ভাঙনের পরে - অধ্যায় ১০৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-64501-post-5851299.html#pid5851299

🕰️ Posted on January 10, 2025 by ✍️ Henry (Profile)

🏷️ Tags:
📖 417 words / 2 min read

Parent
পর্ব: ২৭ মুরগীর ঝোল মেখে ভাত খেতে খেতে অংশু বললে---আমার জন্য বসে থেকো না বাবা। খেয়ে নিও।  জয়ন্ত বললে---একা একা খেতে ভালো লাগে না।  জয়ন্ত বা অংশু দুজনের সময় ভিন্ন। অংশুর কলেজ, টিউশন, কোচিং ক্লাস ভিন্ন সময়। জয়ন্তের ডিউটি নির্দিষ্ট সময়ে নয়। ডাক্তারি পেশা দশটা পাঁচটার অফিসের মত নয়। অনেক ডাক্তাররা থাকে নামডাক হলে ফাঁকি দেয়, নাকউঁচু থাকে, কাজের বাইরে চেম্বার করে। জয়ন্ত নয়।  বাবার 'একা একা' শব্দটা বড্ড আঘাত হানলো অংশুর হৃদয়ে। আগেও মায়ের কলেজ থাকলে বাবার লাঞ্চের সময়টা একাই যেত বার কতক। কিন্তু বাবার ডিউটি যদি সকাল দশটায় থাকে, তাহলে মা সঙ্গ দিত। তাছাড়া ডিনারের টাইমটা সকলের একসাথে কাটত। ডিভোর্সের পর আজ এক হপ্তা হল। সবমিলিয়ে মা গোবিন্দপুর চলে গিয়েছে দুই সপ্তাহ। মা হীন এ বাড়ি যে শূন্যতায় ভুগছে তা অংশুও টের পায়। কিন্তু সে নিজেকে শক্ত করে নিয়েছে ভেতরে। মা ফোন করে সারাদিনে একবার কিংবা দু বার। মায়ের সাথে স্বাভাবিক হয়ে কথা বলে অংশু। মা বাবার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে। অংশু সব কুশল জানায়। দিদার শরীরটা মাঝে একটু খারাপ হয়েছিল। এখন বেশ ভালো।   নিজে হাতে কাচাকুচি করতে হচ্ছে জয়ন্তকে। ছবি অবশ্য জামাকাপড়, বেদকভার, পিলোকভার এসব কেচে দিয়েছে দিন দুয়েক আগে। কিন্তু নিজের স্যান্ডো, জাঙ্গিয়া এসব তো আর ওকে দেওয়া যায় না। সুচি কেচে দিত সযত্নে এসব। জয়ন্ত শুকনো হয়ে যাওয়া কাপড়গুলো গুছিয়ে নিল। সংসারে একজন নারী না থাকলে যে তা কতখানি বিপর্যয় সে অভিজ্ঞতা হচ্ছে জয়ন্তের। সুচিত্রা নিশ্চই ওই ভবঘুরে গফুরের সংসার করছে এমনই যত্নে! ভাবল জয়ন্ত। বড্ড ঘৃণ্য নোংরা লোকটাকে নিয়ে শুচিগ্রস্ত সুচিত্রা কিভাবে সামলাচ্ছে সংসার? গফুর কি ওর মায়ের বাড়িতেই আছে? সুচির মা কি কিচ্ছু জানেন না। অবশ্য তিনি অনেকদিন যাবৎ শয্যাশায়ী। সুচি হয়ত তাকে এসব কিছু জানায়নি। তিনি বিছানা ছেড়ে জানতেও পারবেন না তার মেয়ের মধ্যবয়সে এমন ছেলেমানুষী। সত্যিই কি ছেলেমানুষী? জয়ন্ত প্রশ্ন করল নিজেকে। হয়ত সুচি জয়ন্তের সংসারে অসুখী এত বছর পর টের পেয়েছে। তার জন্য নতুন পুরুষ মানুষের হাত যদি ধরতেও হত তার জন্য কি অভাব ছিল পুরুষের। সুচির গায়ের রঙ টকটকে ফর্সা। এখনো যে লাবণ্য নেই, তা নেহাত মিথ্যে বলা হবে। সরকারী চাকুরীজীবি। যোগ্যতর অনেক পুরুষ সঙ্গী পেত। তাই বলে একটা ভবঘুরে মাতাল কুৎসিত লোকের হাত ধরে নেওয়া বড্ড বিস্ময়কর।  যে নেই, যে এমন সংসার ফেলে রেখে চলে গেছে, তার আর খোঁজ রেখেই বা কি লাভ। কি লাভ তাকে নিয়ে খুঁটিনাটি দ্বন্দ্ব করার। টিভির পর্দায় পুরোনো দিনের সিনেমায় গর্জে উঠছেন পাহাড়ি সান্যাল। সুচি উত্তম কুমারের সিনেমা ভালোবাসে। ওর নামও সুচিত্রা। ও' বলত ওকে সুচিত্রা সেনের মত দেখতে না হোক, ও কল্পনায় নিজেকে উত্তমের প্রেমিকা ভেবেছে কতবার। সেই সুচির জীবনে উত্তম কুমার আসেনি। গফুরের মত একটা ঘৃণিত মদ্যপ এসেছে। জয়ন্ত দেখলে ঘুরে ফিরে সে বারংবার সুচিত্রার ভাবনায় চলে যাচ্ছে। ***
Parent