অন্ধকারের অভিশাপ - অধ্যায় ৫২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-67662-post-5909982.html#pid5909982

🕰️ Posted on March 26, 2025 by ✍️ Toxic boy (Profile)

🏷️ Tags:
📖 578 words / 3 min read

Parent
অধ্যায়: মিথ্যে শান্তি (অংশ ৪১) সকালটা ধীরে ধীরে দুপুরের দিকে গড়াচ্ছে। রঞ্জিত বসার ঘরে সোফায় বসে আছে, তার হাতে একটা পুরোনো ফ্যামিলি অ্যালবাম। সে পাতা উল্টাচ্ছে—তার বাবা-মায়ের সাথে ছবি, দাদু-দিদার সাথে পুরোনো বাড়ির সামনে দাঁড়ানো। তার চোখে একটা গভীর চিন্তা—রাতের সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা তার মাথায় ঘুরছে। জানালার ফাটা কাচ, আকরামের লাল চোখের ছায়া, মিনার কান্না। “তাহলে কি দাদু-দিদার ভূতের গল্পগুলো সত্যি?” সে ফিসফিস করে। তার মনে পড়ে—দাদু বলত, “এই বাড়িতে কিছু অন্ধকার আছে, রঞ্জিত। সাবধানে থাকিস।” সে হাসে, “ধুর, এসব কচ্ছু না,” বলে নিজেকে বোঝায়। কিন্তু তার মনের কোণে একটা অস্বস্তি—সে মানতে চায় না, তবু ভয়টা গেঁথে যাচ্ছে। মিনা রান্নাঘরে। তার পরনে সেই হালকা নীল শাড়ি, আঁচলটা কোমরে গোঁজা। সে একটা কড়াইতে তেল গরম করছে—তেলের ফোঁটা ছিটকে তার হাতে লাগছে, কিন্তু সে যেন টের পাচ্ছে না। তার হাতে একটা ছুরি—সে আলু কাটছে, টকটক শব্দটা রান্নাঘরে গুঞ্জন তুলছে। তার মুখে একটা হালকা হাসি—আজ সকালের তুলনায় শান্ত, যেন সে আস্তে আস্তে নরমাল হয়ে আসছে। কিন্তু তার চোখে একটা অদ্ভুত শূন্যতা—কালো জাদুর প্রভাব কমছে না, বরং আকরাম তাকে একটা মিথ্যে শান্তিতে ডুবিয়ে রেখেছে। সে জানালার দিকে তাকায়—বাইরে রোদ, কিন্তু তার মনে একটা হালকা ঝলক—“শুভ… আমার শরীরে…”—কিন্তু সেটা মিলিয়ে যায়। সে হাসে, “আমি ঠিক আছি,” বলে নিজেকে। শুভ কলেজ থেকে ফিরেছে। তার ইউনিফর্মটা একটু ময়লা, তার ব্যাগটা দরজার কাছে ফেলে সে বসার ঘরে ঢোকে। “বাবা, আমি এসেছি,” সে বলে, তার গলায় একটা স্বাভাবিক স্বর। রঞ্জিত তার দিকে তাকায়, “কেমন গেল কলেজ?” সে জিজ্ঞেস করে। শুভ হাসে, “ভালো,” বলে, কিন্তু তার চোখে একটা গভীর অন্ধকার। সে মা-বাবার সামনে নরমাল থাকার চেষ্টা করছে, কিন্তু তার মনে একটা ঝড়—আকরামের লাল চোখ, তার মায়ের গোঙানি, তার নিজের হাতের গিল্ট। তার হৃৎপিণ্ড দ্রুত লাফাচ্ছে, তার হাত ঘামে ভেজা। সে রান্নাঘরের দিকে তাকায়—মিনা তাকে দেখে হাসে। শুভর মনে একটা ধাক্কা—“মা, আমি তোমাকে…”—কিন্তু সে মুখে কিছু বলে না। আকরাম বাইরে। সে গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে—তার কালো কুর্তা আর ধুতি রোদে ময়লা দেখাচ্ছে। তার হাতে সেই কালো পাথর—লেখাগুলো এখনও জ্বলছে, কিন্তু দিনের আলোয় ফিকে। সে মিনার দিকে তাকায়—তার মিথ্যে শান্তি তার কাজ। সে একটা মন্ত্র আওড়ায়—ঘরের মধ্যে একটা হালকা কাঁপুনি। মিনার মনের দ্বন্দ্বকে সে ঢেকে দিচ্ছে, যাতে রঞ্জিতের মনে বেশি চিন্তা না জন্মায়। কিন্তু শুভর দিকে তাকিয়ে তার মুখে একটা বিকৃত হাসি—সে জানে, শুভর মনের ঝড় দিন দিন বাড়ছে। শুভর অসহায়তা তার জালের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়। রঞ্জিত বসার ঘরে টিভি চালিয়েছে—একটা খবরের চ্যানেল, মহিলার গলার শব্দ ভেসে আসছে। কিন্তু তার মন অন্যমনস্ক—সে জানালার দিকে তাকায়। ফাটা কাচটা এখনও আছে, একটা নতুন ফাটল আরও লম্বা হয়েছে। “কী হয়েছিল রাতে?” সে ফিসফিস করে। তার মনে দাদুর কথা—“এই বাড়িতে অন্ধকার আছে।” সে মাথা নাড়ে, “ধুর, এসব ভাবছি কেন?” কিন্তু তার চোখে একটা অস্থিরতা। মিনা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসে। তার হাতে একটা প্লেট—গরম পকোড়া। “রঞ্জিত, তুমি খাও,” সে বলে, তার গলায় একটা শান্ত স্বর। রঞ্জিত তার দিকে তাকায়—মিনা আজ সকালের চেয়ে নরমাল লাগছে। তার মনে একটা স্বস্তি—“হয়তো আমি বেশি ভাবছি,” সে ভাবে। কিন্তু মিনার চোখে সেই শূন্যতা তাকে খোঁচা দেয়। সে পকোড়া নিয়ে খায়, “দারুণ হয়েছে, মিনা,” বলে। মিনা হাসে, কিন্তু তার হাসির পিছনে একটা অদ্ভুত ছায়া। শুভ তার ঘরে। সে দরজা বন্ধ করে বিছানায় বসে আছে। তার মনে একটা গভীর ঝড়—আকরামের গর্জন, তার মায়ের শরীরে তার হাত। “আমি কী করেছি?” সে ফিসফিস করে, তার চোখে জল। তার শরীর কাঁপছে, তার হাত মুষ্টি করে। হঠাৎ তার জানালায় একটা শব্দ—ক্যাঁচক্যাঁচ। সে চমকে তাকায়—কিছু নেই, শুধু বিকেলের আলো। কিন্তু তার কানে একটা ফিসফিস—“তুই আমার…”—আকরামের গলা। তার শ্বাস আটকে যায়, তার চোখে ভয়। সে জানে—আকরাম তার মনের সব জানে, তার অসহায়তা দিন দিন বাড়ছে। বাইরে আকরাম হাসছে। তার হাতের পাথরটা জ্বলছে—একটা লাল আলো তার মুখে পড়ছে। সে ঘরের দিকে তাকায়—তার জাল আরও শক্ত হচ্ছে।
Parent