"ধূসর পৃথিবী" - অধ্যায় ১৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-51711-post-5234808.html#pid5234808

🕰️ Posted on May 10, 2023 by ✍️ Monen2000 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 584 words / 3 min read

Parent
               দ্বিতীয় পার্ট                   ৮ম পর্ব                  বর্তমান সময়: এই হলো আমার কাহিনী তারপর আমার চেহারা বদলানো হয়, ভিডিও দেখে আমি নিজেকে আদিত্যর মতো তৈরি করি আর একটা সময় আদিত্য সিংহ রায় হয়ে নর্থবেঙ্গলে যাই। পিয়ালী এতক্ষণ চুপ করে আদিত্যর কথা শুনছিল এবার সে বলে "একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?" "করো" "তুমি ফিরে গেলে না কেন? আইমিন নিজের পরিবারের থেকে দূরে চলে এলে কেন? তোমাকে ফিরে পেয়ে তোমার বাবা-মা নিশ্চয়‌ই খুশি হতেন" "হয়তো হতেন কিন্তু আমি ফিরে গেলে অনেকের ভালো মানুষের মুখোশটা খসে গিয়ে আসল চেহারা বেরিয়ে পরতো আর তাতে সবথেকে কষ্ট যে দুজন মানুষের হতো তারা আমার বাবা মা" "কিন্তু কেন? ওই মেয়েটার চেহারা সবার সামনে আসাই উচিত ছিল, আর তাতে তোমার বাবা-মা কষ্ট পাবেন কেন?" "ওই মেয়েটা নয় ওই মেয়েটা যে ছেলেটার সাথে মিলে ও আমাকে মারতে চেয়েছিল যে খাদের ধারে পিছন দিক থেকে প্রথম আমার মাথায় মারে.. সেই ছেলেটার মুখোশ খুলে যাবে, সেই ছেলেটা আর কেউ নয় আমার দাদা, আমার নিজের দাদা"। "হোয়াট?" পিয়ালী যেন আকাশ থেকে পরলো "এবার তুমি বলো আমি কিভাবে বাবা মার কাছে গিয়ে বলতাম যে ওনাদের আদরের বড়ো ছেলে আমাকে মারতে চেয়েছে, ওনাদের মনের অবস্থা কি হতো ভেবে দেখেছো? যে ছেলেকে ওনারা এত ভালোবাসেন যাকে একদম আদর্শ ছেলে মনে করেন তার সম্পর্কে এইকথাটা জানলে তাদের কতটা কষ্ট হতো আন্দাজ করতে পারো? আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সবাই দাদাকে দেখে বাবার শেখানো শিক্ষা সংস্কারের কথা বলেন, ওনার সম্মান করেন দাদার সত্যিটা বেরিয়ে এলে সেই সম্মানের কি হবে ভেবেছো?" আদিত্য জিজ্ঞেস করে। "তাইবলে তুমি একা একা?" "একা আর কোথায়? কখনো অতীন্দ্রবাবু আর ওনার পরিবার তো কখনো এই আনন্দ নিকেতন কেউ না কেউ ঠিক জুটে যাচ্ছে আর বাদশা তো আছেই" "সেটাই তাহলে তো আমার না থাকলেও চলবে, তাহলে আমাকে আটকালে কেন আর এতকথা বললেই কেন?" "অখিল জ্যেঠু বললেন যে মানুষকে তার অতীত ভুলে এগিয়ে যেতে হয়, আমিও ভুলতে চাই কিন্তু এতদিন পারিনি। এখন আরেকবার চেষ্টা করতে চাই তোমার সঙ্গে আমি জানি আমি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি তারজন্য ক্ষমাও চাইছি আমি চাই তুমি আমার সঙ্গে থাকো আমাকে একটা চান্স দাও" "সত্যিই তুমি এটা চাও?" "চাই কিন্তু আরেকটা বাস্তব হলো আমার কাছে এখন কিছুই নেই, হ্যাঁ শৈলেশবাবু যা ব্যবস্থা করে গিয়েছেন তাতে হয়তো আমার থাকা-খাওয়া আর পরার কোনো অভাব হবে না কখনো কিন্তু তবুও আমার কাছে কিছু নেই কারণ আমার কোনো নাম নেই, কোনো পরিচয় নেই, এবার তুমি বলো আমাকে ক্ষমা করে একটা চান্স দেবে?" "দিতে পারি তবে কয়েকটা শর্ত আছে?" "কি শর্ত?" "প্রথমত মুখের এই জঙ্গল পরিষ্কার করতে হবে" "অ্যাঁ" "হ্যাঁ, আমি চাইনা যে তোমার হ্যাণ্ডসাম চেহারাটা এই জঙ্গলে ঢাকা থাকুক, রাজী?" "রাজী" "দ্বিতীয়ত ওইসব ছাইপাশ খাওয়া ছাড়তে হবে, এক্ষুনি" আদিত্য একটু হেসে পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বার করে পিয়ালীর হাতে দিয়ে বললো, "কথা দিচ্ছি আর কখনো খাবো না" "সত্যি বলছো?" পিয়ালী প্যাকেটটা মুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে জিজ্ঞেস করলো। "বলছি, এমনিতেও আমার নেশা বা অ্যাডিকশন ছিল না জোর করে খেয়ে যেতাম" "তৃতীয়ত.. আমাকে একটু ভালোবাসতে পারবে?" আদিত্য এই প্রথম পিয়ালীকে দুহাতে ধরে নিজের বুকের মাঝে টেনে নিল, পিয়ালী‌ও দুহাতে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরলো, আদিত্য বললো, "একটু তো পারবো না তবে কথা দিচ্ছি চেষ্টা করবো আমার অতীত ভুলে সবটুকু দিয়ে তোমাকে ভালোবাসার" নিজের প্রেমিকের কথা শুনে পিয়ালী তাকে আরও আঁকড়ে ধরে অপরদিকে আদিত্য‌ও নিজের প্রেয়সীকে নিজের বুকের মাঝে আরও টেনে নেয়, দুই সর্বহারা একে অপরকে আঁকড়ে বাঁচতে চাইছে নতুন শুরু করতে চাইছে। আলিঙ্গনরত অবস্থাতেই একসময় পিয়ালী জিজ্ঞেস করে, "আচ্ছা তুমি তোমার আসল নামটা কিন্তু বললে না?" "ওটার দরকার কি? আমি নিজেই ওটা ভুলতে চাই, মানুষ যেমন নিজের পূর্বজন্ম ভুলে যায় আমিও তেমনি আমার অতীত আর অতীতের সঙ্গে যুক্ত সবকিছু ভুলে যেতে চাই, আমার নাম আদিত্য‌ই থাকুক না" "আদিত্য‌ই থাকুক, আমি শুধু জানতে চাইছিলাম তবে তুমি যদি বলতে না চাও দরকার নেই" একটু চুপ থেকে আদিত্য উত্তর দেয় "অনিকেত.. অনিকেত ব্যানার্জী"।
Parent