ব্যাগেজ by dimpuch - অধ্যায় ৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-40268-post-3637550.html#pid3637550

🕰️ Posted on August 26, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 826 words / 4 min read

Parent
পশ্চিম আকাশ এ শুকতারা উদয় হয়েছে।নতুন সূর্য নতুন দিন আনছে, ঢাকুরিয়া লেক এর গাছ থেকে ভেসে আসছে পাখিদের কলরব,”না, এখন ও আছে। স্নেহ, ভালবাসা, মানবতা। কিন্তু আমি কি করে ফিরব? অভিমুন্য চক্রব্যূহে ঢোকার কৌশল জানতেন, কিন্তু বেরনোর পন্থা জানতেন না, তাই মৃত্যু আমিও তো তাই ।“ ফাগু এক অনাবিল তৃপ্তি আর শান্তি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পা বাড়াল। এর ১০ মাসের ভিতর ফাগু আর ৪ বার ব্যাগ এনেছে কোন ঝামেলা ছাড়া। একবার নেপাল সীমান্ত থেকে সোনা ও এনেছে। কিন্তু ডেলিভারি দেবার ১ দিনের ভিতর সেই ব্যাগ পুলিস বাজেয়াপ্ত করে। এ বাদ দিয়ে ধনুর আনা দুটো খেপ এর মাল ও পুলিস ধরে ফেলে। একবার খুব অল্পের জন্য ধনু বেঁচে যায় ।রোহিত এর প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা চলে গেছে।অবিনাশ বর্মা রোহিত কে অন্য দিকে শিফট করতে বলেছে। রোহিত সিনেমা আর টিভি তে টাকা ঢালা শুরু করেছে, আর তার ফলে নিত্য নতুন মেয়ে পাচ্ছে। এই অবস্থায় হঠাত ফোন, নতুন নম্বর এ। এই নম্বর রোহিত বাদ দিয়ে আর কেউ জানেনা। .........হ্যালো, বল রোহিত। .........ফাগু আবারও আসানসোল থেকে আনতে হবে। বড় কিছু আছে। ইকনমিক্স টাইমস নিয়ে যাবে। পার্টি ও তাই আনবে। কোড ‘দিওওার’। কাল, সকালে ট্রেন। ৩০ পাবে। .........ঠিক আছে। এইবার ফাগু কিছু মেকাপ এর সরঞ্জাম নিয়ে নিল, সাবধানের মার নেই। ফাগু যথারীতি রাত ১২ টা নাগাধ আসানসোল পৌঁছল ।ট্রেন ষ্টেশন এ ঢোকার একটু আগে , ফাগু উঠে টয়লেট এ ঢুকে দরজার ছিটকিনি আটকে দিল। ব্যাগ রেখে, ধিরে ধিরে মেকাপ শুরু করলো। মিনিট ২০ পর যখন বেরল,ট্রেন তখন ষ্টেশন এ দাঁড়িয়ে । যে কেউ এক ঝলক দেখে বলবে, এক বছর ৪৫-৫০ এর সাধারন লোক। মাথায় কাঁচাপাকা চুল, মাথায় একটা পানামা ক্যাপ, ঢোলা একটা ফুল হাতা সার্ট ,বাঁ চোখের নিচে একটি বড় আঁচিল ,ফলস গাম লাগানর ফলে চোয়াল একটু ঝুলে গেছে, তলার কষ এর দাঁত উঁচু , তলার ঠোঁট একটু বাইরের দিকে,চোখের নিচে চামড়া একটু কোঁচকান, বেশ একটা নেয়াপাতি ভুঁড়ি , কালো ফ্রেম এর চশমা। আয়নায় নিজেকে ভাল করে দেখে বেরিয়ে, ষ্টেশন এর বাইরে খাবার এর দোকানে গেল। বেশ একটু দূরে এক ধাবায় খেয়ে ‘বিয়ার’ নিয়ে বসলো, সময় কাটানোর জন্য। এই ভাবে কিছু সময় কাটিয়ে ভোর বেলায় আবার ষ্টেশন এ ফিরে প্রথমে একটা সাধারন ক্লাস এর একটু পর একটা ফার্স্ট ক্লাস এর টিকেট কাটল। নভেম্বর এর শেষ। বেশ ঠাণ্ডা লাগছে। এদিক ওদিক ঘুরে সময় কাটিয়ে সকাল ৬ টার সময় এসে প্লাটফর্ম এ বসলো। ব্যাগ এ ইকনমিক্স টাইমস, এক দিনের পুরান আছে, তবুও খুজে একটা নতুন কিনে নিল। আজকাল ফাগু রোজ এই কাগজ পরে। রোম কথা রেখেছে। প্রতি মাসে ফাগু ৪-৫ হাজার পায়। নিজেও এখন একটু বুজতে পারে বাজারের ওঠা নামা।গাড়ি আসার সময় হয়ে গেছে। বেঞ্চি তে বসে কাগজ পড়ছে। হঠাত লক্ষ্য করল ৩ টি ওর বয়েসি ছেলে। পায়ে স্নিকার, জিন্স এর প্যান্ট আর শার্ট প্যান্ট এর উপর দিয়ে। অফিস বাবু নয়, তাহলে হাতে কিছু থাকত, পিছনে প্যান্ট , ৩ জনেরি একটু যেন উঠে আছে। ফাগু বুজল, ব্যাপার সুবিধার নয়। হতে পারে অন্য কোন ব্যাপারে এসেছে, তবুও সাবধানের মার নেই। ট্রেন আসার আর অল্প সময় বাকি, একটি অফিস বাবু, ফাগুর ই বয়েসি এসে পাসে বসলো। বসেই হুমড়ি খেয়ে কাগজ দেখছে। ফাগু ইচ্ছা করেই মুখ একটু পাসে রেখেছে, জাতে না চট করে মুখ দেক্লহতে পায়। ......... দাদা, দেখুন তো টাটা মোটর কতোতে উঠেছে? ফাগু হাফ ছাড়ল, কাগজ টা ছেলেটিকে দিয়ে .........আপনি দেখুন আমি একটা সিগারেট খেয়ে আসছি। এখানে তো বারন।আপনি তো ৪ নম্বর কামড়ায় উঠবেন, তখন নিয়ে নেব .........আমরা ৬ নম্বর এ যাই,বলে ছেলেটি সাগ্রহে কাগজ টি টেনে নিল।ফাগু আস্তে করে ষ্টেশন এর বাইরে এসে সিগারেট সবে ধরিয়েছে।একটি কালো স্করপিও থেকে নামল সিরাজ আলি মণ্ডল সাথে আর ৪ টি ছেলে।ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে গেল ফাগুর শিরদাঁড়া দিয়ে। সিরাজ মণ্ডল এই কেস নিয়েছে!তাই বার বার ধরা পড়ছে। বুজল কি ঘটতে চলেছে। তবুও শেষ টা দেখার ইচ্ছা অদম্য। সিগারেট শেষ করে ফিরে এসে দেখল ছেলেটি কাগজটি ভাঁজ করে ট্রেন এর দিকে এগোচ্ছে আর ট্রেন থেকেও একজন হাতে ওই একই কাগজ নিয়ে নামল। দুর্ভাগ্য ছেলেটির,লোকটিকে আসতে দেখে ১০ সেকেন্ড এর জন্য থমকে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিস এসে দুজনকেই ঘিরে ধরল। ফাগু আস্তে করে ট্রেন এর ইঞ্জিন এর দিকে হাটা শুরু করলো । দূর থেকে দেখছে পুলিস লোকটিকে নিয়ে কামড়ায় উঠে, ২ তো বড় ব্যাগ বার করল। ছেলেটি হাত পা নেড়ে কিছু বলছে, ওর রোজকারের সহযাত্রী রা এসে ঘিরে ধরেছে।ষ্টেশন জুড়ে হই হট্টগোল, লোকে লোকারণ্য । দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন থেকে নেমে প্রচুর লোক দেখছে কি হয়েছে। দু জন পুলিস দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে গেল। ফাগু বুজল ওর খোজেই গেল। ফাগু ফার্স্ট ক্লাস এর কামড়ায় উঠে টয়লেট এ ঢুকল, কেউ ফিরেও তাকাল না ওর দিকে। সবাই তখন উগ্রপন্থি দেখতে ব্যাস্ত। ৭-৮ মিনিট নিল নিজেকে পুরান অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। আয়ানায় দেখে একটা তৃপ্তির হাসি হেঁসে,জামা গুজে,উইন্ড চিটার পরে দরজার সামনে এল। প্লাটফর্ম এ প্রচুর ভিড়, সবাই উত্তেজিত, ছেলেটিকে নিয়ে কি বলছে কিন্তু মণ্ডল হাত পা নেড়ে কিছু বলছে, তারপর ধিরে ধিরে ভিড়টা ষ্টেশন এর বাইরে বেরিয়ে গেল। ফাগু জানলার ধারে বসে কাচের জানলায় মাথা ঠেকিয়ে ভাবতে আরম্ভ করল “ এই রকম তো হওয়ার নয়। তাহলে ভিতরের কেউ বার বার খবর দিচ্ছে, কিন্তু কে? সিরাজ আলি মণ্ডল যখন দায়িত্ব নিয়েছে তখন পালাবার পথ নেই। কিন্তু ধরা পড়া চলবে না, কিছুতেই না।কিন্তু”” ফাগু কোথায় লুকাবে, পালাবে বা কোথায়,উদাসীন বালি ঢাকবে না পদরেখা, কোন বালির ঢিপিতে মুখ গুজে লুকাবে উঠপাখি। সিরাজ মণ্ডল যে ঠিক ধরবে””
Parent