ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - অধ্যায় ৬৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39690-post-3981036.html#pid3981036

🕰️ Posted on November 19, 2021 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 799 words / 4 min read

Parent
    ।।৬৭।। কাল রাতে ফিরে আশিসের মাকে সব বলতে একেবারে কুরুক্ষেত্র কাণ্ড।মেয়েছেলেদের নিয়ে এই হল মুষ্কিল,যুক্তি বুদ্ধির ধার ধারেনা।ঐ মেয়ে বাড়িতে ঢুকলে তুমি থাকো ওকে নিয়ে আমি বাপের বাড়ি চলে যাব।অসহায় বোধ করেন অবনীশবাবু বললেন,এখন তো যাচ্ছো না।খেতেটেতে দেবে নাকি? বিছানায় শুয়ে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে বিনতা জিজ্ঞেস করেন,বরদাউকিল জামীন করাতে পারলনা? --যে মামলা দিয়েছে এতে জামীন হবে না।মিত্তিরদা বলছিল--। --রাখোতো মিত্তিরের কথা।আমাদের পিছনে উঠে পড়ে লেগেছে।কি শত্রুতা করেছি ওনার সঙ্গে? বউয়ের পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে অবনীশ বললেন,বরদা উকিল বলল,যে সব ধারা দিয়েছে এতে সাত বছর জেল হবার সম্ভাবনা। বিনতার বুকের মধ্যে ছ্যৎ করে উঠল।আচলে চোখ মুছে জিজ্ঞেস করলেন,বলাই মিত্তির কি বলছিল? --আমি বলে দিয়েছি আমার পরিবারের মেয়েরা ঐ সব চাকরি করেনা। --কি বলল? --বলল চাকরি ছাড়তে হবে।বললাম চাকরি ছাড়লে  দুজনে বেকার বিয়ে করে খাওয়াবে কি? --একজনের আয় এক গুষ্টির মানুষ। --তখন বলে কিনা আশিসের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। ছেলের জেল হবে শুনে বিনতা আর কথা বাড়ায় না কিছুক্ষন পর বললেন,দেখ যা ভাল হয়।তবে এ বাড়ীতে ঐ সব বেলেল্লাপনা চলবে না তাহলে ঘাড় ধরে বের করে দেব।এই বয়সে এত কুটকুটুনি কেন রে? বউকে জড়িয়ে ধরে অবনীশবাবু স্বস্তির শ্বাস ছাড়লেন। বিজন চৌধুরী কাল দিল্লী যাবেন।প্রজ্ঞা লাগেজ গুছিয়ে দিচ্ছে।বিজনবাবু চেয়ারে বসে একটা আইনের বইতে নিমগ্ন।প্রজ্ঞা কাছে গিয়ে বলল,আচ্ছা বাপি ডাকলেই তোমাকে দিল্লী যেতে হবে? বইয়ের থেকে মুখ সরিয়ে মেয়ের কোমর জড়িয়ে ধরে বললেন,ধ্যাখ মা পেশার খাতিরে সব দিক রেখে চলতে হয়। বাপির মুখে মা-ডাক শুনে প্রজ্ঞার শরীরে শিহরণ খেলে যায়।বাপির গলা জড়িয়ে বলল,রেখে চলতে হবে কেন?তোমার যোগ্যতা নেই? --যোগ্যতা না থাকলে ডাকবে কেন?বিজন বাবু হেসে বললেন। বাপির জন্য গর্ব বোধ করে প্রজ্ঞা।বিজনবাবু বললেন,ওষুধগুলো ঠিকমতো দিয়েছিস মা? --হ্যা-হ্যা সব দিয়েছি।তুমি মনে করে সময় মতো খেতে ভুলো না যেন। বিজনবাবু হেসে বললেন,তুই না থাকলে আমার কি যে হতো। --কথা শুনলে গা-জ্বলে যায়।কেন আর কেউ নেই?আশালতা প্রবেশ করে বললেন,বেলি তুই তোর কাজে যা। প্রজ্ঞা মুচকি হেসে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। রমিতা ফোনে কথা বলছে,প্রজ্ঞা উকি দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।বোউদির জন্য খারাপ লাগে,বিয়ের পর একা একা ভাল লাগে। --কি হল ঠাকুর-ঝি তুমি চলে এলে?কিছু বলবে? রমিতাকে দেখে প্রজ্ঞা বলল,বোসো।তুমি কথা বলছিলে ভাবলাম কোনো জরুরী কথা--। --জরুরী আর কি?রোজই এরকম সময়ে ফোন করে। --দাদা ফোন করেছিল?কবে আসবে? --কনভোকেশন হয়ে গেলেই চলে আসবে।তোমার কথা বলো। --আচ্ছা তোমার একা-একা খারাপ লাগে না? --একী একটা প্রশ্ন হল?যখন তোমার বিয়ে হবে তখন বুঝবে। মনে মনে হাসে প্রজ্ঞা, তোমার তো দাদার সঙ্গে ভাল করে পরিচয়ই হয়নি আর আমার সেই স্কুলে পড়ার সময় থেকে জ্বলছি।কি করছে এখন মাস্তান কে জানে সারাক্ষন ওকে নিয়ে চিন্তা হয়।  --হাসছো কেন? --না তুমি বিয়ের কথা বললে তাই। --কেন বিয়ে কি হাসির ব্যাপার?বাবা বলেছেন এম এ করলেই তোমার বিয়ে দেবেন। পরীক্ষা দিয়েছি কেমন হল পরীক্ষা জানার কোনো আগ্রহ নেই,একবার খোজও নেয়নি।নেবে কি নিজেকে নিয়ে যার চিন্তা নেই অন্যের খোজ নেবার তার অবসর কোথায়।বাপি তার বিয়ের কথা নিয়ে ভাবছে। পুটু মাসী ছাড়া এখনো অবধি কাউকে কিছু বলেনি।মোবাইল বাজতে প্রজ্ঞা কানে লাগায়,হ্যা বল....কাল টাঙ্গাবে....কাল যেতে আমার দেরী হবেরে...শ্রেয়া প্লীজ আমারটা দেখে একটা ফোন করিস...করবি কিন্তু ভুলে যাস না...বাপি দিল্লী যাচ্ছে,বাপির বেরোবার আগে যেতে পারছিনা...ফোন করবি...আচ্ছা রাখছি। --কার ফোন? --আমার কলেজের বন্ধু,কাল রেজাল্ট বেরোচ্ছে। --তুমি যাবে না? --যাব এক সময় আগে পরে যখনই যাই রেজাল্ট তো বদলে যাবে না। --সত্যি বেলি তোমাকে দেখি আর অবাক লাগে,তুমি কিভাবে এত নিষ্পৃহ থাকো জানি না।  বস্তিতে জটলা তার মধ্যে শেফালী বুচির মাও আছে।কমলার ঘরে পুলিশ এইয়েছিল ক্যান সেই নিয়ে কথাবার্তা।শেফালি বলল, খুকির ভাল বিয়ে হয়েছে,সুখি থাকবে মেয়েটা। বুচির মা বলল,পুলিশির হন্যি তো বিয়েটা সম্ফব হল।প্রেত্থম তো রাজী ছেলনা। --কমলাটা একা হইয়ে গেল। বিকেলবেলা যথারীতি বোসবাড়ীর রকে আড্ডা শুরু হল।আলোচনার বিষয় আশিসদার বিয়ে।কিছু জানে যা জানে না সেগুলো অনুমান করে নিয়ে জমে ওঠে আলোচনা। আশিসদাকে যখন হাজত থেকে বের করে মেয়েটা জড়িয়ে ধরে কি কান্না--। --মেয়েটা আশিসদাকে খুব ভালবাসে। --বালের ভালবাসা ঐ কৃষ্ণার জন্যই তো হাজতে ঢুকতে হয়েছিল। --কি করবে?প্রথমে তো রাজী ছিলনা বাধ্য হয়ে কৃষ্ণাকে এই পথে যেতে হয়েছিল। --বলে না পুলিশে ছুলে আঠারো ঘা--পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে রেজিস্ট্রি করিয়েছে। বঙ্কিম বলল,আমি শুনলাম কানুদার জ্যাঠা নাকি--। শুভ খেচিয়ে ওঠে,সব কথায় ওই বুড়োটাকে আনছিস কেন,উনিই তো ডায়েরী করিয়ে গোলমাল পাকিয়েছেন। মনসিজ বলল,যাইহোক মোটামুটি খারাপ হয়নি ব্যাপারটা। --না সানাই না আলোর রোশনাই মাঝখান থেকে আমাদের খ্যাটটা মারা গেল। সবাই হো-হো করে হেসে উঠল। পূর্ণেন্দু বাসায় ফিরেই ছেলেকে আদর করতে যায়।এলিনা বাধা দিয়ে বলল,আগে হাত মুখ ধুয়ে এসো। পূর্ণেন্দু হাত  মুখ ভাল করে ধুয়ে এসে দেখল ছেলের মুখে মাই গুজে দিয়ে এলিনা কি যেন ভাবছে।পূর্ণেন্দু জিজ্ঞেস করে,কি ভাবছো? --না কিছু না।ছেলেগুলো অনেকদিন আসেনা। --ওরা এখন আশিসের বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত। --সত্যি ওদের বিয়ে হয়েছে? --কানুর জ্যাঠা ইনিসিয়েটিভ না নিলে বিয়েটা হতোনা।অবনীশবাবুর ইচ্ছে ছিল না ছেলের জেল হবে শুনে রাজী হয়েছে। --যাক ভালোয় ভালোয় বিয়েটা হয়েছে সেই ভাল।আশিসের চাকরি নাকি গেছে। --কানুর কাছে যা শুনলাম ওর জ্যাঠা নাকি প্রাইভেট ফার্মে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে।পূর্ণেন্দু নীচু হয়ে ছেলের গাল টিপে বলল,একেবারে তোমার মুখ পেয়েছে। লাজুক হেসে এলিনা বলল,এখন বোঝা যায় নাকি?আচ্ছা ঐ ছেলেটা শান্তনীড়ে থাকে যার বাবা মারা গেল--। --মনসিজ? --হ্যা ও এখন কি করে জানো? --ওকে খুব একটা দেখা যায় না।শুনেছি চাকরির চেষ্টা করছে।ভাল রেজাল্ট ব্যাঙ্কে চেষ্টা করতে পারে। --দেখো না যদি কিছু করতে পারো।এ্যাই দাদাবাবুকে চা দে-এ-এ।    
Parent