❣️বৌদিমণি❣️ ﴾ সমাপ্ত ﴿ - অধ্যায় ৩২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-61673-post-5772117.html#pid5772117

🕰️ Posted on October 11, 2024 by ✍️ বহুরূপী (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1155 words / 5 min read

Parent
দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যে অবধি অতি নাটকিয় ভাবে একের পর এক কয়েটি ঘটনা ঘটে গেল। তার মধ্যে প্রথমটি হল মাস্টার মশাইয়ের বাড়ির আমবাগানের মাঝে। আমবাগানের পথধরে হেমকে নিয়ে পলায়ন করা কঠিন ছিল না।কিন্তু মাঝ পথে আসিতেই যখন পেছনে নয়নতারার ছোট্ট মেয়ে মন্দিরা মাসি! মাসি!বলে চিৎকার জুড়লো। তখন বিপত্তি ঠেকায় কে! অবশেষে হেম যখন মন্দিরাকে কোলে তুলে শান্ত করে। ততখনে কোথা থেকে দুজন সন্ডাগন্ডা লোক লাঠি হাতে হাজির। বোধকরি লোক দুটি এই গাঁয়ের নয়। কারণ আশপাশের লোকজন সঞ্জয়ের শারীর শক্তি সমন্ধে অবগত। তবে লোকদুটি সঞ্জয়কে দেখিয়া যে ভয় পায় নাই,একথা নিঃসন্দেহে বলা চলে না।কিন্তু সঞ্জয়কে একা দেখিয়া তাদের মনে হয়তো খানিক সাহস জাগ্রত হয়েছিল‌। তবে সঞ্জয়ের পক্ষে এদের সামলানো খুব একটা কঠিন কার্য ছিল না। কিন্তু দেখা গেল, একজন মাটিতে পরতেই অন‍্যজন কোনক্রমে নিজেকে ছাড়াইয়া দিকবিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে ছুটে লাগালো। এতে অবশ্য বিপদ কমার বদলে আরও বাড়লো। নদী তীরে আসার প‍র হেম ও মন্দিরাকে নৌকায় বসিয়ে। সঞ্জয় যখন তার বন্ধুর সহিত পরামর্শ করিতেছিল। তখন দেখা গেল পরিকল্পনা মত তালদীঘিতে মায়ের মন্দিরে হেমলতাকে নিয়ে আর ওঠি চল না।এতে যথেষ্ট বিপদ আছে। সুতরাং সঞ্জয়ের নৌকাটি নদীপথে তালদীঘির ঘাট ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে গেল।এবং অবশেষে দূরের এক মন্দিরে বিবাহের কার্যক্রম সম্পূর্ণ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে দুপুরঘুরে গিয়ে, বিকেলও প্রায় যায় যায় অবস্থা। শেষ বিকেলে সন্ধ‍্যের আগে আগে সারিবদ্ধ তালগাছের মধ‍্যের রাস্তায় দুখানা গরুর গাড়ি দেখা গেল। গাড়ী দুটি মন্দিরে পেছনে যে পথটি,সেটি ধরে ধিরে ধিরে আসিতেছিল। পুলকের বাড়ির সামনে আসিতেই পেছনের গাড়িটা থামলো। কারণ আর কিছু নয় তার অর্ধাঙ্গিনী তো এই বাড়িতেই বাসরত। সঞ্জয়কে সে দাদা বলিয়া ডাকে।আর দাদা বৌ তাকে না দেখতে দিলে তার অভিমানের কি আর শেষ থাকবে। সামনের গাড়িতে ছইয়ের ভেতরে সঞ্জয় ও মন্দিরাকে কোলে করে নতুন বধূ আমাদের হেমলতা ছিল জড়সড় হয়ে। ভয়ের কারণেই হোক বা কান্না লুকাইতে,হেমলতার মাথার ঘোমটাখানা প্রায়ই দের হাত টানা। বাড়ির সামনে যখন গাড়ি থামলো,তখন গাড়ি থেকে না নামিলেও বোঝা যার বাড়িটি আজ খালি নয়। সঞ্জয় গাড়ি হইতে নামা মাত্র একটি মেয়ে ছুটিয়া প্রায় সঞ্জয়ের পায়ের উপরে পরে। সঞ্জয় কোন মতে তাকে ধরে সামলে নিয়ে দেখে,মেয়েটি আর কেউ নয় তার বন্ধুর অর্ধাঙ্গিনী।কিন্তু সে অঝরে কাঁদছে। বাড়ির উঠনে আর বউ ঝি যারা ছিল,তারমধ্যে থেকে আরও দুই একজন এগিয়ে এল সামনে।কিন্ত নয়নতারাকে দেখা গেল না।সঞ্জয়ের মনে হঠাৎ কেমন যেন একটা ভয়ের অনূভুতি নাড়া দিই গেল। সে অস্থির হয়ে জিঙ্গেস করলো, – আরে... এইভাবে কাঁদবার কি হলো? ওদিকে পুলক তোকে নিয়ে আসতে গাড়ি থামালো বাড়ির সামনে,আর তুই কি না এখানে এসে বসে আছিস..আচ্ছা বৌদিমণি কোথায়? এবার মেয়েটির কান্না যেন আর বাড়লো। সে কোন মতে কান্নার দমক ঠেকিয়ে, ফুপিয়ে ফুপিয়ে ভাঙা গলায় বলল, – কারা যেন সোহমদার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে গো সঞ্জয়দা....বৌদি নদী ঘাটে.... কথাটা শোনা মাত্রই সঞ্জয়ের চোখমুখে কেমন যেন একটা ভাব ফুটলো, যে ভাব দেখবার পর কন্দন-রত মেয়েটি যেন কাঁদতে ভুলে গেল। ছইয়ের ভেতরে হেমলতার তখন কেমন অবস্থা না বললেও অনুমান করে নেয়া যায়। দ্বিতীয় গরুর গাড়িটা যখন বাড়ির কাছাকাছি। তখন গাড়ির ভেতর হইতে পুলক বন্ধুকে ছুটে যেতে দেখে দুইবার ডাকলো। কিন্তু সঞ্জয় সারা দিল না। এরপরের ঘটনাটি ঘটলো নদী তীরে। সন্ধ্যার আলো তখনও শেষ হয়নি। ভাগ্যের কারণেই হোক কিংবা ভগ'বানের ইচ্ছেতে। সঞ্জয় আজ মাঝিপাড়াতে কোন নৌকা জোগাড় করতে পারলো না। শেষে মাঝিপাড়া ছাড়িয়ে নদীর তীর ঘেষে ছুটতে ছুটতে খোলামেলা নির্জন এক স্থানে, একখানা নৌকা তার চোখে পরে। তবে বেশ দূরে,মাঝ নদীতে। ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় নৌকাটি এদিকে পানে আসিতেছিল। এইরূপ বুঝিয়া সঞ্জয় যখন ভাবছে আবার ছুট দিবে, তখনই লাঠি সমেত তিন-চারজন লোক তার সামনে। পায়ের শব্দ শুনে পেছনে ফিরে দেখলো, সেদিক থেকে ছুটে আসছে আরও তিনজন। এরা যারাই হোক,তাদের উদ্দেশ্য যে খুব সুবিধার নয় সে কথা সঞ্জয় সহজেই বুঝলো। স্বাভাবিক অবস্থায় লড়াই হল কি হতো তা বোঝা উপায় নাই।তবে উত্তেজিত সঞ্জয়ের সহিত লড়াইয়ে আক্রমণকারী দল বেশ বেকায়দায় পড়লো। তবে লড়াইয়ের পরি সমাপ্তি ঘটলো না। যে নৌকাখানি এতখন দূরেছিল,এখন তা বেশ কাছে।এবং নদীতীরে গোলমাল দেখে সেটি আরো দ্রুত বেগে এদিকেই ছুটছে। তার ওপড়ে মাঝিদের মধ্যে একজন সঞ্জয়দা সঞ্জয়দা বলে জোড়ে জোড়ে চেঁচায়। এরপর আর আক্রমণকারী দলের থাকার সাহস হয় না।লড়াই থামিয়ে আক্রমণকারীদের সবাই কোনদিকে গেল বোঝা গেল না।শুধু সঞ্জয় হঠাৎ "ধপ" করে তীরবর্তী বালিতে বসে পরলো। দেহবল যাই হোক,জনসংখ্যায় ভাড়ি ও লাঠি নামক বাংলার অস্ত্র হাতে থাকায়,সঞ্জয়ের যথেষ্ট রক্তপাত করতে আক্রমণকারী দল সক্ষম হয়েছে। এদিকে বাড়ির ভেতর নব বধূর কান্না থামায় কে!ঘর ভর্তি বউ ঝি'দের মাঝে কয়েকজন বয়স্ক মহিলা হেমকে শান্ত করার গুরুদায়িত্ব হাতে নিয়ে ছিল। কিন্ত পরিশেষে দেখা গেল ও মেয়ের কান্না থামানো তাদের কর্ম নয়। সবাই যখন হাল ছাড়তে বসেছে,তখন হঠাৎ বাইরে কেমন একটা হইচই শোনি গেল। বাইরে আসতেই দেখা গেল কয়েকজন লোক মিলে ধরাধরি করে,রক্তাক্ত সঞ্জয়কে নিয়ে বাড়ি ঢুকলো। যদিওবা সঞ্জয়ের অবস্থা দেখিবার মতোই ছিল। কিন্তু সবার দৃষ্টি ক্ষণকালের জন্যে পেছনের দুটি রমণীর ওপড় নিবদ্ধ হয়ে রইল। তার মধ্যে একজন বিধবা। বয়স যতদূর বোঝা যায় ৩৬ কি তার চাইতে একটু বেশীও হতে পারে। গাঁয়ে রঙ শ‍্যামবর্ণের, বেটেখাটো সাস্থ‍্যবতী দেখতে। দ্বিতীয় জনের বসয় বোঝা যায় না।২৫ হইতে পারে আবার ৩০'শ হইতে পারে। তবে মেয়েটি অবিবাহিত। তার ওপড়ে লম্বাটে ও অতিরিক্ত সুন্দরী বলা চলে। সবাই এমনিতেই যথেষ্ট অবাক হয়েছিল।কিন্তু বাড়িতে পা রাখতেই মেয়েটি যেরূপ আচরণ আরম্ভ করলো,তাতে সবাই থ মেরে দাঁড়িয়ে রইল। সৌদামিনী বাড়িতে পা রাখতেই তার সঙ্গী কে হেমলতা দায়িত্ব দিয়ে ওপড়ের ঘরে পাঠালো। তারসর সঞ্জয়কে ভেতরের বারান্দায় এনে তার রক্তাক্ত দেহ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে মুছিয়ে,নয়নতারার শয়নকক্ষে বিছানায় শুইয়ে দিল। লাঠির আঘাতে সঞ্জয়ের মাথার দুই পাশে কেটে জখম হয়েছিল। আরও দুই এক জায়গায় আঘাত লাগলেও সেগুলো বিশেষ উল্লেখযোগ্য নয়। সৌদামিনী ডাক্তার আসার আগেই রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে সঞ্জয়ের পাশেই বসে ছিল।সঞ্জয়ের তখনও জ্ঞান ফেরে নি। দুয়ারের বাইরে দূই একটি কৌতুহলী মুখ তখন উঁকিঝুঁকি দিই দেখছে। যাদের বসয় একটু বেশি তার ইতিমধ্যে শয়নকক্ষে প্রবেশ করেছে। কিন্তু কিছু বলবার আগেই ডাক্তার আসায় সৌদামিনী ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। সৌদামিনীর সাথে যিনি আসিয়াছে। তার নামটি মঙ্গলা। সৌদামিনীর শহর বাড়িতে ইনি চাকরানীর কাজ করলেও,দামিনী তাকে পিসি বলিয়া সমন্ধকরে। মঙলা দাসীবৃত্তি করলেও সৌদামিনীকে সে মালকিন কম মেয়ে হিসেবে দেখত বেশী। সৌদামিনী যখন দোতলার দুয়ারের ভিড় ঢেলে ভেতরে প্রবেশ করে। মঙ্গলা দাসীর সমুখে বেচারী হেম ও তার সাথে কম বয়সী কয়েটি মেয়ে বউ বাতাসের মুখে তালপাতার মত কাঁপিতেছিল। আর মঙ্গলা তাদের সামনে বসে সোনার একখানা পানের বাটা খুলে পান সাজছে। ঘরের ভেতরে এই রুপ কান্ড দেখার পর। সৌদামিনী মুখে শাড়ির আঁচল চেপে হাসি থামালো। সৌদামিনী ঘরে ঢুকে বলল, - পিসি তুমি এদের বাইরে নিয়ে যাও আর শোন শুধু শুধঙ বকাঝকা দিও না এদের.... সৌদামিনীর কথা শেষ হবার আগেই মঙলা দাসী গলা চড়িয়ে বলল, – আ মলো!আমি শুধু শুধুই বকেছি নাকি? এত বড় ধাড়ী মাগীর কি কান্না, গা জ্বলে এই সব দেখলে। – ছি ছি..পিসি তুমি কি সব...আচ্ছা হয়েছে, যাও এখন তুমি। বলেই সে সবাই কে বের করে দরজার কপাট লাগিয়ে দিল। দুয়ারের কপাট লাগানোর শব্দে চমকে গিয়ে হেমলতা বলল, – ওকি-দ্বার দিলে কেন? সৌদামিনী হেমের সমুখে বসে,ডানহাতে চিবুক খানা তুলে ধরে বলল – যাতে কেউ না আসে। তোমার সঙ্গে দুটো কথা কব, তাই। এদিকে সম্পূর্ণ ঘটনা খোলসা হবার পর জানা গেল; আজ দুপুর থেকেই নয়নতারা কয়েকজন বউ ঝি'দের নিয়ে বধূ বরণের আয়োজন করছিল।হাজার হোক তার একটি মাত্র বোন। হোক না হয় লুকিয়ে বিয়ে,তাই বলে একটু ঘটা হবে না, এ কেমন কথা? কিন্তু শেষ বিকেলে যখন খবর এলো স্বামীকে স্বাস্থ‍্য কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে,অবস্থা বিশেষ সুবিধার নয়। তখনও কি আর কোন অনুষ্ঠানে মন বসে? তবে নয়নতারার সঙ্গে দেবুটাও যে গেছে এই রক্ষা। যাহোক সেকথা পরের পর্বে হবে। আপাতত এখানে থামাতে হয়।তবে অবশ্যই বলা চাই গল্প চলবে কি না?
Parent