অনঙ্গর অণু পানু (a collection of micro-stories) _ অনঙ্গদেব রসতীর্থ - অধ্যায় ১৭০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-31814-post-4807769.html#pid4807769

🕰️ Posted on May 18, 2022 by ✍️ anangadevrasatirtha (Profile)

🏷️ Tags:
📖 890 words / 4 min read

Parent
বিরহের জ্বালা শুরু: অধ‍্যাপক মানিকবাবু, বৈষ্ণব পদাবলী থেকে রাধার বিরহ বিষয়ে কলেজে একটা লেকচার দেবেন। এ জন্য কয়েকদিন ধরে খুব পড়াশোনা করে তৈরি হচ্ছিলেন। কিন্তু রাধার বিরহ পড়াবার সময়, নিজের মধ‍্যেও একটা পিওর বিরহের ভাব কী করে আনা যায়, সেটা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিলেন না, মানিকবাবু। অনেক ভেবে, কোনও কূলকিনারা না পেয়ে, অবশেষে তিনি তাঁর সুন্দরী স্ত্রী, সুমনার শরণাপন্ন হলেন। সুমনা বউদি সব শুনে, স্বামীকে পরামর্শ দিলেন: "দ‍্যাখো, রাধা-বিরহের মতো ঠিকঠাক বিরহ, তোমার নিজের মধ্যে আমদানি করতে হলে, আমার সঙ্গে তোমার একটা সাময়িক বিচ্ছেদ ও দূরত্ব তৈরি হওয়া দরকার। এই জন্য চলো, আমরা দু'জনে মিছিমিছি একটা ডিভোর্স করে, কয়েকদিন আলাদা থাকি। আমি এখান থেকে বেশ কিছুটা দূরে, অন‍্য পাড়ায়, একটা বাড়ি ভারা করে একা বাস করি, আর তুমি এখানে একা-একা আমার বিহনে কাতর হও। এই সাময়িক ডিভোর্সের শর্ত হবে, তুমি আমাকে ফোন করবে না, দেখতে আসবে না, এ ক'দিন আমার কোনও খোঁজখবরও করবে না। আমিও তোমার সঙ্গে ঠিক তাই-ই করব। এটা করলেই দেখবে, তোমার মনের মধ্যে, একটা খাঁটি বিরহ, ভুরভুর করে জমে উঠবে।"   বুদ্ধিমতী স্ত্রীর পরামর্শটা, অধ‍্যাপক মানিকবাবুর ভারি মনে ধরর। তাই পরদিনই সুমনা বউদি, নিজের ব‍্যাগপত্তর গুছিয়ে নিয়ে, পত্রপাঠ অন‍্যত্র পাড়ি জমালেন।   ১. আমি বরাবরই শান্ত, আর ভালো-ছেলেই ছিলাম। রোজই সকাল-সকাল ইশকুলে চলে যেতাম। কখনও পড়ায় কামাই দিতাম না।   ২. হঠাৎ পর-পর বেশ কয়েকদিন, আমার ইশকুলে যেতে দেরি হয়ে গেল। এমনকি দু-একদিন ইশকুলের পথে সময়মতো বেড়িয়েও, আমি আর সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারলাম না।   ৩. আমার এ হেন পরিবর্তন দেখে, আমার বাবা-মা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলেন। বাবা তখন অফিস কামাই করে, খোঁজ করতে বের হলেন, আমি কেন আজকাল সময়মতো ইশকুলে পৌঁছতে পারছি না। আমার পিছু-পিছু কিছুটা হাঁটাহাঁটি করবার পরই, তিনি আমার দেরি হওয়ার আসল কারণটা ধরে ফেললেন।   ৪. আমাদের পাড়া থেকে, মোড়ের বাঁকটা পেড়িয়ে, একটা একতলা বাড়িতে, একজন অত‍্যন্ত সুন্দরী, সম্ভবত ডিভোর্সি মহিলা, নতুন ভাড়া এসেছেন। উনি একাই থাকেন। বারান্দায় ফুলের টবে, নিত‍্য-নতুন গাছ লাগানোর শখ ওনার। সকালবেলা উঠেই, চায়ের কাপ হাতে, উনি তাই সবার আগে বারান্দায় চলে আসেন, গাছেদের পরিচর্যা করতে।   ৫. কিন্তু ওই সুন্দরী মহিলার একটি বিরল রোগ আছে। যাকে সম্ভবত শর্ট-টার্ম অ্যামনেশিয়া বলে। এই রোগে, মানুষ কখনও-কখনও খুব সামান্য কোনও বিষয়, বেমালুম ভুলে যায়। এই সুন্দরী মহিলাও, প্রতিদিন সকালে, ঘুম থেকে উঠে, বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হওয়ার পর, বারান্দায় আসবার সময়, গায়ে কোনও রকম পোশাক পড়তে ভুলে যান!   ৬. ফলে আমার এবং আমার মতো আরও অনেকেরই ইশকুল-অফিসে যেতে, সময় মতো পথে বেড়িয়েও, ভয়ানক দেরি হয়ে যায়। কেউ যদি এই সময়, ওই সুন্দরী ও অল্পবয়সী মহিলার নগ্ন রূপে, ভয়ানকভাবে আকৃষ্ট হয়ে, ওনার বারান্দার গেট খুলে ঢুকে পড়ে, তাঁকে আবার উনি, ওই অ্যামনেশিয়া রোগটার গুঁতোতেই, বড়ো-ছোটো, উচ্চ-নীচ বিচার না করেই, নিজের প্রাক্তন স্বামী ভেবে, প্রবল প্রেম সহকারে, পত্রপাঠ, উদোম অবস্থাতেই, নিজের বেডরুমে নিয়ে চলে যান। এই জন‍্যই তো, আমার বেশ কয়েকদিন ইশকুল কামাই হয়ে গেল।   ৭. আমার বাবা, সব দেখে-শুনে, এই সমস্যার সমাধানে, দ্রুত উদ‍্যোগী হলেন। তিনি ব‍্যাপারটা লক্ষ‍্য করবার পরই, পরদিন সকালবেলায়, একজোড়া নতুন ও ভালো ব্র‍্যান্ডের অন্তর্বাস কিনে নিয়ে, সোজা সেই ডিভোর্সি ভদ্রমহিলার বাথরুমের দরজার সামনে হাজির হয়ে গেলেন। যাতে ভদ্রমহিলা, কোনও মতেই জামাকাপড় ছাড়া, বারান্দায় বের হতে না পারেন। এবং আমার মতো কচি-কাঁচা ছেলেপুলেদের, এই জন্য যাতে পড়াশোনার কোনও ক্ষতি না হয়।   ৮. কিন্তু এমন একটা মহান কাজ করতে গিয়ে, সন্ধে উৎরে গেলেও, আমার বাবা আর কিছুতেই বাড়ি ফিরে এলেন না। তখন আমার মা ভারি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন এবং আবার আমাকেই পাঠালেন, যেখান থেকে হোক, বাবার সন্ধান করে আনতে।   ৯. আমি তখন এক দৌড়ে সেই সুন্দরী মহিলার বাড়িতে গিয়ে হাজির হলাম। দরজা খুলে, ভিতরে ঢুকে দেখলাম, কেউ কোথাও নেই। তারপর এদিক-সেদিক উঁকি দিতে-দিতে, বাথরুমের বন্ধ দরজার সামনে এসে আমি আবিষ্কার করলাম, বাবার কিনে আনা সেই দামি ব্র‍্যান্ডের লেডিস-অন্তর্বাসের প‍্যাকেটটা, বাথরুমের বাইরেই পড়ে রয়েছে এবং তার পাশে বাবার জামাকাপড়, জাঙিয়া-টাঙিয়াও বেশ অগোছালোভাবে ছড়িয়ে রয়েছে। আর বাথরুমের ভিতর থেকে তখনও ধুপধাপ, আঃ, উহ্, আউচ্, পঁক্-ফক্-পকাৎ করে, বিভিন্ন বিসদৃশ্য পুরুষ ও নারী কন্ঠের যৌথ-আওয়াজ ভেসে আসছে।   ১০. আমি ব‍্যাপার-স‍্যাপার দেখে, আস্তে-আস্তে বাড়ি ফিরে এলাম এবং মাকে বিস্তারিতভাবে জানালাম যে, ওই মহিলার অ্যামনেশিয়া রোগটা বেশ ছোঁয়াচে; তাই বাবাও বাড়ি-ঘর সংসার-চাকরি এমনকি তোমার-আমার কথা, সবই বেমালুম ভুলে গিয়েছে। এই কথাগুলো বলবার সময়, আমি নিজের হাফপ্যান্টের সামনেটা, তাঁবু হয়ে ওঠা থেকে, কিছুতেই রুখতে পারলাম না। মা সেটা লক্ষ্য করল। তারপর আমার কথা শেষ হলেই, মা পটাপট নিজের ছত্রিশ সাইজ ব্লাউজের বোতামগুলো খুলতে-খুলতে, আমাকে এক ঘাড়-ধাক্কায়, বেডরুমে ঢুকিয়ে নিতে-নিতে, হিসহিসে গলায় বলে উঠল: "আমাকেও এখন ছোঁয়াচে অ্যামনেশিয়ায় ধরেছে রে। কে নাঙ, আর কে পুত, সব তাই ভুলে গিয়েছি!"   আমি তো নেহাত বাচ্চাছেলে। এরপর আমার আর কীই বা করার থাকে?   শেষ: অধ‍্যাপক মানিকবাবুকে ভয়নক বিমর্ষভাবে বসে থাকতে দেখে, তাঁর প্রিয় দুই ছাত্র, সৌম‍্য ও সৈকত এসে জিজ্ঞেস করল: "আপনার কী হয়েছে, স‍্যার? শরীর খারাপ?" মানিকবাবু দু'দিকে ঘাড় নেড়ে, না বললেন। সৈকত বলল: "তা হলে নিশ্চই বউদি বাড়ি নেই বলে, আপনার মনখারাপ হয়েছে…" মানিকবাবু তখন মনের দুঃখে ডুকরে উঠে, সৌম‍্যদের দিকে, একটা কাগজ বাড়িয়ে দিলেন। সৌম‍্য অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল: "এটা কী, স‍্যার?" মানিকবাবু আর্দ্র গলায় বললেন: "সুমনা যে পাড়ায় গিয়ে উঠেছে, সেই পাড়ায় ভকলু বলে, একটা বাচ্চাছেলে থাকে। এটা ওই ভকলু ছেলেটিরই দিনলিপি লেখবার খাতার কয়েকটা ছেড়া-পাতা…" সৈকত অবাক হল: "ওর খাতার পাতা আপনি পেলেন কী করে?" মানিকবাবু কাতর গলায় বললেন: "নিজে যেচে এসে, আমাকে জেরক্স করে, দিয়ে গেল…" সৌম‍্য বলল: "কী লেখা আছে এতে, স‍্যার?" মানিকবাবু চোখ মুছে, ভিতরের ঘরে ঢুকে যেতে-যেতে, বললেন: "নিজেরাই পড়ে দেখো না…"   পুনশ্চ: সৌম্য ও সৈকত গোগ্রাসে সেই জেরক্সের পাতা ক'খানা পড়বার পরই, পত্রপাঠ, তাদের স‍্যারের আদরের স্ত্রী, সুমনা বউদিকে উদ্ধার করতে ছুট দিয়েছিল। কিন্তু তারা আদোও বউদিকে উদ্ধার করে ফিরে আসতে পেরেছে কিনা, সে খবর এখনও পাওয়া যায়নি; তবে সৌম্য, আর সৈকতের পরণের ফুলপ্যান্ট দুটো, সেই নাবালক ভকলুই, আবার রাস্তা থেকে উদ্ধার করে, বিরহগ্রস্থ মানিকবাবুকে ফেরত দিয়ে গেছে…   ১৩.০৪.২০২২
Parent