গোপন কথাটি রবে না গোপনে - অধ্যায় ৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-53045-post-5118073.html#pid5118073

🕰️ Posted on January 31, 2023 by ✍️ কলমচি৪৫ (Profile)

🏷️ Tags:
📖 589 words / 3 min read

Parent
বিপাশা ক্যানভাসে মনোতোষের তুলির টানে ফুটে ওঠা শকুন্তলার প্রতি দুষ্মন্তের ভালোবাসার গভীরতা নিরীক্ষণ করে অবাক হয়ে যায়। ছবিগুলো দেখে এটা সে বুঝতে পারে মনোতোষবাবু এই ছবিগুলোর মধ্যে দিয়ে স্বর্ণালীর প্রতি তার ভালোবাসার গভীরতা কতটা সেটা বোঝাতে চেয়েছেন। স্বর্ণালী বলে চলে - আমার স্বামী কতটা পরিশীলিত ও সংবেদনশীল সেটা আমি বাসর রাতেই টের পেয়েছি। তবে সে রাতে কী হয়েছিল সেটা নিশ্চয়ই শুনতে চাইবেন না ? আর আমিও তা ক্যামেরার সামনে বলবো না। তবে এটুকু বলি সেদিন থেকে আমি প্রতিজ্ঞা করেছি ওঁর সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশবো এবং স্ত্রী হিসেবে সব কর্তব্য পালন করবো। বিপাশা বলে -- না না আপনাকে স্বামী-স্ত্রীর বাসর রাতে কী হয়েছিল সেটা আমার জানার বিষয় নয়। তবে আর একটা প্রশ্ন আমাকে খোঁচা দিচ্ছে, সেটা হলো আপনি যখন জানতে পারলেন আপনার আর এ জীবনে মা হওয়া সম্ভব নয় তখন আপনার অনুভূতি কেমন হয়েছিল? স্বর্ণালী বলে -- এই পৃথিবীতে সব নারীই কী মা হতে পারে ? তবুও মাঝে মাঝে মনে হয় একটা যদি ছোট্ট ছেলে থাকতো আমার তাহলে কী ভালোই না হতো। জানেন মাঝে মাঝে আমি হাঁফিয়ে উঠি , আর তখন মনে হয় আমি তিরিশ বছরের তরুণী নই , আমার যৌবন অনেক দিন আগেই হারিয়ে গেছে। তবে আমার স্বামীকে নিয়েই দিনের অনেকটা সময় কেটে যায়। সে অণুক্ষণ আমাকে ভালোবাসার চাদরে মুড়ে রেখেছে, আমাকে চোখের আড়াল হতে দেয় না। শুধু যখন ক্যানভাসের সামনে তুলি নিয়ে বসে তখন তিনি একেবারে অন্য মানুষ , তখন তাঁর দেহটাই এঘরে পড়ে থাকে আর মন কোথায় হারিয়ে যায় ঈশ্বর জানেন। তবে যখনই তার অভিমান হয় কিংবা ভেতরে কোনো আবেগ ফুলে ফেঁপে ওঠে ও আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকের মধ্যে ছোটো ছেলের মতো মুখ গুঁজে থাকে। এই দেখুন আপনাকে কীসব বলে বসলাম , ছিঃ ছিঃ, মাথাটা একদম গেছে। বিপাশা দেখে বলতে বলতে স্বর্ণালীর গালদুটো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। বিপাশা স্বামী-স্ত্রীর এই ভালোবাসা দেখে অবাক হয়ে যায়। সে ভাবে নিদারুণ দ্রারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিতা কুড়ি বছর বয়সে মেয়েটি এক বোবা ছেলেকে মেনে নিয়েছিল স্বামী হিসেবে, হয়তো ভেবেছিল সন্তানবতী হয়ে একদিন সে পল্লবিত হবে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি , তথাপি সে এতোটুকুও বিষণ্ণবতী হয়নি , তার স্বামীকে সে অত্যন্ত গভীরভাবে ভালোবাসে। এতটুকু অবহেলা করে না তার প্রতিবন্ধী স্বামীকে। এরকম স্ত্রীকেই স্ত্রীরত্ন বলা হয়। বিপাশার চটকা ভাঙে স্বর্ণালীর ডাকে -- কী এত ভাবছেন ? বিপাশা বলে -- আপনাকে দেখে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসছে। বুকের মধ্যে এত কষ্ট জমিয়ে রেখেও কী হাসিখুশি রয়েছেন আপনি! আচ্ছা আর একটা মাত্র প্রশ্ন করে আপনার কাছ থেকে আজকের মতো বিদায় নেবো। স্বামী ছাড়া আর কোনো পুরুষ আপনার জীবনে এসেছিল কী ? স্বর্ণালীর বলে -- এখন আমার স্বামীই আমার একমাত্র ভালোবাসা। তবে জীবনে আর কেউ আসেনি এটা বলে আপনার কাছে মিথ্যা বলতে পারবো না । আমরা তো অত্যন্ত গরীব ছিলাম। তাই বাবা পড়াশোনা করার জন্য কোনো টিউশন দিতে পারেনি। আমি ইংরেজিতে একটু কাঁচা ছিলাম। আমাদের গ্রামের এক দাদা , পরিমলদা আমাকে বিনা পয়সায় দেখিয়ে দিত। তার জন্যই আমি উচ্চমাধ্যমিক পাশ করতে পেরেছি। তার প্রতি আমার মুগ্ধতা ও ভালোলাগা কাজ করতো । মুখে প্রকাশ না করলেও পরিমলদা আমার প্রতি দুর্বল সেটা বুঝতে পারতাম। তারপর হঠাৎ করে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর পরিমলদা একদিন তার বাড়ির পাশের আমবাগানে ডেকে বলেছিলো সে আমাকে ভালোবাসে, আমিও তাকে বলেছিলাম তারজন্য আমার মনেও একটা সফট কর্ণার আছে। কষ্ট হলেও তাকে কিন্তু বলেছিলাম -- -- বিয়ের সব কিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার পর বাবার মুখে চুনকালি দিয়ে এখন আমি তার সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করতে পারবো না। সেই সম্পর্কের সেখানেই ইতি। আর এবাড়িতেই একজন আমার সঙ্গে জোর জবরদস্তি করেছিলো। সেটা আমি আর বলবো না , তিনি যদি নিজের মুখে তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার করেন তাহলে জানতে পারবেন। বিপাশা বলে -- ঠিক আছে আজ উঠি। এখনও পাঁচ- ছদিন আপনাদের বাড়িতে থাকবো। প্রয়োজন পড়লে আপনার সঙ্গে আবার কথা বলবো। *****দ্বিতীয় অধ্যায় দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ সমাপ্ত*******
Parent