ভাগ‍্যের খেলা【নতুন সূচনা- খন্ড ৭】 - অধ্যায় ১১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-60210-post-5524233.html#pid5524233

🕰️ Posted on February 29, 2024 by ✍️ FreeGuy@5757 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 913 words / 4 min read

Parent
নতুন সূচনা, খন্ড ৩.দ্বিতীয় ভাগ **** জ্বরের ঘোরে উল্টাপাল্টা দেখছে আহান। এইতো মাত্রই সে বহুকষ্টে চোখের পাতা খুললো। খুলেই সে দেখতে পেল আইরিন সাদা শাড়ি পরে তার খাটে পা তুলে বসে।আর হাতে সেই বক্সটা নিয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে আছে। আহান একবার তাকিয়ে আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো। আইরিনের এখানে থাকার সম্ভাবনা ১০০ তে শূন্য ভাগ। ভাবনার মাঝে সে হঠাৎ তার কপালে ঠান্ডা কোনকিছুর স্পর্শ টের পেল।নরম হাতের তালু আর আঙ্গুলের স্পর্শ টের পাচ্ছে আহান, সাথে ধাতব ব্রেসলেট বা চুড়ির ছোঁয়া। আহান আবারো বহু কষ্টে চোখ মেললো। আইরিন এখন বসে আছে সেখানে। আহান চোখ মেলছে দেখে অবন্তী বললো,“এখন কেমন লাগছে?”আহান উত্তর দিতে পারছে না। সে আবারো চোখ বন্ধ করলো। তার চোখের পাতা ভারী হয়ে আসছে। কিছুক্ষন পর কপালে ঠান্ডা তরল জাতীয় কিছুর অস্তিত্ব টের পেল আহান। এবার আহান ঝট করে চোখ মেলে তাকালো। অবন্তী ঝুঁকে আছে তার মুখের উপর। তার চেহারা উল্টো হয়ে আছে তার মুখের কিছুটা ওপড়ে। অবন্তী পানি দিচ্ছে তার মাথায়।আহান বুঝলো আইরিন নয় এতখন সে অবন্তীকেই দেখেছে। আহান উঠতে চাইলো। কিন্তু অর্ধেকটা উঠতেই অবন্তী আহানের মাথাটা ধরে আবার শুয়িয়ে দিয়ে বললো,“নড়বে না। চুপ করে শুয়ে থাকো। পানিতে বরফের টুকরো দিয়ে দিয়েছি। তাই পানি এতো ঠান্ডা।” অবন্তী কথায় আহান চুপচাপ শুয়ে রইলো।মাথায় পানি দেয়া শেষে করে আবন্তী একটা তোয়ালে নিয়ে যত্ন করে আহানের মাথা মুছে দিতে লাগলো। অবন্তী আহানের খুব কাছে দাঁড়িয়ে আছে। তার গায়ে একটা সাদা শাড়ি। তাতে নীল গোলাপ ফুটেছে একটু দূরে দূরে। অভ‍্যেস মতো সকাল সকাল গোছল সেরেছে অবন্তী।তার হালকা ভেজা খোলা চুলগুলো বাঁ পাশের কাঁধের সামনে দিয়ে এসে কোমড়ে কাছে দোল খাচ্ছে, তার দেহের প্রতিটি নাড়াচাড়ায়। আর তার ফাঁকে দিয়ে মাঝে মধ্যে শাড়ির আঁচলের নিচে থেকে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে অবন্তীর অল্প চর্বিযুক্ত ফর্সা পেট‍। আহান ভাবলো হাত দিয়ে চুলের আড়ালটা সরিয়ে দিলে কেমন হয়! একিদে অবন্তীর হাত ভর্তী নীল রঙের কাচের চুড়িগুলো হাতের নাড়াচাড়ায় রিনঝিন শব্দ করে তাদের অস্বস্তি জানান দিছে। খুব সাধারণ সাজ তবে এগুলোই আহানকে মুগ্ধ করছে। কোন প্রসাধনী নয়,দামি শাড়িটি বা ব্লাউজ নয়,চুলের কোন বিশেষ বাঁধন নয়। অবন্তী দাঁড়িয়ে সাধারণ একটা অতি সাধারণ শাড়ি পরে অল্প ভেজা চুলে। আহান লক্ষ্য করলো আজকাল অবন্তীর দিকে একটু ভালো ভাবে তাকালেই ,তার সারা শড়ীলের কেমন একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়।সে শরীরের উত্তেজনা অনুভব করে। কিন্তু কেন সে বুঝতে পারে না।এই দৈনন্দিন জীবন তো কত বাঙ্গালী রমণীরা এই সাজে সাজে,কেউ দেখে আবার কেউ দেখলেও ওতটা গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু অবন্তীর দিক থেকে যেন চোখ ফেরানো যায় না। একবার তাকালেই দৃষ্টিজুড়ে শুধু ছড়িয়ে যায় স্নিগ্ধতা।এইসব ভাবতে ভাবতেই আহান মনে মনে বললো,“অবন্তী তোমাকে আজকের এই সাজে অপূর্ব সুন্দর দেখাছে,কেন যেন আমার মন আমাকেই পাগলাটে সব প্রশ্ন করছে। যেমন এখন প্রশ্ন করছে What is the desire? To find you in my arms or not”। আহান লক্ষ্য করলো না যে কথাগুলো শেষ হবার মাঝেই অবন্তী থমকে দাঁড়িয়েছে। কথাটা শেষ করে হঠাৎ সে খেয়াল করলো অবন্তী যেন পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে গেল।আর তৎক্ষণাৎ আহান বুঝলো সে কথাগুলো সে মনে মনে বলতে গিয়ে একটু জোরেশোরেই বলে ফেলেছে। অবন্তী আহানের মাথায় দুহাতে তোয়ালে ধ‍রে একি ভাবে দাঁড়িয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। তোয়ালেটা আহানের মুখটা ঢেকে রেখেছে অর্ধেকর মতো।তাই আহানের অবন্তীর লজ্জায় রাঙা মুখটা দেখার সুযোগ হলো না। এদিকে অবন্তী হতবাকের মতো সেদিকে তাকিয়ে ভাবছে আহান যা বললো একি তাকে উদ্দেশ্য করে! তবে তো তার রাগ দেখানোর কথা। কিন্ত তার রাগের থেকে লজ্জা করছে বেশি। সে বুঝে উঠতে পারছে না কেন হচ্ছে এমন! কিছূক্ষণ সব চুপচাপ। একটু পরে অবন্তী আহানের হাতে একটা ভেজা তোয়ালে ধরিয়ে দিয়ে নিরবতা ভেঙে বললো,“শরীর মুছে নাও এটা দিয়ে।” অবন্তীর কথা শেষ হতেই আহান কিছু একটা বলতে গিয়েও শেষ মুহুর্তে তা পরিবর্তন করে বললো, – তারপর? অবন্তী সরে যাচ্ছিল আহানের প্রশ্নে ঘুরে দাঁড়ালো - তারপর কিছু খেয়ে ওষুধ খাবে!তারপর রেস্ট। এটুকু বলে অবন্তী একটু দূরে সোফার সামনের ছোট্ট টেবিলে ঢাকনা দিয়ে ঢাকা দেয়া একটা কিছুর দিকে হাত বাড়ালো। আহান শরীর মুছে নিয়ে দেখলো। অবন্তী একটা বাটি ও চামচ হাতে তার সামনে দাঁড়িয়ে। অবন্তী বাটিটা আহানের দিকে বারিয়ে দিয়ে বললো,“খেয়ে নাও,তারপর ঔষধ খেতে হবে” আহান বাটিটা হাতে নিয়ে এ চামচ খেয়েই বললো,“ভালো লাগছে না এটা রেখেদিন আমি খাবো না।"অবন্তী স‍্যুপের বাটিটা হাতে নিল। কিন্তু সরিয়ে রাখলো না। বাটি হাতে সে আহানের সামনাসামনি বসে চামচ দিয়ে স‍্যুপ তুলে ধরলো আহানের মুখের সামনে। আহান তার হাতটা এক হাতে মুখের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে বললো,“ সত‍্যিই এখন আমার খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না একদমই।” কিন্তু অবন্তী যেন তার কথা শুনতেই পায়নি। সে আবারও স‍্যুপ তুলে ধরলো আহানের ঠোঁটের কাছাকাছি। তার সহজলভ্য চোখের দৃষ্টি দেখে আহান বুঝলো,খেতে তাকে হবেই। কিন্তু তবুও একবার শেষ চেষ্টা করতে ক্ষতি কি। এবারও হাতটা সরিয়ে দিয়ে বললো,“এখন খেতে ইচ্ছে করছে না। পাশে রেখেদিন পরে খেয়ে নিচ্ছি।” তবে এতেও অবন্তীর কোন নড়চড় হলো না।সে আবারও একি ভাবে স‍্যুপ তুলে ধরলো আহানের ঠোঁটের কাছে। আহান লক্ষ্য করলো এখন তার দৃষ্টিতে কাঠিন‍্য স্পষ্ট। তাই আহান অবন্তীকে আর ঘাটলো না। চুপচাপ খেতে শুরু করলো.... ****** বিকেলের দিকে তৃষ্ণা এলো তাদের রুমে।আর সে আসতেই অবন্তী বললো,“অনেক হয়েছে বেড়ানো,এবার ঢাকা ফিরবো।” তবে অবন্তীর কথা তৃষ্ণার মনে লাগলো না। সে আহানের দিকে একবার তাকিয়ে বললো,“আমাদের তো ঘোরাঘুরিই হলো না,আর এখনি চলে যাবে?” প্রশ্নটা যদিও আহানকে উদেশ্য করে ছুড়লো তৃষ্ণা, কিন্তু মাঝপথে তার ধরে নিল অবন্তী।“আহান এখানে কাজে এসেছিল ঘুরতে নয় ,তাই কাজ যখন শেষ এবার বাড়ির পথ ধরাই ভালো।আর হ‍্যাঁ এবার ট্রেন যাত্রা ক্যানসেল,প্লেনের...” অবন্তীর কথা সম্পূর্ণ হবার আগেই তৃষ্ণা তার কথার রেশ টেনে বললো,“প্লেনে কেন!ট্রেনে না যেতে চাইলে গাড়ি আছে তো।প্লেনে গেলে যাত্রার মজাটাই মাটি হবে...... বেশ কিছুক্ষণ তাদের মধ্যে একটা ফেন্ডলি তর্ক যুদ্ধ চলার পরে,অবন্তীই জয়ী হলো।সিদ্ধান্ত ঠিক হলো আগামীকাল তারা ব‍্যাক টু ঢাকা যাত্রা করবে প্লেনে।তৃষ্ণা মুখ ভার করে আহানের পাশে কতখন বসে থেকে এক সময় উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আহান আড়চোখে তাকালো অবন্তীর দিকে। সে দেখলো অবন্তী বিছানায় হেলান দিয়ে পা দুটো সামনে ছড়িয়ে বসে,তার কোলের ওপরে একটা বই রাখা “Devil In Winter” আর অবন্তী তার দিকে তাকিয়ে আছে..... Continue......
Parent