বন্ধু - অধ্যায় ২৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-14739-post-800947.html#pid800947

🕰️ Posted on August 26, 2019 by ✍️ Newsaimon85 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 711 words / 3 min read

Parent
১৯ তারপর দুই দিন ছুটি ছিল। কার সাথে কথা হয় নি। এক ধরনের অপরাধ বোধ আর তার থেকে বেশি ভয় মনের ভিতর ঝাকিয়ে জায়গা দখল করে নিল। শুক্রবার ছুটির দিন। বিকাল বেলা বুয়েটে গেলাম আড্ডা দিতে। কোন কিছুতেই মন দিতে পারছি না। ফোনে মিলির নাম্বার বার বার দেখছি। ভয় হচ্ছে মিলি কি ভাবল। এই বন্ধুত্ব কি তাহলে শেষ হয়ে গেল? বাকিরা কি ভাববে শুনলে? নাকি শুনে ফেলেছে? শনিবার আজিজে নিচে বইয়ের দোকান গুলাতে বই নিয়ে দেখতে দেখতেও একই চিন্তা আসল। পরে দুপুরে চিন্তায় আর থাকতে না পেরে সিলেটে রওনা দিলাম রাতের বাসে। এই সাপ্তাহে ক্লাসের চাপ কম। মিস করলেও কিছু হবে না। বাবা মা দেখে খুশি হল। জানতে চাইল হঠাত, শরীর খারাপ নাকি। আমি বললাম না, তোমাদের দেখতে ইচ্ছা করল তাই আসলাম। রোব সোমবার চলে গেল। তবু কেউ ফোন দিল না। মনে ভয় আর বেরে গেল। মঙ্গলবার সাদিয়া ফোন দিল। ক্লাসে আসি নাই কেন জানতে। বললাম বাড়ি এসেছি। হঠাত কি কারণে বলায় বানায়ে বললাম বাড়িতে একটা কাজ ছিল আর আসা হয় না অনেকদিন তাই আসা। বুধবার ফারিয়া ফোন দিল কবে আসব জানতে, ওর ফোনেই সুনিতি আর জুলিয়েট এর সাথে কথা হল। আমি বললাম আগামী সাপ্তাহে ও ক্লাসের চাপ নাই তাই সেই সাপ্তাহ থেকে আসব বলে ভাবছি। বুঝলাম মিলি কাউকে কিছু বলে নি। চাপ একটু কমল। তবে মিলি কে কি বলব এটা নিয়ে মাথা খারাপ অবস্থা। বাসায় বাবা মা বলল কিছু নিয়ে চিন্তত নাকি। উত্তর দিলাম আমি, না। এদিকে যত চিন্তা করি না কেন আরেক সমস্যা হচ্ছে মাথার ভিতর হঠাত হঠাত সেই বাসের ঘটনা উঠে আসাছে। আর না চাইলেও প্যান্টের ভিতরের ব্যক্তি দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এমন কি রাতের বেলা স্বপ্নে দেখলাম মিলি এক জামা পড়ে আমার সামনে এসেছে যাতে ওর জামার ফাক দিয়ে নিপল বোঝা যাচ্ছে। আবার আরেকদিন স্বপ্নে দেখি বাসে ভীড়ের মধ্যে মিলি ওর পাছা নাড়িয়ে নাড়িয়ে আমাকে পিছন দিকে থাপ দিচ্ছে। চিন্তা দুশ্চিন্ত আর আতংকের মাঝে হঠাত করে বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে মিলির ফোন। আতংকে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অভ্যাসবসত ফোন রিসিভ করে ফেললাম। মিলি কোন কথা না বলে বলল শুধু পার্সেল টা আমার কাছে কিনা? আমি বললাম হ্যা। মিলি বলল আগামীকাল লাগবে। আমি যেন আগামীকাল চারটার সময় পার্সেল টা নিয়ে শাহবাগ আসি। ফোন রেখে দিল এই কথা বলেই। অনুভূতি কেমন হওয়া উচিত বুঝলাম না। তবে সেই রাতের ট্রেন ধরেই ঢাকা রওনা দিলাম। সকালে ট্রেন থেকে নেমে কমলাপুর স্টেশনের উলটা দিকের দোকান গুলো থেকে নাস্তা করে নিলাম। এরপর বাসায় এসে ক্লান্তিতে ঘুম দিলাম। শুক্রবারের জুমার নামায মিস হল। ঘুম ভাংগল আড়াইটার দিকে। উঠে গোসল করে নিচে নেমে দুপুরের খাবার খেলাম। খাবার খেয়ে রেডি হয়ে পার্সেলটা নিয়ে শাহবাগে গিয়ে চারটা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। সোয়া চারটার সময় মিলি ফোন দিল কই? আমি বললাম শাহবাগে যাদুঘরের সামনে। মিলি বলল লাইব্রেরির সামনে আয়। হেটে হেটে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে গেলাম। দেখি মিলি একটা হালকা নীল রঙের সালোয়ার কামিজ পরে বসে আছে। হাতে একটা বই। মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। কাছে যেতেই বলল বস। আমি আর কিছু না বলেই বসলাম। জিজ্ঞেস করল কেমন আছিস? বললাম ভাল। বাসার সবায় ভাল আছে কিনা জানতে চাইল বললাম ভাল আছে। এইবলে আবার বইয়ে নজর দিল। দুই মিনিট পরে ভাল করে তাকিয়ে দেখি ক্লাসের এক বইয়ের ফটোকপি ভার্সন। হঠাত আমাকে ডেকে এইভাবে কেন ক্লাসের বই পড়া বুঝলাম না। আসলে মিলি এমন না। কিন্তু ভয়ে কিছু বলতেও পারছি না। মিলি ঐদিনের ঘটনাটা নিয়ে কি বলে এই জন্য মনের ভিতর একধরনের চাপা ভয় জেগে রইল। একটু পরে মিলি বইটা বন্ধ করে বলল চল। আমি বললাম কোথায়? মিরপুরে যে স্টুডেন্ট পড়াই ওদের আজকে টিউশনির টাকা দেওয়ার কথা। আমি বললাম তুই পড়াবি আমি কি করব। ও বলল আজকে পড়াব না। গত মাসের টাকা টা দেয় নি আর ষান্মাসিক পরীক্ষা শেষ হল তাই বাচ্চা দুইটাকে দুই সাপ্তাহের ছুটি দিয়েছি। টাকা দরকার, ফোন দিয়েছিলাম। আজকে এসে নিয়ে যেতে বলেছে। যাব আর টাকাটা নিয়ে চলে আসব। দেরি হবে না। অন্য সময় হলে কখনো হয়ত যেতাম না অন্তত একবার বললে তো না। তবে আজকে এমনিতেই ভয়ে আছি আর মিলি আমার সাথে কথা বলছে এই জন্যই কথা না বাড়িয়ে রওনা দিলাম। মনের ভিতর মনে হল একটু চাপ কমে গেল। মনে হল মিলি ওটাকে বাসের ধাক্কা ধাক্কি বলে ধরে নিয়েছে। অন্তত আমার কোন দোষ নেই এইটা হয়ত ধরে নিয়েছে। একটা হাপ ছাড়লাম। তবে পুরাপুরি নিশ্চিত হতে পারলাম না। কোথায় যেন মিলির ব্যবহারে একটা আড়ষ্টতা আছে। আমিও পুরো স্বাভাবিক হতে পারছি না। তবে মনে হল মিলি যদি এটাকে আমার ইচ্ছাকৃত ঘটানো ঘটনা বলে ধরে নিত তাইলে হয়ত আমার সাথে আজকে বাসে করে মিরপুর যেতে চাইত না। যাই হোক মিরপুর রওনা দিলাম ১৩ নাম্বার বাসে।
Parent