ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - অধ্যায় ৭২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39690-post-4026452.html#pid4026452

🕰️ Posted on November 27, 2021 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 827 words / 4 min read

Parent
।।৭২।। কাল সারারাত দৌড়াদৌড়ি করে কেটেছে।মাঝরাতে ব্যথা শুরু হতে মণিকে নিয়ে নার্সিং হোমে ভর্তি করতে হল।বেশ কিছু সময় চাপাচাপি করার পর মণিকুন্তলার সন্তান বের হল।সার্জারি করতে হয়নি।একজন নার্স বেরিয়ে খবর দিল মেল বেবি।এখন না একটু পরে যাবেন। নৃপেন চক্রবর্তী দেখল আলো ফোটার সময় হয়ে গেছে।বাড়ী থেকে এক চক্কর ঘুরে আসা যাক।দীপাকে একলা রেখে এসেছে,মালা এসেছে কিনা কে জানে। বস্তিতে ইদুর মরা গন্ধটা তীব্র হতে থাকে।দিন পাচেক আগে শেফালীরা গন্ধটা পেয়েছিল।এখন সারা বস্তি গন্ধের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে খবরটা।সবাই হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করে গন্ধের উৎস কথায়।শেফালী ভাবে,কমলাদি কি গন্ধ পাচ্ছে না?দু-বার কড়া নেড়ে সাড়া পায়না। সন্দেহ ঘনীভুত হয় কমলাদির বাড়ীর থেকেই বেরোচ্ছে গন্ধটা।পাড়ার লোকজন জড়ো হয়ে ডাকাডাকি শুরু করে।কেউ বলল,ভাঙ্গ দরজা।কিন্তু দরজা ভাঙ্গার সাহস হয়না কারো। ঘুম থেকে উঠেই দীপা খোজ করে মা কই? নৃপেনবাবু বলল,মা তোমার জন্য ভাই আনতে গেছে। --আমি বোন চাই ভাই ভাল না। মণিটা দিনের পর দিন বোন-বোন বলে ক্ষেপিয়েছে এখন সামলাও।নৃপেন বলল,ঠিক আছে এখন স্কুলে যাও--। --না আমি স্কুলে যাবনা।বনুকে আনতে যাব। এতো মুষ্কিল হল।মালা চা দিয়ে বলল,বড়বাবু ওরে নিয়ে যান।আমি এদিক দেখতিছি। অগত্যা চা খেয়ে স্নান করে দীপাকে নিয়ে নার্সিং হোমের উদ্দেশে রওনা হল নৃপেন।রিক্সায় বসে নৃপেন ভাইয়ের গুনকীর্তন করতে থাকে।বাড়ীতে একটা মেয়ে আছে এবার একটা ছেলে কত ভাল হবে।দীপার এক গো,না আমার বোনু চাই।আচ্ছা ঝামেলা হল তো।নৃপেন চক্রবর্তী ভেবে পায় না কিভাবে সামলাবে।নরম্যাল ডেলিভারি আজই ছেড়ে দেবে বলেছে।কিন্তু মেয়েটাকে নিয়ে হয়েছে সমস্যা।    ছেলে বেরিয়ে যাবার পর হিমানীদেবী খেতে বসার আয়োজন করতে থাকেন।বেলি বলছিল আর ছোট একটা ধাপ।মেয়েটা ওর জন্য যা করেছে এমন কে করে।মোবাইল বাজতে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে যা ভেবেছি তাই,কানে লাগিয়ে বললেন,বল মা...ভালো আছি...এই মাত্র বের হল...না না কলেজ কামাই করে আসিস নি ভাল করেছিস...তুই আর কি করবি কপালে যা আছে...বাপের মত গোয়ার...হ্যা হ্যা ক্লাসে যা...রাখি? ফোন সুইচ অফ করে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।সব দিকে নজর মেয়েটার কত বড় বাড়ীর মেয়ে। পিছনে বালিশে হেলান দিয়ে বসে আছে মণিকুন্তলা।পাশে কাপড়ে জড়ানো কেবল মুখটা খোলা ছেলে গভীর ঘুমে ডুবে আছে। দীপা ঢুকেই বলল,বোনু কই? একটা ছোট খাটে শায়িত শিশুটিকে দেখে বিপুল বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে।বোনুটা এত পুচকে হবে বুঝি কল্পনায় ছিল না।মণিকুন্তলা হেসে ডাকলেন,আয় মা। দীপার মুখে কথা নেই,মায়ের কাছ ঘেষে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে দেখতে থাকে। নৃপেন বলল,আমি সব মিটিয়ে দিয়ে আসছি।তুমি রেডি হও। --এইটা আমার বোনু? --তোমারই তো। --ওকে ডাকো না। --এখন ঘুমোচ্ছে বাড়ী যাই তারপর তোমার সঙ্গে কথা বলবে। টাকা পয়সা মিটিয়ে নীচে এসে অনেক চেষ্টায় একটা ট্যক্সি পাওয়া গেল।অল্প দূরত্বের জন্য কেউ যেতে চাইছে,এই ট্যাক্সিটা মিটারে নয় ভাড়া ঠিক করে রাজী হল।নার্সিং হোম হতে ট্রলির কথা বলেছিল মণিকুন্তলা রাজী হয়নি।লিফটে নীচে নেমে ট্যাক্সিতে উঠল। সন্ধ্যে হবার মুখে পুলিশ এল।খবর পেয়ে কৃষ্ণাও এসেছে।পাড়ার লোককে সাক্ষী রেখে দরজা ভাঙ্গা হল।কমলার দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল কমল সিকদার।নাকে রুমাল চাপা।কৃষ্ণা একেবারে ঘরে ঢুকে গেল।বিছানার উপর লাশ ফুলে ঢোল হয়ে আছে।কমল সিকদার রুমাল দিয়ে চোখ মুছলেন।খাটের পাশে গিট বাধা একটা কণ্ডোম দেখে দ্রুত হাতের মূঠোয় তুলে নিল কৃষ্ণা।একবার ভাবল পুলিশকে দিলে বীর্য পরীক্ষা করে আসামীকে ধরতে পারে।আবার ভাবল তাহলে মাকে নিয়ে কথা উঠবে।অনুমান করার চেষ্টা করে কে মায়ের সঙ্গে এরকম করেছে তারপর পরিচয় গোপন করার জন্য মাকে খুন করেছে। স্ট্রেচারে করে মৃতদেহ নিয়ে গেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত হবে। --ভেরি স্যরি। কৃষ্ণা চোখ তুলে তাকিয়ে দেখল পাশে দাঁড়িয়ে এস আই কমল সিকদার।কৃষ্ণা ফুপিয়ে কেদে ফেলল।কৃষ্ণাকে জড়িয়ে ধরে কমল সিকদার সান্ত্বনা দিতে থাকে।ভীড়ের মধ্যে থেকে একজন কৌতূহলী এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে,ছ্যার খুন হয়েছে? --কি করে বলব,ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।কমল সিকদার বলল।  কলিং বেলের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়,খাট থেকে নেমে গিয়ে দরজা খুললেন হিমানী দেবী।মনসিজকে দেখে অবাক হয়ে বললেন,এত তাড়াতাড়ি চলে এলি? মনসিজ হেসে বলল,এটা ভাইভা মানে একজন একজন করে ডাকে তারপর জিজ্ঞেস করে ছেড়ে দেয়।আমার হয়ে গেল তাই চলে এলাম। --কেমন হয়েছে? --ভাল।এখন চা করবে? হিমানীদেবী চা করতে গেলেন।মনসিজ অবাক হয়ে ভাবতে থাকে বেলি যেমনটি আভাস দিয়েছিল মোটামুটি সেরকম জিজ্ঞেস করল।কেন এই সার্ভিসে আসতে চাও তোমার জীবনের লক্ষ্য কি একটা বিশেষ পরিস্থিতির কথা বলে জিজ্ঞেস করল তুমি হলে কি করতে এইসব। ঐ টুকু মেয়ে অত জানলো কি করে। ও পরীক্ষা না দিলেও বিষয়টা নিয়ে খুব ঘাটাঘাটি করেছে।কি হবে জানি না তবে বেলির এই ঋণ মনে রাখব চিরকাল মনসিজ ভাবে।অনেকদিন রকে যায়নি চা খেয়ে ভাবছে বেরোবে। হিমানীদেবী চা নিয়ে ঢুকে পাশে বসলেন।মনসিজ চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,জানো মা বেলিটা খুব ভাল। --কত বড় বাড়ীর মেয়ে কোনো অহঙ্কার নেই ভদ্র বিনয়ী--। --থামো তো।মনসিজের বিনয়ী শুনে মাথা গরম হয়ে যায়।তুমি শুরু করলে থামতে চাও না,বিনয়ীর কি দেখলে?একে ধমকাচ্ছে তাকে ধমকাচ্ছে--কে তোর ধমকানির ধার ধারে। মোবাইল বাজতে মনসিজ জিজ্ঞেস করল,কে বেলি?দাও আমাকে দাও।কানে লাগিয়ে বলল,হ্যা এইমাত্র ফিরলাম...মনে হয় ভাল হয়েছে...তোমার কাছে কৃতজ্ঞ...অত বিনয় ভাল না...তাছাড়া কি...নেও মার সঙ্গে কথা বলো।মোবাইল মায়ের দিকে এগিয়ে দিল। আড্ডায় গিয়ে শুনলো আশিসদার শাশুড়ি মারা গেছে। মনসিজ জিজ্ঞেস করল,কি হয়েছিল? --কেউ বলছে আত্মহত্যা আবার কেউ বলছে খুন।দেখা যাক ময়না তদন্তের রিপোর্ট বেরোলে জানা যাবে। মনটা খারাপ হয়ে যায়।মনসিজ ভাবে মেয়েটার ভালয় ভালয় বিয়ে হয়ে গেল তাহলে আত্মহত্যা কেন করতে যাবেন।একা বিধবা তার সঙ্গে কার এত শ্ত্রুতা মনসিজ মনে মনে কথাগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকে। --সকলের মধ্যে নাতি-নাতনির মুখ দেখার একটা আকাঙ্খ্যা থাকে মহিলা তার আগেই মারা গেলেন।নির্মল বলল। --ভেরি স্যাড মৃত্যুর কথা কে বলতে পারে। শুভ বলল,আশিসদা খুব লাকি বাড়ীটা পেয়ে যাবে? --বস্তির মধ্যে বাড়ী--।শঙ্কর বলল। --সে বস্তি আর নেই।মাল্টি স্টোরিড বিল্ডিং হচ্ছে--এখন আর চিনতে পারবি না। মনসিজের এসব আলোচনা ভাল লাগেনা।উঠে দাঁড়িয়ে বলল,আজ আসিরে খুব টায়ার্ড লাগছে।
Parent