বকখালি বিচিত্রা - অধ্যায় ১৭
পর্ব ১৭
হোটেল থেকে বেরতে বেরতে প্রায় দশটা বেজে গেল রিঙ্কির। গত রাতে তেমন ইন্টারেস্টিং কিছু না হলেও, পুরনো-দিনের স্মৃতিচারণ করতে করতে দুই বান্ধবীরই ঘুমতে বেশ দেড়ি হয়ে গিয়েছিল। আর সেটারই ফল আজকে এই দেড়ি করে বেরনো। যাইহোক, হেঁটে পাকা রাস্তা থেকে বাসে করে রিঙ্কি যখন জটার দেউলে পৌঁছলও তখন ঘড়িতে প্রায় একটা বাজে। বাস থেকে নেমে একটু হেঁটে নির্জন দেখে একটা দোকান থেকে এক বোতল দিশি মদ কিনল রিঙ্কি, সেই সাথে নিলো কিছু খাওয়ার জিনিস আর এক প্যাকেট সিগারেট। তারপর সেই সিগারেটের প্যাক থেকে একটা সিগারেট বের করে তাতে আগুন দিয়ে একটা পাফ মেরে এগিয়ে যেতে লাগল নিজের গন্তব্যর দিকে।
ফাঁকা মাঠের মাঝে দেউল হরফের বহু পুরনো টেরাকোটার মন্দির আছে। সেইখান দিয়ে ঠিক রাস্তা চিনে চিনে সে এগিয়ে যেতে লাগল নিকটবর্তী এক বৃহৎ জলাশয়ের দিকে। বাঁশ বটের জঙ্গলের ভেতর দিয়েই আস্তে আস্তে এগিয়ে চলল রিঙ্কি | সূর্য দেব তখন একেবারে মাথার উপরে থাকলেও বড়ো বড়ো গাছ থাকায় তার থেকে মুক্তি পেল সে|
এমনিই জায়গাটা জলাভূমি আর তার ফলে যতই না ও এগোতে লাগল ততই বাঁশের জঙ্গল ম্যানগ্রোভে পরিণত হতে লাগল। দেখতে দেখতে জঙ্গলটা ঘন আর গুরুতর হয়ে উঠতে আরম্ভ করলো | ঝোপঝাড়ের গভীর জঙ্গলের ভেতর দিয়ে, সরু, পঙ্কিল আর দুর্গম পথ। তারই ভেতর দিয়ে এক ঘণ্টা মতন হেঁটে রিঙ্কি পৌঁছল এক উঁচু পাঁচিলে ঘেরা বাড়ির পাশে । জল আর জঙ্গলে ঘেরা সেই বাড়িটায় আগে না এলে কারুর খুঁজে পাওয়া খুবই শক্ত।
চেনা জায়গা খুঁজে পেতেই রিঙ্কি এবার পরনের শাড়ি আর সায়াটাকে নিজের উরু অব্ধি গুটিয়ে নিলো। তারপর আস্তে আস্তে সেই বাড়ির পাঁচিল বরাবর হাঁটতে আরম্ভ করল। সেই পথ ধরে কিছুক্ষণ যেতেই পাঁচিলের গায়ে একটা বড় সুড়ঙ্গ মত দেখতে পেল রিঙ্কি। সুড়ঙ্গের সামনে পৌঁছে প্রথমে নিজের মাথাটাকে তারপর নিজের শরীরটাকে ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো সে।
অবশেষে সেই বাড়ির সন্ধান করতে পেরে মনে মনে রিঙ্কি আনন্দিত হল তো বটেই তবে আরও আনন্দিত হল এই ভেবে যে এত বছর পর আবার এই বাড়ির বাসিন্দার সঙ্গে দেখা হতে চলেছে। শেষ বার যখন সে এসেছিল তখন বাড়ির চারিপাশে এত গাছপালা ছিল না। উঠনের গজিয়ে ওঠা আগাছা এড়িয়ে আস্তে আস্তে বাড়ির চৌকাঠ ডিঙোতেই এক অতি-পরিচিত ঘ্রাণ ভেসে এলো রিঙ্কির নাকে। আর সেই সাথে সে নিজের মনে মনে বলল , 'হমমম, এর মানে উনি এখন ব্যস্ত আছেন',
এবার সেই গন্ধ অনুসরণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল রিঙ্কি। ঘরের ভেতরে কোন আলো না থাকলেও অবস্থা দেখে বুঝল যে অনেকদিন কেউ তার দেখাশোনা করেনি। বাড়ির দেওয়াল জুরে শুধুই মাকড়শার জাল।সে আলোআঁধারিতে রিঙ্কির দেখতে একটু অসুবিধে হচ্ছিল ঠিকই, তবে আরও একটু এগতেই বাড়ির ঠিক মুখ্য ঘরে অবশেষে দেখা মিলল 'তাঁর'।
'হ্যাঁ, ঠিকই ধরে ছিলাম আমি, উনি এখন ধ্যানমগ্ন...'
এই বলে আস্তে আস্তে তারই দিকে এগিয়ে যেতে লাগল রিঙ্কি। শেষে একবারে তাঁর সামনে পৌঁছে সাষ্টাঙ্গে তার উদ্দেশে প্রণাম জানালেও, 'কিন্তু কই? উনি তো একবারের জন্যও চেয়ে দেখলেন না। কিন্তু অন্যবার এলে উনি যে চোখ খুলে আমাকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরেন, তাহলে আজ কি হল?'
কি করবে কি করবেনা বুঝতে না পেরে কিছুক্ষণ সে সেখানে সেইভাবে চুপ করে বসে রইল। সাথে আনা হাতের ঘড়িতে সময় দেখতে লাগল। আজ দিনটাও যেন অনেক বড় বলে মনে হত লাগল রিঙ্কির। এইভাবে এক ঘণ্টা দু ঘণ্টা করে সময় যেতে যেতে যখন ঘড়িতে বাজল সন্ধে ছটা তখন আর নিজেকে চুপ করে বসিয়ে রাখতে পাড়ল না সে। সোজা সেই ব্যক্তির চরণে ঝাঁপিয়ে পড়ে রিঙ্কি বলে উঠল: "মা আমি এসেছি"
কিন্তু এরপর যেটা হল তার জন্যে একদমই প্রস্তুত ছিল না সে। সেই মহিলার চড়ন স্পর্শ করতেই সে নিজের উল্টে যাওয়া দুই আঁখি মেলে চাইলেন আর সেই সাথে বিদ্যুতের ন্যায় গর্জন করে উঠলেন:
"কই? কই সেই পাপী যার সংস্পর্শে ছিলিম তুই? কই সেই শয়তান যে করেনাক স্ত্রী লোকের সম্মান? তবে আজ...হ্যাঁ! হ্যাঁ! হ্যাঁ! আজকেই হবে সেই বীজ বপন, আজকেই পালটাবে সব খেলার ফল! আজকে থেকেই হবে সেই অসুর বিনাশের আরম্ভ!", এক মাথা ধপধপে পাকা চুল ঝাঁকিয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন ধ্যানভঙ্গ হওয়া সেই মহিলাটি। আর সেই সাথে তার পরনের ডোরা কাটা লাল পেড়ে শাড়িটির আঁচল নীচে মাটির উপর নেমে এলো, যার ফলে সেই আলোআঁধারির মধ্যে বেরিয়ে এলো তার শক্তিশালী নারীমূর্তি।
ওদিকে রিঙ্কি তখন ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে। সে যে এই সাধিকার ধ্যান ভঙ্গ করেছে সেটা সে বেশ বুঝতে পাড়ল। আর তাই নিজেকে সেই পাপ থেকে মুক্ত করতে সে সাধিকার চরণে লুটিয়ে পড়ল:
"মা!! আমাকে ক্ষমা করে দাও মা! আমাকে ক্ষমা করে দাও! এই ঘোর পাপ করার জন্য আমাকে ক্ষমা কর মা" ,বলতে বলতে কেঁদে ফেলল রিঙ্কি।
তবে সাধিকা যত তাড়াতাড়ি ক্রুধ্য হয়ে ছিলেন তার চেও তাড়াতাড়ি নিজের ক্রোধ ত্যাগ করে রিঙ্কিকে নিজের চড়ন থেকে তুলে নিজের বুকে চেপে ধরলেন, তারপর বললেন,"ক্ষমা কি চাস রে তুই, করেছিস এক মহৎ কাজ, এই কাজ না করলে হতনা এক অসুর নাস", সেই সাথে উনি সস্নেহে রিঙ্কির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে তার চোখের জল মুছিয়ে দিলেন। তারপর হাত বারিয়ে নিজের পাশে রাখা প্রদীপটা জ্বালিয়ে দিলেন। দপ করে প্রদীপের আলো জ্বলে উঠতেই সেই মহিলার রূপ দেখতে পেল রিঙ্কি।
হ্যাঁ, ঠিক শেষবারও তাকে যে বেশভূষায় দেখেছিল, আজকেও সেই একই ভাবে তাকে আবার ফিরে পেল রিঙ্কি।কিচ্ছু বদলায়নি। ওনার এক মাথা ধপধপে চুল দেখলে অনেকের মনে হতে পারে যে ওনার বয়সের গাছপাথর নেই, কিন্তু তাঁর মুখে চোখে বার্ধক্যের কোন বলিরেখা আজও দেখতে পেল না রিঙ্কি। পরনে সেই একই ডোরা কাটা লাল পেড়ে তাঁতের শাড়ি যেটা মাটিতে পড়ে রয়েছে। আর পরনে শাড়ি ছাড়া আর কিছু না থাকায় তার ভারী বক্ষ দুটি নিজেদের জানান দিচ্ছিল। রিঙ্কির মতোই তিনিও শ্যামলবর্ণ কিন্তু তাঁর নাভির দু-পাশ দিয়ে কোমর ঘুরে চলে গেছে এক অসাধারণ, নিখুঁত উল্কির নকশা। যেন একটা সূক্ষ্ম জালির বেল্ট।
রিঙ্কি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সেই মহিলার রূপ দেখতে লাগল। এমন সময় উনি বলে উঠলেন," চুপড়ীঝাড়ার রিঙ্কি, তাই না?"
সেই শুনে রিঙ্কি বলল," আমাকে আপনার মনে আছে মা?"
"কোন মা কি তার সন্তানকে কখনও ভুলতে পারে রে বেটি? তা কতদিন পর এলি বলতো...? মাকে ভুলে গিয়েছিলি বুঝি?"
"না মা, আপনাকে কি করে ভুলতে পারি?", বলে তাকে আবার জড়িয়ে ধরল রিঙ্কি। তারপর ধরা গলায় বলল, "আমার...আমার জীবনে অনেক কিছু ঘটে গেছে মা, তাই..."
"জানি, জানি মা। তোকে সে সব নতুন করে বলে নিজেরে কষ্ট দিতে হবে না। তবে এককথা, আমাকে আপনি আপনি করিস কেন রে? ছোট বেলায় আমাকে তুই তুইও তো বলতিস", বলে হেসে উঠলেন সেই মহিলা।
"সেটা আমার ভুল আর তখন হয়তো আমি বুঝতাম না আপনার আসল রূপটাকে", বলে একটু থামল রিঙ্কি, তারপর আবার বলল," মা যদি তুমি সভয় দাও তাহলে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি কি?"
মহিলা নিজের মাথা নেরে সম্মতি জানালে রিঙ্কি আবার বলল,"না মানে, আমি যখন তোমার পায়ে হাত দিলাম তখন তুমি কি নিয়ে, মানে কার উদ্দেশে সেই কথা বললে? কে সেই অসুর? আমার চেনা পরিচিত কেউ?"
"হ্যাঁ", এক বাক্যে উত্তর দিলেন সেই সাধিকা, তারপর আবার বললেন," তাহলে শোন, আমাদের চারিপাশে এরকম অনেক মানুষ ঘুরে বেরোয় যারা তাদের মুখে মুখোশ পড়ে থাকে। আমরা তাদের চিন্তে পারিনা কিন্তু এরাই হয় আমাদের সমাজের কিট। আজ এখানে এসে, ধ্যানমগ্ন অবস্থায় আমাকে স্পর্শ করে খুবই ভাল কাজ করেছিস মা। আজ সেই কিটগুলির মধ্যে থেকে আমাকে একজনকে চিনিয়ে দিয়েছিস মা। এইবার সেই পাপী সায়েস্তা হবে, তবে আমার হাতে নয়, নিজেরই ফন্দির জেরে"
"কিন্তু কে সেই ব্যক্তি, মা?"
"সেটা আমি তোকে বলতে পারবোনা রে, তবে এইটা বলতে পারি যে সেই ব্যক্তি আছে এখন এইখানে, বকখালিতে। আর তার সঙ্গে তোর দেখা হলেও হতে পারে..."
সেই শুনে রিঙ্কি একটু চিন্তা করে নিয়ে বলল," আমার জানা, বকখালিতে, দেখা হতে পারে...তার মানে, ববি দা? মৌদি?!!!"
"ধুর পাগলি, ওরা তো তোর নিজের লোক, তোর ভালো চায়...তবে যাক গে এই সব নিয়ে কথা বারিয়ে লাভ নেই আর, তবে মা জানিস তো, আজকের দিনটা বড়ই ভালো। আজ উত্তরায়ণের দিন, মানে বছরের সব থেকে লম্বা দিন। আজ কোন কাজ মন থেকে করলে সেটা পূর্ণ হয়"
"আর সেই জন্যই হয়তো আকাশে এখনও একটু আলো অবশিষ্ট আছে", এই বলে রিঙ্কি নিজের ব্যাগ থেকে দেশি মদের বোতলটা বের করে সাধিকার হাতে দিল। সাধিকা পরম আনন্দে সেই ভেট স্বীকার করলেন।
তারপর মাটিতে লুটতে থাকা শাড়ির আঁচলটা নিজের যথাস্থানে তুলে রেখে নিজের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর আস্তে আস্তে পাশের দিকে একটু এগিয়ে দেওয়ালের মধ্যে থাকা তাকে সেই বোতলটা রাখলেন। সেই সাথে সেখান থেকেই একটা কৌটো হাতে তুলে নিলেন। তারপর আবার নিজের আসনে ফিরে এসে এক গাল হাসি নিয়ে রিঙ্কির হাতে সেটা দিয়ে বললেন," খোল, খোল এটা"
তার কথা মত রিঙ্কি সেটা করতেই, কৌটো থেকে বেরিয়ে এলো এক অপূর্ব সুগন্ধ। হমমম খুবই পরিচিত সেই গন্ধ। এই সেই গন্ধ যেটা সে বাড়িতে ঢোকার সময় পেয়েছিল।
এই সুবাস হল এক বিশেষ রকমের উদ্ভিদের। মা এটাকে পান বলেন। আগে বয়ঃসন্ধিকালে রিঙ্কি যখন এখানে আসতো তখন গল্প করতে করতে মা বলেছিলেন যে এই পান মুখে নিয়ে ধ্যানে বসলে ধ্যানের গভীর থেকে গভীরত্বরও পর্যায়ে পৌঁছনো যায়। আরও বলেছিলেন যে এই পান শুধুমাত্র হিমালয়তেই পাওয়া যায়। তখন শুনতে রূপকথার গল্পের মত মনে হলেও, একটু বয়স বারতে সেই কথার মান বুঝতে পেরেছিল রিঙ্কি। এই উদ্ভিদের যে শুধু একটি মাত্র গুন সেটা কিন্তু না। এই উদ্ভিদ ঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে পারলে এটার দ্বারা অনেক রোগ ব্যাধির থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর উদ্ভিদ দিয়েই সে নিজের হবু স্বামীর বাঁচিয়েছিল রিঙ্কি।
সাধিকার কথামত কৌটো থেকে একটুখানি পান বের করে নিজের মুখে দিতেই সারা শরীর জুরিয়ে এলো রিঙ্কির। এ এমন আরাম যে আপনা হতেই তার চোখ বন্ধ হয়ে এলো, সব চিন্তা হওয়ায় মিশে গেল, সেই সাথে তার শরীরের সব থেকে সংবেদনশীল অঙ্গে বান ডেকে উঠল। রিঙ্কিকে সেই ভাবে নেশা-ছন্ন হতে দেখে সাধিকা হেসে উঠে বললেন," জানি তুই আজকে কি কারণে এসেছিস মা। তবে আজ যে আমার কাছে সেই চিকিৎসার কোন সরঞ্জাম নেই। তুই বরং পরশু আয় মা সঙ্গে নিয়ে তোর নতুন নাগরটাকে"
পান খেয়ে রিঙ্কির যে একটা তন্দ্রা ভাব এসে গিয়েছিল সেটা সাধিকার মুখে 'নাগরের' কথা শুনতেই কেটে গেল। সে বলল," নাগর? কোন নাগর মা?"
"ওরে মায়ের থেকে কিছু লুকোনো যায়না রে। জানি তোর শরীরের হাল, জানি তোর মনের হাল। টাকা দিয়ে যায় সুখ কেনা, তবে তাই দিয়ে কি মেটানো যায় শরীরের কোলাহল?", বলে আবার হেসে উঠলেন উনি, "আমি যে তোর কচি নাগরের কথা বলছি রে মা, যার সাথে গত কাল খেলায় মেতেছিলি তুই। তারই বাবার জন্যই তো তুই এসেছিস..."
রিঙ্কি এতক্ষণে ওনার কথার মানে বুঝতে পেরে বলে,"আজ্ঞে হ্যাঁ মা। কিন্তু তুমি এইটা জানার পরও আমার ওপরে রেগে নেই?"
"কেন? রাগবো কেন? তবে হ্যাঁ, রাগতাম নিশ্চয়ই, যদি তুই অতিক্রম করতিস সেই সীমানা, যেটা অতিক্রম করা পাপ"
রিঙ্কি মায়ের কথার মানে বুঝতে পেরে বলে,"অনেক কষ্টে আমি নিজেকে ধরে রেখেছিলাম মা। অনেক কষ্টে নিজেকে সেই মহা-অন্যায় থেকে বিরত রেখেছিলাম আমি..."
"জানি, তবে সেটাকে সব সময় অন্যায় বলা যায়না মা। তুই আমার মেয়ে, তাই তোর এটা জানা উচিত যে আমাদের কুলে সেই কাজ এর আগে কেউ করেনি। আর তাই সেটা প্রথমবার করলে ঘোর-পাপ হত, কিন্তু যাদের কুলে এটা আগে থেকেই চলে আসছে, তারা সেই একই কাজ করলে সেটাকে আমি পাপ বলতে পারিনে, কারণ ওটা ওদের রক্তে আছে"
সাধিকার কথা শুনে রিঙ্কি বলল," বুঝলাম। তবে মা, আজকে আমি কিন্তু অন্য এক কারণে এসেছি..."
"জানি, সে নিয়ে কোন চিন্তা করিস না তুই। তুই আমার প্রাণের মেয়ে। তোর জন্য সব হবে, তবে যা বললাম, পরশু আসবি যখন নিজের সহিত নাগরকে নিয়ে আসবি"
"সে তো নিশ্চয়ই, কিন্তু মা! ও এখানে কি করে আসবে? মানে, ওত ছোট ছেলে তার ওপর শহরে মানুষ। ও এই জঙ্গল পেরিয়ে, জলা ডিঙ্গিয়ে, পাঁচিল টপকে কি করে আসবে বল?"
"সামনের দরজা দিয়ে", বলে স্মলান হাসলেন উনি।
"কিন্তু সামনে তো কোন দরজা নেই মা, আমি তো এতকাল ওই পাঁচিল..."
"পরশু এলে, দেখতেই পাবি...", ধীর কণ্ঠে সাধিকা বলে উঠলেন।