ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39690-post-3586188.html#pid3586188

🕰️ Posted on August 11, 2021 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 784 words / 4 min read

Parent
।।৮।।       শনিবার এলিনার ছুটি থাকলেও পূর্ণেন্দু শেখরকে বেরোতে হবে।খাবার টেবিল সাজিয়ে এলিনা বলল, তাতাই খেতে দিয়েছি। পোশাক পরে পূর্ণেন্দু টেবিলে এসে বসল।একজন রান্নার লোকের কথা বললেও এলিনা রাজী হয়নি।রান্না করতে তার ভাল লাগে। --আজও কি তোমার বন্ধুরা আসবে?পূর্ণেন্দু খেতে খেতে জিজ্ঞেস করে। --গত শনিবার এসেছে অত সময় কোথা?তাছাড়া আজ আমার কিছু কাজ আছে। --ভজার সঙ্গে কি নিয়ে গোলমাল কিছু বলেছে? --সেসব শুনিনি।একজন নতুন ছেলে ওদের দলে--। --মনোসিজ?আলাপ হয়েছে ছেলেটি বেশ। --ঐ শুনলাম ভজাকে সায়েস্তা করেছে। --তাই! দেখে কিন্তু ছেলেটাকে শান্ত নিরীহ মত মনে হয়েছিল। দেখে কি সব বোঝা যায়?তোমাকে দেখেও কি বুঝেছিলাম?মনে মনে ভাবে এলিনা।তাতাইকে হাপুস হুপুশ খেতে দেখে বলল,আস্তে খাও। --আস্তে খেলে হবে?তোমার মত আমার জন্য গাড়ী আসবে না। --ভাবছি এবার একটা গাড়ী কিনব। --তাহলে একজন ড্রাইভার রাখতে হবে। --তুমি ড্রাইভিংটা শিখে নেও। --ধুস এই বয়সে--। --কি এমন বয়স?সব কিছুতে আলসেমী। পুর্ণেন্দু খেয়ে উঠে পড়ে।সামনের অগাস্টে এক চল্লিশে পড়বে।এরই মধ্যে কেমন একটা আলসেমী তাকে গ্রাস করেছে।বেসিনে হাত ধুতে ধুতে ভাবে পুর্ণেন্দু। পুর্ণেন্দু বেরিয়ে যাবার পর এলিনা একা।টেবিল পরিস্কার করে ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ালো।রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখল হন হন করে চলেছে তাতাই।কম্পিউটার শিখতে আসবে বলেছিল।কি ভাবে শুরু করবে মনে মনে ভাবে এলিনা।ওদের বলছিল সবার ভিতরে আগুন থাকে সুপ্ত ভাবে।ইন্ধনের অভাবে চাপা পড়ে থাকে।মনে এলে কলেজ করে আসবে।ওকে অনেক খোচানো সত্বেও চুপচাপ ছিল।ছেলেটী খুবই শান্ত লাজুক ধরণের। আমি তোমার প্রেমে পড়েছি বলতে ছেলেটি ঘেমে নেয়ে নুইয়ে পড়ে আরকি।বলে কিনা গুরুজন।মনে মনে হাসে এলিনা।  কলেজ থেকে ফিরে দিলীপের বাসায় গেল মনোসিজ।দোতলা বেশ বড় বাড়ি কলিং বেল বাজাতে বারান্দা হতে একটি মেয়ে উকি দিয়ে বলল,ও আপনি? --দিলীপ আছে? মেয়েটি ভিতরে ঢূকে গেল।কি করবে ভাবছে দেখল দিলীপ দরজা খুলে বেরিয়ে বলল,আয় ভিতরে আয়। একতলায় বিশাল বসার ঘর সোফা দিয়ে সাজানো।দিলীপ বসতে বলে উপরে চলে গেল।মনোসিজ সোফায় বসে চারপাশ দেখতে থাকে।একদিকে দেওয়া বুক সেলফ থাক দিয়ে সাজানো বই।উঠে গিয়ে দেখল বিভিন্ন রচনাবলী।এত বই কে পড়ে?দিলীপ পড়ার পাত্র নয়।কেউ না খেয়ে রয়েছে কারো ঘরে খাবার পচে যাচ্ছে।মনোসিজের মনে হল।দিলীপের কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে বইগুলো পড়বে। দিলীপ এসে বলল,কি দেখছিস?সব মীনাক্ষীর--উপরে যাকে দেখলি। --তোর দিদি? --হ্যা তোকে ভাল ভাবেই চেনে। ওরা দুজনে সোফায় বসল।দিলীপ বলল,শালা কতদিন হয়ে গেল বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক চুকেবুকে গেছে। --আমি সপ্তায় দু-একদিন আসব তোকে কিন্তু পড়তে হবে। --মীনাক্ষী খুব খুশি। --কেন? --আমি আবার পরীক্ষা দেব শুনেছে।তোর খুব প্রশংসা করছিল। --আচ্ছা তোর কোন সাব্জেক্ট খুব সমস্যার মনে হয়? --শালা অঙ্কটাই খুব ঝামেলা পাকায়।বিশেষ করে পাটিগণিত। মনোসিজ অঙ্ক বইটা পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে বলল,দ্যাখ দিলীপ অঙ্কের প্রশ্ন যত কঠিণই আসুক আমি এমন শিখিয়ে দেব তিরিশ নম্বর তোর বাধা। --তাহলে বস কোনো কথা হবে না। কথার মাঝে দু-কাপ চা নিয়ে মিনাক্ষী ঢুকলেন।হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিতে নিতে বলল,এখনই চা আনলেন? --আমাকে আপনি বলছো কেন? --আপনি দিলীপের দিদি। --ওতো আমাকে তুই-তোকারি করে। --একটা কথা বলব? মীনাক্ষী চোখ তুলে তাকায়।মনোসিজ বলল,পড়ার জন্য বই নিতে পারি? --ঠিক আছে কেন নেবে না।বই তো পড়ার জন্যই।সময় মতো ফেরত দিলেই হবে। জানো তো বইগুলো আমার প্রাণ। --আমি খুব যত্ন নিয়ে পড়বো। --ঠিক আছে এবার দিলুটার দিকে যত্ন নেও। --এ্যাই ফোট তো এসেই গার্ডিয়ানগিরি। --দেখলে কি ভাষা। মীনাক্ষী চলে যেতে মনোসিজ আবার শুরু করল,অনুপাত ঐকিক নিয়ম লাভ-ক্ষতি এরকম কিছু অঙ্ক প্রতিবারই আসবে।দ্যাখ ঐকিক নিয়ম। মনোসিজ খাতা কলম নিয়ে বোঝাতে শুরু করে।দিলীপ গভীর মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করে।এত প্রাঞ্জল করে বোঝাতে থাকে দিলীপ অবাক হয়।সহজ ব্যাপারটা সে এতদিন বুঝতে পারেনি ভেবে অবাক লাগে। বেলা পড়ে এলে ওদের পড়াশোনা শেষ হয়।দিলিপ বলল,তুই একটু বোস আমি চেঞ্জ করে আসি। মনোসিজ চুপচাপ বসে থাকে।মীনাক্ষী একটা প্লেটে লুচি তরকারী নিয়ে ঢুকলো।প্লেট এগিয়ে দিয়ে একটু দূরে সোফায় বসে।বিকেলে টিফিন খারাপ হলনা। খাবার সময় কেউ সামনে থাকলে বিশেষ করে কোনো মহিলা থাকলে মনোসিজের অস্বস্তি হয়। ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকতে থাকতে এলিনার চোখ লেগে গেছিল।এক সময় চোখ মেলে দেখল পাঁচটা ছাড়িয়ে চলেছে ঘড়ির কাঁটা।মন আসেনি,কম্পিউটার শেখার শখ মিটে গেছে।ইচ্ছে ছিল চাদনী হতে একটা সেকেণ্ড হ্যাণ্ড ল্যাপটপ কিনে দেবে।শুক্রবার অফিস থেকে ফেরার সময় দেখেছে রকে আড্ডা দিচ্ছে।ওর মোবাইল নেই যে খবর নেবে। রকে জমে উঠেছে আড্ডা।নানা কথার মধ্যে শৈবাল বলল,সেই নীলবাতী গাড়ী রবিবার সকালেও এসেছিল। মনোসিজের খেয়াল হয় সেও দেখেছে। --ভদ্রলোক চারতলায় কিশোরদার ফ্লাটে আসে।শুভ বলল। --শুভ ঠিকই বলেছে।বঙ্কা বলল। --তুই কিকরে জানলি? --প্রান্তিকের একজন বলল। কিশোর কর্মকার সেক্টর ফাইভে চাকরি করতেন।অফিস যেতেন বাইকে চেপে।মনোসিজ শুনেছে ভদ্রলোক তারা আসার কিছুকাল আগে বাইক এ্যাক্সিডেণ্টে মারা গেছে।বয়স বেশি না বছর খানেক হল বিয়ে করেছিলেন।ওর স্ত্রী পূর্ণিমাবৌদিকে মনোসিজ দেখেছে। ভদ্রমহিলা ব্রাহ্মণ বাড়ীর অমতে বিয়ে করেছিলেন বলে বাপের বাড়ীর সঙ্গে সম্পর্ক নেই।বাইরে বের হন কম। --একদিন লোকটাকে কড়কে দিলে হয় কেমন হয়? বঙ্কা বলল। আশিস চুপচাপ শুনছিল বঙ্কা বলতেই বলল,সব জায়গা পিয়াজি চলেনা। আশিসের কথায় অবাক হয় সবাই।আশিস বলতে থাকে একদিন রাস্তায় ঐ ফ্লাটের সেনবাবু বৌদিকে রাস্তায় দেখা হতে বললেন,ভাল আছেন মিসেস কর্মকার?আচ্ছা মোটা মত এক ভদ্রলোক আপনার  ফ্লাটে আসেন উনি কি আপনার রিলেটিভ? --ওর নাম কেডি বড় সরকারী আমলা।আপনার কোনো সমস্যা? --না না এমনি জিজ্ঞেস করলাম।সেন বাবু দাত কেলিয়ে বলল। --আর শুনুন আমাকে মিসেস কর্মকার নয় মিস মুখার্জী বলবেন।   --হতে পারে গাড়ীর নম্বর প্লেটে লেখা দেখেছি Govt. of W.B।ঘাড় নেড়ে শুভ বলল। --হতে পারে কি একটা লোকের চেহারা দেখলেই বোঝা যায়।আশিস বলল।           
Parent