হিরো - অধ্যায় ৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69843-post-6006628.html#pid6006628

🕰️ Posted on August 10, 2025 by ✍️ gungchill (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1349 words / 6 min read

Parent
৬   সকাল বেলায় ছেলেটাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে একদম ইচ্ছে হয়নি ডলির , কেমন শান্তিতে ঘুমাচ্ছিলো ছেলেটা । মুখটা একটু হাঁ করা ছিলো , খুব মায়া হয়েছিলো ডলির । তাই ট্রাঙ্কের উপর নাস্তা ঢেকে রেখে চলে এসেছে । বাসে উঠেই মনে হয়েছে কি ভুল করে ফেলেছে , পরটা  দুটো নিশ্চয়ই ঠাণ্ডা হয়ে যাবে । দকানের পরটা  গরম অবস্থায়ই যা একটু খাওয়া যায় , ঠাণ্ডা হয়ে গেলে একদম অখাদ্য । কিন্তু কিছু করার ছিলো না ডলির , সকাল নয়টার মাঝে থাকতে হবে ডলি কে সিনেমা পাড়ায় । একটা কাজ এসেছে লিয়াকত ভাই খবর দিয়েছে । বেশ বড় রোল , সিনেমার কমেডিয়ান এর বউয়ের  রোল । সব মিলিয়ে প্রায় ১৫-২০ মিনিট দেখানো হবে রোলটি । বেশ কিছু ডায়লগ ও আছে , নায়ক এর সাথেও কিছু সিন আছে । দেরি করে গেলে হয়ত অন্য কেউ পেয়ে যাবে রোলটা । এই মন্দার বাজারে এমন একটা রোল হাত ছাড়া হওয়া চাট্টি খানি কথা না ।   অফিসে ঢুকতেই মনটা বিমর্ষ হয়ে গেলো ডলির , ১০-১২ জন বসে আছে এই রোলের জন্য । এর মাঝে একজন আবার ডলির পরিচিত সেফালি । ডলি ওকে সেফালি বুবু বলে ডাকে । ডলি জানে এই কাজটা সেফালির অনেক দরকার , ওর ছেলে ভর্তি আছে হাসপাতালে  । টাকা খরচ হচ্ছে দেদারসে , শিল্পী সমতি থেকে যা পাওয়া গেছে তা প্রয়জনের তুলনায় খুবি সামান্য । দিন রাত খাটে সেফালি , কিন্তু সেই পরিমান কাজ তো থাকতে হবে ? কাজ কই ।    কি গো সেফালি বু রতনের খবর কি ? সেফালির পাশে বসে জিজ্ঞাস করে ডলি । ঐ এক রকম আছে , টেকা নাই তো চিকিৎসা নাই , এতো টেকা পামু কই ? করুন স্বরে বলে সেফালি । তারপর আবার জিজ্ঞাস করে তুই ও এই কাজের জন্য আইসস ?   হ্যা বলতে একটু লজ্জা লাগে ডলির । তাই উত্তর একটু ঘুরিয়ে দেয় , তুমি ই পাইবা কাজ টা দেইখো । তারপর মুখ সেফালির কানের কাছে নিয়ে ফিস্ফিস করে বলে , তুমি নাকি “পালা শয়তান” ছবিতে কাম নিসো ।     হু নিসি, বড় একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে উত্তর দেয় সেফালি । ডলি আর কিছু বলে না , কি বলবে সুধু এতুকু জানে সেফালি যে কাজ নিয়েছে সেই কাজে একবার যে নামে সারাজিবন তাকে ঐ ধরনের কাজ ই করতে হয় । মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় ডলির , ইচ্ছে হয় ইন্টার্ভিউ না দিয়ে বেড়িয়ে যায়। কিন্তু সেটা সম্ভব না , নাম খারাপ হবে কেউ আর ডাকবে না । কিছুক্ষন পর ডাক পরে ডলির । সেফালির হাতে আলতো একটা চাপ দিয়ে উঠে পরে ডলি ।      আমাকে চিনতে পারসেন ? কাস্টিং ঘরে ঢুকতেই জিজ্ঞাস করে কাস্টিং ম্যানেজার । একটু থতমত খেয়ে যায় ডলি । আজকাল আর কেউ আপনি করে সম্বোধন করে না , তুমি করেই বলে সবাই । ডলি ভালো করে কাস্টিং ম্যানেজারের দিকে তাকালো , মাথায় টাক বেশ বড়সড় ভুরি আর পান খাওয়া ঠোট । একটা মাঝারি গোঁফ নাকের নিচে । ডলি ঠিক চিনতে পারলো না    জিনা আপনারে ঠিক চিনতে পারলাম না । ডলি নিচু স্বরে জবাব দিলো ।   না চিনার ই কথা , সময় তো কম হয় নাই । ১৮-১৯ বছর হইবো , আপনার প্রথম ছবিতে আমি প্রডাকশন বয় আসিলাম ।   নিচের ঠোট কামড়ে ধরলো ডলি , লজ্জায় একেবারে মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে ওর । লজ্জা হচ্ছে আজকে নিজের অবস্থানের জন্য । প্রথম ছবিতে ডলি ছিলো সেকেন্ড লিড , আর এই কাস্টিং ম্যানেজার ছিলো প্রডাকশন বয় । আজ ডলি এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যে সেফালি না থাকলে হয়ত এই রোলের জন্য এই কাস্টিং ম্যানেজারের বিছানা পর্যন্ত যেতে রাজি হতো ও ।   মাঝে সুবির দার লগে কলকাতা গেসিলাম গা , ঐখানে কাজ করসি , উনি ই আমারে হাতে ধইরা আজকার যায়গায় নিয়া আসছে । প্রডাকশন বয় থাইকা কাস্টিং ম্যানেজার হইসি । এই বলে লোকটা একটু থামল , তারপর আবার বলতে শুরু করলো ।  আপনের হিস্টোরি আমি শুনছি। এই বলে জিভ দিয়ে চুক চুক করে একটা শব্দ করলো কাস্টিং ম্যানেজার তারপর বলল, বড় দুঃখের কাহিনী । আপনের এখন কই থাকনের কথা আর কই আসেন ।     চোরা চোখে একবার কাস্টিং ম্যানেজারের দিকে তাকালো ডলি , লোকটার দৃষ্টি ওর শরীরের একটি বিশেষ অংশে দেখতে পেয়ে লজ্জা আরও দিগুন বেড়ে গেলো ওর , সাথে সাথে মাথা আবার নিচু করে ফেলল ।   আপনে যখন সিনেমায় আইলেন তখন পুরা সিনেমা পাড়ায় আপনের কথাই হইত। আপনের মতন ফিগার আর সুন্দরী ঐ সময় কেউ আসিলো না  । সবাই কইত আপনে অনেকদিন এক নাম্বার হিরোইন হিসাবে থাকবেন । সত্যি কথা কইলে আমি তো আপনের প্রেমে পইড়া গেসিলাম  হো হো হো     লোকটার এমন ভুরি নাচিয়ে বিশ্রী করে হাঁসা ডলির শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে । এমন কেন হচ্ছে ডলি ঠিক বুঝতে পারছে না এর চেয়ে অনেক খারাপ কাস্টিং ফেস করেছে ডলি । অনেক কাস্টিং ম্যানেজার তো সরাসরি শরীরে হাত দেয় কাস্টিং এর সময় । সেই তুলনায় এই লোক তো ফেরেস্তা ।   খালি আমি ক্যান , এই সিনেমা পাড়ায় এমুন কোন জোয়ান পোলা আসিলো না যে আপনের প্রেমে পরে নাই । বুড়া গো কথা বাদ দিলাম , এই বলে আবার এক প্রস্ত ভুরি নাচানো হাঁসি হাসল লোকটা । তারপর আবার বলল , আলতাফের কাছে আপনের ছবি দেইখা আমি তখনি ঠিক কইরা ফেলসি আপনেরে আমি এই রোলে নিমু , এই ইন্টারভিউ খালি লোক দেখানো , বুঝতেই তো পারেন সব কিছুর একটা নিয়ম আছে । কত নিবেন ? তিরিশ হাজার চলবো , যদিও আমারে পঁচিশ এর বাজেট দিসিলো , কিন্তু কি করি কন পুরানা প্রেম বইলা কথা । এই বলে আবার সেই বিটকেলে হাঁসি ।   কাজটা আমি করবো না , এই বলে উঠে দাঁড়ালো ডলি । কাস্টিং ম্যানেজারের হাঁসি থেমে গেছে , লালচে গোল গোল চোখ জোড়া আর গোল হয়ে গেছে । ভীষণ অবাক হয়েছে লোকটা আর লোকটাকে মুখের উপর না করতে পেরে দারুন একটা ভালো লাগা অনুভব করছে ডলি নিজের মাঝে ।   ডলি জানে এই সিদ্ধান্ত ডলি কে ভোগাবে বেশ , কিন্তু ডলি কিছুতেই এই কাজ করবে না । এর প্রধান করন হচ্ছে লোকটা ডলি কে বিছানায় নিয়ে যাবে । বিছানায় যেতে ডলির সমস্যা নেই , এর আগে অনেকবার গিয়েছে , কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই লোক নিজের পুরনো ফ্যান্টাসি পুরন করবে ডলিকে নিয়ে , আর ওখানেই ডলির আপত্তি , নিজের পুরনো ক্ষতে ডলি কিছুতেই এই লোক কে লবন লাগাতে দেবে না ।     কাস্টিং অফিসের বাইরে এসে আলতাফের সাথে একচোট হলো ডলির , আর কোনদিন ডলিকে ডাকবে না বলে শাসিয়ে দিলো আলতাফ । সব কিছুই ডলি মাথা নিচু করে শুনে গেলো । আলতাফের সাথে কোন ঝগড়ায় জড়াতে চায় না ডলি । এই এক লোক যে সিনেমা পাড়ায় অদ্বিতীয় , নিজের পাঁচ  পারসেন্ট ছাড়া বাড়তি কিছুই চায় না কখনো ।   ডলিদের মত থার্ড গ্রেড অভিনেত্রী না অনেক নতুন উদীয়মান কাম বয়সী মেয়েরাও আলতাফের সাথে বিছানায় যেতে রাজি । কিন্তু আলতাফ এসবে নেই । ৫% কমিশন দাও , কাজ নাও এই নীতিতে বিশ্বাসী সে । আলতাফের রাগ যখন একটু কমে আসলো তখন ডলি শেফালীর কথা তুলল । কিন্তু আলতাফ কিছুই করতে পারবে না বলে দিলো । বলল সেফালি যে লাইনে গেছে তারপর আর এমন রোলে ওর কাস্টিং হবে না ।   দিনের অর্ধেকটা সময় ডলি সিনেমা পাড়ায় ঘুরঘুর করলো । তারপর বাড়ির পথ ধরলো । আজকে কোন কাজ ছিলো না । তবে একটা গানের শুটিঙে নাইকার সখি হওয়ার কাজের ডাক পেয়েছিলো । কিন্তু ডলি যায়নি , মন ভালো ছিলো না । গেলে ৫০০ টাকা আর লাঞ্চ পাওয়া যেত ।   ঘরের দরজা খোলাই ছিলো , নাইম নামের ছেলেটা একটা ম্যাগাজিন খুলে দেখছে বিছানায় বসে । কি নায়ক সাহেব , কি করেন ? হাসিমুখে জিজ্ঞাস করে ডলি । ছেলেটাকে দেখে সারাদিনের মন খারাপ কিছুটা কমে । আসার সময় দুই প্যাকেট তেহারি কিনে এনেছে ডলি । গতকাল ছেলেটাকে তেহারি খাওয়াতে পারেনি বলে আজ মনে হলো নিয়ে যাই ।   খেতে খেতে ডলি ভাবে এই অপরিচিত ছেলেটার জন্য এতো মায়া হচ্ছে কেনো ওর । এমন মায়া হওয়া তো ভালো না । এমন মায়া শেষ পর্যন্ত দুঃখ ডেকে আনে ।   শুনো ছেলে কাল থাইকা আমার সাথে সিনেমা পাড়ায় যাইবা বুঝছো । নায়ক হইতে চাও যেহেতু ঘরে বইসা ম্যাগাজিন দেখলে হইবো না ।   মাথা কাত করে সায় দেয় নায়িম । ডলির দিকে সয়ারাসরি তাকাতে লজ্জা হচ্ছে । আজ ডলি ঘরে না থাকার সময় এমন এক কাণ্ড করেছে যে এখন লজ্জায় ডলির দিকে তাকাতে পারছে না । মন বলছে যে মহিলা এমন আদর করে ঘরে তুলল তার সাথে এমন বেয়াদবি করা ঠিক হয়নি । কিন্তু কাজটা আজ নতুন নয় , নাইম আগেও এ কাজ করেছে । তখন এমন গিল্টি ফিল হয়নি । তবে ডলিকে সামনা সামনি দেখে ,আর ওর প্রতি ডলির দরদ দেখে গিল্টি ফিল হচ্ছে । মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় নায়িম এমন কাজ আর করবে না , অতিতে যা করার করেছে।                                                                                                    *****
Parent