হিরো - অধ্যায় ৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69843-post-6007424.html#pid6007424

🕰️ Posted on August 11, 2025 by ✍️ gungchill (Profile)

🏷️ Tags:
📖 953 words / 4 min read

Parent
৭  প্রায় সপ্তা খানেক হলো , নাইম সিনেমা পাড়া আসছে । কত পরিচিত মুখ দেখছে , উত্তেজনায় এক সপ্তা কোন দিক থেকে গিয়েছে নিজেও বলতে পারবে না । নায়ক দিলবার খানের শুটিং দেখছে , নাইকা জেরিনের নাচ দেখছে । তবে একটা জিনিস নাইমের মন খারাপ করে দিয়েছে , নায়ক দিলবার খানের চুল নেই, মাথায় টাক , পরচুলা পরে অভিনয় করে । দেখতেও ভালো না বেশ বয়স্ক লাগে  , অথচ সিনেমার পর্দায় কেমন সুদর্শন লাগে ।     আজো বসে আছে নাইম ডলির সাথে । একটু পরে ডলির একটা কাজে যেতে হবে । তাই ডলি নাইম কে বুঝিয়ে দিচ্ছে যেন এদিক সেদিক বেশি ঘোরাঘুরি না করে । শোনো ছেলে , এদিক সেদিক বেশি জাইও না । সিনেমায় সবারে ভালো মানুষ দেখাইলেও বাস্তবে সবাই অমন না বুঝছো?   এতদিন হয়ে গেলো তবুও ডলি নাইম কে ছেলে অথবা নায়ক বলেই ডাকে , ডাকার দরকার হলে , “এই ছেলে” “নায়ক সাহেব” এইসব বলে সম্বোধন করে । ব্যাপারটা নাইমের ভালোই লাগে , এই রসকষ হীন ডাকেও যে স্নেহ টুইটূম্বুর সেটা আত্মীয় পরিজনহিন নাইমের বুঝতে অসুবিধা হয় না ।   ঘাড় নাড়িয়ে নাইম বলে দেয় সে বুঝতে পেরেছে । কিন্তু ডলি চোখের আড়াল হতেই এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি শুরু করে দেয় । একে ওকে জিজ্ঞাস করে জেরিনের শুটিং কোথায় চলছে । জেরিন হচ্ছে ওর বর্তমানের সপ্নের নাইকা । নাইম সপ্ন দেখে একদিন জেরিনের সাথে অভিনয় করবে , দুজনে মিলে রোম্যান্টিক গান করবে । চুমুর সিন করবে , বাঁশর ঘরের  সিন করবে । ভাবতে ভাবতেই নাইমের কান লাল হয়ে ওঠে ।   হিট নাইকা জেরিনের কথা ভাবতে ভাবতে এদিক ওদিক আনমনে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত করেই একজনের সাথে ধাক্কা লাগে ওর । হ্যাংলা পাতলা নাইম পরেই যাচ্ছিলো প্রায় । কোন রকমে নিজেকে সামলে নেয় ও , তারপর ই কথা গুলো এসে ওকে ধাক্কা দেয় । যা শারীরিক ধাক্কার চেও প্রবল , এই শূয়রের বাচ্চা দেখে চলতে পারিস না ।     নায়িম গালি দেয়া লোকটার দিকে তাকিয়ে দেখে , লোকটাকে ও চিনতে পারে । মাঝে মাঝে সাইড ভিলেনের কাজ করে । তেমন বড় কেউ না , নায়কের হাতে মার খাওয়াই এদের কাজ । নাইমের খুব রাগ হয় , বলে … গালি দেন ক্যান?   এক থাপ্পরে দাত ফালায়া দিবো খানকির পুত ,  কথা বলেই সুধু খান্ত হয় না একটা থাপ্পর বসিয়েও দেয় , নাইমের ফর্সা গালে আঙ্গুলের ছাপ গুলো স্পট ফুটে ওঠে । এরি মাঝে আশেপাশের লোকজন জর হতে শুরু করে । একেক জন এসে সাইড ভিলেন নাসির কে জিজ্ঞাস করেত থাকে কি হইসে নাসির ভাই , এইটা কে?   লজ্জায় নায়িমের চোখে পানি চলে আসে , ইচ্ছে হয় দৌরে পালিয়ে যেতে । থাপ্পর টা ওর শরীরে যতটা না আঘাত করেছে তারচেয়ে বেশি অহংবোধে । নিজে একদিন এই সিনেমা পাড়ার সেরা নায়ক হবে । তখন নিশ্চয়ই এই কথাটা সবাই মনে রাখবে । সবাই চুপি চুপি বলবে ওই দেখো নায়ক নায়িম যায় , একদিন এক জুনিওর আর্টিস্টের কাছে থাপ্পর খেয়েছিলো । আর ঐ নাসির লোকটাও কি কম বলবে এই কথা , যার তার কাছে বলে বেড়াবে ।   লজ্জায় অপমানে নায়িমের চোখে পানি চলে আসে , অনেক কষ্টে কান্না থামায় নায়িম । কান্নার বেগে ঠোঁট দুটো ফুলে ফুলে ওঠে ।   কি জানি কই থাইকা যে এই আবাল ছাবাল আহে , আমারে ধাক্কা দিলো, আরবার তেজ ও দেখায় , নিজেরে নায়ক ভাবে । নায়িম ওর ব্যাপারে নাসির কে বলতে শুনল । আশপাশ থেকে কয়েক জন নাসিরের কথায় মৃদু শ্বায় দিলো , বাকিরা হেসে উঠলো । লজ্জায় আরও লাল হয়ে উঠলো নায়িম , ও বুঝতে পারছে ওর এখন উচিৎ এখান থেকে চলে যাওয়া , কিন্তু নড়তে পারছে না একদম । ঢাকা শহর এসে অনেক রং দেখছে নায়িম , কিন্তু কেউ কোনদিন ওর সাথে এমন আচরন করেনি , না খেয়ে থেকেছে , রাস্তায় ঘুমিয়েছে । কিন্তু বাপ মা তুলে গালি দেয়া ,   এমন সময় কেউ একজন বলে উঠলো । এই ভাই এই রাস্তা ছাড়েন , রাস্তা ছাড়েন । হয়ত বড় কেউ এসেছে । দ্রুত রাস্তা পরিস্কার হয়ে গেলো , নায়িম তখনো নিচের দিকে তাকিয়ে থাকায় কে এসেছে সেটা দেখতে পেলো না , দেখার ইচ্ছাও নাই । এই অপমানিত মুখ কাউকে দেখাতে চায় না ও ।   যে এসেছে তাকে সবাই সালাম দিতে লাগলো , ওস্তাদজি বলে সম্বোধন করছে সবাই । এমন কি নাসির ও লোকটাকে সালাম দিলো।   এই এখানে কি হয়েছে ? তোমরা জটলা করছো কেনো? একটা পুরুষ কণ্ঠ শুনতে পেলো নায়িম , যদিও পুরুষ তারপর ও কেমন জানি মেয়েলী ভাব আছে কণ্ঠে ।   আর বইলেন না ওস্তাদজি , আজে বাজে লোকে ভইরা গেছে পাড়া , দেখেন নায়ক একজন , আমারে ধাক্কা দিলো , আমি বললাম ধাক্কা দিলা ক্যান , আমারে লাল চোখ দেখায় ।   বল কি নাসির , এইটুকু ছেলে , ওস্তাদজি নামের লোকটা এখন নাইমের দিকেই তাকিয়ে আছে , নায়িম একবার চোখ তুলে দেখে নিয়েছে লোকটাকে , ঘিয়ে রঙের দামি পাঞ্জাবি পাজামা পরে আছেন , চোখে সোনালী ফ্রেমের চশমা । একটু বেঁটে আর কালো দেখতে , মাথায় চুল ও বেশ কম। বেশ বয়স লোকটার , যত টুকু দেখায় তারচেয়ে বয়স বেশি ই হবে ।   এই ছেলে তোমার নাম কি ? ওস্তাদজি জিজ্ঞাস করে , যদিও এই লোকটার কণ্ঠ বেশ নরম আর তাচ্ছিল্যের উপস্থিতি নেই । তারপর ও উত্তর দেয় না নাইম । লজ্জায় ওর মুখ দিয়ে শব্দ বের হয় না ।   দেখসেন নাকি ওস্তাদজি কেমন ফাজিল , আপনের প্রশ্নের উত্তর দেয় না । নাসির রাগত স্বরে বলে , তারপর নাইমের দিকে তাকিয়ে হুংকার ছেড়ে বলে , ওই কথা কস না ক্যান বান্দিরপুত , থাবড়া দিয়া কানাপট্টি গরম কইরা দিমু ।   আহা নাসির থামো তো , ওস্তাদজি বিরক্ত হয়ে বাধা দেয় , তারপর নাইমের দিকে এগিয়ে যায় । মাথায় হাত রাখে , লোকটার হাতের স্পর্শ নাইম কে অনেকটা শান্ত করে । কি নাম তোমার , এখানে কি করো ?   এবার নাইম ফুঁপিয়ে ওঠে , নায়কোচিত কাঠিন্য আর ধরে রাখতে পারে না । সেটা দেখে ওস্তাদজি বলেন । আহা কাদছো কেন ? তারপর জমা হওয়া লোকজন কে তাড়িয়ে দেন । নাসির যাওয়ার সময় বিড়বিড় করে কি যেন বলতে বলতে যায় ।   তুমি আসো আমার সাথে ,ওস্তাদজি নাইম কে সাথে নিয়ে নিজের গন্তব্যের দিকে হাটা দেয় ।                                                                                        *****
Parent