অন্তরের বন্ধন- তমালের গোয়েন্দা গল্প - অধ্যায় ৩৩
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমার গল্প আপনার ভালো লাগে জেনে ভালো লাগলো। আমার গল্প লেখা শুরু করার একটা ইতিহাস আছে। এক বন্ধুর সাথে বাজি ধরে গল্প লেখা শুরু করি। অনেক আগের ঘটনা, সাল তারিখ ও মনে নেই। আমিও তখন চটি গল্পের সাধারণ একজন পাঠক ছিলাম। একদিন এক বন্ধু আমাকে ISS বলে একটা সাইটের খবর দেয়। এখন অবশ্য সাইটটা আর নেই। তার বদলে দেশিকাহানি ডট নেট নামে তাদের গল্প গুলো আছে।
যাই হোক আমি সেই সাইটে যাই এবং গল্প পড়ি। কিন্তু অধিকাংশ গল্পই আমার ভালো লাগেনি। কারণটা আপনি যেমন বলেছেন, অনেকটা সেরকম। কাহিনী নেই, অথবা অযথা যৌনতার বিবরণ, কিংবা অসংখ্য ভুলে ভরা। তারা এমন সব কথা লিখেছেন যা ফিজিওলজির বিরূদ্ধে যায়। অ্যানাটমির ও ধার ধারেনি কেউ কেউ।
কিছুদিন পরে সেই বন্ধু আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমার কেমন লাগলো। আমি সত্যি কথাই বললাম। এবং এ ও বললাম যে এর চেয়ে ভালো গল্প আমি লিখতে পারি। সেই বন্ধু আমাকে উপহাস করে বলে যে এরকম কথা সবাই বলতে পারে। ক্ষমতা থাকলে লিখে দেখা। তারপর আমার সাথে সে পাঁচশ টাকা বাজি ধরে। শর্ত হলো একটা গল্প লিখবো এবং এক মাসের মধ্যে কুড়িটা ফ্যান মেইল তাকে দেখাতে হবে। আমার প্রথম দিকের সব গল্পের শেষে দেখবেন আমার ইমেইল আইডি দেওয়া আছে এবং মেইল করতে বলা আছে।
প্রথম গল্পটা লিখলাম "কেয়া, যুথি ও আমি।"..এক মাসের ভিতরে কুড়িটার থেকে অনেক বেশি মেইল পেলাম। সেই সাথে পেলাম পাঁচশ টাকা এবং অনেক বন্ধু। বলাই বাহুল্য মেয়ে বন্ধুই বেশি। আমার আর গল্প লেখার ইচ্ছা ছিলো না, বাজি জেতা হয়ে গেছে তাতেই খুশি ছিলাম। কিন্তু ফ্যান মেইল আসা বন্ধ হলো না। সবাই আরো গল্প চায়।
এই ফ্যান মেইলের একটা নেশা আছে। মানুষ আমার কোনো সৃষ্টি পড়ে আনন্দ পাচ্ছে এবং আরো পেতে চাইছে, এই নেশা থেকে বের হওয়া কঠিন। তার উপর এতো মেয়ের সেক্স চ্যাটের অনুরোধ এড়ানোর মতো মহাপুরুষ আমি ছিলাম না। যাই হোক আরও কিছু গল্প লিখলাম। আর মেইল আরও বাড়তে লাগলো। বলতে আপত্তি নেই যে এই মেইলটা আমি শুধু গল্পের জন্যই ব্যবহার করি। এটাতে যে পরিমান মেইল আসে তা আমার আসল আইডিতেও আসে না। যদিও আমি মূল ধারার গল্পও অনেক ব্লগে লিখি।
প্রতিবার গল্প লেখার পরেই ভাবি এটাই শেষ, আর লিখবো না। কারণ সময়ের অভাব। এখন আর সেই ছাত্র জীবন নেই। কাজের চাপ প্রচুর। সেসব সামলে লেখার সময় হয়না। তাছাড়া অন্য গল্প, প্রবন্ধও লিখতে হয়। ( দয়া করে কেউ সেসব গল্পের লিংক চাইবেন না। যাদের সাথে আমার তমাল হিসাবে পরিচয়, তাদের আমি আমার আসল জীবনে কোনোভাবেই নিয়ে যেতে পারি না। এটা আমার ছদ্ম পরিচয় বুঝিতেই পারছেন। এই দুটো জীবন আমি সযত্নে আলাদা করে রাখি)
এই যে আপনারা আপডেটের জন্য তাড়া দেন, আপনাদের মনের অবস্থা আমি বুঝি। একটা গল্প কিছুটা পড়ার পর সাহিত্য প্রেমীদের পক্ষের অপেক্ষার সময়টা বড় কষ্টের। কিন্তু আমিই বা কি করি? নিয়মিত লেখার সময় পাইনা। তাই তো প্রতিবারই ভাবি, যথেষ্ট হয়েছে আর না!
আপনার প্রস্তাব খুবই সুন্দর। আমি যখন লেখা শুরু করি তখন মোবাইলে বাংলা ফন্টে লেখা যেতো না, বাংরেজিতে লেখা। গল্প গুলো আমার কাছে আছে, কিন্তু বাংলা ফন্টে নেই। তাতে যদি আপনাদের আপত্তি না থাকে, আমি আপলোড করতে পারি এখানে।
শালিনীর সাথে আমার পরিচয় কিভাবে হয়েছে সে কথা কয়েকদিন আগেই এক পাঠক বন্ধুকে তার কমেন্টের রিপ্লাই হিসাবে দিয়েছি। যেহেতু সে আমার নেট ফ্রেন্ড, এবং চটি লেখে, তাই মজা করে প্রথম গোয়েন্দা গল্পে তার নামটা ব্যবহার করি। অবশ্যই তাকে সেকথা জানাই। তার খুব ভালো লাগে গল্প। বলে এরকম গল্প বাংলাতে নেই, থাকলেও খুবই কম। ইংরাজিতে আছে। সে খুবই উচ্চ শিক্ষিতা, এবং বুদ্ধিমতি। আমাকে অনুরোধ করে আমি যেন বাংলার এই নতুন ধারার গল্পে তাকে একটা পাকা জায়গা দেই। তার অনুমান ছিলো গল্প গুলো খুবই জনপ্রিয় হতে চলেছে। সেই মতো আমি আমার সব গোয়েন্দা গল্পে তাকেই আমাত সহকারী বানিয়ে নিয়েছি। তাকে সরাসরি না আনলেও তার নামটা ঢুকিয়ে দেই। সে আমার গল্পে কোনো কাহিনীর অবতারণা করে আসেনি, এমনিই চলে এসেছিলো। শালিনী প্রথম আসে "রহস্যচটি" গল্পে।
প্রথম প্রকাশের তারিখগুলো এখন আর বলতে পারবো না। কারন আমি ওসব মনে টনে রাখিনা। লেখার আনন্দে লিখি, পাঠকের জন্য লিখি। সেইজন্য আমি দেখতে পাই আমার সব গল্পই অন্যেরা চুরি করে নিজের নামে চালায়। কৃতজ্ঞতা স্বীকার তো দূরের কথা, আমার গল্পের নাম, এমনকি আমার নামটাও বদলে আপলোড করে। এই সাইটেই আমার বহু গল্প আছে অন্য নামে, অন্যের নামে। যেমন আমার দ্বিতীয় গোয়েন্দা গল্পের নাম "মানিকজোড়" সেটা এখানে হয়ে গেছে "কনডম রহস্য"... আমি দেখি সবই, কিন্তু প্রতিবাদও করতে ইচ্ছা করেনা। কিছুই আসে যায়না আমার তাতে। প্রচুর পাঠক পাঠিকার ভালোবাসা পেয়েছি এবং পাচ্ছি এই যথেষ্ট।
আমার সম্পর্কে জানতে অনেকেই মেইল করেন, তাই এখানে আমার কিছু ব্যক্তিগত কথা শেয়ার করলাম। আশাকরি আপনাদের কৌতুহল মেটাতে পেরেছি।
গল্পের থ্রেডে এভাবে ব্যক্তিগত ব্যাপার বলার জন্য যদি কেউ বিরক্ত হন, ক্ষমা করবেন। ধন্যবাদ।