এক মুঠো খোলা আকাশ - নতুন রূপে - অধ্যায় ৮
পর্ব ৭
শাশুড়ির ফোনে বিকেলের ঘুম ভাঙলো নন্দিনীর।
"হ্যালো বউমা, কোথায় ছিলে? এতক্ষণ লাগে ফোনটা ধরতে?"
"আসলে মা, চোখটা একটু লেগে এসছিল। তাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম"
"হে ভগবান! আমার বাড়ির বউ কোন এক প্রত্যন্ত গ্রামে একা সারারাত কাটাবে! লোকে কি বলবে? কি দরকার এরকম ডিউটি করার?"
"মা, আমি একা কোথায়, সুস্মিতাও তো থাকবে আমার সাথে!"
"সুস্মিতা কই? ওর সাথে কথা বলাও।...."
নন্দিনীর মনে পড়লো সে তো সুস্মিতাকে অঙ্কিতের সাথে যাওয়ার পারমিশন দিয়েছিল। বলেছিল সন্ধ্যের আগে ফিরে আসবে। বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখলো বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামতে শুরু করেছে। সূর্য তখন অস্তাচলে। সুস্মিতা কি এসছে?
"কি হল বউমা? কোথায় সুস্মিতা? তোমাদের যে বলেছিলাম অচেনা জায়গায় দুজনে একসাথে থাকতে!"
নন্দিনী ভাবলো একদিনের জন্য সংসারের যাঁতাকল থেকে বেরিয়ে এসেও তার শান্তি নেই। এখানেও শাশুড়ি মা ফোনের ওপার থেকে হুকুম চালিয়ে যাচ্ছে।
"ও এখানেই আসে পাশে কোথাও রয়েছে। দাঁড়ান মা, খুঁজে দেখছি"
সুস্মিতার তো চলে আসার কথা। তাই নন্দিনী নিজের বিশ্রামের ঘর থেকে বেড়োলো। ফোনের ওপার থেকে শাশুড়ি মায়ের আদেশ মেনে সে সুস্মিতাকে হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগলো। শাশুড়ি ফোন তখনও কাটেনি। জেদ ধরেছিলো আগে বউমার স্কু'লের কলিগের সাথে কথা বলে মনকে আস্বস্ত করবেন তারপর ক্ষান্ত হবেন।
সন্ধ্যে নেমেছিল। শহরের মতো রাস্তায় লাইট নেই, অনেক দূরত্বে এক একটা বাড়ি। জনঘনত্ব নেহাতই কম। চারদিক থম মেরে আছে। সাধেই নন্দিনীর শাশুড়ি এতটা বিচলিত হচ্ছিলোনা! সে জানে এরকম গোধূলিলগ্নে অঁজ পাড়াগাঁয়ে কিরকম নির্জনতা বিরাজ করে। গা ছিমছিম করার মতো পরিস্থিতি হয়। আর এরকম একটা সময়ে এরকম একটা স্থানে তার বাড়ির বউ ডিউটিতে আছে! ভালোমন্দ কিছু হয়ে গেলে জানার বা তৎক্ষণাৎ যাওয়ার উপায়ও থাকবেনা।
নন্দিনী সুস্মিতাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলো না। সে কি তবে আসেনি? অথচ এইসময়েই তার ওকে খুব বেশি দরকার নিজের শাশুড়িকে আস্বস্ত করতে। বীরেনকে সামনে পেয়ে অগত্যা তাকেই সুস্মিতার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে বসলো। বীরেন বললো সুস্মিতা এখনো ফেরেনি।
"কি! সুস্মিতা এখনো ফেরেনি?"
"নাহঃ! আপনিই তো ওনাকে কার সাথে একটা যেতে দিলেন।"
বীরেনের কথায় নন্দিনী কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল। বীরেন খেয়াল করেছিল যেই ছেলেটার বাইকে চড়ে সুস্মিতা ম্যাডাম বেরিয়ে গেছিল সে আর যাই হোক তার স্বামী নয়। কারণ ছেলেটার বয়স মেরে কেটে পঁচিশ-ছাব্বিশ হবে, আর সুস্মিতা ত্রিশোর্ধ্ব। নিশ্চই কোনো ঘাপলা কেস আছে! তবুও বীরেন মুখে রা কাটেনি, কারণ তার টার্গেট নন্দিনী, সুস্মিতা নয়।
ফোনের ওপার থেকে শাশুড়ি মা সব শুনলেন। তিনি তো রেগে একেবারে আগুন! বউমার একমাত্র মহিলা সঙ্গিনী এখন তার সাথে নেই? তার মানে বউমা এখন একা! বউমাকে এখন দেখে রাখবে কে?
ফোনের ওপার থেকে শাশুড়ি মায়ের বকাবকি শুরু হল। নন্দিনী যতই তার শাশুড়িকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল সুস্মিতা চলে আসবে, আর আসলেই তেনার সাথে কথা বলিয়ে দেবে, ততই অনিকেতের মা আরো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠছিল। আদেশ করছিল সত্বর যেন সে সব কাজ ফেলে কলকাতায় ফিরে আসে। নন্দিনী জানতো তা কিছুতেই সম্ভব নয়। শাশুড়ি যতই তাকে বিষোদ্গার করুক, সে সরকারী উর্ধ্বতন কর্তাদের কাছে বিরাগভাজন হতে পারবে না। কর্তৃপক্ষ অনেক বিশ্বাস ও আস্থা রেখে নন্দিনীকে প্রিসাইডিং অফিসার বানিয়েছে। নন্দিনী তো আর জানতো না এসব আসলে বীরেনের কৃপায় হয়েছে। তার নিজ স্বার্থ আছে নন্দিনীকে কাছে পাওয়ার সেই কারণেই এত আয়োজন।
বীরেনের কানেকশন অনেক দূর অবধি রয়েছে। উপরমহলের অনেকের সাথে তার rapport আছে। ট্রেনিং এর সময় থেকেই তার নজর পড়েছে নন্দিনীর উপর। ইলেকশনের ট্রেনিং-এ নন্দিনীকে দেখা ইস্তক ফিদা হয়েগেছে বীরেন। উপরমহলে অনেক সেটিং লাগিয়ে সে-ই কায়েদা করে নন্দিনীকে তার স্কু'লে প্রিসাইডিং অফিসার করিয়ে নিয়ে আনতে পেরেছে। অনেক বড়ো মাপের খিলাড়ি এই বীরেন বাহাদুর মন্ডল! নাহলে এত কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষিকাকে কেউ প্রিসাইডিং অফিসারের মতো গুরু দায়িত্ব দেয়! নন্দিনীর প্রিসাইডিং অফিসার পদে এই নিয়োগ সুস্মিতাকেও অবাক করে দিয়েছিলো, সাথে জেলাসও!
কিন্তু এখন অবস্থা বেগতিক দেখে বীরেন ভাবলো তাকেই সব সামাল দিতে হবে। সে দেখছে নন্দিনী ফোনে কাউকে মা বলে সম্বোধন করে কথা বলছে। বারবার বোঝানোর চেস্টা করছে তার পক্ষে এখন এই গ্রাম ছেড়ে কলকাতা ফেরা সম্ভব নয়। ফোনে বারবার মা সম্বোধনে বীরেন ভেবেছিল নন্দিনী তার মায়ের সাথেই কথা বলছে। কিন্তু মা হোক শাশুড়ি, বীরেনের শুধু ভয় ছিল, পাছে নন্দিনী চাপের কাছে নতি স্বীকার করে গ্রাম ছেড়ে যেতে মন না বানিয়ে ফেলে। তাহলে এত কাঠখড় পুড়িয়ে করা প্ল্যানিং সব মাঠে মারা যাবে! তাই সে নিজে উদ্যোগ নিল, ফোনের ওপারে থাকা মহিলাকে গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ে নিশ্চিন্ত করতে।
বীরেন আর কিছু না ভেবে চট করে নন্দিনীর কান থেকে ফোনটা নিয়ে বললো, "মাসিমা নমস্কার! আমি এই গ্রামের ভূগোলের টিচার। আপনি মনে হয় অনেক চিন্তিত রয়েছেন নিজের মেয়েকে নিয়ে, তাই না? কিন্তু চিন্তা করবেন না, ম্যাডামের দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের সবার। তিনি এই গ্রামের অতিথি। আমরা হাকিমপুরবাসী অতিথিকে মাথায় করে রাখি। তাই সুস্মিতা ম্যাডাম কখন আসবে বা না আসবে সেই নিয়ে একদম চিন্তা করতে যাবেন না। আমরা তো আছি। লোকাল টিচার্স, পুলিশ, সকলে! আপনার মেয়ে আমাদের কড়া নিরাপত্তাবলয়ের মধ্যেই রয়েছে, প্রিসাডিং অফিসার বলে কথা! কিচ্ছু হবেনা ওনার, আমরা গ্রামবাসিরা কিছু হতে দেবনা। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন, কেমন!"
এক নাগাড়ে বলে গেল বীরেন। কিন্তু এমনভাবে বললো যে নন্দিনীর শাশুড়ি আর কিছু বলে উঠতে পারলো না। বীরেন ফোনটা নন্দিনীকে ফিরিয়ে দিল। নন্দিনী কথা বলে দেখলো তার শাশুড়ির গলা আগের থেকে নরম হয়েছে। বুঝলো সেটা বীরেনের কারণেই।
তারপর নন্দিনী শাশুড়ির সাথে আরো কিছুক্ষণ কথা বললো, শশুড় মশাই, গুড্ডি সবার খোঁজ নিয়ে ফোনটা রেখে দিল। প্রথমে সে বীরেনকে ধন্যবাদ জানালো তার শাশুড়িমাকে বোঝানোর জন্য। ঠিক পরমুহূর্তেই চার্জ করতে লাগলো তাকে না বলে ফোনটা হাত থেকে কেড়ে নিয়ে কথা বলতে লাগার জন্য।
বীরেন যা করেছে ভালোর জন্য করেছে মেনে নিয়েও নন্দিনী বীরেনকে একটু ম্যানার্স ফলো করতে অনুরোধ করলো। বীরেনের বারংবার এই সীমা লঙ্ঘন করাটা তার মোটেই ভালো লাগছিল না। যদিও এইবার বীরেন তার উপকারই করেছে, তাও। সে অন্তত নন্দিনীকে একবার সচেতন করতে পারতো ফোনটা নেয়ার আগে।
"আমি জানি ম্যাডাম, আমি একের পর এক ভুল করে যাচ্ছি আপনার সাথে। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমার ইনটেনশন খারাপ নয়।"
"ইনটেনশন খারাপ নয়? তাহলে দুপুর বেলা আমায় একা পেয়ে ওরকম কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন কেন?"
"ভুল হয়ে গেছে। সত্যি বলতে আপনার মতো সুন্দরী মেয়ে আমি আগে একটিও দেখিনি। সেই ট্রেনিং এর সময় থেকে আমি আপনার সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ! আমরা গ্রামের মানুষ, শহুরে দের মতো অত এনিয়ে বিনিয়ে কথা বলতে পারিনা। কাউকে ভালো লাগলে নিজের ফিলিংস কন্ট্রোল করতে না পেরে এমন কিছু কথা বলে বসি যা হয়তো আপাতদৃষ্টিতে খারাপ মনে হতে পারে। আমার বলা কথা গুলোই যদি কোনো শহুরে স্মার্ট হ্যান্ডসাম বাবু ইংরেজিতে বলতো যে, I will not do anything without your permission, but if your kindness pours on this admirer of yours, then we may have some fun together.... তাহলে সেটা হয়ে যেত ফ্লার্টিং। আর আমি পাতি বাংলায় বললে সেটা মোলেশটেশন? কেন?.. আমি বলছিনা আমার প্রস্তাবটা খুব সুরুচিপন্ন ছিল। ভুল মানুষমাত্রই হয়, আমিও করেছি ভুল। কিন্তু তার এত বড়ো সাজা হতে পারেনা!"
"কি সাজা? কি এমন শাস্তি দিয়েছি? চড় মেরেছি বলে কি খুব গায়ে লেগেছে?"
"আমি চড় মারার কথাটা বলছিনা। আপনার যেকোনো স্পর্শ আমাকে স্বর্গীয় অনুভূতি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তা সে চড় হোক, করমর্দন হোক বা অন্য কিছু। তাই আপনার চড় মারাটাকে আমি শাস্তি বলে মনে করি না। আমি বলছি প্রকৃত শাস্তির কথা যা আপনি অনবরত দিয়ে চলেছেন। ...."
"কি সেটা?", নন্দিনী বীরেনের কথা কিছুই বুঝতে পারছিলো না।
"এই যে সব ব্যাপারে আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন। একদিকে মানছেন আমি আপনার মাকে কনভিন্স করে আপনার বাড়ি ফেরাটা আটকালাম, অপরদিকে আপনিই আবার আমাকে বকছেন। একজন শিক্ষিকা হয়ে অপর শিক্ষককে ম্যানার্স শিখতে বলছেন। এগুলো কি শুনতে ভালো লাগে বলুন? হ্যাঁ, আমি আপনাকে পছন্দ করি, তাতে অন্যায় কি? মানুষের মন যেকোনো কারোর উপরই আসতে পারে, তাতে তো কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। কিন্তু আপনি যদি আমাকে নিজের কাছে ঘেঁষতে না দেন, তাহলে আমার মুখে বলাই সার। কাজে আমি এমন কিচ্ছু করবো না যাতে শুধু আমার নয়, আমার গ্রামেরও নাম খারাপ হয়।"
অবশেষে বীরেনের এই আবেগভরা কথায় গলে গিয়ে নন্দিনী এবার পুরোপুরিভাবে কনভিন্সড হলো যে লোকটা ঝোঁকের বসে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে ফেলেছিল। আদতে লোকটা নিতান্তই হার্মলেস, ভরসাযোগ্য। তাই নন্দিনী স্বাভাবিক হয়ে মুখে একটা আলতো হাসি নিয়ে বললো, "বাই দা ওয়ে যার সাথে কথা বললেন, সে আমার মা নন, আমার শাশুড়ি মা।"
"ওহঃ তাই!! তা শাশুড়ি মা কি মা হয়না? ওঁনার কথা শুনে মনে হচ্ছিলো উনি আপনার প্রতি খুব কনসার্ন, ঠিক আমার মতো...."
"আপনার মতো? আপনি আমার প্রতি এত কনসার্ন কেন?"
"ওই যে বললাম, I like you.. I don't need any validation for that.. এটা একান্তই আমার নিজস্ব ফিলিংস। এতে আপনাকে participate না করলেও হবে।"
"আপনি বিয়ে করেননি?"
"কেন জিজ্ঞেস করছেন? যেহেতু আমি আপনার সাথে ফ্লার্ট করছি তাই? এমনিতেও আমাদের এই এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। এখানে একাধিক বিয়ে করলেও কেউ কিছু বলবে না। তাই আপনাকে পটিয়ে বিয়ে করে ঘরে তুলতে মানা নেই। হা হা হা হা!!....."
"খুব বাজে জোক! সবসময়ে গ্রামের মানুষ বলে আমাকে যা তা বলে পার পাবেন না আপনি, এটা মনে রাখবেন। একজন বিবাহিতা মেয়েকে পূনরায় বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন? এটা কুপ্রস্তাব নয়? নাকি এতেও village card খেলবেন? বলবেন গ্রামের মানুষ বলে সোজা কথা সোজা ভাবে বলে দিচ্ছেন? পরস্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ রাখা কোথাও জায়েজ নয়, কোথাও মান্য নয়, তা সে শহর হোক বা গ্রাম, এটা মানবেন তো?"
বীরেন বুঝলো নন্দিনী এত সহজ পাত্রী নয়। খুব সমঝে কথা বলতে হবে এবার থেকে, যদি সে সত্যিই চায় এই সুন্দরী অপ্সরার যৌবনের একটু স্বাধ নিতে। সেই কারণে বীরেন ফের মেক আপ দেওয়ার জন্য বললো, "না না, আমি ওভাবে বলতে চাইনি। একটু ইয়ার্কি মারতে গেলাম, আপনি মাইন্ড করে বসলেন। কি আর করা যাবে! যাই হোক, আমি বিবাহিত। বাড়িতে বউ রয়েছে, ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।"
"ওহঃ! Congratulations! তা এইজন্য আপনার মন বহির্গামী হয়েছে? বাইরের পানে ছুঁকছুঁক করছে। ঘরে যেহেতু বউ ভালোবাসা দিতে পাচ্ছেনা, তাই তৃষ্ঞার্ত কাকের মতো বাইরে পানি খুঁজছেন, তেষ্টা মেটাতে! শুনেছি এইসময়ে স্বামীদের মন উচাটন হয়ে ওঠে, স্ত্রীয়ের শরীর না পেয়ে।"
"এভাবে কেন বলছেন? আপনার সাথেও কি এরকম কোনো অভিজ্ঞতা হয়েছিল?"
"কিই??........ নাহঃ, না না ...... কিছু না ...... কিচ্ছু হয়নি..... কিচ্ছু না......."
বলেই নন্দিনী অন্যমনস্ক হয়ে পিছনে ঘুরে জোরে পা চালিয়ে টিচার্স রুমের দিকে হাঁটা দিতে লাগলো। যেন কোনো এক রহস্য গোপনের নিবিড় চেষ্টা তার মধ্যে। বীরেন বুঝতে পারলো না ঠিক কি হলো নন্দিনীর? হঠাৎ আবার কি সে অফেন্ড হয়েগেলো? হায় ঈশ্বর! তুমি মেয়েমানুষকে এত জটিল কেন বানিয়েছো?? আকাশের পানে চেয়ে বীরেন নিজেই অদৃষ্টের কাছে প্রশ্ন করে উঠলো।