"ধূসর পৃথিবী" - অধ্যায় ৩৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-51711-post-5305762.html#pid5305762

🕰️ Posted on July 24, 2023 by ✍️ Monen2000 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 879 words / 4 min read

Parent
                  দ্বিতীয় খণ্ড                   ২৬তম পর্ব বারবার ডাকা সত্বেও আদিত্য পূজোর জায়গায় গেল না শেষপর্যন্ত শ্রীতমাদেবী নিজে ওদের দুজনের জন্য প্রসাদ আর খাবার নিয়ে এলেন যদিও ততক্ষণে রিসর্ট থেকেও খাবার চলে এসেছে। "তুমি গেলে না কেন? এতবার ডাকা হলো তবুও না কেন?" খাবার দিতে এসে শ্রীতমাদেবীর প্রথম প্রশ্নটাই এটা উত্তরে আদিত্য শান্ত স্বরে জবাব দেয়,  "ওখানে অনেক লোকের ভিড় আর আমার ভিড় বেশী পছন্দ হয় না" "কিন্তু আমরা আশা করেছিলাম তোমরা যাবে" "ওখানে যাইনি তো কি হয়েছে কাছেই তো ছিলাম" "তবুও, তুমি আমাদের আপন জন সেটা ভেবেই ডেকেছিলাম" শ্রীতমাদেবীর মুখে 'আপন জন' শুনে আদিত্য মুহুর্তের জন্য চমকে উঠলো কিন্তু পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নিল তারপর যথাসম্ভব নিজেকে শান্ত রেখে বললো, "আমাকে আপন জন ভেবেছেন এটাই আমার জন্য অনেক তবে ওখানে আপনাদের আসল আপন জনেরা ছিল সেখানে আমি গেলে হয়তো তাদের খারাপ লাগতে পারতো" "কক্ষণো না, তুমি ওদের ভুল বুঝছো" "হয়তো, তবুও আমার ওখানে যাওয়াটা আমার ঠিক মনে হয় নি তাই যাইনি, এতে আপনি প্লিজ মন খারাপ করবেন না, আপনারা তো এখানেই থাকবেন বলে বাড়ি বানাচ্ছেন এরপর তো পাশাপাশিই থাকবো" শ্রীতমাদেবী আর কোনো কথা বললেন না তিনি বুঝতে পারলেন তার ছেলের মনে নিজের পরিবারের প্রতি এখনো অভিমান জমে আছে, তিনি শুধুমাত্র "খাবার এনেছি এটা অন্তত খেয়ে নিও" বলে চলে গেলেন। সময় নিজের মতো বয়ে যেতে থাকে ভিত পূজোর পরে অভিরূপবাবু দ্রুত বাড়ি বানানোর কাজে হাত দিলেন অবশ্য এখনো নিউ আলিপুরের বাড়িতেই থাকেন মাঝে মাঝে এখানে এসে দেখে যান বাকি সময়টা মোড়লমশাই দেখাশোনা করেন, ওনার সাথেও প্রায় বন্ধুত্ব হয়ে গেছে, আদিত্য জানে তার বাবার অনেক গুণের মধ্যে এটা একটা তিনি খুব সহজেই লোকের সঙ্গে মিশে যেতে পারেন তাদের কাছে টেনে নিতে পারেন। "ড্যাডি তুমি কি করতে চাইছো বলোতো? সব পুরনো কেসের ফাইলগুলো ঘাঁটছো কেন?" সুপ্রতিমবাবুর মেয়ে তানিয়ার প্রশ্ন তার বাবাকে, আদিত্যর সঙ্গে দেখা করে আসার পর থেকেই তিনি এই কাজটা শুরু করেছেন নিজের দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে বিগত কয়েকবছরে কলকাতার বুকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সলভ বা আনসলভ্‌ড কেসের ফাইলগুলো আবার খুঁটিয়ে দেখছেন কি খুঁজছেন সেটা তিনি নিজেও ঠিক জানেন না তবুও দেখে চলেছেন তানিয়া এটা অনেকদিন ধরেই খেয়াল করেছে তাই আর থাকতে না পেরে প্রশ্ন করলো বাবাকে। "ক্লু খুঁজছি বুঝলি?" একটা ফাইল রেখে আরেকটা হাতে নিয়ে উত্তর দেন সুপ্রতিম বাবু। "কিসের ক্লু?" "দুই ক্রিমিনালকে ধরার" "আর এই দুজন ক্রিমিনাল কারা?" "যারা এই শহরে ডাকাতির আড়ালে অভিরূপ বাবুকে খুন করতে চেয়েছিল" "তুমি ভালো করেই জানো তুমি যাদের পিছনে পরেছো তারা গভীর জলের মাছ অত সহজে ধরা দেবে না তার সাথে ওদের গায়ে ব্যানার্জী পরিবারের স্ট্যাম্প লেগে আছে" "সেইজন্যই তো অন্য রাস্তা নিয়েছি" "এই পুরনো ফাইলগুলোতে তুমি কি খুঁজে পাবে? আর আদৌ পাবে কিনা শিওর হচ্ছো কিভাবে?" "যেখানেই দেখো ছাই উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন কথাটা জানিস তো?" "ড্যাডি এসব ছাড়ো? তুমি যদি ওদের ধরেও ফেলো তাহলেও ওরা ছাড়া পেয়ে যাবে অভিরূপ ব্যানার্জী ওদের ছাড়িয়ে নেবেন" "তোকে এইজন্য পুলিশ অফিসার বানিয়ে ছিলাম? যাতে তুই নিজের কাজ না করে আগেই হার মেনে নিস?" "আমি শুধু তোমাকে সত্যিটা মনে করিয়ে দিচ্ছি, অনিকেত দার সঙ্গে ওনারা কি করেছিলেন ভুলে গেছো?" মেয়ের মুখে অনিকেতের নামটা শুনে মনের মধ্যে থাকা খচখচানিটা আবার চাগাড় দিয়ে ওঠে সুপ্রতিমবাবুর, তানিয়াও তার বাবার মুখের এই ভাব পরিবর্তন লক্ষ্য করে সে সন্দিগ্ধ স্বরে জিজ্ঞেস করে, "আবার কি ভাবছো বলোতো? আর কোথায় গিয়েছিলে সেটা কিন্তু এখনো বলোনি তুমি ওখান থেকে আসার পরেই তোমার মধ্যে এই চেঞ্জটা দেখতে পাচ্ছি" "তোকে বলবো ভাবছিলাম কিন্তু." "কিন্তু যদি তুই বিশ্বাস না করিস তাই বলিনি" "কি বলোতো শুনি?" "তোর মনে আছে যেদিন অভিরূপ ব্যানার্জীর উপরে অ্যাটাক হয় সেদিন একটা ছেলে ওনাকে বাঁচিয়েছিল" "হ্যাঁ, তুমি বলেছিলে। সে ছেলে তোমাকে একটা চিঠি লিখে চলে যায় সামনে আসেনি" "হ্যাঁ, তবে আরও একটা কাজ করেছিল সেটা বোধহয় তুই জানিস না" "কি কাজ?" "ব্যানার্জী ভিলায় ঢুকে সবার সামনে সুশান্ত আর মনোজকে উত্তমাধ্যম দিয়েছিল" "কবে? এটা তো জানতাম না" "কারণ কেউ পুলিশ কেস করেনি" "বলছো কি? এত সহজে হজম করে নিল?" "বাধ্য হয়ে কারণ কেস করলে ওনারাও ফেঁসে যেত" "যাইহোক তো এই ছেলেটা কে? আর তার সাথে তোমার কি সম্পর্ক?" "অভিরূপ বাবুরা মনে করেন ওই ছেলেটাই অনিকেত" "হোয়াট?"তানিয়া আকাশ থেকে পরে "কিন্তু মনে হয় মানেটা কি? ওনারা চিনতে পারছেন না?" "ছেলের চেহারা আলাদা" "তাহলে হয়তো ওনারা ভুল করছেন বা অন্য কোনো প্ল্যান করছেন" "তুই এখনো ওনাদের উপরে রেগে আছিস?" "ওনারা অনিকেতদার সঙ্গে যেটা করেছে সেটা আমি কোনোদিন‌ও ভুলবো না" "তুই অনিকেতের খুব ক্লোজ ছিলি আমি জানি কিন্তু ওনাদের দিকটাও ভেবে দেখ, নিজের ছেলের উপরে সন্দেহ করবে কিভাবে যেখানে সবার চোখে সে সোনার টুকরো ছেলে" "সে তুমি যাই বলো, অনিকেত দা শুধু আমার দাদা নয় আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল আমার সব প্রবলেম বুঝতো যখনই হেল্প চাইতাম কখনো না করেনি একবাক্যে রাজী থাকতো আর সেই অনিকেত দার খুনিদের ওনারা গার্ড করে বাঁচিয়ে দিলেন" "কিন্তু এখন অভিরূপবাবু অনেকটাই পাল্টে গেছেন বিশেষ করে এই আদিত্যর সাথে দেখা হবার পরে ওনাদের ধারণা ওই অনিকেত কোনো কারণে ওর চেহারা পাল্টে গেছে" "তুমি ওর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে?" "হ্যাঁ" "কি মনে হয় ওনাদের অনুমান ঠিক?" "ঠিক বুঝতে পারছি না কিন্তু কিছু একটা রয়েছে যেটা আমার দেখা উচিত অথচ দেখতে পারছি না বুঝতে পারা উচিত অথচ বুঝতে পারছি না আর সেটাই কাঁটার মতো খচখচ করছে" "ও যদি অনিকেত দা হয় তাহলে সামনে আসছে না কেন নিজের পরিচয় দিচ্ছে না কেন?" "সেটাই তো বুঝতে পারছি না তবে ওই বলেছে পুরনো কেসগুলো আবার স্টাডি করতে কিছু না কিছু পাবোই" "ঠিক আছে তুমি করো আর কিছু হেল্প লাগলে বলো" "ওকে মাই ডটার" "ড্যাডি আমাকে একবার এই আদিত্যর কাছে নিয়ে যাবে?" "যাবো তবে আগে নিঃসন্দেহ হ‌ই যে ওই অনিকেত তারপর" "আর সেটা বুঝবে কিভাবে?" "সেটাই তো ভাবছি বারবার মনে হচ্ছে ও বলেছে আমাকে কিন্তু আমি ধরতে পারছি না"।
Parent