ছায়া - অধ্যায় ১৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-57374-post-5378751.html#pid5378751

🕰️ Posted on October 13, 2023 by ✍️ Rupuk 8 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 840 words / 4 min read

Parent
পর্ব -১৯ শমিক বাবু অসুস্থ  হওয়ার পর থেকে  রাতে  আর তেমন কিছু খান না হালকা  কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মাহীনও কলেজ থেকে প্রায়  দেরি করে  ফিরে  একবার  খাবার খেলে  রাতের খাবার আর খায় না। ইন্দানিং  রাতের অনেক খাবার শুধু শুধু রান্না করে  নষ্ট হচ্ছে কেউ খাচ্ছে না। কালকে থেকে সুপ্রিয়াকে বলে দিতে হবে রাতের জন্য শুধু শুধু এতো রান্না করার কোনো দরকার নেই।  রাত ভালোই  হয়েছে  কিচেনের লাইট  নিভিয়ে ছায়া তার রুমের দিকে গেলো। সারা দিনের ক্লান্তি শেষে যখন রাতে   ছায়া  বিছানায়  ঘুমাতে  যায়। অহেতুক দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে ঘুমে। ঘুমানোর জন্য প্রয়োজন হয় একটি শান্ত মন। আর সে সময়ে যদি দুশ্চিন্তা হানা দেয়  ছায়ার  মনে রাতের ঘুমে বড় প্রভাব ফেলে অহেতুক দুশ্চিন্তা। নানা রকম দুশ্চিন্তা মধ্যে একটি হলো হঠাৎ করে শমিক বাবুর অসুস্থ হয়ে যাওয়া। এতো বড় একটা অসুখ নিয়ে মানুষটা স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করে বেরান। ছায়া যদি জোর করে সেদিন ডাক্তারের কাছে নিয়ে না যেতো তাহলে তো কিছুই জানতে পারতো না। সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় নিজেকে স্থির রাখতে হলে, রাতে ঘুমাতে হবে   ঠিকমতো। কিন্তু ঘুমটাই ঠিকমতো হয় না ছায়ার।  অনেকেই সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠতে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখেন। কিন্তু এসবের  প্রয়োজন  হয়  না  ছায়ার। ভোরবেলা এমনিতেই ঘুম ভেঙ্গে যায় ছায়ার। ভোরের আকাশের সৌন্দর্যের পাশাপাশি ভোরের মিষ্টি ও সতেজ বাতাস। তার  দিন   শুরু  করার  আগে দেহ-মনকে প্রাণবন্ত করে  তুলে। পরের দিন  বেলা  ১১ টার দিকে  রাজিবের ঘুম ভাঙ্গলো  ফোনের শব্দে। ফোন টা হাতে নিতেই  কল টা কেটে গেলো। ফোনের স্কিনে রাজিব  দেখলো ১১ টা বেজে গেছে।  আজকে রাজিবের অনেক কাজ  সমাবেশের  জন্য  মঞ্চ ঠিকমতো তৈরি  হলো  নাকি  তাকে  যেয়ে দেখা লাগবে।  সকাল  সকাল ঘুম থেকে উঠে যাওয়া  সব থেকে ভালো হতো। কিন্তু বদঅভ্যেস হয়ে গেছে দেরি করে  ঘুম থেকে উঠার। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে। দ্রুত বাথরুমে ঢুকে পড়লো রাজিব।  ভার্সিটির  ছাত্র নেতার  সেক্রেটারি পদ পাওয়ার আগে রাজিব ভার্সিটির হলে থাকতো। সেক্রেটারি  হওয়ার পর থেকে রাজিব আলিশান একটি ফ্ল্যাট  ভাড়া নিয়ে একাই থাকেন। রাজিবের মনে হয়  পৃথিবীতে একা থাকার মত নিশ্চিত ভালো থাকা মনে হয় আর কিছুতেই নেই। নিজের ইচ্ছামতো যা খুশি কর কেউ বলার নেই। বাথরুম থেকে বের হয়ে  সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে হাতে নিয়ে ধারালো রাজিব। সিগারেট টানতে  টানতে ফোন টা হাতে নিয়ে একটা নাম্বারে কল করলো রাজিব।  হ্যালো কিরে সব প্রস্তুতি নেওয়া শেষ তো তোদের? হ্যা দাদা,  এদিকের সব কাজ শেষ প্রায় দাদা  শুধু ব্যানার  লাগানো বাকি  আছে,  এটা হলেই শেষ।  আচ্ছা তাড়াতাড়ি শেষ  কর  আমি  আসছি।  ঠিক আছে দাদা।  রাজিব রেডি  হতে  লাগলো। সকালের নাস্তা তো এখনও করা হয়নি রাজিবের। ভাবলো যাওয়ার পথে কোনো রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খেয়ে নিবে।  বাসা থেকে বের হয়ে  দরজা লক  করে।  রাজিব লিফটের  সুইচ  টিপ দিয়ে  দাঁড়িয়ে  রইলো একটু  পর  লিফটের দরজা  খুলে  গেলো  ভিতরে  ঢুকে  পড়লো সে। শমিক বাবুর আজকে, শরীরটা ভালো  লাগছে  না তাই বাসাতেই আছেন। সোফায় বসে টিভি দেখছিলেন শমিক বাবু,  এমন সময় তার ফোনে কল আসলো। ফোন টা হাতে নিয়ে শমিক বাবু দেখলো, তার বড় দিদি আলিয়া কল করছে। কল টা রিসিভ করলো শমিক বাবু। হ্যালো দিদি।  তোর শরীরের কি অবস্থা এখন আর ছায়ার পাসপোর্ট করতে দিয়েসিস?  আমি ভালো আসি দিদি, ছায়ার পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। মিমি আর জামাইবাবু কেমন আছেন? ওরা ভালো আছে।  দিদি তুমি যদি রাগ না কর তাহলে একটা কথা বলি।  হ্যা বল রাগ করতে যাবো কেনো। দিদি শুধু শুধু এতো দূরে যেতে চিকিৎসা করানোর চেয়ে, দেশে তো অনেক ভালো ভালো ডাক্তার আছে তাদের কাছে চিকিৎসা করালে হয় না।  আচ্ছা শমিক তুই আমাকে বল তো আমি তোর সব সময়  ভালো চায় নাকি খারাপ চায়।  অবশ্যই ভালো চাও, আমেরিকার থেকে ভালো চিকিৎসা আমাদের দেশে নাই, সেটা আমিও জানি তুইও ভালো জানিস।  তাহলে তুই  কেনো আমেরিকা এসে  চিকিৎসা করাতে চাছিস না।  আর টাকা-পয়সা  সয়-সম্পতির কোনো কিছুরই তো অভাব নেই তোর তাহলে সমস্যা কোথায় আমাকে বল। তুই আমাকে বড় দিদি হিসেবে মানিসই না, মানলে ঠিকই আমার কথা শুনতি। দিদি আমি ভাবলাম যে এতো দূরে যেয়ে, চিকিৎসা করানোর চেয়ে দেশে করি তাই বললাম এই আরকি। তুমি রাগ কর না দিদি আমি আমেরিকায় যেয়ে চিকিৎসা করবো। ঠিক আছে পরে আবার তোর মত, পরিবর্তন যাতে না হয় এখন রাখছি। আচ্ছা ঠিক আছে দিদি। রাজিব সমাবেশের জন্য যেখানে মঞ্চ তৈরি হচ্ছে সেখানে চলে এসেছে। রাজিব দেখলো সব প্রস্তুতি নেওয়া শেষ ঘন্টা দেড়েক পর সমাবেশ শুরু হবে,  জুনিয়র কর্মীরা  আসতে শুরু করেছে। শ্রাবণী তার হলের মেয়েদের নিয়ে চলে এসেছে। আমন্ত্রিত  প্রায় সব অতিথিরা  চলে এসেছে।  শুধু বিশেষ আর  প্রধান অতিথির আসা বাকী আছে  তারা চলে আসলে পোগ্রাম শুরু হয়ে যাবে। খানিকক্ষণ পর তাঁরাও চলে আসলো। অবশেষে পোগ্রাম শুরু হলো। রাজিব  মঞ্চ উঠে তার বক্তব্য শুরু করলো।  উপস্থিত আমার সকল  ভাই- বোন  এবং  আমন্ত্রিত  বিশেষ অতিথি, প্রধান অতিথিকে  আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে পোগ্রাম শুরু করছি। আমার বক্তব্য বেশি দীর্ঘ করবো না। আজকের এই সমাবেশ নারীর শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে। নারী শিক্ষার গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না এটা অপরিসীম।  নারী হলো একটি সমাজের উন্নয়নের মূল কারিগর তাদের বঞ্চিত রেখে কখনোই কোনো সমাজের উন্নয়ন করা সম্ভব না। আমি  আমার  বক্তব্য এখানেই  শেষ  করছি। এরপর এককের পর একজন  করে  বক্তব্য দিতে লাগলো।  প্রধান অতিথির বক্তব্য মাধ্যমে সমাবেশের সমাপ্তি ঘটলো। সমাবেশের বাহিরে মাইক্রোবাস নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন  রাজিব। সমাবেশ শেষে হল থেকে আসা কয়েকজন ছাত্রীকে জোর করে ধরে মাইক্রোবাসে  তুলে  অজানা স্থানে নিয়ে যেতে  চায়  রাজিব। ওই   মাইক্রোবাসে   সিনিয়র একজন ছাত্র নেতা  আগে থেকেই বসা ছিলেন। মাইক্রোবাসে ছাত্রীরা ঢুকেই তাকে দেখতে পেয়ে কয়েকজন লাফিয়ে নেমে পড়ে।
Parent