু চিন্তায় পড়ল নাগেশ্বর। আজকের রাতে এমন জরুরি তলব। কিছুক্ষন ভেবে বললো - না থাক, আমি যাচ্ছি চল।  মালতির সাথে নিজের ছেলের ঘরে এলেন। মালতি ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো। দৃষ্টি সীমার বাইরে কিন্তু শ্রুতি সীমার মধ্যে। নাগেশ্বর বুঝলো, মালতি লক্ষ্য রাখছে যাতে আর কেও না এসে পরে। মালতি মূর্খ্য হলেও বুদ্ধি আছে। কিছু জটিল ব্যাপার যে আছে সেটা সে আঁচ করেছে। তাই পাঁচকান যাতে না হয় তার জন্য ঘরের বাইরে পাহারা দিচ্ছে।  নাগেশ্বর ঘরে ঢুকে দেখলো, দেবরাজ ঘরের একদিকের একটা চেয়ারে মাথা নিচু করে বসে আছে। অনুপমা খাটের ধারে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। অনুপমার মুখের দিকে তাকিয়ে নাগেশ্বরের মনে হলো মেয়েটার মুখের সব রং যেন কেও শুষে নিয়েছে।  একটু ইতস্তত করে বৌমা কে উদ্দেশ্য করে নাগেশ্বর বললো - কি হয়েছে বৌমা। এত রাতে কি কিছু বিপদ হয়েছে?  অনুপমা মাথা হেঁট করে বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে রইলো। মনে মনে সাহস আনছিল, যেটা বলতে চাই সেটার জন্য। কিছুক্ষন পরে বললো - বাবা, আমি আপনার সাথে আলাদা করে কোথাও কথা বলতে পারি? নাগেশ্বর চমকালো। অনুপমার গলায় একটা ব্যাথার সুর টের পেলো। দু মিনিট ভেবে বললো - ঠিক আছে বৌমা। মালতিকে বলছি ও তোমাকে আমার পড়ার ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। তুমি যাও ওর সাথে আমি যাচ্ছি।  মালতিকে ডাকতে হলোনা, সে ঘরে এসে অনুপমার হাত ধরে বললো - চলো বৌদিমণি, আমি তোমায় নিয়ে যাচ্ছি।  মালতি অনুপমাকে নিয়ে ঘরের বাইরে গেলে, নাগেশ্বর নিজের ছেলের দিকে তাকিয়ে বললো - দেবু, কি হয়েছে? বৌমা কি কথা বলতে চাই আমার সাথে, যেটা সে তোর সামনে বলতে চাইছে না?  দেবরাজ মাথা নাড়লো। তাতে কি বোঝাতে চাইল তা পরিষ্কার হল না। নাগেশ্বর খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো - ঠিক আছে। তুই যখন বলবি না তখন বৌমার কাছ থেকেই শুনতে হবে মনে হচ্ছে। পুরুষমানুষের মত দাঁড়াতে কবে শিখবি দেবু? এইটুকু বলে সে বেরিয়ে এলো। ছেলের মেরুদন্ডহীনতায় খুবই হতাশ সে। লাইব্রেরি রুমে এসে দেখলো মালতি অনুপমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে জলের গ্লাস হাতে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরে ঢুকে অনুপমার দিকে খানিক তাকিয়ে তারপর মালতিকে বললো - তুই এখন যা মালতি, আর দরজাটা বাইরে লাগিয়ে দিস। তবে আশেপাশে থাকিস, ডাকলে যেন সারা পায়।  মালতি দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো। এই ঘরটা বাড়ির এক কোনে। এদিকটা সচরাচর কেও আসে না।  তাও নাগেশ্বর ঝুঁকি নিলো না। বাইরে থেকে দরজা লাগানো থাকলে, কেও সন্দেহ করবে না। নাগেশ্বর একটু দূরের একটা চেয়ারে বসলো। অনুপমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো - কি হয়েছে এবার খুলে বলতো বৌমা। কোনো ভয় নেই। আমি তোমায় কথা দিচ্ছি, যদি দেবু কিছু অন্যায় করে থাকে তার ব্যবস্থা আমি ঠিক করবো। তুমি নির্ভয়ে মন খুলে বোলো।  কথা কটা বলে নাগেশ্বর থামলো। অপেক্ষা করতে থাকলো অনুপমার উত্তরের জন্য। এখন ধৈর্য্য ধরতে হবে, সেটা সে বুঝছে। বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে অনুপমা বললো - আপনি আপনার ছেলেকে কতটা চেনেন।  - কতটা চিনবো মানে বুঝলাম না বৌমা। তবে ও যে একটু লাজুক সেটা জানি।  একটু চিন্তা করে বললো - হঠাৎ এই কথা তা কেন বললে? তুমি নির্ভয়ে বোলো মা। কোন ভয় নেই তোমার।   তাও কিছুক্ষন চুপ থেকে অনুপমা বলল  - বাবা, আমি এই বিয়েতে মত দিয়েছিলাম, আপনার ওপর ভরসা করে। হাঁ, আপনার ছেলের সাথে আলাপ করে আমার মনে হয়েছিল যে একটু লাজুক, কিন্তু এই ভাবে আমাকে ঠকাবে ভাবিনি।  - ঠকাবে মানে, ওর কি অন্য্ কোনো মেয়ের প্রতি ভালোবাসা আছে বলেছে ? কথা বলতে গিয়ে নাগেশ্বর টের পেলো, তার মধ্যেও রাগ আর অবাক ভাব দুটোই আসছে। কিন্তু সে বুঝতে দিলো না। অনুপমা ঘাড় নাড়লো। নাগেশ্বর আরো দন্ধে পড়লো।  বললো - মা, লজ্জা না করে তুমি খুলে বোলো। আমার ওপর যখন ভরসা করেছো, তখন আশ্বাস দিচ্ছি তোমার কোনো ক্ষতি হোক, সেটা আমি হতে দোবো না।  অনুপমা কিছুক্ষন চুপ থেকে মাথা তুলে নাগেশ্বরের চোখে চোখ রেখে বললো - আপনি কি জানেন, আপনার ছেলে ইম্পোটেন্ট।  নাগেশ্বর হতবম্ব হয়ে বসে রইলো। তার মাথায় বাজ পড়লে এতটা চমকাতো না মনে হয়।  অনুপমা একটু বিরতি দিয়ে আবার ধীরে ধীরে বলে চললো - কলেজে পড়ার সময় আপনার ছেলের একটা একসিডেন্ট হয়, তাতেই ডাক্তাররা বাধ্য হয়ে অপারেশন করে।  নাগেশ্বর কোনো মতে বললো - সেকি, আমি জানলাম না।  - আপনি তখন কাজে কলকাতার বাইরে ছিলেন প্রায় মাস তিনেক মতো।  একটু চুপ করে থেকে অনুপমা বললো - দুঃখ আমার এটা এতদিন পরে কেন জানালো!  নাগেশ্বর স্থানুর মতো কিছুক্ষন বসে রইলো। তারপরে বললো - বৌমা, তুমি ঘরে যাও, আমি মালতিকে বলে দিচ্ছি, ও তোমাকে নিয়ে যাবে। আজ রাতটা আমাকে ভাবতে দাও। আমি কাল সকালে তোমার সাথে কথা বলবো। ভয় নেই বৌমা, তুমি এখন আমার বংশের কুলবধূ। তোমার ওপর অন্যায় হলে তার বিচার তুমি পাবে।  কথা গুলো বলে মালতিকে ডাকলো নাগেশ্বর। মালতি এলে বললো - মালতি বৌমা কে ঘরে নিয়ে যাও, আর তোর ছোট দাদাবাবুকে বল এখানে আসতে।  মালতি মাথা নেড়ে অনুপমা কে সাথে নিয়ে চলে গেলো। বেশ খানিক পরে দেবরাজ ঘরে এসে ঢুকলো। ছেলেকে দেখে নাগেশ্বর বললো - তুমি বাকি রাতটুকু এখানে শুয়ে কাটিয়ে দাও। আর বৌমার কাছে আমি পুরোটা শুনলাম। কাজটা ঠিক করোনি। অন্তত তুমি মালতিকে বলতে পারতে, তাহলেও আমি জানতে পারতাম। তাতে একটা মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট হতো না। তোমার সাথে যেটা হয়েছে সেটা দুর্ঘটনা, কিন্তু তুমি যেটা করেছো সেটা অন্যায়।  এইটুকু বলে নাগেশ্বর ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে চলে এলো। ধড়াচুড়ো পরেই বিছানায় শুয়ে পড়লো। তার চোখের ঘুম আজ উধাও। মনে মনে অনেক কিছু চিন্তা করতে করতে সে ভোর রাতে ঘুমিয়ে গেলো।
Parent