গল্প -বৃষ্টি হয়ে নামো (ইলমা বেহরোজ) (সমাপ্ত গল্প) - অধ্যায় ৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-70094-post-6018349.html#pid6018349

🕰️ Posted on August 26, 2025 by ✍️ Bangla Golpo (Profile)

🏷️ Tags:
📖 720 words / 3 min read

Parent
৪. ------"সে আর বলতে।যাবো, যাবো! অবশ্যই যাবো।"ধারার কন্ঠে খুশির ঢেউ। দিশারি উঠে বসে। বললো, ------"আচ্ছা যাবি।কাল আমার ফ্রেন্ডদের বলে দেবো।আমার সাথে আমার বোনও যাচ্ছে!"  ধারা চিন্তিত মুখ করে বললো, ------"রাজি হবে ওরা? মাইন্ড করবেনা?" ------"আরে না না।ওরা আমার গুড ফ্রেন্ড।একজন তাঁর গার্লফ্রেন্ড নিয়ে যাচ্ছে।আরেকজন সিঙ্গেল।আমার ক্রাশ!"  ধারা ঠোঁট কামড়ে চোখ সরু করে তাকায় দিশারির দিকে।বলে, ------"ক্রাশ মানে?" দিশারি সচকিত হয়ে বললো, ------"আরে না না।কিছুনা।" -----"এই না না।বল বল।" দিশারি ইনোসেন্ট মুখ বানিয়ে তাকায়।বললো, -------"কি বলবো?" -------"তোর ফ্রেন্ডকে নিয়ে তোর অনুভূতি। " দিশারি চুল গুঁজে লজ্জায়।তারপর বললো, ------"বিভোর নাম ওর।আমরা একসাথে ভার্সিটিতে পড়েছি।আট মাস আগে দেখা হয় রাস্তায়।তখন আবারো ফ্রেন্ডশিপ হয়।ওরে ভালো লাগতো অনেক আগে থেকেই।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভালবাসি।" ধারা দু'হাত মাথায় রেখে খুশিতে গমগম করে বললো, --------"ও মাই গড! সিরিয়াসলি?সাতাশ বছরে এসে আমার বোন তাহলে প্রেমে পড়লো।বিয়ের খাওন কবে খাচ্ছি?" দিশারি ভ্রু কুঁচকে ফেলে।ধারার উরুতে থাপ্পড় দেয়। ধারা "উউ" করে উঠলো।তারপর আর্তনাদ করে বললো, -------"উফ!ব্যাথা পেয়েছি এতো জোরে মারলি কেন?" -------"তুই এতো বেশি ভাবিস কেন?ও আমায় জাস্ট ফ্রেন্ড ভাবে।এসব অনুভূতি ওর নেই।অনুভূতিহীন পুরুষ মানুষ।সাতাশ বছরতো ওরও।অথচ,গার্লফ্রেন্ড নেই।বিয়ে করেনা।কি এক পর্বত নাকি পাহাড় এসব চড়ে বেড়ায়।" ধারা উৎসাহ নিয়ে বললো,  -----"পর্বতারোহী নাকি?" দিশারি শুয়ে পড়ে।ছোট করে উত্তর দেয়, ------"হু।" ধারা চোখ বড় বড় করে বললো, -----"বাবাহ! ট্রাভেলিং ও ভালবাসে?" -----"না ওর ঘুরতে ভাল্লাগেনা যেখানে সেখানে।শুধু পাহাড়-পর্বত ভালবাসে,ভালোলাগে।" ধারা কতক্ষণ কি ভাবে।তারপর দ্বিগুণ উৎসুক হয়ে বললো,  -----"এই দেখতে কেমন রে?" দিশারি চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর জন্য।চোখ বন্ধ রেখেই উত্তর দেয়, -----"দেখার সৌন্দর্যে,টু মাচ হ্যান্ডসাম।হাইট ছয় ফিট এক।আর....." ধারা হালকা কেশে জোরে বেসুরা সুরে গান গেয়ে উঠে, ------"যেতে যেতে পথে পূর্নিমা রাতে চাঁদ উঠেছিল গগণেএ!" দিশারি চোখ খুলে তাকায়।ধারা দাঁত সবগুলো বের করে হাসে।বলে, ------"তোর হিরোর আর কিছু বাকি আছে বলার?থাকলে বলে ফেল।" দিশারি হেসে উঠে বসে।ধারার গালে আলতো করে থাপ্পড় দেয়।বললো, ------"আজ ঘুমাতে তো দিবি না জানি।নিপারে ডেকে আনি।একসাথে আড্ডা দেই।"  নিপা,ধারা,দিশারি একসাথে গোল হয়ে বসেছে।একজন অন্যজনের গল্প শুনছে,শোনাচ্ছে।মাঝে মাঝে আওয়াজ করে হেসে উঠছে।বেশি হাসছে ধারা।হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ধারা একসময় উঠে ওয়াশরুমে যায়।তখন নিপা দিশারিকে বললো, ------"মেয়েটা খুব মিষ্টি।" দিশারি হেসে উত্তর দেয়, ------"হুম। প্রাণোচ্ছল,খুব হাসে।সবসময় খুশিতে থাকে। -------"আর কি লম্বা মেয়েটা!তুইও তো লম্বা।" ------"আমার মামা-মামি,খালা,মা সব লম্বা।তাই আমরাও লম্বা।তবে মেয়েদের মধ্যে বেশি লম্বা ধারাই।" ------"হু।ইন্ডিয়া হিরোইনদের মতো।মেয়েটার হাসিটা আমার ভাল্লাগছে।তোরা দু'বোনই সুন্দরী।তোদের মাঝে আমি লিলিপুট, কুৎসিত। " দিশারি ধমকে উঠলো, ------"ছিঃ এভাবে বলতে নেই।তুই তো মায়াবতী। শ্যামবর্ণের মায়াবতী। " নিপা হাসে।বলে, ------"আমার বয়ফ্রেন্ডও আমায় তাই বলে।" ধারা আসতেই নিপা জিজ্ঞাসা করলো,  ------"এই ধারা?তোমার জন্য এতো লম্বা বর কই থেকে খুঁজে বের করেন তোমার আব্বু? এতো লম্বা পোলা আছে নি দেশে?" ধারা হেসে জবাব দেয়, ------"থাকবেনা কেনো অবশ্যই আছে।কম আর কি।তবুও খুঁজে বের করে ফেলে বাবাই।সব ছয় ফিট নয়তো বা আরো বেশি।" দুই-তিনটা মেয়ে একসাথে হলে কথার শেষ থাকেনা।বাইরে জলপ্রাতের মতো বৃষ্টি।নভেম্বর মাস।শীতের শুরু মাত্র।এখন এরকম বৃষ্টি!আবহাওয়া রুটিন মাফিক আর চলেনা।ওদের কথায় কথায় আড্ডা চলে ভোর রাত অবধি। _________________________________________ বিভোর অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছে কিছুক্ষণ আগেই।সায়নকে কল করে বলেছে বাসায় আসতে। শাওয়ার নিয়ে খেতে বসে তখন দিশারির কল আসে। ------"হুম বল।"  -----"শোন আমার বোনও যাবে আমাদের সাথে।" -----"তোর বোনদের তো বিয়ে হয়ে গেছে।বাচ্চা-কাচ্চা সহ যাইবো?" ------"আরে না বাল!মামাতো বোন যাবে।" -----"ওহ।ছোট নি বেশি?" ----"না না এডাল্ট।তেইশ বছর আর কি।" -----"ওহ।আচ্ছা আমার প্রবলেম নাই।সায়নের সাথে আমি কথা বলছি।" -----"থ্যাংকস দোস্ত।" -----"রাখ ফোন।খাইতে দে.... দিশারিকে রাখার সুযোগ না দিয়ে বিভোরই কল কেটে দেয়।ক্ষুধায় পেট চোঁ-চোঁ করছে। খাওয়ার মাঝে কলিং বেল বেজে উঠে।বিরক্তির চরম পর্যায়ে চলে আসে বিভোরের মেজাজ।রাগ নিয়ে দরজা খুলে।সায়ন টানটান করে হেসে ভেতরে ঢুকে।বিভোর সায়নের কোমর বরাবর লাথি দেয়।সায়ন টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায়।হুংকার দেয়, ------"কি হইছে ব্যাটা?" বিভোর কোনো জবাব না দিয়ে টেবিলে গিয়ে বসে।খাওয়াই মন দেয়।সায়ন বুঝতে পারে বিভোরের খাওয়ার মাঝে সে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।তাই লাথি খেয়েছে।বিভোরের বাজে অভ্যাস এটা! খাওয়ার মাঝে বিরক্ত করা কেনো জানি সহ্য করতে পারেনা। সায়ন সোফায় বসে টিভি অন করে।বিভোর খাওয়া শেষ করে আসে।বললো, ------"আজ রাতেই রওনা দেই?" সায়ন হকচকিয়ে বললো,  ------"কি কস? আজই কেন? কাল রাতে তো।" ------"পাঁচ দিনের ছুটি নিছি।পাঁচদিন পর শুক্রবার।আজ রওনা দিলে চার দিন,পাঁচ রাত দার্জিলিং কাটাতে পারবো।শুক্রবার গাড়ি উঠবো।" -----"ঊর্মি রাজি হবে?" -----"রাজি করা।" সায়ন ঊর্মিকে কল করে সব বলে।ঊর্মি রাজি হয়।তারপর কল করা হয় দিশারিকে।দিশারি একটু রেগে যায়।ধমকায়।তারপর সায় দেয়। সায়ন সোফায় হেলান দিয়ে বসে।কাঁদো স্বরে বললো, ------"দার্জিলিং যাচ্ছি তো ঠিকই।কিন্তু ফকির হইয়া আসুম রে মামা।" বিভোর তীর্যক হাসলো। বললো, ------"জমি আছেনা?বেঁইচা লও মিয়া।" সায়ন আফসোস করে বললো,  ------"সরকারি একটা চাকরি যদি পাইতাম।আর তুমি মিয়া সরকারি চাকরি পাইয়াও ছাইড়া দিছো।" বিভোর চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে বললো, ------"সরকারি চাকরিতে ছুটি পাওয়া যায়না।ছুটি দেয়না।পর্বত থেকে আলাদা থাকতে হয়।এর চেয়ে প্রাইভেট কোম্পানি ভালো।ছুটি দেয়।বেতনের তো সমস্যা নাই।বেশি ই দেয়।" চলবে........
Parent