বাংলা গল্প- লালপট্টি - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-70110-post-6023565.html#pid6023565

🕰️ Posted on August 31, 2025 by ✍️ rajusen25 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 2560 words / 12 min read

Parent
সেদিন ভোর হতে না হতেই ইসমাইলের ছোট্ট কুঁড়েঘরটার আনাচে-কানাচে যেন একটা উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছিল। ভোরের কানাকানি করা আলোটা যখন তার শয্যাপ্রান্তে এসে পড়ল, তখন তার শ্যামলা-কটা রংটাও যেন একটু বেশি উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল। গায়ে চড়িয়েছে ঝকঝকে ধবধবে সাদা একটা স্যান্ডো ভেস্ট, যেটা পরতে পরতে তার কর্কশ হাতে বারবার আটকে গিয়েছিল বোতামগুলোতে। পায়ে বাঁধা চেক-কাটা লুঙ্গি, যার আঁশে আঁশে এখনও যেন গ্রাম্য মাটির সোঁদা গন্ধ লেগে আছে। গায়ে-মাখা আমিনার দেওয়া আতরের তীব্র গন্ধটা বাসের পুরো কেবিনটাকে মাতিয়ে রেখেছে, মনে হচ্ছিল ইসমাইলের নিশ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে তার দেহ থেকে একটা উগ্র সুবাস ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশের বাতাসে। তার রুক্ষ, অমসৃণ হাতে শক্ত করে ধরা রয়েছে একটা মাটির হাঁড়ি, যেন সেটাই তার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান ধন। ভেতরে আছে পুঁটিমাছ দিয়ে ঠাসা ঝাল—যাকে কলাপাতা দিয়ে মুড়ে সযত্নে বাঁধা হয়েছে। ওই হাড়িটাই যেন গ্রাম্য জীবনের সরল, অকৃত্রিম ভালোবাসার জীবন্ত প্রতীক। বাসের সিটে বসে সে বারবার নিজের স্যান্ডো গেঞ্জিটাকে টান দিচ্ছে, যেন শহুরে পোশাকে নিজেকে মানাতে পারছে না, একটা সংকোচ কাজ করছে তার ভেতরে। গায়ে লাগানো জবাকুসুম তেলের গন্ধ নাকে আসতেই তার চোখের সামনে ভেসে উঠল আমিনার মুখ—সকালবেলাই কীভাবে সে তাকে গোসল করিয়ে নতুন জামাকাপড় পরিয়েছিল, আর বারবার বলে দিয়েছিল, "মনে রাখিস, টুকুন বাবুর মা বড় মেমসাহেব, কথা বার্তায় যেন একটুও খুঁত না থাকে!" হঠাৎ করেই বাসের কন্ডাক্টর রশিদের কর্কশ গলার আওয়াজে তার ধ্যানভঙ্গ হল— "আরে ইসমাইল চাচা! এ কী হে, এত সাজগোজ কিসের? নাকি নতুন বউ আনতে চলেছেন?" ইসমাইল গর্বে বুকটা ফুলিয়ে বলে উঠল, "কলকাতা যাইতাছি রে... টুকুন বাবুর বাড়ি!" রশিদ চোখ পাকিয়ে বলল, "ওই বাঙালি সায়েবের বাড়িতে? চাচা, তুমি তো এখন বড়লোক সেজেছ দেখছি! তোমার তো নাসিব ভালো..." "সব আল্লাহর মেহেরবানি," ইসমাইল মাথা নেড়ে বলল, "টুকুন বাবু আল্লাহর দেওয়া এক বিশেষ দান!" বাসটা যখন চলতে শুরু করল, ইসমাইল জানালার ধারে গা এলিয়ে দিয়ে বসে পড়ল। জানালা দিয়ে বাইরের দিকে চোখ রাখতেই সবুজ মাঠ, নদী, গাছপালা—সবকিছু যেন ছবির মতো চলে যাচ্ছে পেছনে। এই পথ দিয়েই তো টুকুন বাবু প্রথম তাদের গ্রামে এসেছিল। সেই প্রথম দিনটার কথা তার মনে পড়ে গেল—কীভাবে টুকুনের বাইকের পেছনে চড়ে সে বাজার থেকে তাজা মাছ কিনে এনেছিল। ইসমাইলের বুকের ভেতর তখন একটা অদ্ভুত গর্ব কাজ করছে। আজ সে শুধু পুঁটিমাছের ঝালই নিয়ে যায়নি—নিয়ে যাচ্ছে এক সুখবরও। তার সংসারে আলো আসতে চলেছে... টুকুন বাবুর দোয়ায়। ধানখালি স্টেশন থেকে ট্যাক্সি করে ইসমাইল পৌঁছাল টুকুনের বাড়ির সামনে। সাদা রঙের তিনতলা বাংলো, সামনে ছড়িয়ে-পড়া সবুজ লন, রঙ-বেরঙের ফুলে ভরা বাগান আর সেখানে পার্ক করা দুটো বড় বড় গাড়ি—সব মিলিয়ে যেন একটা স্বপ্নের রাজপ্রাসাদ। গেটের বাইরে দাঁড়িয়েই ইসমাইলের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। পায়ের নিচের মাটির রাস্তা থেকে হঠাৎ এই মার্বেল পাথরের ফুটপাত—সব মিলিয়ে তার মনে হচ্ছিল যেন সে এক অন্য জগতে চলে এসেছে। "কে এসেছেন?" গেটের পাশের ইন্টারকমে এক তীক্ষ্ণ নারীকণ্ঠ ভেসে এল। ইসমাইল গলায় হাত দিয়ে বলে উঠল, "আমি... আমি ইসমাইল... টুকুন বাবুর..." গেট খুলতেই ভেতর থেকে টুকুন ছুটে এল। "ইসমাইল চাচা! এত তাড়াতাড়ি?" ড্রয়িং রুমে নিয়ে গিয়ে টুকুন ইসমাইলকে নরম সোফায় বসাল। ইসমাইল চারিদিক তাকিয়ে দেখল—বড় বড় ফ্রেমে বাঁধা টুকুনের ছবি, কাচের আলমারিতে সাজানো সারি সারি বই, দেয়ালে ঝোলানো দামি দামি পেইন্টিং। "আসতে কোনো অসুবিধে হয়নি তো চাচা?" টুকুন জিজ্ঞেস করল। "না..বাবু.." - ইসমাইলের কথা শেষ হবার আগেই দরজা খুলে এক রমণী ঘরে এলেন। লম্বায় প্রায় ছয় ফুট, গায়ের রং ধবধবে ফর্সা, বয়স চল্লিশ পার করলেও দেহে এখনও যৌবনের প্রাচুর্য ধরে রাখতে পেরেছেন। নীল রঙের শাড়িতে মোড়া তার দেহ, স্লীভলেস ব্লাউজের আস্তিন থেকে বেরিয়ে থাকা হাতের ত্বক যেন মাখনের মতো কোমল আর নরম। ইসমাইল তড়িঘড়ি উঠে দাঁড়াল। টুকুন পরিচয় করিয়ে দিল, "মা, এ আমাদের ইসমাইল চাচা।" মিসেস মুনমুন সেন হাসিমুখে বললেন, "আসুন ইসমাইল ভাই, বসুন। টুকুন তো আপনাদের গ্রামেই গিয়েছিল, না?" ইসমাইল মাথা নেড়ে বলল, "জি মেমসাহেব... ও আমাগো লাইগা অনেক কিছু করছে।" মিসেস সেন ইসমাইলের উল্টো দিকের সিঙ্গেল সোফায় বসে বললেন, "বলুন তো, আমার ছেলে কীভাবে আপনাদের সাহায্য করল?" ইসমাইল গলায় হাত দিয়ে বলল, "মেমসাহেব... টুকুন বাবু আমাগো নতুন ঘর কইরা দিছে... ভ্যানরিকশা কিনা দিছে... আর..." একটু ইতস্তত করে বলল, "আল্লাহর রহমতে, আমার বেগম এখন পোয়াতি হইছে।" মিসেস সেন খুশিতে চমকে উঠলেন, "ওমা! এতো খুব ভালো খবর!" বলে তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং ইসমাইলকে জড়িয়ে ধরে ফেললেন। ইসমাইল একদম আড়ষ্ট, স্তম্ভিত হয়ে গেল। হঠাৎ এই ঘনিষ্ঠতায় তার পুরো শরীরটা যেন কাঠ হয়ে এলো। এ কী কাণ্ড! বাবুর আম্মা, এই দুধের মত সাদা চামড়া, উচ্চবংশীয় মেমসাহেব, তাকে—একজন গরিব জেলেকে—জড়িয়ে ধরলেন! তার গায়ের নরম, রেশমি শাড়ির স্পর্শ, আর সেই সঙ্গে মিশে থাকা দামি পারফিউমের মিষ্টি, মাদকতাপূর্ণ সুগন্ধ... সব মিলিয়ে ইসমাইলের মাথা যেন ঘুরে যেতে লাগল। তার বুকের সঙ্গে লেগে থাকা মেমসাহেবের স্তনের নরম, গরম চাপটা সে স্পষ্টভাবে অনুভব করল। শাড়ির নিচ থেকে ভেসে আসা সেই দেহের উষ্ণতা যেন তার নিজের দেহেও সঞ্চারিত হতে থাকল। তার মনে হতে লাগল, এ যেন কোনো স্বপ্ন! সে তo একজন সাধারণ মহমেডান জেলে। তার হাতে মাছের গন্ধ, শরীরে মাটির দাগ। আর এদিকে বাবুর আম্মা—এতো সুন্দরী, এতো শিক্ষিতা, এতো বড়লোক। তার মতো একজন নিচু শ্রেণীর, অশিক্ষিত মানুষকে এভাবে স্নেহে, মায়ায় জড়িয়ে ধরা... এতোটা আপন করে নেওয়া... এটা তার ভাগ্যে কখনো হয়নি! এই অপ্রত্যাশিত স্নেহ ও শ্রদ্ধায় ইসমাইলের চোখ জলে ভরে এলো অদৃশ্যভাবে। তার হৃদয়টা ভরে উঠল এক অপার কৃতজ্ঞতা আর আনন্দে। এই মিশ্র অনুভূতির উত্তাপে তার সমস্ত শরীর যেন গরম হয়ে উঠল। টুকুন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ্য করল, সেই কোলাকুলি বা আলিঙ্গনটা হয়তো খুব অল্প সময়ের জন্য ছিল, কিন্তু তার প্রভাব ইসমাইল চাচার উপর গভীর হয়ে রয়ে গেছে। চাচার পুরো শরীরটাই যেন এক অদৃশ্য তাপে ঝাঝিয়ে উঠেছে, গায়ের চামড়া টানটান হয়ে গেছে এক অদ্ভুত উত্তেজনায়। তার শ্যামলা গালে রক্তের চাপে এক ধরনের লালচে আভা ফুটে উঠেছে, যেটা তার অভ্যন্তরীণ অস্থিরতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। টুকুনের চোখ পড়ল, ইসমাইল চাচার দৃষ্টি আটকে আছে তার মার বুকের দিকে। সেই ফর্সা, মসৃণ ডিকোলেটেজের দিকে, যেখানে শাড়ির ব্লাউজের আঁটসাঁট ফাঁকের মধ্যে দিয়ে উঁকি দিচ্ছে নারীত্বের গোলাকার, পরিপূর্ণ উত্থান। চাচার চোখে এক ধরনের মোহ বিস্ময়,一অদেখা, অজানা জগতের প্রতি এক ধরনের কৌতূহল এবং আকর্ষণ, যা সে হয়তো জীবনে কখনো এত কাছ থেকে দেখার সুযোগ পায়নি। তার দৃষ্টি আটকে থাকা দেখে বোঝা যাচ্ছিল, এই শহুরে, পরিশীলিত নারীর সৌন্দর্য এবং ভাবমূর্তি তার গ্রাম্য, সাদাসিধে জীবনযাত্রার ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে অভিভূত করে দিয়েছে। "আপনার বেগম... আমিনা... ভালো আছে?" মিসেস সেন ধীরে, যেন অনিচ্ছাকৃতভাবেই তাকে ছাড়লেন, কিন্তু তার নরম, পরিষ্কার আঙুলগুলোর স্পর্শ ইসমাইলের কর্কশ, রুক্ষ হাতের উপর একটু বেশিক্ষণই রয়ে গেল, যেন স্পর্শের একটা অদৃশ্য ছাপ রেখে দিল। ইসমাইলের গলা একদম শুকিয়ে কাঠের মতো হয়ে গেল। কথাগুলো যেন ঠোঁট থেকে আটকে আটকে বেরুচ্ছিল— "হ...হ্যাঁ, আপা... আপনার জন্যই... পুঁটিমাছের ঝাল এনেছি..." মিসেস সেন মাছের প্যাকেটটা নেওয়ার সময় আবারও তার আঙুল ইসমাইলের হাত স্পর্শ করে গেল, এক ঝলক বিদ্যুতের মতো অনুভূতি। "এত কষ্ট করে এনেছেন?" বলে তিনি প্যাকেটটা টেবিলে রেখে আবার সোফায় বসতে গেলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে তার শাড়ির নীল রঙের পাড়টা একটু আরও সরে গেল, পায়ের গোড়ালির কাছটা এক ঝলক দেখিয়ে দিল। "বসুন না চাচা," টুকুন একটু জোর দিয়ে কাশি দিয়ে বলল, "এত দূর থেকে এসেছেন... দাঁড়িয়ে থাকবেন না।" তার কণ্ঠে একধরনের অস্বস্তি স্পষ্ট হচ্ছিল। মিসেস সেনের ঠোঁটে একটা মায়াবী, রহস্যময় হাসি ফুটে উঠল। তিনি ইসমাইলের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বললেন, "টুকুন, ইসমাইল ভাইকে একপ্লেট বিরিয়ানি দে তো বাবা। দুপুরের রোদে এতদূর থেকে হাফ করে এসেছেন, নিশ্চয়ই কিছু খাননি!" তার কথায় একটা বিশেষ যত্নের ছাপ ছিল, কিন্তু চোখের দৃষ্টিতে ছিল অন্যরকম এক উৎসুকতা। টুকুন "হ্যাঁ মা..." বলে উঠে দাঁড়াতেই ইসমাইল তড়িঘড়ি দুই হাত বাড়িয়ে আটকে দিল, যেন কোনো বিপদ থেকে বাঁচাতে চাইছে। তার শ্যামলা গালে লজ্জার একটা গভীর রেখা ফুটে উঠল, গলার স্বর একটু কাঁপকাঁপ, "না না আপা, আমি কিছু খামুনা... আসলে..." — সে নিজের গলাটা একবার বুলিয়ে নিল, যেন কথাগুলো গিলে ফেলতে চেষ্টা করছে, "কাল রাইতে মোরগ পোলাও খাইয়া পেট ছাইড়া দিছে..." টুকুন তৎক্ষণাৎ পরিস্থিতি সামাল দিল, তার কণ্ঠে একধরনের জরুরী ভাব, "মা, চাচারা গ্রামে মাঝে মাঝে গরম মশলাদার খাবার খান, তাই... পেটটা একটু সংবেদনশীল হয়ে থাকে।" ইসমাইল মাথা নিচু করে রাখল, তার কর্কশ হাত দুটি নিজের লুঙ্গির ভাজে লুকিয়ে ফেলতে চাইল, "জি মেমসাহেব... আমরা গরীব মানুষ, সহজ-সরল খাবারেই অভ্যস্ত... পেটের সমস্যা লাইগাই থাকে..." মিসেস সেন হঠাৎ একটা কোমল, রহস্যময় ভরা হাসি হেসে উঠলেন, তার হাতের রেশমি শাড়ির আঁচলটা হালকা করে নড়ে উঠল, "তাহলে তো আর বিরিয়ানি নয়! আমি আপনাকে আদা-জিরার জল করে দিচ্ছি।" তিনি ইসমাইলের দিকে একটু ঝুঁকে বললেন, "পেট ঠিক হয়ে যাবে, দেখবেন।" ইসমাইলের চোখ আচমকা চকচক করে উঠল, যেন কেউ অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে দিল। শহুরে মেমসাহেবের এই অকৃত্রিম আতিথেয়তা আর যত্নে সে একদম অভিভূত। তার গলার স্বর একটু ভেঙে গেল, "আপা...আপনে এত কষ্ট কইরেন না..." — 'মেমসাহেব' থেকে অজান্তেই 'আপা' - তে নেমে এলো। "তোমরা বসো, আমি বরং ফ্রিজ থেকে মিষ্টি আর আদা-জিরার জল করে আনছি..." — টুকুন পাশের ঘর মানে ডাইনিং রুমের দিকে এগিয়ে গেল, যেন এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে একটু দূরে সরে থাকতে চায়। টুকুন ডাইনিং রুমে যেতেই মিসেস সেনের শাড়ির আঁচল থেকে ভেসে এল 'শালিনী' পারফিউমের মৃদু, তবুও গভীর সুবাস—এমন এক গন্ধ যা ইসমাইলের মতো গাঁয়ের মানুষ জীবনে কখনো অনুভব করেনি। তার ব্লাউজের বগলের ফাঁক দিয়ে দেখা যাওয়া ফর্সা ত্বক, যেখানে সামান্য ঘামের চিকচিকে আভা, সেটা যেন এক অদেখা জগতের জানালা খুলে দিল। "ইসমাইল ভাই, আমিনার গর্ভকালীন অবস্থা কেমন চলছে?" মিসেস সেনের কণ্ঠে পেশাদার ডাক্তারের সুর, কিন্তু তার আঙুলগুলো, সেই সরু আর পরিপাটি আঙুলগুলো, ইসমাইলের হাঁটুর কাছাকাছি এসে যেন থেমে গেল। ইসমাইলের গলা শুকিয়ে গেল। সে মিসেস সেনের ব্লাউজের ফাঁকে দেখা বগলের ফর্সা ত্বকের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে, যান্ত্রিকভাবে উত্তর দিল, "আ...আলহামদুলিল্লাহ আপা... ডাক্তার কইছে সব ঠিকঠাক... দুই মাস হইলো..." টুকুন ট্রেতে করে মিষ্টি আর শরবত নিয়ে ঘরে ঢুকতেই চোখে পড়ল ইসমাইল চাচার করুণ অবস্থা—তার গলায় ঘামের ফোঁটা জমেছে, চোখ বারবার মায়ের দিকে যাচ্ছে আবার লজ্জায় সরে আসছে। মায়ের ব্লাউজের ফাঁকে দেখা বগলের ফর্সা ত্বক যেন ইসমাইলের জন্য এক নিষিদ্ধ, অদেখা জগতের দরজা। "এই নিন চাচা, এই মিষ্টিটা খান," টুকুন ইসমাইলের সামনে প্লেট রাখল। নিজে সচেতনভাবে মাঝের সোফায় বসল, যেন দুইজনের মাঝখানে একটা অদৃশ্য বাধা সৃষ্টি করতে চায়। মিসেস সেন রসগোল্লার প্লেটটি হাতে নিয়ে একটা মৃদু, রহস্যময় হাসি হেসে বললেন, "ইসমাইল ভাই, আপনাদের লালপট্টিতে তো শুধু স্থানীয় ক্ষীর-সন্দেশই পাওয়া যায়, না?" তার কথায় একটা বিশেষ টান ছিল, যেন গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ পাচ্ছে, আবার যেন একটা সামাজিক পার্থক্যও তৈরী করছে। ইসমাইল মাথা নেড়ে উত্তর দিল, "জি আপা... আমরা সাধারণ মানুষ, এত দামি মিষ্টির ধার ধারি না। আমাদের গ্রামে তো মুচি, মেথর, জেলেদেরই বসবাস..." সে হঠাৎ থেমে গেল, "ওই... হারামি গুলা তো শুধু হাড়িয়া খাইয়াই দিন কাটায়..." কথা শেষ হতেই ইসমাইল লজ্জায় মাথা নিচু করল। তার কর্কশ হাত দুটি নিজের লুঙ্গিতে চেপে ধরল, "মাফ কইরেন আপা... আমরা অশিক্ষিত, গেরামের মানুষ... ভুল কইরা মুখ থিকা 'হারামি' বাইর হইয়া গেছে..." মিসেস সেনের ঠোঁটে মায়াবী হাসি ফুটে উঠল। "কিছু মনে করবেন না ইসমাইল ভাই," তিনি বললেন, "গ্রামের সরল ভাষাই তো সত্যিকার বাংলা।" তারপর টুকুনের দিকে ফিরে বললেন, "বাবা, তুমি তো ওদের গ্রামে গিয়েছিলে, সেখানে তোমার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?" টুকুনের গালে লাল আভা ছড়িয়ে পড়ল। সে ইসমাইল চাচার দিকে তাকিয়ে দেখল—চাচার চোখে এক অদ্ভুত কৌতূহল জেগেছে, যেন সে নিজের গ্রাম সম্পর্কে শহুরে মেমসাহেবের মতামত জানতে উৎসুক। "মা, গ্রামটা আসলেই খুব সুন্দর," টুকুন একটা কোমল, কূটনৈতিক হাসি হেসে বলল, "এত শান্তি, এত সবুজ... আর লোকসংখ্যাও তেমন বেশি না... তাই না ইসমাইল চাচা?" ইসমাইল তড়িঘড়ি মাথা নাড়ল, "জি বাবু... আমাগো লালপট্টিতে তেমন ভিড়ভাট্টা নাই।" তার কণ্ঠে গ্রামের শান্ত পরিবেশের বর্ণনা দিচ্ছিল, কিন্তু তার চোখ দুটো, সেই অস্থির চোখ, অবিরাম ঘুরে বেড়াচ্ছিল মিসেস সেনের শরীরের বক্ররেখায়। টুকুন সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছিল—ইসমাইল চাচার শুষ্ক গলায় বারবার হাঁপ ধরে যাচ্ছে, আর তার নজর আটকে আছে মিসেস সেনের ব্লাউজের আঁটসাঁট ভাঁজে, যেখানে ফর্সা ত্বকের আভাস মেলে। মিসেস সেন সচেতন ভাবেই একটু পিঠ সোজা করে বসলেন। "আচ্ছা ইসমাইল ভাই, আপনাদের গ্রামের পুকুরে কি সাঁতার কাটতে ভালো লাগে?" তিনি প্রশ্ন করলেন, আঙুল দিয়ে নিজের গলার স্বেদ মুছতে মুছতে। ইসমাইলের কণ্ঠনালী শুকিয়ে গেল। সে মিসেস সেনের বগলের সামান্য আর্দ্রতা লক্ষ্য করল, যেখানে পারফিউমের গন্ধ মিশে এক অদ্ভুত মাদকতা তৈরি করছে। "জি আপা, হ্যাঁ... হ্যাঁ আপা... আমরা... আমরা..." টুকুন হঠাৎ উঠে দাঁড়াল। "তোমরা গল্প কর," সে বলল, মুখে নির্দোষ হাসি ফুটিয়ে, "আমি আমিনা খালা আর ইসমাইল চাচার জন্য আনা নতুন কাপড়চোপড় আর জিনিস গুলো নিয়ে আসি।" মিসেস সেনের ঠোঁটে এক অদ্ভুত আড়ষ্ট হাসি ফুটে উঠল। "হাঁ, নিয়ে আয় বাবা," তিনি বললেন, "আমিও একটু চা করে আনি..." - বলে উঠে রান্না ঘরের দিকে গেলেন। টুকুন চার পাঁচটা শপিং ব্যাগ নিয়ে এসে রাখলো বসার ঘরে। ইসমাইল উঠে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে বলে, "টুকুন বাবু, আপনেরা তো আল্লাহর ফেরেশতা! এত জিনিস নিয়ে এলেন আমাদের জন্য!" তার গলায় কৃতজ্ঞতার সুর। মিসেস সেন ততক্ষণে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসেন, হাতে চায়ের ট্রে। "একটু চা করে আনলাম..." তিনি বলেন মিষ্টি স্বরে। মিসেস সেন চায়ের কাপ ঠোঁট ছুঁইয়ে বললেন, "ইসমাইল ভাই, টুকুন তো আপনাদের লালপট্টির গল্প শুনিয়ে আমাকে মুগ্ধ করে রেখেছে। সত্যি বলতে, নিজে একবার যেতে ইচ্ছে করছে।" ইসমাইলের কৃষ্ণবর্ণ মুখে বিদ্যুতের মতো আনন্দ খেলে গেল। সে দুই হাত জোড় করে বলল, "সত্যি নাকি আপা? আমিনা তো প্রতিদিন বলে - 'টুকুন বাবুর আম্মাকে একবার দাওয়াত দিয়ে আসো'।" তার গলার স্বরে ছিল এক ধরনের শিশুসুলভ উৎকণ্ঠা, যেন কোনো স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত আসন্ন। মিসেস সেনের মুখে মাতৃস্নেহের আভা ফুটে উঠল। "টুকুন তো বাড়িতে শুধু আপনাদের কথাই বলে," বলতে বলতে তিনি টুকুনের দিকে তাকালেন। ইসমাইলের চোখ জলে ভরে এল। সে আঙুল দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বলল, "আপা, টুকুন বাবু আমাদের কাছে আল্লাহর রহমত... ওই দিন দুর্ঘটনা না হইলে হয়তো টুকুন বাবুর লগে মুলাকাত হইতো না..." কথাটা শেষ করতে তার গলা রুদ্ধ হয়ে এল। সে নিজের জীর্ণ গামছা দিয়ে চোখ মুছল। "ও আমার ছেলে..." মিসেস সেনের কণ্ঠে গর্ব ও বেদনার মিশ্রণ। তিনি ইসমাইলের মনের জোর বাড়ানোর জন্য বললেন, "কিন্তু আপনারাও ভালো মানুষ।" ইসমাইল মাথা নিচু করে বলল, "পনেরো বছর আপা... পনেরো বছর আমিনার গর্ভ শূন্য থাকল। গ্রামের লোকেরা আমারে 'বন্ধ্যা ইসমাইল' ডাকত।" তার কণ্ঠে জমে থাকা যন্ত্রণা যেন পাথরের মতো ভারী। "মাছের ব্যবসাও মরতে বইছিলো... মনে হইতাছিল আল্লাহ আমাগোরে ভুইলা গেছেন।" মিসেস সেনের চোখে জল চলে এল। ইসমাইলের মুখে হঠাৎ আলোর রেখা ফুটে উঠল, "তারপর টুকুন বাবু এলেন! ভ্যান কিইনা দিলেন, মোবাইল দিলেন, ডাক্তার দেখালেন..." তার কণ্ঠস্বর উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠল, "ইনশাল্লাহ, আর এখন দেখুন আপা! আমিনার পেটে সন্তান, ব্যবসা চলছে, নতুন ঘর তুলছি... সবকিছুই যেন নবজীবন পেয়েছে!" মিসেস সেনের বুক ভরে উঠল এক অদ্ভুত আবেগে। তিনি বললেন, "ইসমাইল ভাই, আপনাদের কোনো প্রয়োজন থাকলে..." ইসমাইল তাড়াতাড়ি দুই হাত উঠিয়ে বলল, "না না আপা, এখন তো সবই আছে! শুধু..." সে একটু লজ্জিত ভাবে বলল, "শুধু আপনার দোয়া চাই। আপনি তো আম্মা... আপনার পায়ের ধুলোয় আমাগো সংসার ধন্য হইবো"। মিসেস সেন দৃঢ়ভাবে মাথা নেড়ে বললেন, "অবশ্যই ইসমাইল ভাই। নিশ্চই যাবো আপনাদের গ্রামে, বিশেষ করে আমিনাকে দেখতে!!" তার সিল্কের শাড়ির আঁচল হালকা নড়ে উঠল, যেন সম্মতির প্রতীক। টুকুন ইচ্ছাকৃতভাবে কথা ঘুরিয়ে ইসমাইলের দিকে তাকিয়ে হাসে, "চাচা, আমিনা খালার জন্য এই বিশেষ তেলটা এনেছি। গর্ভবতী অবস্থায় এটা খুব ভালো।" ইসমাইল উঠে দাঁড়ায়, তার শার্টের বোতাম একটু ভুলভাবে লাগানো, ঠিক যেন তাড়াহুড়োয় পরেছে। "আমি এখন উঠি আপা, আমিনা একা আছে..." - তার গলায় ছদ্ম উদ্বেগ, কিন্তু চোখে এখনও মিসেস সেনের শরীরের দিকে। মিসেস সেনের ঠোঁটে হালকা মৃদু হাসি। তিনি ইসমাইলের দিকে তাকিয়ে বলেন, "হ্যাঁ, আপনি যান ইসমাইল ভাই। কিন্তু এতো জিনিসপত্র নিয়ে একা যেতে পারবে?" তার কণ্ঠ্যে মাতৃসুলভ উদ্বেগ, কিন্তু টুকুন শুনতে পায় সেই লুকানো ইঙ্গিত। টুকুন দ্রুত সুযোগ নেয়। "আমি নিয়ে যাব চাচাকে," সে বলে খুব দ্রুত বলে ওঠে। মিসেস সেন টুকুনের দিকে তাকান। "হাঁ, তুই বাইকে পৌঁছে দিয়ে আয়," তিনি বলেন, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে যোগ করেন, "কিন্তু বিকেল হয়ে এসেছে, তুই কি করে ফিরবি?" - কথায় মাতৃসুলভ চিন্তা, কিন্তু টুকুন তার চোখের ভাষা পড়তে পারে। ইসমাইল অস্বস্তিতে পা ঘষে, তার শ্যামলা মুখে দ্বিধার ভাব ফুটে ওঠে। "আপা, টুকুন বাবু..." সে ইতস্তত স্বরে বলে, "যদি আজ রাত থাইকা যায় আমাগো বাড়ি...কাল সকালে ফিরলে অসুবিধে হইবো?" - কথাটায় যতটা না উদ্বেগ, তার চেয়ে বেশি লুকিয়ে আছে অন্য কিছু। টুকুন দ্রুত আপত্তি জানায়, "না মা, আমি ফিরে আসব। রাস্তা ভালো আছে, কোনো সমস্যা হবে না।" তার কণ্ঠে জেদ, কিন্তু গভীরে এক ধরনের উত্তেজনা, কিন্তু কাউকে বুঝতে দিতে চায় না। ইসমাইল জোর দিয়ে বলে, "রাতে অনেক অন্ধকার...গেরামের রাস্তা.." - তার কণ্ঠে এক ধরনের জরুরী ভাব। মিসেস সেন হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। "ঠিকই বলেছেন ইসমাইল ভাই," তিনি বলেন, "টুকুন আজ রাতটা ইসমাইল ভাইয়ের বাড়িই থাকুক। কাল সকালে ফিরে আসবে।" শেষ পর্যন্ত সে মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়, "ঠিক আছে, চলো এখন ইসমাইল চাচা!" বাইরে বেরিয়ে বাইকে ওঠার সময় টুকুনের মনে পড়ে যায় আমিনা খালার কথা। এই রাতটা সে কোথায় কাটাবে? ইসমাইল চাচার বাড়িতে কী অপেক্ষা করছে তার জন্য? পোয়াতি আমিনা খালার সাথে কি নোংরামি করবে!! - চলবে
Parent