অনঙ্গর অণু পানু (a collection of micro-stories) _ অনঙ্গদেব রসতীর্থ - অধ্যায় ৯৩
বিষাক্ত নীল
বহুদিন পরে বাড়ি ফিরলাম। মার্চেন্ট নেভির চাকরিটাতে জয়েন করবার পর, এই প্রথমবার।
কতোদিন যে বাড়ির বিছানাটায় শুতে পারিনি, তাই স্নান-খাওয়া সেরে বিছানাতে এসেই, ধপাস্ করে গড়িয়ে পড়লাম। কখন যে গাঢ় ঘুমে তলিয়ে গিয়েছিলাম, নিজেরই খেয়ালে ছিল না।
খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম।
আমার নগ্ন তলপেটটা হয়ে উঠেছে, উথালপাথাল, সীমাহীন কোনও সমুদ্র। আর সেই নীলের মধ্যে থেকে একটা সুউচ্চ বাতিঘরের মতো আকাশের দিকে খাড়া উঠে গেছে, আমার সুদৃঢ় লিঙ্গটা।
তারপর সেই খাড়া বাতিঘরটার মাথায় এসে জমা হচ্ছে ঘন মেঘ; ক্রমশ তার বাষ্প-স্রোত চেপে-চেপে ধরছে, বাতিঘরের চূড়াটাকে। তারপর ঝমঝম করে বৃষ্টি…
আমার স্বপ্নটা ভেঙে গেল।
আমি ধড়মড় করে জেগে উঠে দেখলাম, আমার পরণ থেকে শর্টসটা বিতাড়িত হয়েছে।
আর বহুদিন পরে বউদি আমার তলপেটে উপুড় হয়ে পড়ে, আমার পৌরুষটাকে চুষে দিচ্ছে আশ্লেষে।
আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমার ঘন তেজ-রস, বউদির মুখের মধ্যেই ঢেলে দিলাম গলগল করে।
তারপরও আমার আগুন কিন্তু নিভল না। বহুদিনের উপবাসী আমি!
তাই বউদির নরম শরীরটাকে উল্টে, বিছানায় ফেলে, আমি চড়াও হলাম বউদির উপরে।
কিন্তু পলক ফেলা মাত্রই, কেবল আমার শরীরটাই বীর্য মাখামাখি বিছানার চাদরের উপর আছাড় খেয়ে পড়ল।
আর কেউ কোথাও নেই!
আমি তখন রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখলাম, জানলার বাইরে কখন যেন সন্ধে নেমে গেছে।
সেই প্রথম সন্ধ্যার অন্ধকারে, এক ঝলক দমকা হাওয়া, কোত্থেকে উড়ে এল আমার কানের কাছে।
সেই অশরীরী হাওয়া হঠাৎ ফিসফিসিয়ে বলে উঠল: "তুমি চলে গেলে, আর তারপরই তোমার দাদা, আমাদের কথা সব জানতে পেরে গেল!
তারপর সে ঘেন্নায়, আমার সংস্পর্শ ত্যাগ করল। কথা বন্ধ করে দিল, এমনকি আলাদা ঘরে শুতে পর্যন্ত লাগল।
আমি এই জন্য কয়েকদিন খুব কেঁদে ভাসালাম। কিন্তু তাতে আমার মনের ভার কিছু হালকা হল না।
তখন আমি একদিন দুপুরে, তোমার এই ঘরে চলে এসে, সিলিং থেকে ওড়নাটাকে শক্ত করে বেঁধে…"
আমি এখনও অন্ধকারে, নগ্ন হয়েই বসে রয়েছি। এলোমেলো বিছানাটায়।
মনে হচ্ছে, যেন জাহাজডুবির পর, আমিই একমাত্র জীবিত কোনও হতভাগা, মাঝ-সমুদ্রে খড়কুটো ধরে কোনও মতে অকারণে ভেসে রয়েছি।
এর চেয়ে মরে গেলেই হয় তো আমিও আখেরে বেঁচেই যেতাম!
২২.০৭.২০২১