ছায়ার আড়ালে আগুন -Crime Thriller [Part-2: দ্য গ্যাংওয়ার] - অধ্যায় ১২
গল্প: "ছায়ার আড়ালে আগুন" (পার্ট-২: গ্যাংওয়ার)
একাদশ পরিচ্ছেদ: আয়নায় সামনে রুবিনার সাজাওয়াত
পুরনো হাভেলির নির্জন কামরায়, দুপুরের সোনালি আলো পুরনো কাচের জানালা ভেদ করে ঝকঝকে মোজাইকের মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ছিল। আলোর রশ্মি মেঝেতে নরম রুপোলি নকশা আঁকছিল, যেন একটা অদৃশ্য শিল্পী রুবিনার জন্য মঞ্চ তৈরি করছিল। রুবিনা, ৪৩ বছরের, তার দুধের মতো ফর্সা, ছিপছিপে শরীর নিয়ে একটা প্রাচীন, খোদাই করা তেঁতুল কাঠের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। তার ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার দীর্ঘাঙ্গী ফিগার যেন একটা জীবন্ত মূর্তি, তার ত্বক মার্বেলের মতো মসৃণ, আলোতে ঝকঝক করে একটা অপরূপ মায়া ছড়াচ্ছিল। তার টানা চোখে একটা গভীর, অস্থির ঝড়, তার ঠোঁটে একটা নিঃশব্দ পরিকল্পনার ছায়া। ঘরের বাতাসে পুরনো কাঠের মৃদু গন্ধ আর দূরের রাস্তার কোলাহল মিশে একটা গুমোট, রহস্যময় আবহ তৈরি করছিল।
রুবিনা একটা ঢিলেঢালা হালকা পীচ রঙের সালোয়ার কামিজ বেছে নিল। কাপড়ের নরম, সিল্কি ভাঁজ তার সুডৌল কোমরে আলতো লেপ্টে ছিল, তার বক্ষের বাঁকে মৃদু দুলে উঠছিল, যেন তার শরীরের প্রতিটি নড়াচড়ায় একটা নিঃশব্দ কবিতা লেখা হচ্ছিল। তার সালোয়ারের হাওয়া তার পায়ের গোড়ালির কাছে দুলছিল, তার দুধসাদা পায়ের পাতাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছিল। সে একটা কালো বো-রকা তুলে নিল, তার হাতে কাপড়ের মৃদু শব্দ ঘরে ফিসফিস তুলল, যেন একটা গোপন প্রতিশ্রুতি। বো-রকাটি তার শরীরে ঢেউয়ের মতো পড়ল, কিন্তু তার ফর্সা মুখ আর নরম হাতের ঝলক এখনো আয়নায় ঝকঝক করছিল। সে একটা কাজলের কাঠি তুলে নিল, তার নরম আঙুলের ছোঁয়ায় কাঠি কাঁপল। তার টানা চোখে সে কাজলের গাঢ় রেখা টানল, যেন তার দৃষ্টিতে একটা গভীর, প্রলোভনীয় অন্ধকার জেগে উঠল, যা কোনো পুরুষের হৃদয়ে ঝড় তুলতে পারে।
তার দুই হাতে, দুই দিন আগে লাগানো মেহেন্দির জটিল নকশা এখনো টাটকা ছিল। গাঢ় লাল রঙ তার ফর্সা ত্বকে ফুটে উঠছিল, যেন তার হাতে একটা জীবন্ত চিত্রকর্ম আঁকা। প্রতিটি নকশার বাঁক, ফুলের পাপড়ি আর লতার মতো কারুকাজ, তার ত্বকের সঙ্গে মিশে একটা নিঃশব্দ গল্প বলছিল। সে দুই হাতে সোনার চুড়ি পরল, তাদের সূক্ষ্ম ঝংকার ঘরে একটা মিষ্টি সুর ছড়াল, যেন তার প্রতিটি নড়াচড়ায় একটা গান বাজছিল। তার নাকে একটা হিরে-বসানো নাকপিন ঝকঝক করছিল, আলোর প্রতিফলনে তার গালে নরম রুপোলি ঝিলিক নাচছিল, যেন তার মুখে একটা অদৃশ্য নক্ষত্র জ্বলছে। তার কানে সে বড়, গোলাকার রিং-এর মতো দুল পরল, তাদের প্রতিটি দোলায় মৃদু শব্দ তুলে তার রূপে একটা ছন্দ যোগ করছিল। একটা আঙুলে সে একটি সোনার আংটি পরল, তার নরম, ফর্সা হাতের সৌন্দর্য যেন আরও গভীর হয়ে উঠল। সে দুই কব্জিতে একটু করে আতর লাগাল, গোলাপ আর চন্দনের মিষ্টি, মাদক গন্ধ ঘরের বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল, যেন তার উপস্থিতি একটা নিষিদ্ধ ফুলের মতো ফুটে উঠল।
রুবিনা তার পায়ে একজোড়া ফ্ল্যাট-হিল চপ্পল পরল, তার দুধসাদা পায়ের পাতা উন্মুক্ত হল, যেন একটা শিল্পকর্ম আলোর মঞ্চে এল। তার নরম, দীর্ঘ পায়ের আঙুল, মেদহীন ও মসৃণ, আলোতে ঝকঝক করছিল, প্রতিটি আঙুলের বাঁক যেন একটা কোমল কবিতার পঙক্তি। তার পরিষ্কার, ঝকঝকে নখ, নিখুঁতভাবে গড়া, তার পায়ের সৌন্দর্যে একটা অপরূপ ছন্দ যোগ করছিল। তার নগ্ন গোড়ালি, কোমল ও সাদা, মার্বেলের মতো মসৃণ, আলোর প্রতিফলনে একটা জাদুকরী মায়া ছড়াচ্ছিল। প্রতিটি পদক্ষেপে তার পায়ের গঠন যেন একটা গোপন গল্প বলছিল, তার সৌন্দর্য একটা নিঃশব্দ ঝড়, যা আয়নার কাচেও ধরে রাখা যায় না। কোনো নেলপলিশ ছিল না, কোনো লিপস্টিক নয়, তবু তার স্বাভাবিক রূপ যেন একটা প্রকৃতির দান, যা সময়কেও থামিয়ে দিতে পারে। সে আয়নায় নিজেকে দেখল, তার ঠোঁটে একটা লাজুক হাসি ফুটল।
হঠাৎ বাইরে একটা অটোর হর্ণের তীক্ষ্ণ শব্দ ভেসে এল, কলকাতার দুপুরের কোলাহল ভেদ করে। রুবিনা নিজের জন্য ডাকা অটোর শব্দ চিনল, যা তাকে লেক ভিউ ক্যাফেতে নিয়ে যাবে। তার পায়ের নরম আঙুল মেঝেতে সামান্য কাঁপল। অটোর হর্ণ আবার বাজল, তীক্ষ্ণ ও জোরালো। যাই! রুবিনা জানালা দিয়ে হাঁক মারলো। তার পায়ের চপ্পল মেঝেতে মৃদু শব্দ তুলল, তার নাকপিনের হিরে ঝিলিক দিল, তার দুল দুলে উঠল। ঘরের বাতাসে আতরের মিষ্টি গন্ধ আর রুবিনার রূপের অপরূপ ছায়া জমে উঠল। তার জুতোর শব্দ ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে নিচের দিকে অগ্রসর হতে থাকলো।