ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - অধ্যায় ৫৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39690-post-3897201.html#pid3897201

🕰️ Posted on October 30, 2021 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 953 words / 4 min read

Parent
।।৫৪।। আজ কলেজ ছুটি শ্রেয়া প্রজ্ঞাদের সঙ্গে দেখা হবার সম্ভাবনা নেই।প্রজ্ঞার সাইকোলজি অনার্স মন্দাকিনীর ইতিহাস তবু ওদের বন্ধুত্ব ঘনিষ্ঠ।প্রিয়াংশু ব্যাকে চাকরি পেয়েছে।সন্ময়ের নজর প্রজ্ঞার দিকে।প্রজ্ঞাকে প্যাণ্ট-শার্ট পরলে দারুণ লাগবে তাতে তোর কি?বলে কিনা তোমার বন্ধু যদি ফিল্মে নামতে চায় বোলো।এতদিন হয়ে গেল নিজে কিছু করতে পারল না ও আবার অন্যকে সিনেমায় নামাবে।আগে টুকটাক টাকা দিয়েছে এবার বলে কিনা পাঁচ লাখ! একটা সিদ্ধান্ত নেবার সময় হয়ে গেছে।স্পষ্ট বলে দিতে হবে। কি দেখে যে ওকে ভালোবেসেছিল ভেবে অবাক লাগছে।প্রজ্ঞার তো কোনো বয়ফ্রেণ্ড নেই তাতে কি হয়েছে।গুণ্ডা মস্তান না কি বলে ঐ ছেলেটা কে?সত্যিই কি প্রজ্ঞার বয়ফ্রেণ্ড নেই?ব্রেক আপ হয়ে গেলে সন্ময় রাস্তাঘাটে ডিস্টার্ব করবে নাতো?একবার ভাবে বিষয়টা বাড়ীতে বলবে কিনা?সন্ময়ের কাছে ওর লেখা চিঠি আছে আবেগের মাথায় কি যে লিখেছে ভেবে লজ্জা পায়। চারুলতা ভিডিও কলে ছেলের সঙ্গে কথা বলছেন।হঠাৎ প্রজ্ঞাকে ডাকলেন।প্রজ্ঞা আসতে বললেন,তোকে কি বলবে শোন। মোবাইল স্ক্রিনে রোহিতদার ছবি।প্রজ্ঞা বলল,কেমন আছো? --তুই তো লেডি হয়ে গেছিস। --চিরকাল কচি খুকি থাকব নাকি? --মম বলছিল তুই আজ বাড়ি যাবি? --হ্যা একটা দরকারে যেতে হবে কালই ফিরে আসব। --কেমন হচ্ছে পড়াশুনা? --ভাল।তুমি নাকি ফরেনার বিয়ে করছো? --কেন তোর পছন্দ নয়? --বিয়ে তুমি করবে আমার পছন্দে কি যায় আসে।একবার দেখাও। --দেখাবো।সময় হলে,এখন রাখছি। স্ক্রিন কালো হয়ে গেল।চারুলতা বলল,দেখলি এবার বিশ্বাস হল? --করুক না তোমার আপত্তি কিসের? --আমি বাপু ফটর-ফটর ইংরেজি বলতে পারবো না। প্রজ্ঞা খিল খিল করে হেসে উঠলো। --হাসিস নাতো।ঐ জন্য জামাইবাবু তোর দাদার বিয়ে দিয়ে পাঠিয়েছে।তুই খেয়ে যাবি তো? --অবশ্যই।কখন পৌছাবো তার ঠিক আছে। মনসিজ ডায়েরী নিয়ে বসেছে। আমি এখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক।আমার বিদ্যে বুদ্ধি কদিন আগে যা ছিল তাই আছে কাল রেজাল্ট হাতে পাবার পর আমি স্নাতক হয়ে গেলাম।শৈবালের জন্য খারাপ লাগে অল্প কিছু নম্বরের জন্য ব্যাক হয়ে গেল।বঙ্কিম বলছিল কলেজ থেকে আসতে চাইছিল না,বঙ্কিম জোর করে নিয়ে এসেছে।অনেক বোঝাবার পর এখন কিছুটা স্বাভাবিক।আমি আর বঙ্কিম ওকে বাড়ী পৌছে দিয়েছি।শুভ সেকেণ্ড ক্লাস পেয়েছে।শিউলিকে মুখ দেখাবার লজ্জায় পড়তে হবে না। ওরা ভাবে বেলির সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে।কোথায় বেলি আর কোথায় আমি।ওদের বুঝিয়ে লাভ নেই একসময় নিজেরাই ভুল বুঝতে পারবে।বেলিটা এমন ব্যবহার করে যেন আমি বাচ্চা ছেলে।ও বলে আমি বাচ্চার মত করি।আসলে ওর সামনে আমি কেমন হয়ে যাই।আমিও শোনাতে ছাড়িনা। অবশ্য মুখে যাই বলি বেলির কাছে আমার অনেক ঋণ।কে কি ভাববে জানিনা বেলি আমার চেয়ে বয়সে ছোট হলেও বেলির মধ্যে আমি মায়ের স্নেহের স্পর্শ অনুভব করি। এই অবধি লিখে গালে হাত দিয়ে মনসিজ কি যেন ভাবে।আবার লিখতে শুরু করে,তাপসকাকু বলেছিলেন,রেজাল্ট বেরোলে খবর দিতে। চাকরিই যখন করব না খবর দিয়ে কি হবে।ফোন নম্বর জানলে ফোনে জানিয়ে দিতাম। হিমানী দেবী তাগাদা দিলেন,স্নান করে নে,ভাত হয়ে গেছে। ডায়েরী বন্ধ করে মনসিজ তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকলো। মণি কুন্তলা ভোরে স্নান সেরে রান্না ঘরে লীলাকে সাহায্য করছে।আজ দমদম গিয়ে মাল পত্তর আনতে হবে।নেপুকে তো দেবে না তাকেও সঙ্গে যেতে হবে।নৃপেন বিছানায় বসে খবর কাগজে চোখ বোলাচ্ছে।অনেক বছর পর কাল মণির সঙ্গে করল। মনির ইচ্ছে সন্তান নেবে।তার আপত্তি নেই দীপার একজন সঙ্গী হবে। মোবাইল বাজতে কানে লাগায়,হ্যা ভাল আছি...একটা সোজা কথা বলি কিছু মনে করবেন না আপনি ডিভোর্স দেন কি না দেন মণি আপনার কাছে কোনোদিন ফিরে যবে না...আগ কি করে হবে...বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কথা নয়...আমি সোজা কথার মানুষ ডিভোর্স হয়ে গেলে আপনাকে চাইতে হবে না আমিই আপনার হাতে টাকা তুলে দেব...বুঝতে পারছি আপনার টাকার দরকার আপনি সই করে দিলেন তারপর জজ সাহেবের সামনে অস্বীকার করলেন...দেখুন আমি আপনাকে চিনি না আপনিও আমাকে চেনেন না এর মধ্যে বিশ্বাসের কথা আসছে কেন...আজ হবে না কাল-পরশু আপনাকে ফোন করে যাবো...আচ্ছা রাখছি।ফোন রেখে নৃপেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল।যাক রাজি হয়েছে,দালাল গোছের লোক রাজি হবে তা জানতো। মণিকুন্তলা ঢুকে খাটে বসে আচল দিয়ে ঘাম মুছে বলল,কার সঙ্গে ফোনে এত গুজগুজ করো? --রমন ফোন করেছিল। --কি বলছিল? --বলছিল ওর টাকার খুব দরকার যদি কিছু টাকা---। --তুমি এক পয়সাও দেবে না আমি বলে দিলাম--। --কথাটা শুনবে তো।না শুনেই-- --হ্যা বলো। --আমি বলে দিয়েছি জজ সাহেবের রায় হবার আগে আমার পক্ষে কিছু দেওয়া সম্ভব নয়।আপনি আমাকে চেনেন না আমিও আপনাকে চিনি না বিশ্বাসের কথা আসছে কেন--/ --বিশ্বাস! ব্যাটা চিটিংবাজ,কত টাকা? --ঐ এক লাখ।   --তোমার কাছে টাকা আছে? --সুজাতার চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়েছে বাচলে আফশোস থাকত না।এক লাখ হয়ে যাবে। --বাচলে আমাকে পেতে না।  আচমকা জড়িয়ে ধরে নৃপেন বলল,জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে। --কি করছো বাড়ী ভর্তি লোক। --দীপা না থাকলে সারাক্ষন লাগিয়ে বসে থাকতাম। --হয়েছে ঐতো নেংটি ইদুরের ছা--। --নেংটী ইদুর তিড়িং তিড়িং লাফায় বেশী। লাফালাফিই সার।মনসিজের বাড়াটা ভেসে উঠল মণিকুন্তলার চোখের সামনে।  কলিং বেলের শব্দ শুনে বিরক্ত হয়ে উঠে বসলেন হিমানীদেবী।দিলীপের বাড়ি যাবে বলে বেরিয়েছিল এত তাড়াতাড়ি ফিরে এল কেন? খাট থেকে নেমে দরজা খুলতে গেলেন।দরজা খুলে অবাক হয়ে বললেন,ওমা তুই-ই?আয় ভিতরে আয়। --মস্তান নেই? --ছিল তো।খেয়েদেয়ে বের হল দিলীপের বাড়ী কি কাজ আছে বলল।তুই ফোন করে ডাক না। --ঠিক আছে অত তাড়া নেই।তুমি কি করছিলে? --কি করব একটু শুয়েছিলাম। --তুমি শুয়ে পড়ো। হিমানীদেবী বিছানায় উঠে বসেন।প্রজ্ঞা এদিক-ওদিক দেখে তারপর বেরিয়ে মনসিজের ঘরে গেল। ঘরটা আগের মত আগোছালো নয়, মস্তানটা বদলাচ্ছে।হঠাৎ ডায়েরীটা নজরে পড়তে পাতা উলটে দেখল লেখা শুরু করেছে।অন্যের ডায়েরি পড়া উচিত নয় ভেবে ডায়েরী বন্ধ করে দিল।হিমানীদেবীর ঘরে এসে দেখল উনি বসে আছেন। --কি হল মামণি তুমি শুয়ে পড়ো। --তুই কি করবি? --আমার কথা ভাবতে হবে না,তোমাকে শুয়ে পড়তে বলেছি। হিমানীদেবী শুয়ে পড়লেন।প্রজ্ঞা একটা চেয়ারে বসে ব্যাগের থেকে কাগজ পত্র বের করে চোখ বোলাতে থাকে।ডায়েরীটা তার মন টানতে থাকে।কি লিখেছে মস্তান কৌতূহল বাড়ে।উঠে আবার মনসিজের ঘরে গেল।ডায়েরী খুলে পড়তে থাকে।এক জায়গায় এসে থেমে যায় চৌধুরীবাবূ মেয়ের বিয়ে দিলে আর দেখা হবে না।মনে মনে হাসে প্রজ্ঞা।মস্তানটা তাকে এত উচুতে বসিয়েছে নিজেই নাগাল পাচ্ছে না। ডায়েরী পড়া শেষ হলে আবার মামণির ঘরে ফিরে এল। হিমানীদেবী বললেন,তুই ফোন কর।বেরোলে ওর হুশ থাকে না। তাকে রেখে মামণি ঘুমোবে না।অগত্যা প্রজ্ঞা বাটন টিপে ফোন করল। ওপাশ থেকে সাড়া এল,আমি এখন বাইরে মামণিকে দিতে পারব না। --দিতে হবে না,তুই বাসায় আয়।মামণি তোকে ডাকছে। --তুই কলেজ যাস নি? --আজ ছুটি।একটা দরকারে বাড়ী যাবো। খাট থেকে নেমে হিমানীদেবী বললেন,তুই বোস আমি চা করি। মণিকুন্তলা লীলাকে ডেকে বলল,তুমি দীপাকে দেখো আমরা একটা কাজে যাচ্ছি।কি তোমার হয়েছে? নৃপেন ঘর থেকে বেরিয়ে বলল,আমি তো রেডি। ওরা বেরিয়ে যেতে লীলা দরজা বন্ধ করে দিল।দীপা ঘুমোচ্ছে,লীলা রিমোট নিয়ে টিভি চালিয়ে দিল।
Parent