ছায়া - অধ্যায় ১৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-57374-post-5375983.html#pid5375983

🕰️ Posted on October 10, 2023 by ✍️ Rupuk 8 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 815 words / 4 min read

Parent
পর্ব -১৮ দাম্পত্য  জীবনে  রাগ-অভিমান  হওয়া  টা স্বাভাবিক  বেপার। দুনিয়াতে এমন কোন দম্পতি নেই যারা ঝগড়া বিবাদ করেনি কখনও। অনেকে তো বলেই বসেন যে ঝগড়া ছাড়া কোন দাম্পত্যকে সম্পূর্ণই বলা যাবে না। দাম্পত্য জীবনে দীর্ঘ দিন একসাথে কাটানোর ফলে  সবার মাঝে একঘেয়েমি চলে আসে। শখ আহ্লাদ, আনন্দ করা  কোনো  কিছুই আগের মতো  হয়ে উঠে না, বাকী  জীবন  টা নানা রকম  অসুখ থেকে সুস্থ হওয়ার প্রচেষ্টা করতেই  জীবনের সব রং বিলীন হয়ে যায়। ছায়ার  প্রচন্ড  রাগ  হচ্ছে শমিক বাবুর উপর তিনি শুধু  শুধু  তাকে দোষারোপ করছে। পৃথিবীতে যত মানুষ আছে সবার মন পরিবর্তন হয়। তবে ভালো সময়ে মন ভালো থাকে আবার খারাপ সময়ে মন অল্প কিছুতেই খারাপ হয়ে যায়। মনকে বোঝানোর ক্ষমতা থাকলে পৃথিবীর সব কষ্ট মানিয়ে নেওয়া যায়। চায়ের কাপ টা হাতে নিয়ে ছায়া আর কোনো কথা না বাড়িয়ে কিচেনের দিকে চলে গেলেন। হেব্বি ওয়েদার রে আবির সেই বাতাস বইছে। হ্যা রে ভাই। অভি তুই সঙ্গে করে যখন গিটার টা নিয়ে এসেছিস, একটা গান ধর ভাই নাহলে আড্ডা টা আমাদের জমে উঠছে না। তোরা সবাই যদি শুনতে চাস তাহলে গাইতে পারি। হ্যা আমরা সবাই শুনতে চায় তুই গা। ওকে। তুমি তামাক ধর, তামাক ছাড় আগুন জ্বালিয়ে দাও তুমি তামাক ধর, তামাক ছাড় আগুন জ্বালিয়ে দাও আগুন জ্বালালে, উড়ে যাবে পাখি, মনা আগুন জ্বালালে, উড়ে যাবে পাখি নেশা কেটে গেলে তুমিও কেটে যাবে…. বাহ্ তোর তো দেখছি সেই গানের গলা। হয়েছে আর তোদেরকে পাম দেওয়া লাগবে না। সন্ধ্যা হয়ে আসছে, চল আমরা উঠি এখন, এখান থেকে। হ্যা চল ভাই। মাহীনরা বালুচর থেকে উঠে নদীর পাড়ের দিকে হাঁটা শুরু করলো। মাহীন  সবচেয়ে হাসিখুশি থাকে, যখন সে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়। নদীর পাড়ে একটা টং দোকান আশেপাশে আর কোনো দোকান নেই। চা-বিস্কুট, সিগারেট বিক্রি হয় এই টং দোকানে। চায়ের সেই টং দোকানের সামনে এসে দাড়ালো  মাহীনরা ।  মাহীন, আবির, রনি তোরা সবাই চা খাবি?  হুম  খাবো সবাই। দাদা চারটা চা দিও… শুন অভি সিগারেট কিনা লাগবে না, আবিরের কাছে সিগারেট আছে। তুই শুধু চার কাপ চা নিয়ে আয়। আচ্ছা রনি তুই আমার সঙ্গে থাক। মাহীন আর আবির তোরা দুজন বড় বট গাছ টার নিচে গিয়ে বস। আমি আর রনি চা নিয়ে আসছি। নদীর পাড়ের বড় বট গাছ টার নিচে গিয়ে বসলো মাহীন আর আবির।  নে  ধর তোদের  চা। এক কাপ রং চা হাতে নিয়ে নিবিষ্ট মনে নদীর দিকে তাকিয়ে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য  দেখার সুযোগ  মাহীনের এর আগে কোনো দিন হয়নি। আকাশে মেঘেদের আনাগোনা। তবে বৃষ্টি হবে বলে মনে হয় না। সামনে ছোট-বড় অনেক নৌকা ভাসছে  নদীতে। আবির তার প্যান্টের পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট টা বের করে নিয়ে, প্যাকেট থেকে দুটো সিগারেট হাতে নিয়ে একটা নিজে ধারালো  অন্য টা মাহীনকে দিলো। বাহ্ সেই মনোরম পরিবেশ রে মামারা হালকা মৃদু বাতাস বইছে সামনে নদী। হুম ঠিকই বলেছিস মাহীন। কিরে আবির একা বিড়ি টানবি নাকি রনিকে দে। হুম দিচ্ছি মাত্র তো ধরালাম আরও কয়েক টান দিয়ে নেই। আরও কিছুক্ষণ মাহীনরা  আড্ডা দিয়ে তারপর  সবাই যে যার  বাড়ির দিকে  গেলো। নদীর পাড়ে থেকে বের হয়ে মাহীন একটা রিকশা নিয়ে বাসার দিকে গেলো। কিছুক্ষণের মধ্যে রিকশা টা মাহীনের বাসার সামনে এসে পৌঁছালো। রিকশা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে, বিল্ডিংয়ের ভিতরে ঢুকে পড়লো মাহীন। মাহীন দ্রুত গতিতে সিড়ি বেয়ে তিন তলায় উঠে পড়লো বাসার দরজা সমানে এসে কলিংবেলে সুইচে টিপ দিলো। একটু পর ছায়া দরজা খুলে দিলো। শফিক সাহেবের আচরণের কারণে এমনিতেই ছায়ার মেজাজ খারাপ হয়ে আছে। মাহীন ওর রুমের দিকে পা বাড়ালো। দাঁড়াও মাহীন, সময় অপচয়কারীরা সবচেয়ে বেশি সময় আড্ডায় অপচয় করে এবং শেষে এই সময়ের জন্যই হাপিত্যেশ করপ বেড়ায়৷ জীবনে কী হতে চাও সেটা যদি তোমার কাছে পরিষ্কার না থাকে তাহলে তুমি কোথাও পৌঁছাতে পারবে না। আবার লক্ষ্য নির্ধারণের পর যদি তাতে অনড় বা লক্ষ্যার্জনে তৎপর না থাকো তাহলেও হয়তো সাফল্যের কাছাকাছি গিয়ে তুমি  মুখ থুবড়ে পড়বে। আসলে সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার সত্ত্বেও জীবনে বড় কিছু করার চিন্তা না করা মানে নিজের সক্ষমতাকে হেয় করা। জীবনের লক্ষ্যকে ছোট রাখা একটি পাপ! একটি প্রবাদ আছে- আকাশে তির ছুড়লে কমসে কম গাছের মগডালে বিঁধবে! কিন্তু লক্ষ্য যদি হয় একটা ডালে লাগলেই হলো ধাঁচের, তাহলে তোমার অর্জন হবে বড় জোর ওটুকুই। তাই বড় লক্ষ্য নির্ধারণ কর, লক্ষ্যে অনড় থাকো এবং লক্ষ্যার্জনে ক্রমাগত প্রয়াস চালাও। তুমি  হবে সফল, স্মরণীয়-বরণীয়। আসলে এই কিশোর বয়সে  জোর করে বাজে অভ্যাস থেকে বিরত থাকা  কঠিন। কিন্তু যদি তুমি  মহৎ একটি লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাও তাহলে তুমি নিজেই উদ্বুদ্ধ হবে বাজে অভ্যাস ও অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় নষ্ট করা থেকে। তোমার ক্লাস টিচার  দেবনাথ বাবু আমাকে ফোন করেছিলেন।  কালকে থেকে তুমি তোমার ক্লাসের  সব  স্যারের কাছে ক্লাস শেষ করে কোচিং ক্লাস করবে। টেস্ট পরীক্ষায় পাস করতে চাইলে অবশ্যই এখন থেকে মন দিয়ে একটু পড়াশোনা কর।  যাও ফ্রেশ হয়ে নাও আমি তোমার খাবার দিচ্ছি। মাহীন শুধু ওর মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো কোনো কথা বললো না।  ছায়ার কথা শেষ হতেই মাহীন তার রুমে ঢুকে পড়লো।   কালকে  রাজিবের  নারী শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে   সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে। ছাত্রী হলের নেত্রী শ্রাবণী সেনকে ফোন করলো রাজিব। হ্যালো শ্রাবণী। হ্যা দাদা বলুন। কালের পোগ্রামের জন্য তো অনেক মেয়ে শিক্ষাথী প্রয়োজন। তোমার হল থেকে হাজার খানিক মেয়ে সঙ্গে করে নিয়ে আসা লাগবে। দাদা ব্যবস্থা হয়েছে যাবে আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন। আচ্ছা পোগ্রাম শুরু হওয়ার আগেই যাতে সবাই চলে আসে। ঠিক আছে দাদা।                      
Parent