ভাঙনের পরে - অধ্যায় ৩৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-64501-post-5753777.html#pid5753777

🕰️ Posted on September 29, 2024 by ✍️ Henry (Profile)

🏷️ Tags:
📖 505 words / 2 min read

Parent
হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া গেল কোনরকমে। ডাঃ হালদার জয়ন্তের ব্যাচমেট। বন্ধুস্থানীয় তাই। তিনি বললেন---ডাঃ দাশগুপ্ত, এ' রোগী কোথায় পেলে? জয়ন্ত মৃদু হেসে বলল---দেখতেই তো পাচ্ছো, অত্যন্ত গরীব। আমার বউয়ের আবার দয়ার শরীর। সেই দয়া দাক্ষিন্যেই... ডাঃ হালদার বললেন---সবই বুঝলাম। কিন্তু এ' রোগীকে আগে যে কিছুই ট্রিটমেন্ট করা হয়নি, বুঝতে পারছ। হাসপাতালের বাইরে সুচিত্রা অপেক্ষা করছে। জয়ন্ত এবার রাগ দেখিয়ে বললে---উটকো ঝামেলা নেওয়ার শখ তোমার কম নয়। আর আমাকেই নাকি বলো, যত ঝামেলা আমি নিই। সুচি হেসে বলল---কি করব বলো? হঠাৎ করে ফোন করল গফুর দা'র মেয়ে। ---গফুরের মেয়েও আছে নাকি? চমকে উঠল জয়ন্ত। সুচির মুখে লাজুক হাসি। বলল---গফুর দা'র এক মেয়ে দুই ছেলে। ---খেতে পায় না, তিন তিনটে বাচ্চা! বলিহারি এসব ছোটোলোকদের। তা তোমার ঐ গফুর দা কোথায়? ---দিনরাত মদ খেয়ে পড়ে থাকে। গফুর দা'র বউই কাজ করে সংসার চালাতো। সকালে পৌরসভার জমাদারদের সাথে ময়লা তোলার কাজ করত। দুপুরে দু একটা বাড়িতে কাজ করত। এই করেই সংসার চালিয়ে বড় মেয়েটার বিয়ে দিয়েছে। তার বিয়ে হয়েছে একটা বিহারী ছেলের সাথে নাকি। যেবার গফুর দা'কে তোমার ঐ জামাটা পরতে দিলাম, সেবার গফুর দা বললে ওর স্ত্রীয়ের ক্যানসারের কথা, ওর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে বিহারে ইত্যাদি। সত্যি বলছি, প্রথমে আমারও তোমার মত গফুর দা'র কথা বিশ্বাস হয়নি। ---আর অমনি না জানিয়ে তুমি খোঁজ নিতে বেরিয়ে পড়লে? ---না গো পরে আবার একদিন বাড়িতে গফুর দা হাজির। বললে ''সুচি মদ আমি ছাড়তে পারবো না, মদ আমাকে গিলে খায়। তুই আমার বউটাকে বাঁচা, তা নাহলে আমার বাচ্চাগুলা মারা পড়বে''। সেদিন বড্ড মন খারাপ হল জানো। গিয়ে দেখলাম গফুর দা মিথ্যে বলেনি। ভেবেছিলাম তোমাকে বলে একটা ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করব। তুমি বকাঝকা করবে বলে বলিনি আর সাহস করে। আজ কলেজ থেকে বেরোব, হঠাৎ করে ফোন করল গফুর দা'র মেয়ে। ওর মায়ের অসুস্থতায় বোধ হয় পাশে যারা থাকে তারা কাউকে না পেয়ে ওর বিহারে থাকা মেয়েকে ফোন করে জানিয়েছে। গফুর দার বউ বোধ হয় ওর মেয়েকে আমার কথা বলেছে। তাই কাঁদোমাদো হয়ে আমাকে ফোন করে মেয়েটা। কি করি বলো...এরপরে? জয়ন্ত গাড়ি স্টার্ট দিল। সুচি শাড়ির আঁচলটা গুছিয়ে নিয়ে বসল জয়ন্তের পাশে। জয়ন্ত বললে---বউ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে, স্বামী তিন তিনটে বাচ্চা জন্ম করে মদ খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সুচি মুচকি হেসে বললে---তিনটে কি গো? বউটা তিন মাসের প্রেগনেন্ট! ---অ্যা! বলো কি হে? ক্যানসার পেশেন্ট তারপরেও...বলিহারি এদের! সুচিত্রা খানিক চুপ করে থেকে হাসতে হাসতে বলল---আসলে গফুর দা এমনটা ছিল না, জানো। অনেক কেস আছে এই গফুর দা'র। ---রাখো তোমার এই গফুর দা'র কীর্তি। এখন লোকটাকে খুঁজে বার করতে হবে। বউটা মরলে পরে কিন্তু বাড়তি ঝামেলা। বিরক্ত হয়ে বলল জয়ন্ত। সুচি বললে---সত্যি বাঁচবে না? ---সম্ভাবনা নেই। ট্রিটমেন্ট যদি সঠিক সময় হত, চান্স ছিল। কিন্তু এ শেষ সময়। শুধু ডেথ সাটিফিকেটটা পেলেই হয়। তারপরেও মহিলা বেশ শক্ত সমর্থ দেখলাম। ---জানো এই হাসিনা মানে গফুর দার বউ আসলে আগে প্রস্টিটিউট ছিল। সুচি ফিসফিসিয়ে বলল এমনভাবে, যেন এই চলন্ত গাড়িতেও কেউ কথাটা শুনতে পাবে। জয়ন্ত তাকালো সুচির দিকে। বললে---তার মানে অন্যকোন রোগ নেই তো। আগে বলোনি কেন? ---গফুর দা ওকে বিয়ে করার পরে ও' সেসব ছেড়ে দিয়েছে। আসলে গফুর দা তো অন্য একজনকে ভালোবাসতো। এবার উৎসাহ পেল জয়ন্ত। গাড়িটা টার্ন নিয়ে বলল---কাকে? ---তোমার ঝুমুরকে মনে আছে। মালতী পিসির মেয়ে। মানে ডালিয়ার দিদি। ---মানে যে ঐ তোমাদের দীঘিতে ডুবে মারা গিয়েছিল?
Parent