বিল্টু ও তার মা অভাবের ফাঁদে! - অধ্যায় ১৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-68685-post-5969249.html#pid5969249

🕰️ Posted on June 22, 2025 by ✍️ Rocky351 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 959 words / 4 min read

Parent
পর্ব -১৬ সন্ধ্যার প্রথম সন্তান জন্মাবার দিন নির্ধারিত হয়। সন্ধ্যা প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে নার্সিং হোম ভর্তি হয়।  কিন্তু সন্ধ্যা চেয়েছিলি তারপ্রথম সন্তান যেহেতু  অবিনাশ বাবুর নয়, তাই সেই সন্তানকে অবিনাশ বাবুর ছত্রচ্ছয়ায় রেখে ভালোমানুষ অবিনাশবাবুর সাথে দিনের পর দিন বিশ্বাস ঘাতকতা করতে  সে পারবে না। সন্ধ্যা ভিতরে ভিতরে অন্তর জ্বলনে মরছিল। বিবেক দংশনের কামড়ে ছটফট করছিলো সন্ধ্যা।  তাই অবিনাশ বাবুর ছেলের পরিচয়ে মানুষ করতেও চাইনি সন্ধ্যা তার প্রথম সন্তানকে। তাই সন্ধ্যা শেফালী কে তার সবকথা জানিয়েও ছিল আগেথেকেই।  তাই যেদিন সন্ধ্যা তার প্রথম সন্তান এর জন্মদিল , সেদিন নার্সিং হোমের নার্স কে অনেককষ্টে রাজিকরিয়ে অবিনাশ বাবুকে জানাতে বলে ,তার স্ত্রী সন্ধ্যা ,একটি মৃত বাচ্চার জন্ম দিয়েছে।  আর সেইসাথে শেফালী একটি অন্য নার্সিং হোমেথেকে একটি মৃত বাচ্চা কোলে নিয়ে অবিনাশ বাবুকে দেখায়।  আর তারসাথে সন্ধ্যার প্রথম সন্তানকে দক্ষিণ ভারতের একটি অনাথ আশ্রমে নিয়ে চলেযায়। কিন্তু সন্ধ্যার ইচ্ছে ছিলোনা তার প্রথম সন্তান কে  অনাথ আশ্রমে রাখার। কারন অনাথ আশ্রমের নিয়ম হলো , যে বাচ্চাটা অনাথ আশ্রমের সংস্থার লোকেরা একবার  পাবে ,সেই বাচ্চাটির ব্যাপারে কোনোদিন আর তার খোঁজ খবর রাখতে পারবেনা তার আসল মা বা পরিবারের লোক। তাই শেফালী  সন্ধ্যার কথামতো দক্ষিণ ভারতের একটি  অনাথ  আশ্রমের চারপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকে ,যাতে কেউ অনাথ আশ্রমে কোনো দম্পতি যদি আসে সেই সময়ে  কোনো অনাথ শিশু কে এডোব করতে বা  দত্তক নিতে আসে ,তাহলে তাদেরকেই শিশুটিকে দিয়ে দেবে। কারন তাহলে  সন্ধ্যার প্রথম সন্তান কোথায় মানুষ হচ্ছে,কি ভাবে মানুষ হচ্ছে  তার হদিশ পাবে সন্ধ্যা।  শেফালী সন্ধ্যার সদ্যোজাত  প্রথম সন্তানকে নার্সিং হোমেথেকে ,নার্সের কারসাজি থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দীর্ঘ ৩৩ ঘন্টা আম্বাসাডর  গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে চলেযায় ব্যাঙ্গালোরে এক অনাথ আশ্রমে। কারণ ওয়েস্টবেঙ্গলের ধারে পাশে সন্ধ্যা চাইনি তার সন্তান মানুষ হোক ,যদি কেউ জানতে পেরে যায়। তাই সন্ধ্যা তার প্রথম সন্তানকে নিজের থেকে দূরেই রাখতে চেয়েছিলো।  শেফালী ব্যাঙ্গালোরে পোঁছে অনাথ আশ্রমের সামনে ঘোরাঘুরি করতে করতে দেখতেপায় একটা নিঃসন্তান তুলনামূলক  বয়স্ক নিঃসন্তান  দম্পতি অনাথ আশ্রমে ঢুকছে। সেই সুযোগে শেফালী তখন সন্ধ্যার প্রথম সন্তানকে কোলে দিয়ে দেয়।  তারা পর শেফালী দেখতে পায় নিঃসন্তান সুব্রামানিয়াম দম্পতি বাচ্চা কোলেপেয়ে পুলকিত হয়ে অশ্রু ভরা  চোখে বিউগলে বিগলিত হয়ে , শুন্যকোল সদ্যোজাত  বাচ্চাটি কে পেয়েআনন্দিত হয় ,আর  নিজেদের পরিচয়ে মানুষ করার সির্ধান্ত নাই। এদিকে সন্ধ্যাকে ওয়েস্টবেঙ্গলে ফিরেই সন্ধ্যার প্রথম সন্তানের সঠিক ঠিকানা জানিয়েও দেয় শেফালী।  সন্ধ্যা এরপর   সুব্রামানিয়াম দম্পতি র সাথে ফোনে যোগাযোগ রাখে। কিন্তু চিরকাল প্রথম সন্তানের কাজে তার মাতৃত্বের পরিচয় গোপন রাখার দৃঢ় সংকল্পে অটুট থাকার প্রতিশুতি দেয় সুব্রামানিয়াম দম্পতি কে।  সেইসময়ে সন্ধ্যাদের মানে অবিনাশ বাবুদের অবস্থা অত্যান্ত ভালো উচ্চবৃত্ত ছিল।  তাও সন্ধ্যা প্রতিমাসে নিয়ম করে ব্যাংকে গিয়ে টাকা পাঠাতো মধ্যবিত্ত সুব্রামানিয়াম দম্পতি দের ,যাতে তার প্রথম সন্তান  উচ্চবিত্তদের আদলেই বড় হয়।  এই ব্যাপারে সন্ধ্যার প্রথম সন্তানের আসল বাবা সনজু কে কোনোদিন কিছুই বলেনি  সন্ধ্যা।  কারন সনজু জানতে পেরেই যদি সনজু তার প্রথম সন্তানকে সন্ধ্যা নিজের কাছে যদি মায়ের স্নেহে মানুষ নাই করতে পারে তাহলে সনজু নিজের কাছেই রাখতে চাইবে ,মানুষ করে বড় করবে।  কিন্তু সন্ধ্যার প্রথম সন্তান বড়হয়ে যদি মায়ের পরিচয় জানতে চায় ,মার  কথা জানতে চায় তাহলে যদি সানজু ,সন্ধ্যার নাম নিয়ে নিতেই পারে। সনজু বাচ্চাকে  বলতেই পারে সন্ধ্যা হল তোর আসল মা।  তখন তো ঝামেলার অন্ত থাকবেনা ,আর অবিনাশ বাবুর কাছে কি মুখ দেখাবে সন্ধ্যা। তাই সন্ধ্যা সনজু কে তার সন্তানের পিতার পরিচয়কে গোপন করেছিল।  এবার সনজু যখন সন্ধ্যার বিয়ের কয়েক মাস পর যখন সন্ধ্যার সাথে  দেখা করতে এল , প্রেগনেট সন্ধ্যা  সনজু কে সন্ধ্যা জানিয়ে ছিল সে বাচ্ছাটি জন্ম তো  দেবেই ,আর সাথে এটাও বলেছিলো অবিনাশ বাবুর পিতার পরিচয়ে সে বাচ্চিটি মানুষ ও করবে।  আর সনজু এটাই জানতো তার সন্তান সন্ধ্যার   মাতৃস্নেহে মানুষ হচ্ছে , আর সন্ধ্যার সুখী জীবনে পথের কাঁটা হয়ে সে থাকবে না।  তাই সনজু খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিল্টুকে জানতো তার সন্তান। বিল্টুকে তাই  সেদিন সেটাই  বলেছিল সনজু। (পর্ব ৬ এ  রয়েছে )  ডি.এন. এ  টেস্টের রিপোর্ট বিল্টুর সাথে মিলবে না  বোকা সনজু ,রাহুলের  সাথে মিলবে।  সনজু কিকরে জানবে যে তার প্রথম সন্তান সন্ধ্যার কেরামতিতে সদুর দক্ষিণ ভারতে রাহুল  সুব্রামানিয়াম নামে সুব্রামানিয়াম দম্পতির কোলেপিঠে মানুষ হচ্ছে।  তারপর সন্ধ্যা একবছর অবিনাশ দাসের ঔরসে দ্বিতীয় বার গর্ভবতী হয় ,এবং সন্ধ্যা -অবিনাশের দ্বিতীয় পুত্র জন্মায় বিল্টু বা বিশ্বরূপ দাস।  সব ঠিকই চলছিল প্রথম দিকে ,প্রতিমাসে নিয়মিত সন্ধ্যা টাকাও পাঠাতো মাধ্যবিত্ত সুব্রামনিয়াম দম্পতিদের।  কয়েকবছর পর যখন রাহুলের   চাটার্ড একাউন্টেন্ট নিয়ে পড়ছে সেই সময়ে   শুধাংশু চক্রান্তে অবিনাশ বাবুর ব্যবসা লাটে ওঠে। সন্ধ্যা পড়ে  যায় মহা বিপদের ,হাতে একদম হ্যারিকেন ধরিয়ে দেয় সুধাংশু । একে তো বিল্টু তখন উচ্চমাধ্যমিক এর পর ভালো একটা কোর্স ভর্তির টাকা জোগাড়ের চিন্তা , অবিনাশ বাবুর পর পর দু -বার স্ট্রোক , আর রাহুলকে চাটার্ড একাউন্টেন্ট এর মতো বিপুল ব্যায়ভার যুক্ত  কোর্সের টাকা কি করে  পাঠাবে সন্ধ্যা।  নিম্ন মধ্যবিত্ত সুব্রামানিয়াম দম্পতির ক্ষমতা ছিলোনা রাহুলকে চাটার্ড একাউন্টেন্ট পড়ানোর ব্যায়ভার কাঁধে নেবার। তার উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা , রাহুলের  দক্ষিণ ভারতের সুব্রামানিয়াম দম্পতির কর্তা মানে রাহুল  যাকে বাবা বলেই জানতো সে বয়সের ভারে মারাও যায় রাহুল যখনচাটার্ড একাউন্টেন্ট পড়ছিলো। তাই সন্ধ্যার দুটো ছেলের আর বরের দায়ভার এসে পরে তার কাঁধে।  সুব্রামানিয়াম দম্পতির কর্তা ,রাহুলের  বাবা মারা যেতেই সন্ধ্যা রাহুলের  চাটার্ড একাউন্টেন্ট কলেজের কর্ত্রী পক্ষের সাথে সাথে যোগাযোগ করে , কারন রাহুলের  বর্তমান যিনি জিবিত  মা তিনি ঘরোয়া একজন বৃদ্ধা মহিলা । তাই তারপক্ষে এতকিছু করা সম্ভব নয়।  তাই  সাথে  সাথে সন্ধ্যা  চাটার্ড একাউন্টেন্ট কলেজটির ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের দের  সাথে যোগাযোগ করে ,যাতে রাহুলের   পরিবারের আর্থিক চাপে চাটার্ড একাউন্টেন্ট পড়া বন্ধ করে না দেয়।    আর সন্ধ্যা,কলেজটির ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের নিজের  এই পরিচয়ে  দেয় যে ,সে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া,দুস্থ , সম্ভাবনাময় ছাত্রদের নিঃস্বার্থে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এ দান করতে  ইচ্ছুক একজন সমাজসেবী । তাই রাহুল সুব্রামানিয়াম কে তার পছন্দ। সে রাহুলের   সমস্ত ব্যায়ভার পড়াশোনার খরচ সহ  সে নেবে বলেই  জানায় সন্ধ্যা চাটার্ড একাউন্টেন্ট কলেজটির ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের ।   সেকথা রাহুলকে কিন্তু সংস্থার নিয়ম অনুসারে জানাতে বাধ্য ছিল কলেজটির ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ ।তাই রাহুল এটাই জানতো বা জানে সন্ধ্যার মতো কোন  একজন মহিলা  সোশ্যাল ওয়ার্কার বা সমাজসেবী  যিনি কি না চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এর মারফৎ তারনিস্বার্থ ভাবে তার চাটার্ড একাউন্টেন্ট পড়াশোনার সমস্ত খরচের  ব্যায়ভার নিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। রাহুল সাতপাঁচ না ভেবে কলেজটির ম্যানেজমেন্ট কে রাজি জানিয়ে দেয়।  সন্ধ্যা সম্পর্কে রাহুল  এরবেশি কিছুই জানতো না ,আর সন্ধ্যাও  বলেনি রাহুল কে  কোনোদিন যে সে হলো তার প্রথম সন্তান। 
Parent