ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - অধ্যায় ২২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39690-post-3640364.html#pid3640364

🕰️ Posted on August 27, 2021 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 635 words / 3 min read

Parent
।।২২।। ঠিক করেছিল আসবেনা কেন যে এল?এলিনাবৌদির বাসা থেকে বেরিয়ে মনোসিজের এই কথাটা কেবলি মনে হতে থাকে।অত সুন্দর স্বাস্থ্যবতী মহিলা কি এমন হল কে জানে।তাতাইদার সঙ্গে কোনো গোলমাল হয়নি তো?কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই আগেরবার যে আনন্দ পেয়েছিল এবার তার কিছুই না।আড্ডা এতক্ষণে জমে উঠেছে হয়তো।আশিসদার শেষ অবধি একটা গতি হল।খবরটা এলিনা বৌদিকে দেওয়া হলনা।কত খুটিয়ে খুটিয়ে জিজ্ঞেস করে সবার খবর অথচ আজ কেমন যেন অন্যরকম। মনোসিজকে দেখে শুভ বলল,এইতো মনা এসে গেছে। --হ্যারে মনা দিলীপের কোনো খবর জানিস?নিমু জিজ্ঞেস করল। --কেন কি হয়েছে? --ব্যাটা ইদানীং আসে কম,কোথাও কিছু জোটায় নিতো?শুভ বলল। --সেটা আমি কি করে বলব? --এক সঙ্গে সিনেমা যাস,তোর সঙ্গে গুসগুস ফুস্ফুস তাই বললাম। দিলীপকে আসতে দেখে মনোসিজ বলল,ওইতো দিলীপ আসছে ওকেই জিজ্ঞেস কর। --কি ব্যাপার দিলীপ তোর তো পাত্তাই নেই? দিলীপ একবার মনোসিজের দিকে তাকায় তারপর বলল,রকে গ্যাজালে চলবে কাজ-কাম থাকতে নেই? বঙ্কা বলল,বড়দের মত আমরাও একটা ঘরভাড়া নিলে কেমন হয়? --ভাড়া দিতে হবে না।আশিসদা ছাড়া আমাদের কেউ চাকরি করে?নিমু বলল। ঘরে ক্যারাম দাবা খেলা হচ্ছে বাইরে একটা বেঞ্চে গনুদা কানু মিত্তির আর পূর্ণেন্দু বসে গল্প করছে।গনুদা উঠে দাঁড়িয়ে বলল,অঘটন আজও ঘটে।গনু ক্লাব ঘরে ঢুকে গেল। কানু মিত্তির বলল,বেটার লেট দ্যান নেভার।একটা কথা বলব তাতাই কিছু মনে করিস না।মাসিক আরও অনেক কারণে বন্ধ হতে পারে। কানু মিত্তির তাতাই প্রায় সম বয়সী হলেও কানুমিত্তির দুই সন্তানের জনক।কাজেই কানুমিত্তিরের কথা তাতাই উড়িয়ে দিতে পারেনা। --ভাবছি কাল ডাক্তার দেখাবো।তাতাই বলল। --আমিও এই কথাই বলছি।মেয়ে মানুষের কথায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া ঠিক হবে না।অতিরিক্ত আকাঙ্খ্যা থেকেও এক ধরণের ইলিউশন তৈরী হয়। --সেটা কি আমি বুঝিনা? --অবশ্য গনুর কথাটা অস্বীকার করছি না।অঘটন আজও ঘটে।তুই ডাক্তারের মতামত নে,বিজ্ঞানের উপর তো কথা নেই। রাত হয়ে আসছে লিনা কি করছে কে জানে।চিন্তান্বিত পূর্ণেন্দু উঠে দাঁড়িয়ে বলল,আজ আসি রে? --গুড নাইট।অত চিন্তা করিস না।আজকাল তো অনেকে দত্তক নিচ্ছে।তোর বউ যথেষ্ট শিক্ষিত আমি আর কি বলব?কানু মিত্তির সহানুভুতির সুরে কথাগুলো বলে। পূর্ণেন্দু বাড়ীর পথে রওনা দিল।  মনোসিজ বাসায় ফিরে বই নিয়ে পড়তে বসে যায়।কাল আবার উশ্রীকে পড়াতে যেতে হবে।দিলীপের বেশ উন্নতি হয়েছে।আড্ডায় সময় দেয় কম।পরীক্ষাটা সিরিয়াস্লি নিয়েছে মনোসিজের ভাল লাগে।পরীক্ষার জন্য তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে যায় আড্ডা। মনোময়বাবু ইজি চেয়ারে বসে।পাশে দাঁড়িয়ে হিমানীদেবী কথা বলছেন।সারাদিনের কাজের পর এই সাক্ষাৎটুকূ দুর্লভ মনে হয়।এতগুলো বছর এক সঙ্গে কাটিয়েও মানুষটার কাছে থেকেও আনন্দ।মনোময় বাবু গেঞ্জীটা খুলতে গেলে হিমানীদেবী সাহায্য করেন।গেঞ্জীটার বগলের কাছে ছিড়ে ফালা ফালা।গেঞ্জীটা পাশে মেলে দিতে গিয়ে হিমানী বললেন,এবার গেঞ্জীটা পাল্টাও একেবারে ছিড়ে ফালা ফালা। --আর গেঞ্জী জীবনটাই ফালাফালা হয়ে গেল...।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে মনোময়ের। গামছা দিয়ে স্বামীর গা মুছিয়ে দেন হিমানী। --তোমার এত কেন চিন্তা?মনুর উপর তোমার ভরসা নেই? মনোময় হাসলেন।হিমানীদেবী বললেন,হাসছো কেন? --দ্যাখো হিমু মানুষ হওয়া এক সাধনা।চারদিকে ছড়িয়ে আছে নানা মোহ। --মনু কি সাধনা করছে না? --তোমাকে একটা গল্প বলি,একজন তপস্যা করতে গেল বাঘ ভল্লুক তাকে ঘিরে ধরল।সে বিচলিত হল না একভাবে ধ্যান করে চলেছে।তারপর এল অপসরা উর্বশীর দল নেচে গেয়ে তাকে মোহিত করার চেষ্টা করে।কিন্তু সে ধ্যানে অবিচল।অপ্সরারা ঘেমে নিয়ে ফিরে গেল।তখন দেবতা আর স্থির হয়ে বসে থাকতে পারল না নেমে এলেন নীচে এবং তাকে অভীষ্ট বরদান করলেন।মানুষ হতে গেলে এই সব মায়া মোহ ত্যাগ করে সাধনায় অবিচল থাকতে হবে।  কলিং বেল বাজতে এলিনা দরজা খুলে তাতাইকে দেখে অবাক।জিজ্ঞেস করে,কি ব্যাপার এত সকাল-সকাল? --এমনি। --শরীর ঠিক আছে তো? পূর্ণেন্দু হেসে বলল,শরীর ঠিক আছে তবে--। --বেশি চিন্তা কোরোনাতো যা হবার হবে। --জানো লিনা অনেকে বলছিল বিভিন্ন কারণে মাসিক বন্ধ হতে পারে--। --দুনিয়ার লোককে গল্প করে বেড়াচ্ছো?সত্যি তোমাকে নিয়ে পারিনা। --ওদের ছেলে মেয়ে আছে অভিজ্ঞতার একটা দাম আছে না। --অত কথার দরকার কি কাল তো ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছি।চা খাবে তো--? এলিনা কিচেনে চলে গেল।তাতাই তাকিয়ে দেখে লিনার মধ্যে প্রাণবন্ত ভাব।সেজন্য চিন্তা হয় ডাক্তার যদি অন্য কথা বলে বেচারি বড় কষ্ট পাবে। চা নিয়ে ঢুকে চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে লাজুক গলায় বলে এলিনা,এই রোববারের আগের রোববার আমার মনে হয়েছিল অনেকটা বেরিয়েছে।তখনই সন্দেহ হয়েছিল এবার বুঝি হবে। --যদি না হয় দত্তক নিলে কেমন হয়? --অলক্ষুনে কথা বোলনা নাতো।আমি পরের ছেলে মানুষ করতে পারব না।চা খেয়ে গা ধুয়ে নেও। লিনার উচ্ছ্বসিত ভাব দেখে তাতাইয়ের কষ্ট হয় আবার ভাবে এত আত্মবিশ্বাস ও পেল কোথায়।ভগবান যা করে তাকে মেনে নিতে হবে।
Parent