ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - অধ্যায় ৫৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39690-post-3916887.html#pid3916887

🕰️ Posted on November 4, 2021 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1092 words / 5 min read

Parent
     ।।৫৮।।  কলেজে বেরোবার জন্য তৈরী হচ্ছে মন্দাকিনী।পরীক্ষা এসে গেল।সনুকে কদিন আগে সপষ্ট বলে দিয়েছে যেন আর যোগাযোগ করার চেষ্টা না করে।প্রজ্ঞা ভাল আছে ওর এসব বালাই নেই।কিভাবে যে জড়িয়ে গেল নিজের উপর নিজের রাগ হয়।আবেগের বশে আবার কিছু চিঠি দিয়েছে।আসলে মুখে অনেক কথা বলা যায় না সেজন্য চিঠি লেখা।তখন কি জানতো স্কাউণ্ড্রেল্টার আসল রূপ। মন্দাকিনী নয়  ওর নজর মন্দাকিনীর বাবার টাকার দিকে।আর যোগাযোগ করে না বুঝেছে এখানে সুবিধে হবে না।ঈশ্বরের অশেষ কৃপা সময় মত তাকে বাচিয়েছে।সাজগোজ করে সিড়ি দিয়ে নামতে যাবে মোবাইল বেজে উঠল।স্ক্রিনে নম্বর দেখে বুঝতে পারে সন্ময়।বাটন টিপে কেটে দিল।নিচে গাড়ি দাঁড়িয়ে কাছে যেতে ড্রাইভার দরজা খুলে দিল।মন্দাকিনী ভিতরে গিয়ে বসল।শ্যাম বাজার হতে শ্রেয়াকে তুলতে হবে।গাড়ী স্টার্ট করতে আবার মোবাইল বাজে। --বলেছি না আমাকে ফোন করবে না। --প্লীজ ফোনটা কেটো না সিরিয়াস কথা আছে--। --আমার কোনো কথা নেই। --কি বলছি শুনবে তো--। --আমি এখন গাড়ীতে--। --আচ্ছা ঠিক আছে ছুটির পর তোমার কলেজে যাচ্ছি--। --তুমি কলেজে যাবে না--হ্যালো --হ্যালো। মনে হচ্ছে ফোন কেটে দিয়েছে।মন্দাকিনী ফোন রেখে ড্রাইভারের দিকে দেখল।এখনো আশা ছাড়েনি।বাড়ীতে ব্যাপারটা জানাবে কিনা ভাবে।চিঠিগুলোর কথা মনে হতে ভাবে নিজেই নিজের সর্বনাশ করেছে।চোখে জল চলে আসে।জানলা দিয়ে উদাস চোখে বাইরে তাকিয়ে থাকে।কলেজে আসবে বলেছে সেকী বাড়ী ফিরে যাবে। শ্যামবাজার আসতে শ্রেয়া হাত তুলে গাড়ি দাড় করায়।গাড়ী থামতে সম্বিত ফেরে মন্দাকিনীর,শ্রেয়াকে উঠতে দেখে সরে জায়গা করে দিল।শ্রেয়া উঠে বসে মন্দাকিনীকে দেখে জিজ্ঞেস করে,তোর শরীর ঠিক আছে তো? ফ্যাকাসে হাসল মন্দাকিনী।  প্রজ্ঞা ফুটপাথ ধরে হাটতে হাটতে কলেজে আসছে।মস্তানটা তারপর আর ফোন করেনি।সেই খোজ নিয়েছে মামণির।গাধা বলেছে বলে রেগে গেছে।প্রজ্ঞা হাসে নিজের মনে।বেলি ওর গার্লফ্রেণ্ড ভাবতে পারে না।বেলির জন্য কিসের এত চিন্তা।কিছু বললে বলতে পারে পারব না,কেন বলে না? গাড়ী থেকে নেমে প্রজ্ঞাকে আসতে দেখে দাঁড়িয়ে পড়ে মন্দাকিনী।শ্রেয়া বলল,কিরে যাবি না?দাড়িয়ে পড়লি? --তুই যা। শ্রেয়া দেখল প্রজ্ঞা আসছে।মন্দাকিনী তাকে দাড়াতে না বলে যেতে বলল।সে থাকুক হয়তো চায় না।শ্রেয়া কিছুটা অভিমান নিয়ে ঢুকে গেল।মন্দাকিনী এগিয়ে গিয়ে প্রজ্ঞাকে সংক্ষেপে সন্ময়ের কথা বলল। --এত কাণ্ড তুই তো আমাকে বলিস নি? --আমি কাউকে বলিনি লজ্জায়।আমি কি উপার্জন করি তুই বল এত টাকা আমি কোথায় পাবো?পেলেও ওকে দেবো কেন? --তুই ওকে পছন্দ করছিস না সেকথা বলেছিস? --সাফ জানিয়ে দিয়েছি,আমার বাড়ীর লোকের আপত্তি আছে। প্রজ্ঞা কয়েক মুহূর্ত ভাবে তারপর বলল,তুই সিওর ওর সঙ্গে ব্রেক আপের ব্যাপারে? --আমি মরে গেলেও ঐ স্কাউণ্ড্রেল্টার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবো না।ওকে সব বলেছি--। --ও কী বলছে? --আজ ফোন করে বলল ছুটির সময় আসবে কি সব  জরুরী কথা আছে। --হু-উম কোন ব্যাপারে কিছু বলেছে? --আমি বলেছি তোমার সঙ্গে আমার কোনো কথা থাকতে পারে না।প্রজ্ঞা আমি ভাবছি আজ বাড়ী চলে যাই--। --দ্যাখ মন্দা সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে সমস্যাকে ফেস করা সমীচীন। --তুই থাকবি তো? --তুই বললে কেন থাকবো না? ওরা কলেজে ঢূকে গেল। মনসিজ ডায়েরী লেখা শেষ দু-হাত তুলে আড়মোড়া ভাঙ্গে।এবার স্নানে যেতে হবে।মা বলছিল বুদ্ধি নেই বেলি বলল গাধা।মনসিজ হাসে দুটোর অর্থই এক।মোবাইল বাজতেই অবাক একটু আগে বেলির কথা ভেবেছে অমনি বেলির ফোন।কানে লাগিয়ে বলল,মাকে দেবো? --না না তোর সঙ্গে দরকার।তুই কি একবার আসতে পারবি? --আমার স্নান খাওয়া কিছুই হয়নি এখন সম্ভব নয়। --আমার খুব বিপদ। --বিপদ! বেলি কি হয়েছে তুমি কোথায়? --শোন তুই ছুটির সময় কলেজের সামনে পার্কে আয় সব বলবো। --বিপদটা কি--হ্যালো হ্যালো--।কেটে দিয়েছে।মনসিজ ভ্রু কুচকে ভাবে তাকে নিয়ে মজা করছে নাতো?এইজন্য মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।আদ্ধ্যেক পেটে আধ্যেক মুখে সব কথা খুলে বলবে না।সত্যিই কোনো বিপদে পড়েনি তো?আমার গার্ল ফ্রেণ্ড মনিসিজ হাসতে থাকে। --কিরে একা একা হাসছিস কেন?হিমানী দেবী ছেলেকে হাসতে দেখে বললেন। --একটা মজার কথা মনে পড়ল তাই।দেওয়ালে ছবিগুলোর দিকে একবার চোখ বুলিয়ে বলল, আমি স্নানে যাচ্ছি। বাথরুমে ঢুকে গায়ে জল ঢালতে ঢালতে ভাবে মা ঠিকই বলে বেলি তার কোনো ক্ষতি করবে না।ঐটূকু মেয়ে এমন শাসন করে যেন আমার ঠাম্মা।ওর নাকে একটা তারের চশমা লাগিয়ে দিতে হয়। ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাসগুলোতে শ্রেয়াদের সঙ্গে দেখা হয়।প্রজ্ঞা ভাবছে মস্তান আসবেই।অবশ্য না আসলেও ছেলেটা কি করতে পারে।হয়তো মন্দাকে বোঝাবে।কি অপরাধ তার কেন তার প্রতি বিরূপ?এই সব প্রেমিকদের জানা আছে।অনেক সময় এ্যাসিড বাল্ব দিয়ে আক্রমণ করে এরকম শোনা গেছে।এক্টু সতর্ক হতে হবে। কলেজ ছুটির পর শ্রেয়াকে বলল,আজ তুই একাই চলে যা।কিছু মনে করিস না প্লীজ। শ্রেয়া বুঝতে পারে কিছু একটা ব্যাপার আছে মন্দা তাকে এড়িয়ে যেতে চাইছে।যখন বলতে চাইছে না আগ বাড়িয়ে কথা বলার কি দরকার।শ্রেয়া বাস স্টপেজের দিকে এগিয়ে যায়। মক্কেলকে দেখেছে বেলি আসবে না মানে।মন্দার থেকে একটু সরে গিয়ে মোবাইলের বাটন টেপে,ওপাশ থেকে শোনা যায় উদবিগ্ন কণ্ঠস্বর,বেলি তোমার কি হয়েছে? --তুই আমাদের থেকে একটু দূরত্ব রাখবি যেন কেউ কাউকে চিনি না। প্রজ্ঞা কাছে আসতে মন্দাকিনী বলল,এসেছে তুই আগে দেখেছিস তো? --ঠিক আছে চল। দুজনে রাস্তা পার হয়ে পার্কে ঢুকল।মন্দার সঙ্গে প্রজ্ঞাকে দেখে বিরক্ত হয় সন্ময়।ওরা তিনজন একটা বেঞ্চে বসল।মন্দা বলল,তুমি তো প্রজ্ঞাকে চেনো। --হ্যা ঐ চেহারা ঐ ফিগার ভোলা যায়।সন্ময় হেসে বলল। প্রজ্ঞার মনে হল গায়ে যেন কেউ উপর থেকে ময়লা ফেলল। সন্ময় বলল,আমি কিন্তু ফ্লার্ট করছি না আপনি মডলিং-এ কাজ করবেন? --আমি এখন পড়াশুনা করছি। মনসিজ বুঝতে পারে না বিপদটা কি,কাছে যেতে মানা করেছে।অবশ্য বেলির উপর তার আস্থা আছে,যথেষ্ট বুদ্ধিমতী মেয়ে।পাশের বেঞ্চটা ফাকা দেখে মনসিজ সেখানে গিয়ে বসল। একটু জোরে কথা বললে এই বেঞ্চ হতে শোনা যাচ্ছে।ছেলেটা কে?বেলির চেনা নাকি ঐ মেয়েটার চেনা? সন্ময় একটু ইতস্তত করে বলল,আমরা একটু প্রাইভেট কথা বলব কিছু মনে না করলে পাশের বেঞ্চে গিয়ে বসবেন? মন্দাকিনী বলল,না যা বলার ওর সামনেই বলতে হবে। সন্ময় কাধ ঝাকিয়ে বলল,ওকে।বুঝতে পারছি তুমি আমাকে আর বিশ্বাস করতে পারছো না। --বিশ্বাস তোমার মুখে মানায় না। --যাক কাজের কথায় আসা যাক।শোনো মন তোমার কাছে টাকা চাইছি না।পাচ লাখ তুমি ধার হিসেবে দেবে।দুটো-তিনটে সিরিয়াল করলেই পাঁচ লাখ উঠে আসবে--। --আমার কাছে চাইছো কেন? --তোমার কাছে চাইছি নাতো।তুমি পাঁচলাখ ধার হিসেবে দেবে প্রডিউসারকে আর যদি চাও তোমার নামও থাকতে পারে--। --আমার নামের দরকার নেই।আর আমি রোজগার করিনা পাঁচলাখ আমি কোথা থেকে দেবো? --একথা পিসি দত্তের মেয়ের মুখে মানায় না। --মানাক না-মানাক তোমাকে একটি পয়সাও দিতে পারবো না। --এটা তোমার শেষ কথা। --হ্যা তাই। --সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল ব্যাকা কি করে করতে হয় জানা আছে।সন্ময় উঠে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত ঢোকায়।প্রজ্ঞা ভাবে এ্যাসিড-ট্যাসিড বের করছে নাতো?সন্ময় পকেট হতে একগোছা কাগজ বের করে বলল,চিনতে পারছো? --তুমি কি ব্লাক মেইল করতে চাও? --এগুলো জেরক্স করে তোমার কলেজে তোমার পাড়ায় বিশেষ করে পিসি দত্তের কাছে পৌছে যাবে। প্রজ্ঞা হাত বাড়িয়ে চিঠিগুলো ধরতে গেলে সন্ময় দ্রুত হাত উপর দিকে তুলে বলল,না না আপনি এর মধ্যে আসবেন না--উঃ মা-গো-ও-ও চিৎকার করে উঠল। পিছন থেকে মনসিজ কবজি ধরে এমন মোচড় দিয়েছে হাত বেকে এল-এর মত হয়ে গেছে।আঙুল শিথিল হয়ে যেয়ে বা-হাতে সেগুলো নিয়ে বেলির হাতে দিয়ে দিল। সন্ময় ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল,আপনি কে?আমাদের ব্যাপারে আপনি কেন এসেছেন? --আপনি কে?নিজের বাপকে চিনতে পারছিস না? মন্দাকিনী বিস্মিত চোখে প্রজ্ঞার দিকে তাকালো।ছেলেটাকে কোথায় দেখেছি-দেখেছি মনে হচ্ছে।             সন্ময় বলল,ভদ্রভাবে কথা বলুন।আমি আপনাকে চিনি না তুই-তোকারি করছেন কেন? --ভদ্রলোকের সঙ্গে ভদ্রতা তোর সঙ্গে ভদ্রতা কিরে?হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,ভাগবি নাকি পরের ডোজ দিতে হবে। সন্ময় কথা বাড়ায় না,তীব্র বিরক্তির দৃষ্টিতে এক নজর মন্দাকিনীকে বলতে যায়,মন এটা কিন্তু ভাল--। --কোনো কথা নয় একেবারে সোজা।মনসিজ হাত সোজা করে বলল। মনসিজের চোখের দিকে তাকিয়ে সন্ময়ের দাড়াতে ভরসা হয়না।শালা এমনভাবে কব্জি চেপে ধরেছিল,যেন হাড়গোড় ভেঙ্গে যাবে।          
Parent