"ধূসর পৃথিবী" - অধ্যায় ২৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-51711-post-5253573.html#pid5253573

🕰️ Posted on May 28, 2023 by ✍️ Monen2000 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 700 words / 3 min read

Parent
                 দ্বিতীয় পার্ট                  ১২তম পর্ব পিছনে এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন তিনিই আদিত্যর কাঁধে হাত রেখেছিলেন তার পিছনে আরও এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন হাতে একটা বড়ো পূজোর ডালা নিয়ে, বোধহয় দুজনে কোনো মন্দিরে গিয়েছিলেন পূজো দিতে। "কি হলো শ্রী?" অভিরূপবাবু নিজের স্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন, শ্রীতমাদেবী উত্তর না দিয়ে একদৃষ্টিতে আদিত্যকে নিরীক্ষণ করতে থাকেন আদিত্য‌ও কোনো কথা না বলে শ্রীতমাদেবীর দিকে তাকিয়ে থাকে। "দিদি তুই ওকে চিনিস?" স্বর্ণেন্দু বাবু দিদিকে প্রশ্ন করেন, কিন্তু শ্রীতমাদেবী ভাইয়ের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে পিছনে দাঁড়ানো মহিলার হাতের ডালা থেকে একটা সন্দেশ এগিয়ে দেন আদিত্যর দিকে বলেন, "পূজোর প্রসাদ নাও"। ইতিমধ্যে টোবো বলটা খুঁজে এনে আবার আদিত্যর পায়ের কাছে রেখে একবার ডেকে উপরের দিকে আদিত্যর মুখের দিকে তাকিয়ে লেজ নাড়তে থাকে, স্বর্ণেন্দু বাবু এবার কুকুরটাকে একটু ধমক দিলেও কুকুরটা সেটা গ্ৰাহ্য করে না, আদিত্য‌ আবার বলটা তুলে একটা দিকে ছুঁড়ে দেয় আর কুকুরটা আবার সেদিকে ছুট লাগায়। "নাও প্রসাদ" শ্রীতমাদেবী আবার আদিত্যকে প্রসাদ নিতে বলেন, কিন্তু আদিত্য‌ সেটা না নিয়ে বলে, "আমি এইসব ঠাকুরদেবতা বিশ্বাস করি না" "ঠিক আছে, আমি প্রসাদ হিসেবে দিচ্ছি তুমি সন্দেশ ভেবেই খাও" বলে শ্রীতমাদেবী সন্দেশটা আদিত্যর মুখের সামনে ধরেন, আদিত্য‌ এবার আর দ্বিরুক্তি না করে আস্তে করে সন্দেশটা মুখে নেয়, শ্রীতমাদেবী এবার আরেকটা সন্দেশ নিয়ে পিয়ালীর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে তার দিকে বাড়িয়ে ধরেন কিন্তু পিয়ালী হাত বাড়াতে তিনি পিয়ালীর হাতে না দিয়ে তার‌ও মুখের সামনে ধরেন পিয়ালী একবার আদিত্যর দিকে তাকিয়ে সন্দেশটা খেল, এবার হটাৎ আদিত্য কিছু না বলে শ্রীতমাদেবী ও তার পিছনে দাঁড়ানো মহিলাকেও প্রণাম করে যথারীতি পিয়ালীও তাই করে, এরপর আর কাউকে কোনো কথা বলার চান্স না দিয়ে পিছনে হাঁটা লাগায় তারপর বাইক যেখানে রাখা ছিল সেখানে এসে বাইকে উঠে গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় আর একবারও পিছন ফিরে তাকায় না। আদিত্য যখন বাইক নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে তখন যদি একবারও পিছন ফিরে তাকাতো তাহলে দেখতো টোবো আবার বলটা খুঁজে মুখে করে নিয়ে এসে তাকে খুঁজছে এবং তাকে বেরিয়ে যেতে দেখে তার পিছনে ধাওয়া করেছে এদিকে অভিরূপবাবু,স্বর্ণেন্দু বাবু শ্রীতমাদেবী এতটাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলেন যে টোবোকে বাধা দিতেও পারলেন না। ব্যানার্জী ভিলা ছেড়ে কিছুদূর যেতেই বাইকে আদিত্যর পিছনে বসা পিয়ালী বললো, "এই কুকুরটা তো পিছনে আসছে"। "হোয়াট" বলে রাস্তার একসাইডে বাইক থামিয়ে পিছনে তাকাতেই কুকুরটাকে দেখতে পেলো আদিত্য, পিয়ালী বাইক থেকে নেমে দাঁড়ালে আদিত্য‌ও নামে আর কুকুরটা ওর সামনে এসে আবার ডাকতে থাকে কিন্তু এবারে লেজ নাড়ছে না উল্টে তার দুচোখ বেয়ে জল ঝরছে। আদিত্য এবার আবার কুকুরটার সামনে হাঁটু মুড়ে বসে ওর মাথায় হাত বোলাতে থাকে তারপর কুকুরটাকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে, "তুই আমাকে চিনতে পেরেছিস টোবো?" উত্তরে কুকুরটা একবার ডেকে বোধহয় "হ্যা" বলে, আদিত্য এবার জড়িয়ে ধরে তাকে এবং পিয়ালী অবাক হয়ে লক্ষ্য করে এবার শুধু কুকুরটার চোখেই নয় আদিত্যর চোখেও জল। কুকুরটা আবার আদিত্যর পায়ের কাছে প্যান্ট কামড়ে ধরে টানতে থাকে আদিত্য আবার ওকে কাছে টেনে নেয় এবং ডানহাতের উল্টো পিঠে জলটা মুছে আদিত্য বলে, "আমি জানতাম আর কেউ আমাকে চিনতে পারুক বা না পারুক তুই আমাকে চিনতে পারবি, কিন্তু আমি আর ওই বাড়িতে ফিরতে পারবো না ওখানে আর আমার জায়গা নেই" কুকুরটা আদিত্যর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে তার দুচোখ দিয়ে তখনও জল ঝরছে, আদিত্য সেই জল মুছে দিয়ে বলে, "তোকে যা বলেছিলাম মনে আছে তো? বাবা-মায়ের খেয়াল রাখতে হবে তোকে, মনে আছে তো?" কুকুরটা আদিত্যর বুকের সাথে মিশে যেতে চায় আদিত্য‌ ওকে আদর করতে করতে বলে "আমি ওই পরিবারে ফিরতে পারবো না কিন্তু এবার তুই ফিরে যা, বাবা-মায়ের খেয়াল রাখবি আর নিজের‌ও, মনে থাকবে? যা" কুকরটা তবুও যেতে চায় না তারপর আদিত্য‌ আরও কয়েকবার যেতে বলায় কিছুটা ফিরে গিয়ে একবার পিছনে ফিরে আদিত্যকে দেখে তার দুচোখ দিয়ে আবার জল ঝরছে, তারপর পিছনে দৌড় লাগায়। আদিত্য উঠে দাঁড়িয়ে নিজের চোখের জল মুছে পিয়ালীর দিকে তাকাতেই দেখে পিয়ালী একদৃষ্টিতে তাকে দেখছে, পিয়ালীর মনে যে কিছু প্রশ্ন ঘুরছে সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না, তাই হয়তো বলতে শুরু করে, "ওকে আমিই বাড়িতে এনেছিলাম একদম বাচ্চা অবস্থায় তখন ঝর মুমূর্ষু অবস্থা তারপর নিজে হাতে খাইয়ে, শ্রুশ্রূষা করে বাঁচিয়ে তুলি তারপর থেকে আমার সাথেই থাকতো, ঠিক যেমন এখন বাদশা থাকে,কুকুর মানুষের চেহারা দেখে না মানুষের গায়ের গন্ধে মানুষ চেনে আর সেই গন্ধ কোনো কিছুতেই ঢাকা যায় না কোনো মেকাপে না এমনকি প্লাস্টিক সার্জারি করে চেহারা পাল্টালেও না তাই কেউ আমার চেহারার জন্য আমাকে না চিনলেও ও চিনেছে" "তারমানে তুমি এই ব্যানার্জী পরিবারের ছেলে.. তার মানে.." পিয়ালীর কথা শেষ হয়না আদিত্য তার কথাটা শেষ করে, "আমি শ্রী অভিরূপ ব্যানার্জী আর শ্রীমতী শ্রীতমা ব্যানার্জীর ছোটো ছেলে অনিকেত ব্যানার্জী, যে এখন মৃত যার বর্তমান পরিচয় আদিত্য ব্যানার্জী"।
Parent