অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৬) - অধ্যায় ২০৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-52771-post-5850853.html#pid5850853

🕰️ Posted on January 10, 2025 by ✍️ কাদের (Profile)

🏷️ Tags:
📖 838 words / 4 min read

Parent
চ নুসাইবার চোখ ক্লান্তিতে ভেংগে আসছে তবে ঘুমাতে পারছে না। আমিন গাড়ি চালাচ্ছে আর পিছনের সিটে চোখ বন্ধ করে সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে নুসাইবা। গাড়ি যাত্রাবাড়ির জ্যামে এসে পৌছেছে। গতকাল সকালে মাহফুজে ফোন এসেছিল জোহরার ফোনে। ঢাকা এখন অনেকটা নিরাপদ তাই ফিরে আসতে পারে। যাতে দ্রুত ঢাকা চলে আসে। আমিন বাড়িতেই আছে। যেন সকালে ওকে নিয়ে রওনা দিয়ে দেয়। কথাটা শোনার পর থেকে নুসাইবার বুক থেকে একটা বড় বোঝা নেমে যায়। আবার ঢাকা  ফেরত যেতে পারছে ও। এতদিন এখানে থাকতে থাকতে যেন গ্রামের মাঝে ওর শিকড় গজিয়ে গেছে। জোহরা আজকাল ওর সাথে একদম বন্ধুর মত কথা বলে। নুসাইবা নিজেও খুব একটা এটা নিয়ে উচ্চবাচ্চ্য করে না। একে তো নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখতে হবে। তারপর ওকে আর মাহফুজ কে যে অবস্থায় জোহরা দেখেছে সেটা জানার পর থেকে ওর আর জোহরার মাঝে একটা অদৃশ্য বন্ধন গড়ে উঠেছে। মাহফুজ যাবার পর নুসাইবা এই নিয়ে কথা বলতে চাইলে জোহরা বলে আপা চিন্তা করবেন না, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মিল মহব্বত হবে এইসব নিয়ে আমারে বলার দরকার নাই। আমি ঐদিন আসলে না বুইঝা দেইখা ফেলাইছি। একবার দেহার পর আর চোখ সরাইতে পারি নাই। নুসাইবা জোহরার কথায় লজ্জা পেলেও বুঝে জোহরার কাছে ওর সিক্রেট সেফ। মেয়েরা সাধারণত নিজেদের মধ্যে একটা সিস্টারহুড গড়ে তুলে ধনী গরিব নির্বেশেষে নিজেদের বাচাতে। সেই পুরাতন সিস্টারহুডের বাধন তাকে এইখানে সুরক্ষা দিবে বুঝতে পারে নুসাইবা। আর এটা থেকে জোহরার প্রতি ওর কৃতজ্ঞতা আর বাড়ে। মাইক্রোর সিটে বসে নুসাইবা ভাবে কয়েক মাস আগে জোহরার মত কার সাথে ওর বন্ধত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে এটা বললে হেসে উড়িয়ে দিত। তবে এখন এইটা বাস্তব। আজকে সকালে বাড়ি থেকে খুব ভোরে বের হবার সময় জোহরা ওকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিয়েছিল। জোহরার চোখের পানি ওর বুকে লেগেছে একবারে। সেই কান্না লোক দেখানো না ফেসবুকে ছবির জন্য না। দেমাগী অহংকারী ক্লাস সচেতন নুসাইবার চোখের কোণায় তাই হালকা ভিজে যায়। গাড়ি যত ঢাকার দিকে আগাচ্ছে এখন নতুন করে পুরাতন প্রশ্ন গুলো তাই আবার আসছে নুসাইবার মনে। আরশাদ এত বছর যে ওর সাথে প্রতারণা করল, ওর কাজের জন্য মুন্সীর মত লোকের মোকাবেলা করতে হল এইসব কাজের জন্য কি এরশাদ কে ক্ষমা করে দিবে? আর মাহফুজ যদিও বলেছে ঢাকা নিরাপদ আসলে কতটা নিরাপদ? কারণ মাহফুজ ফোনে কথা বলার সময় স্পেসিফিক্যালি বলেছে ওকে ঢাকা এসে যাতে প্রথমেই সাফিনা ভাবী কে ফোন দেয় ও। মাহফুজ আর সিনথিয়ার ব্যাপারে কথা বলে। মাহফুজ আর ওর মধ্যে এই কিছুদিন যা ঘটেছে তার পর কি সিনথিয়া কে এই ছেলের হাতে তুলে দেওয়া ঠিক হবে? আবার সিনথিয়ার কথা বলবার সময় মাহফুজের চোখ যেভাবে জ্বলজ্বল করে উঠে সেটাও এড়ায় নি নুসাইবার। আর সিনথিয়া কে যদি পাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা দেয় নুসাইবা তাহলে মাহফুজে কিভাবে রিএকট করবে সেটা জানে না নুসাইবা। মাহফুজের মত বুদ্ধিমান ছেলে যে ম্যানেজার আর মুন্সির সাথে একসাথে পাল্লা দেয় সে যে নুসাইবা কে ছাড়বে না সেটা বুঝে। আবার মাহফুজ এই কয় রাত ওকে যেভাবে আদর করেছিল সেটা ওকে বুঝিয়ে দিয়েছে আরশাদের সাথে ওর বিছানায় কি মিসিং ছিল। ফায়ার। সব মিলিয়ে ঘোলাটে লাগে সব। কনফিডেন্ট নুসাইবার মনে হয় এত বড় সংকটে আর কখনো পড়ে নি ও। মনে হয় গ্রামে থেকে গেলেও হয়ত ভাল হত। এতসব কঠিন সিদ্ধান্ত নেবার ভার ওর উপর পড়ত না। এর মধ্যে ভাবী ফোন ধরে। সাফিনা ভাবীর গলার উষনতা ওকে একটা এট হোম ফিল দেয়। কিশোরি বয়সে সাফিনা যখন ওর ভাবী হয়ে আসল তখন থেকে ভাবী ওর ক্লোজ কনফিডেন্ট। সাফিনা ওকে এতদিন কিভাবে ছিল কি করেছে সব প্রশ্ন করে। নুসাইবা বলে ভাবী সামনা সামনি সব বলব। তবে উত্তর দেবার সময় ও জানে চাইলেও ভাবী কে সব বলতে পারবে না। এতদিন ধরে ভাবী ছিল ওর সব গোপন খবরের অংশীদার। তবে আজ থেকে ভাবীর কাছেও অনেক কিছু গোপন করতে হবে। তাই বলে মাহফুজ ভাল ব্যবস্থা করেছিল। গ্রামে থাকলেও নিরাপত্তার সমস্যা ছিল না। তবে ভাবী আমি মাহফুজ কে কথা দিয়েছিলাম। ও আমাকে হেল্প করলে আমি ওর জন্য তোমার কাছে সুপারিশ করব। তাই ঢাকা ঢুকতে না ঢুকতেই তোমাকে কল দিয়েছি। এরপর গাড়ি যতক্ষণ যাত্রাবাড়ি থেকে ওর বাসার দিকে যাচ্ছে ততক্ষণ নুসাইবা আর সাফিনার কথা হয়। নুসাইবা মাহফুজের পক্ষে নানা যুক্তি দেয়। সাফিনা বলে আমি দেখছি কি করা যায়। অবশেষে বাসার সামনে গাড়ি আসে। আমিনে কে ধন্যবাদ দেয়। আমিন কে টাকা সাধলেও টাকা নেয় না। আমিন বলে সোলায়মান স্যার আমারে টাকা নিতে মানা করছে। উনি আর মাহফুজ স্যার মিলে সব মিটায়ে দিবে। নুসাইবা গাড়ি থেকে নেমে এপার্টমেন্টের গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে। দারোয়ান ওকে দেখে বলে ম্যাডাম আপনারে অনেক দিন দেখি না। নুসাইবা বলে একটা কাজে ঢাকার বাইরে ছিলাম। দারোয়ান বলে ও স্যারও সেইটা বলল। উনিও নাকি বিদেশে ছিল। নুসাইবা চমকে যায়। তবে চেহারায় বুঝতে দেয় না। আরশাদ তাহলে ঢাকায়। লিফটে উঠে ওর ফ্লোরের বাটনে চাপ দেয়। লিফট উপরে উঠতে থাকে। নুসাইবার হৃদকম্পন বাড়তে থাকে। আরশাদের সাথে তাহলে ওর এখন দেখা হবে। আরশাদের বিরুদ্ধে ওর অনেক অভিযোগ সব কিছুর সমাধান করতে হবে। আবার এই কিছুদিনে মাহফুজ আর ওর ভিতরে গড়ে উঠা সম্পর্ক সেইটা কি ও গোপন রাখবে? আরশাদ কি ওর চোখ দেখে কিছু বুঝতে পারবে? লিফট এসে ওর ফ্লোরে থামে। লিফট থেকে নেমে দরজার সামনে দাড়াতেই দরজা খুলে যায়। সামনে আরশাদ। শুকিয়ে গেছে অনেক। চোখের নিচে কালি। তবে ওকে দেখে একটা প্রাণখোলা হাসি দেয়। মাহফুজ আমাকে বলেছিল তুমি আজকে আসছ। তাই প্রতিবার লিফট খোলার শব্দ হলে দরজা খুলে দেখছিলাম। মাহফুজের সাথে আরশাদের কথা হয়েছে? কই মাহফুজ তো ওকে কিছু বলে নি? আরশাদ বলে ওয়েলকাম ব্যাক নুসাইবা। ওয়েলকাম টু আওয়ার হোম।
Parent