একটি একান্নবর্তী পরিবারের গল্প /মেজ বউ/【সংসার-খন্ড ৫】/ only Friday - অধ্যায় ৯
দেবশ্রী:খন্ড ৭ “জীবনসঙ্গী,,
~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিয়ে বাড়িতে অনিমেষ))
চারিদিকে হৈ হুল্লোর। সবার মাঝে কেমন যেন উৎসবের আমেজ। হাসি ঠাট্টা, রঙ তামাশা সবাইকে ছাপিয়ে যায়। কিশোর কিশোরী ছেলে মেয়েদের জন্য বিয়ে বাড়িটা সবথেকে মজার স্থান। আমারও ভালো লাগে। অন্তত সবার মুখে হাসি দেখা যায়। দেখতে দেখতে কখন যে বিয়ের সময় হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি।
সকাল থেকেই মন মেজাজ একশো তিন ডিগ্রি গরম। এদিকে এবার বেশ গরমও পড়েছে। আবহাওয়া অফিসে এসি চলে তাই তারা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে, আমার মনে হচ্ছে কম হলেও ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে। আমার মেজাজ গরম হওয়ার অবশ্য অন্য একটি কারন আছে। এত আশা নিয়ে বিয়ে বাড়িতে এলাম, অথচ এখনো কোন সুন্দরী মেয়ে দেখলাম না ! এটা কেমন কথা? মন খারাপ নিয়েই বাড়ির ছাদে সিগারেট ফুকছি। নীচে চোখ পড়তেই আমার চোখ ছানাবরা। এ কি দেখলাম আমি! এও কি সম্ভব! একটা মেয়ে এত্ত সুন্দর হতে পারে? আহা! কি সুন্দর চোখ, সুইটেবাল নাক, মিষ্টি ঠোঁট, রেশমি চুল, কি সুন্দর ফিগার,মেয়েতো নয় যেন টইটম্বুর ভরা কলসি!
**এরই মধ্যে কখন যে বড় বৌদি আমার পাশে দাড়িয়েছে খেয়াল করিনি।**বৌদি খোঁচা মারলো। আমি বৌদির দিকে তাকালাম।বৌদি চোখের ইশারায়
বোঝালো-সামনের দিকে তাকাতে বলছে
নন্দিনী:- মেয়েটা কিন্তু বেশ দেখতে..(নন্দিনী মুচকি হাসি দিয়ে বললো).ব্যবস্থা করবো নাকি
অনিমেষে:-মানে!...কিভাবে?
নন্দিনী:-রাতে এখানে থাকতে হবে দেখি কোনো ভাবে কিছু করা যায় কিনা বাকিটা তোমার হাতে
********
ক্যামেরা ম্যান সুরেন্দ্র)))
সকাল থেকে ক্যামেরা হাতে সুযোগ খুজছি বড় বৌদিকে একা পাওয়ার, কিন্তু তা হচ্ছে না সুবাসদা সারাদিন পেছনে পরে আছে।আজ খুব হট লাগছে বৌদিকে। শাড়ি হোক কিংবা ওয়েস্টার্ন নিজেকে কিভাবে রুপসী দেখাতে হয় তা ভালো করে জানে বৌদি। লাল রঙের শাড়ির সাথে তার ব্রালেট কাটিং স্লিভলেস ও ব্যাকলেস ব্লাউজের ডিজাইনটি থেকেও নজর এড়ানো যাচ্ছে না। হাতে ম্যাচিং করে কাচের চুড়ি গলায় মঙ্গলসূত্র, মাথায় সিদুঁর, হাতে আংটি আর কানে ঝোলা বড় কানের দুল,খোলা চুলে লালসাময়ী সাজ দেখে আমার বাঁড়া ঠাটিয়ে খাড়া হয়ে যাচ্ছে। ক্যামেরাটা বার বার ফোকাস করেছি বৌদির লাল লিপস্টিক মাখা ঠোঁটের উপর। হটাৎ পেছন থেকে অনিমেষের ডাক
অনিমেষ:-সুরেন্দ্র!! একটু আয় তো
সুরেন্দ্র:-(আমি এগিয়ে গেলাম)জলদি বলে
অনিমেষ:-সামনের দিকে দেখ
সুরেন্দ্র:-উফ্ফ্, কি মালরে ভাই!
অনিমেষ:- দেখ আমার নজর পরছে এই মেয়ের উপরে, সুতরাং এইটা তোর ভাবি। সাবধান।"
অনিমেষ একটু রেগেগেলো মনে হয়,আমিও হারামি বাংলা সিনেমার ভিলেনের হাসি দিয়ে বললো,
সুরেন্দ্র:-সে পরে দেখা যাবে…
******
অঞ্জলী)))
মালতী:-অঞ্জলী!তোর বড় বৌদিকে দেখেছি?
অঞ্জলী:বৌদি!এখানেই ছিলো
মালতী:-তুই একটু দেখতো কোথায় গেলো!ডেকে নিয়ে আয়
অঞ্জলী:-লতাকে পাঠাও না,আমি কেনো
মালতী:-ওকেও তো খুজে পাচ্ছিনা, তুই যানা বিয়ে এখনো শুরু হয়নি
কাকিমণিকে রাগানোর ইচ্ছা হলোনা। লোকজনের ভিড় থেকে বেরিয়ে বৌদিকে খুজতে লাগলাম। কিন্তু নিচে তলায় কোথাও বৌদিকে পেলাম না। বিয়ে বাড়ির চার পাসে আলো থাকলেও সিড়িটা অন্ধকার ছিলো.বাইরে খুব জোরে বিয়ের গান বাজছিলো. আমি দোতলায় উঠে একটু ভয় পেলাম, দোতলাটা সম্পূর্ণ খালি,প্রায় সবগুলো রুমের দরজায় তালা দেয়া,মনে হয় খুব একটা ব্যবহারে করেনা। লম্বা বারান্দায় দুই একটা বাতি জ্বলছে, এক কোনে একটা ঘরের দরজা কিছুটা ফাকা হয়ে আছে,ভেতর অন্ধকার। ঘরটা দিকে তাকিয়ে ছিলাম এমন সময় মনে হলো পেছনে কে এসে দাড়িয়েছে ,আমি চমকে চিৎকার দিতে যাচ্ছিলাম,,পেছন থেকে কেউ একজন আমার মুখ চেপে ধরলো, ভয়ে আমার বুক কেপে উঠলো
–শশস্ একদম আওয়াজ নয় অঞ্জলী
মেয়েলি গলা,আর কি মিষ্টি গলার আওয়াজ,কিন্তু অচেনা ।মেয়েটা আমার পেছন থেকে ঘুরে সামনে এসে দাড়ালো
-তোমার বৌদিকে খুজছিলে তো,তোমার বৌদি ঐ ঘরে
অঞ্জলী:- তুমি কীভাবে জানো বৌদি ঐ ঘরে?
-বিশ্বাস না হলে নিজে গিয়ে দেখে নাও,তবে না যাওয়াই ভালো
মেয়েটি মুখ টিপে হাসছে কেনো বুঝতে পারছি না আর বৌদি এখানে কি করছে!কেমন যেনো ভয় ভয় করছিল কিন্তু তবুও কৌতূহলের কারণেই আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলাম,ঘরটার কাছাকাছি আসতেই বৌদির গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম.
নন্দিনী:-সুবাস!উফ্ এবার ছাড়ো
আমি এগিয়ে গিয়ে ঘরে দরজায় মুখ বারিয়ে দেখলাম,দরজা সোজাসুজি একটা খোলা জানালার একপাশে সুবাসদা বৌদিকে জোরিয়ে ধরে একহাতে ব্লাউজের উপর দিয়ে তার বাম স্তনটা টিপছে আর ঘারে চুমু খাচ্ছে,
সুবাস:-উঁহু্ এতো সহজে ছাড়বো না তোমায় সুন্দরী,এই কয়েকদিন খুব জ্বালিয়েছো আমাকে।
নন্দিনী:-একটু পরেই বিয়ে শুরু হবে,আমরা না থাকলে... ইস্ সুবাস!!
সুবাসদা শাড়ির ওপর থেকে বৌদির উরু খামচে ধরলো আর শাড়ি ব্লাউজের উপর দিয়ে বৌদির বুকের মাঝে মুখ ডুবিয়ে দিলো।বৌদি সুবাসদার চুলের মুঠি ধরে টেনে তুলে তার মুখে মখ লাগিয়ে কিস করতে লাগলো তার সাথে সুবাসদা বৌদির শাড়ির আচঁল ফেলে ব্লাউজের উপর দিয়ে বৌদির বুকজোড়া মুঠো পাকিয়ে টিপতে শুরু করলো।
এদিকে আমি অনুভব করলাম, পেছন থেকে কেউ আমার বুকের একপাশে হাত রেখে একমনে টিপে চলেছে। হাতটা ধরে ফেললাম তখন পেছন থেকে সেই মেয়েটার গলা শুনতে পেলাম,মেয়েটা কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো:হাত সরাও অঞ্জলী নয়তো তোমার ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকিয়ে দেবো ,তোমার দাদা বৌদির সামনে।
আমি বুঝতে পারল না কি ভাবে রিয়াক্ট করবে,দাদা বৌদি যেনে যাবে এই ভয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।মেয়েটা এবার পেছন থেকে দুহাতে আমার বুকজোরা আস্তে আস্তে টিপতে লাগল।আমি চুপচাপ চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে আছি,আমি ঘাড়েরওপর মেয়েটার উষ্ণ নিশ্বাস অনূভব করলাম তখনি হটাৎ মেয়েটা আমার ঘাড়ে দাঁত বসিয়ে জোড়ে কামড়ে ধরলো,আমি একহাতে আমার মুখ চেপে ধরলাম,মেয়েটা আবার আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো,""আবার দেখা হবে""এটুকু বলেই মেয়েটা পেছন থেকে একধাক্কায় আমাকে দরজার ভেতরে ঢুকে কিয়ে
অঞ্জলী;-আআহঃ…
নন্দিনী:-অঞ্জলী!!!
অঞ্জলী ঘরের ভেতরে মেঝেতে পরে যায়।আর তার সাথে নন্দিনীর দিকে তাকিয়ে দেখে দাদা ও রূপসী বৌদিকে কিসব যেন করতে দেখে এক অজানা অনামী ভয়ে পাথরের মূর্তির মতো বসে থাকে। অঞ্জলীর চিন্তা ভাবনা গুলো সব এলোমেলো হয়ে যায় তার ব্রেনের ভেতর, তার বুকে ভয়। কিন্তু এই ভয় যে কি সেটা যে সে নিজেই জানেনা। এর থেকে মুক্তির উপায়ও জানা নেই শুধুই দর্শক হয়ে মূর্তির মতো বসে থাকে সে।
********
অনিমেষ)))
মেয়েটার সাথে বৌদি পরিচয় করিয়ে দিলো, মেজ বৌদির বান্ধবী। পরিচয় পর্বের শুরুতেই জানলাম ভরা কলসির নাম নুপূর। নাম শুনতেই কানে কেমন যেন ঝন ঝন আওয়াজ আসছিল। মেয়ের পায়ের দিকে তাকালাম। দেখি একপায়ে নুপূর পরেছে মানে পায়েল। এবার বৌদি আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিল। যখন আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো তখন মেয়ে ফিক করে হেসে বললো,"
নপূর:- ওহ! ইনি তাহলে অপনার সেই প্লেবয় দেবর"
শুরুতেই ধাক্কা, যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো। উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আকাশ ঠিক তার জায়গাতেই আছে,বৌদি পাশে দাঁড়িয়ে মুখটিপে হাসছিলো। যাহোক এখন আমি মনে মনে ভাবছিলাম এই হরিনীকে কিভাবে বধ করা যায়। ততক্ষনে কল্পনায় আমি ইংরেজ শিকারী জিম করবেট হয়ে মায়া হরিণ এর পেছনে ছুটছি, যে কোন মূল্যেই এই হরিনী আমার বধ করতেই হবে। এমনি সময় একটা মিষ্টি ঘ্রান আমার সম্ভিত ফিরালো। অবাক হয়ে দেখলাম ভরা কলসি কাছে এসে দাড়িয়েছে। নীল ফ্লোরাল লেহেঙ্গা, হালকা মেকআপ আর বিনুনিতে অপরূপা লাগছিলো।উজ্জ্বল গায়ের রঙ,উচ্চতা পাঁচের বেশি হবে না,উচু উচু মাই, পাতলা কোমর, কলসির মত গোলাকার ফুলানো পাছা আবারও দেখলাম কাছ থেকে।এই মেয়েটাকে কোনো ভাবেই গ্রামের পরিবেশের সাথে মেলাতে পারছি না। দুষ্ট দৃষ্টিতে দুইবার ভরা কলসির দিকে তাকিয়ে ফেললাম। না তাকিয়ে উপায় নেই, আমি যে পুরুষ।
**********
-শুভ দৃষ্টির সময় এসে গেলো তো কনেকে নিয়ে আসা হোক।
-চিরন্তন এবার দেবশ্রীকে নিয়ে আয়। সময় নেই রে বাবা।
-হ্যাঁ কাকু। এখুনি যাচ্ছি।
-তুই আছিস বলেই তো এত আনন্দ করছি রে বাবা।
-কাকিমা এবার যে দেবী কে নিয়ে যেতে হবে। পুরোহিত মশাই নিয়ে
যেতে বলেছেন।
-তুই ধরবি তো চিরো?
-হ্যাঁ ধরবো
*********
দেবশ্রীর))
চারপাশে হৈ চৈ, বাড়ী ভর্তি মানুষ। সবার মাঝে চাঞ্চল্য, সব মিলে এক উৎসব মুখর পরিবেশ। হ্যাঁ, উৎসব ই তো। এ বাড়ীতে আজ বিয়ে। একটি ঘরে নানা বয়সী মেয়ে-মহিলাদের হট্টগোলের মাঝে বসে আছে “দেবশ্রী”। আজ দেবশ্রী-র বিয়ে। কিন্তু আর দশটা কনের মতো এসব কিছুই সে উপভোগ করছেনা। চারপাশের এই কোলাহল, উৎসব কিছুই যেন তাকে স্পর্শ করছেনা। খুব সুন্দর করে কনে সাজানো হলেও একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায় যেন সে প্রাণহীন। স্থির দৃষ্টি, নেই কোন চাঞ্চল্যতা।
একটু আগেও সে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়েছে, চোখ ফুলিয়েছে। কিন্তু এখন চাইলেও কাঁদতে পারছে না। বুকের ভিতর তোলপাড় হচ্ছে, এক মুহূর্তেই মন যেন তার পাথরের চাইতেও কঠিন হয়ে গিয়েছে। চেহারায় তা ফুটেও উঠছে কিন্তু চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে না। অনেক চেষ্টা করেও মনের কষ্টগুলো চোখ দিয়ে বের করতে পারছে না দেবশ্রী। কেন তার সাথে এমন হলো তার কোন হিসেব দেবশ্রী মেলাতে পারছে না। মনে হচ্ছে তার শরীরে কেউ বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে, প্রচণ্ড ভারী এই শরীর নিয়ে সে টলছে। প্রচণ্ড অবসাদ ঘিরে ধরেছে। কি তার অপরাধ? কেন তার জীবনে এমন কঠিন সংকটময় সময়?
Continue....