হেরোর ডাইরি by stranger_women (Completed) - অধ্যায় ২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-2265-post-78450.html#pid78450

🕰️ Posted on January 9, 2019 by ✍️ manas (Profile)

🏷️ Tags:
📖 957 words / 4 min read

Parent
২ রবির সাথে মলে দেখা হওয়ার চার পাঁচদিন পর একদিন হটাত রবির চেম্বার থেকে একটা ফোন কল পেলাম আমার ডেস্কে। রবির ফোন। ও বললো –“রাজীব তোমার দুয়েকজন ক্লায়েন্টের কাছ থেকে কয়েকটা ব্যাপার জানতে পারলাম। ওদের নাকি কিছু অভিযোগ আছে তোমার সার্ভিস নিয়ে”। -“কি বলছো তুমি রবি? আমার ক্লায়েন্ট আর আমিই জানবোনা তাদের অভিযোগ আছে”? -“হ্যাঁ ব্যাপারটাতো সেরকমই মনে হচ্ছে। এদের মধ্যে একজন ক্লায়েন্টের অভিযোগ বেশ গুরুতর। সে বলছে তুমি নাকি ওদের কাছে মার্কেটিং করার সময় যেসব সার্ভিস দেবে বলেছিলে, কনট্র্যাক্ট পেপারে সেসবের উল্লেখ না করেই ওদের কাছে সাইন করতে পাঠিয়ে দিয়েছো”। -“হতেই পারেনা।আমি এরকম ভুল কোনদিন করিনি রবি। ক্লায়েন্টের নাম বলতো কে? আমি এখুনি ফোন করে কথা বলে ব্যাপারটা দেখে নিচ্ছি। এটা নিশ্চই ওদেরই ভুল”। -“তার দরকার নেই রাজীব। আমি নিজেই ব্যাপারটা সালটে নিয়েছি। তবে এবার থেকে তোমার ক্লায়েন্টদের কনট্র্যাক্ট পেপার পাঠাবার আগে আমার কাছে একবার পাঠাবে, আমি আগে পড়ে দেখবো”। -“কিন্তু রবি”? -“দেখ রাজীব তোমার কাজের ব্যাপারে নাক গলাবার কোন উদ্দেশ্য নেই আমার। কিন্তু তুমি কনট্র্যাক্ট পেপারে কোন ভুল করলে তার থেকে কম্পানির বদনাম হয়ে যাবে। তাই আমাকে দেখতেই হবে ওগুলো”। -“কিন্তু রবি একটা জিনিস আমি কিছুতেই বুঝতে পারলামনা... আমার ওই ক্লায়েন্ট আমাকে না ফোন করে তোমাকে ফোন করলো কেন”? -“ওরা রিশেপসানে ফোন করে তোমাকে মেসেজ দিতে বলেছিল কারন তুমি সেদিন অফিসের বাইরে ছিলে আর তোমার মোবাইল আনরিচেবল ছিল। আমি তখন রিশেপসানে কোনকারনে প্রেজেন্ট ছিলাম বলে ব্যাপারটা জানতে পারি”। আমি আর তর্ক বারালাম না কারন আমি বুঝতে পারলাম যে রবি আমার কনট্র্যাক্ট পেপারগুলো দেখার ব্যাপারে ওর ডিসিশন নিয়ে ফেলেছে। -“ ঠিক আছে তুমি যখন বলছো তখন তাই হবে। এনিওয়ে থাঙ্কস রবি আমাকে হেল্প করার জন্য”। এই বলে রবির ফোন ছাড়লাম আমি । প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলাম ভেতর ভেতর। আমার ক্লায়েন্টরা আমার সার্ভিস নিয়ে কমপ্লেন করেছে এটা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা। আমার সাথে আমার ক্লায়েন্টদের সম্পর্ক চিরকালই মধুর থাকে। ক্লায়েন্ট তো দুর অফিসের কাউর সাথেই আমার কোন খারাপ সম্পর্ক নেই। ক্লায়েন্টদের সাথে অসম্ভব ভাল রিলেসনই আমার সবচেয়ে বড় প্লাসপয়েন্ট। তাহলে কেন এমন হল? রবি কিছুতেই আমাকে সেই ক্লায়েন্টের নাম বললোনা কারন ও বোধহয় ভাবলো ক্লায়েন্টের নাম বললে আমি ভবিশ্যতে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে শোধ তুলতে পারি। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হল রবি এবার থেকে সব ব্যাপারে আমার কাজ সন্দেহের চোখে দেখবে, আর আমার প্রত্যেকটি ব্যাপারে নাক গলাবে।সেদিন রাতে বাড়ি ফেরার পর চান করে একটু ফ্রেশ হয়ে বাথরুম থেকে বেরচ্ছি এমন সময় মনীষা আমাকে জিজ্ঞেস করলো –“কিগো অফিসে কিছু ঝামেলা হয়েছে”? মনীষা সোফায় বসে টুপুর মানে আমার ছোটো মেয়েটাকে কোলে নিয়ে বুকের দুধ দিচ্ছিল। আমি ওর দিকে ফিরে বললাম –“হ্যাঁ আজকের দিনটা আমার একটু খারাপ গেছে। কিন্তু তুমি কি করে জানলে”? -“তোমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে কিছু একটা হয়েছে। তুমি অফিস থেকে ফেরা ইস্তক দেখছি তোমার মুখটা রাগে থমথম করছে”। আমি মনীষাকে খুলে বললাম কি ঘটনা ঘটেছে। কিভাবে রবি রিশেপসানে আমার ক্লায়েন্টদের দেওয়া মেসেজকে কমপ্লেন হিসেবে ধরে নিয়ে আমাকে না জানিয়ে নিজে তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। -“তারপর কি হল? রবি কমপ্লেন গুলো সামলালো কি করে”? -“বললামনা ওগুলো ঠিক কমপ্লেন ছিলনা। ওরা ওদের সাথে আমাদের কনট্রাক্টের কতগুলো বিষয়ে জাস্ট একটা এক্সপ্ল্যানেসান চেয়েছিল। আমি সেই সময় অফিসে ছিলামনা আর আমার মোবাইলও কোন ভাবে আনরিচেবল হয়ে গিয়েছিল। সেই জন্য ক্লায়েন্টরা আমাকে ফোনে না পেয়ে রিসেপসানে ফোন করে আমার জন্য মেসেজ দেয়।রবি সেই সময় দুর্ভাগ্যবসতো কোনভাবে ওখানে উপস্থিত ছিল। ও মেসেজ গুলোকে কমপ্লেন হিসেবে ধরে নিয়ে আমাকে কোন ব্যাবস্থা নেবার সুযোগ না দিয়ে... আমাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে...নিজেই ওদের সাথে কথা বলে ব্যাপারটা সালটেছে। আমি তো বুঝতেই পারছিনা আমার কিভাবে এমন ভুল হতে পারে। কনট্রাক্ট পেপার পাঠানোর আগে আমি বারবার পেপারটা মিলিয়ে দেখেনি যে কোন ভুল হয়েছে কিনা। এই ঘটনার পর রবি এখন চাইছে যে আমি আমার সমস্ত কনট্রাক্ট পেপার ক্লায়েন্টকে পাঠাবার আগে একবার ওকে দিয়ে চেক করিয়ে নিই”। -“দেখ রাজীব তোমার ভুল হওয়া তো অসম্ভব কিছু নয়, তুমিও তো মানুষ। আর মানুষ মাত্রেই ভুল হতে পারে”। -“হ্যাঁ ভুল আমার হতে পারে। কিন্তু এর আগে এরকম ভুলতো আমি কখনো করিনি। আর এক সপ্তাহেই পরপর দুদুটো এরকম সিলি মিস্টেক আমি কিভাবে করতে পারি আমার মাথায় ঢুকছেনা? না... আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছেনা ব্যাপারটা...কিছু একটা ব্যাপার নিশ্চই আছে”। -“দেখ দুটো ভুল হওয়াও তো অসম্ভব কিছু নয়।আমার মনে হচ্ছে মিস্টার সহায় তোমার কনট্রাক্ট পেপারগুলো কাউকে পাঠানোর আগে নিজে চেক করায় তোমার ভালই হবে। ও ঠিকই ডিশিসান নিয়েছে”। মনীষার মুখে এই কথা শুনে ফট করে মেজাজটা গরম হয়ে গেল আমার। -“কার হয়ে কথা বলছো তুমি মনীষা? তুমি কি আমার বউ না রবির বউ”? -“অবশ্যই তোমার হয়ে বলছি রাজীব। কিন্তু আমি মনে করি যে তোমার সমস্ত কনট্রাক্ট পেপার ক্লায়েন্টদের কাছে পাঠানোর আগে মিস্টার সহায় যদি একবার চেক করে নেন তাহলে তাতে তোমার কোন অসুবিধে থাকার কথা নয়। মিস্টার সহায়তো ওর কম্পানির ভাল চাইবেই রাজীব। ওতো চাইবেই যে তুমি অজান্তেও যেন কোন ভুল না করে ফেল”। -“আমি আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি তোমার কথায় মনীষা। এত বছর ধরে তো এই সব ক্লায়েন্টদের আমি একাই সামলেছি। আমার তো কখনো কোন ভুল হয়নি। তাহলে তুমি কেন এখন ভাবছো যে আমার রবির সাহাজ্যের দরকার আছে?” -“ওঃ রাজীব তুমি মাঝে মাঝে এতো ছেলেমানুষী করোনা যে কি বলবো। আমি তো জানি আমার স্বামীটা সেলস একজিকিউটিভ হিসেবে অফিসে সবার থেকে সেরা। আমি শুধু মনে করছি যে তোমার মিস্টার সহায়ের কথা মেনে নেওয়াই উচিত কারন আর কিছুনা হোক এতে করে মিস্টার সহায় তোমার ওপর অজথা চটে যাবেন না বা তোমার বাকি কাজে নাক গলাবেননা”। মনীষা আমাকে পুরোপুরি সাপোর্ট না করায় আমি ভেতর ভেতর ভীষণ অসন্তুষ্ট হয়ে পরলেও ওর কথার যুক্তি আমি বুঝতে পেরেছিলাম। স্পষ্টতই মনীষা ব্যাপারটা আমার থেকে অনেক নিরপেক্ষভাবে দেখছিল। ওর যুক্তি ও অগ্রাহ্য করার মত ছিলনা। হয়তো ধনী সুপুরুষ এই রবিকে আমি মন থেকে কোনদিনো খুব একটা পছন্দ করতামনা বলে এই ব্যাপারটায় একটু বেশিই তেতেছিলাম।তবে একটা কথা মনে হল আমার... সেদিন মলে রবির সাথে দেখা হওয়ার পর রবির ভদ্র এবং চৌখস কথাবাত্রা তে মনীষা হয়তো ভেতর ভেতর বেশ অভিভূত হয়ে পরেছে। তাই ও হয়তো ভাবছে যে কম্পানির মালিকের ছেলে, কত স্মার্ট, ও কি না বুঝেই এই ডিসিশন নিয়েছে নাকি? নিশ্চই রাজীবের কোন নেগ্লিজেন্সি দেখেছে ও, তাই এরকম বলেছে। এই কথাটা মনে হওয়ার পর থেকেই সেদিন বুকের ভেতরটা কি রকম যেন জ্বালা জ্বালা করতে শুরু করেছিল আমার। (চলবে)
Parent