ঝর্ণা The Untold story ! সমাপ্ত - অধ্যায় ১০৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-31677-post-2734919.html#pid2734919

🕰️ Posted on December 15, 2020 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1388 words / 6 min read

Parent
আমার কথা শুনে মঞ্জুর মুখে হাসি ফুটে উঠল ! আমাকে চকাত করে একটা হামি খেয়ে নিলো ! "তাহলে আমরা কবে যাবো ?" - এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আমার জয়েনিং ! তার আগে মার্চের মাঝামাঝি গিয়ে ওখানের থাকার ব্যবস্থা আমাদের বিয়ে করার ব্যবস্থা সব করে এসে চুপিচুপি তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যাবো ! কেউ জানতেও পারবে না !  মঞ্জু আনন্দে উচ্ছল হয়ে আমাকে জরিয়ে ধরল ! "উফফ ! আমাদের কতদিনের স্বপ্ন পুরন হতে চলেছে !" বলেই চুপ করে গেলো !  - কি হোল চুপ করে গেলে কেন?  -মা বাবার কি হবে ? লোকের কাছে মুখ দেখাবেন কি করে ? আমার জন্য ওনারা লোক সমাজে মুখ দেখাতে পারবেন না ! আরও যখন জানতে পারবেন যে আমি তোমার সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছি তখন হয়ত ওনারা মরেই  যাবেন ! বলেই মঞ্জু কেঁদে ফেলল ! মঞ্জুকে গভির ভাবে জরিয়ে আমি ওকে বোঝালাম " দেখো যদি আমরা না পালাই তাহলে তোমার আমার মিলন কোনোদিনই সম্ভব নয় ! আবার যদি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করি তাহলে দু দুটো পরিবার খুব কষ্ট পাবে ! কিন্তু আমাদের যে কিছুই করার নেই !  কেন জানিনা সেইদিন আমি খুব স্বার্থপর হয়ে গেছিলাম ! বাবা মা পিসি পিসেমসাইএর কথা ভাবতেই চাইছিলাম না ! এখন ভাবি সতিই আমি কতো স্বার্থপর ছিলাম সেইদিন ! কিন্তু তখন আমার জীবন মানেই মঞ্জু ! ওকে ছাড়া জীবন ভাবতেই পারতাম না ! মঞ্জুকে কে জোর করে জরিয়ে ধরে ওকে বোঝালাম "এটাই আমাদের নিয়তি ! হয় আমাদের এইকুল রাখতে হবে না হলে ওইকুল ! আর এটাও ঠিক ওনারা কোনোদিন আমাদের এক হতে দেবেন না !এ ছাড়া আমাদের কোন রাস্তা নেই ! " মঞ্জু আমার মুখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো ! ওর ওই চোখের গভিরতায় আমি স্বজন হারানোর বেদনা দেখতে পাচ্ছিলাম ! কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই ! অনেক বুঝিয়ে মঞ্জুকে নিয়ে কমলদার বাড়ি গেলাম ! ওনার সাথে সমস্ত কথা বললাম ! সব শুনে কমলদা বলল "তুই যে মঞ্জুকে নিয়ে জার্মানি যাবি মঞ্জুর কি পাসপোর্ট আছে ?" মঞ্জু বলল " না আমার পাসপোর্ট নেই ! " -তাহলে আগে পাসপোর্ট তৈরি করতে আবেদন করে নে ! ততদিনে পাসপোর্ট এসে যাবে !  আমি আর মঞ্জু ঠিক করলাম আগামিকাল সকালে কলকাতা গিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করে আসব ! সেই মতই মঞ্জুকে বললাম "কাল সকালবেলায় তুমি তোমার সব সার্টিফিকেট আর পাসপোর্ট সাইজের ফটো  নিয়ে স্টেশনে আমার জন্য অপেখ্যা করবে ! তারপর তোমাকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যাবো  ! " মজু ঘার নেরে সম্মতি দিল !  কমলদার থেকে বিদায় নিয়ে ঘোসদার বাড়ি গেলাম ! মিতালি একটা হুইল চেয়ারে বসে পড়াশোনা করছে ! আমাদের দেখেই উতফুল্ল হয়ে ওঠার চেষ্টা করল ! কিন্তু পারলনা ! মুখটা এক অব্যাক্ত যন্ত্রণায় বেঁকে গেলো ! মঞ্জু তারাতারি গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরল ! আমার হাত ধরে মিতালি বলল "এইবার তোমাদের দুজনের সময় হয়ে গেছে এক হবার ! আমি খুব খুশি ! আমাকে যেন ভুলে যেওনা তোমরা ! " মিতালির কাঁধে স্নেহের পরশের হাত রেখে বললাম "শুধু তুমি কেন  ! আমি কাউকেই ভুলতে পারবোনা ! " ঘোসদার জরাজুরিতে দুটো সিঙ্গারা আর চা খেতে বাধ্য হলাম ! কিন্তু মনের কোনে একটা ব্যাথা খুব খিঁচ খিঁচ করছিল ! সত্তিই তো আমরা যদি পালিয়ে যাই তাহলে আমাদের বাড়ির লকজন, পিসির বাড়ির অবস্থা কি হবে ? সাথে আবার এই চিন্তাটাও আসছিল যদি আমরা না পালাই তাহলে আমাদের মিলন কি করে হবে !  ভাবতে ভাবতেই পিসির বাড়ি পৌঁছে গেলাম ! পিসেমসাই আর পিসিমা বসে বসে টিভি দেখছিলেন ! আমি পিসিকে বললাম "কাল সকালে মঞ্জুকে নিয়ে আমি পাসপোর্ট অফিস যাবো মঞ্জুর পাসপোর্ট করানোর জন্য ! " - মঞ্জু পাসপোর্ট দিয়ে কি করবে ?পিসিমা জিজ্ঞাসা করলেন !  মঞ্জুর মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো ! কি বলতে চাইছি আমি ? মঞ্জুর মুখের দিকে তাকিয়ে আমি বললাম--- - না মানে আমি তো জার্মানি চলে যাবো ! মঞ্জুর গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হয়ে গেলে ওখানে হাইয়ার স্টাডি করতে পারবে ! আর তাছাড়া ওখানে যখন আমি থাকব তখন ওর তো ওর চিন্তার কিছুই নেই ! ! মঞ্জু হাঁফ ছেড়ে বাঁচল !  পিসি বললেন "কি দরকার ওর পাসপোর্ট করে? গ্রাজুয়েশন হয়ে গেলেই ওর বিয়ে দিয়ে দেবো !" - না সেটা আমি চাইনা ! আমি চাই মঞ্জু নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তবেই বিয়ে করুক ! পিসেমসাই বললেন বিয়ে টিয়ে সব পরের কথা ! সুনন্দ যখন বলছে তখন পাসপোর্ট তৈরি করে রাখাই ভালো ! যদি মঞ্জু জার্মানিতে  হাইয়ার স্টাডির চান্স পায় তাহলে তো খুব ভালো কথা !  পিসেমসাইএর কথা শুনে আমি নিশ্চিন্ত হলাম ! কথা হোল কাল সকাল বেলায় মঞ্জু সমস্ত ডকুমেন্ট নিয়ে স্টেশনে আমার জন্য অপেখ্যা করবে !  বাড়ি চলে এলাম !  দেখি মা আর পিসি ফোনে কথা বলছে ! " না না খোকা তো ঠিক কথাই বলেছে ! ওর পাসপোর্ট তৈরি করিয়ে রেখে দাও ! ততদিনে আগে ওর গ্রাজুয়েশন শেষ হোক ! তারপর না হয় দেখা যাবে ! " বুঝলাম পিসি মাকে ফোন করে মঞ্জুর পাসপোর্টের ব্যাপারে বলছেন আর মা তার নিজের মতামত বলছেন ! আমি ঘরে ঢুকে বিছানায় একটু গা এলিয়ে দিলাম ! ঝর্না এক কাপ চা নিয়ে এলো ! চা খেতে খেতেই ঝরনাকে জিজ্ঞাসা করলাম তোর ফিউচার প্লানিং কি ? আমার জিজ্ঞাসা করার কারন হোল ঝর্না এইবার বিএ সেকেন্ড ইয়ারে পরছে ! এরপর তো ওকে আর জোর করে আমাদের বাড়িতে ধরে রাখা যায়না !ও বলল "আমার স্কলারসিপ এসে গেছে ! জুন মাসে আমি আমেরিকায় চলে যাবো পরতে ! - মা বাবাকে জানিয়েছিস ? - হ্যাঁ ! ওনারা খুব খুশি ! শুধু আমার পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে !  আমি চেঁচিয়ে মাকে ডাকলাম ! মা আ আ আ আ মা আমার রুমে এলে আমি বললাম "কই আমাকে তো তোমরা বলনি যে ঝর্না স্কলারসিপ পেয়ে গেছে ?" - একদম ভুলে গেছি রে ! আর তাছারা ঝর্না আমাদের বাড়ি ছেরে চলে যাক সেটাও তো মানতে পারছিনা ! ঝর্না মাকে জরিয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আমাকে দেখছে ! একটু রেগেই গেছিলাম "তোমাদের জন্য কি ও ওর ভবিষ্যৎ খারাপ করবে নাকি ?" - সেটা তো বলিনি ! কিন্তু ঝরনার বাবা কিছুতেই মেয়েকে বাইরে যেতে দিতে চায় না ! তাই...। - কাল সকালে ঝর্না আমাদের সাথেই যাবে পাসপোর্টের আবেদন করতে  ! তোমাদের কোন আপত্তি নেই তো ! ওর বাবাকে আমার বাবা দেখে নেবে ! আর তাছাড়া ঝর্না এখন বড় হয়ে গেছে !  - ঠিক আছে তোর বাবা আগে আসুক তারপর কথা হবে ! ঝর্না মায়ের সাথে বেরিয়ে গেলো ! আমিও উঠে মাকে বলে ক্লাবের দিকে বেড়িয়ে  গেলাম !         ক্লাবে সবার সাথে আড্ডা দিয়ে যখন ফিরলাম তখন বাবা বাড়ি এসে গেছেন ! মা আর বাবা কথা বলছেন আর ঝর্না দাঁড়িয়ে আছে ! ওর চোখে জল !   আমাকে দেখেই বাবা বললেন "খোকা কাল ঝরনাকেও নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে চলে যাস ! ওর বাবাকে আমি দেখে নেবো ! বাবাকে আমি জরিয়ে ধরলাম !  ইয়ারকি মারতে মারতেই বাবা বলে উঠলেন "তাহলে আমাদের আবার একটা ঝরনাকে খুঁজতে হবে বাড়ির কাজের জন্য ! " ঝর্না ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেলল  মাকে জরিয়ে ধরে !  বাইরে থেকে বুধুর ডাক পেলাম !  বাইরে বেড়িয়ে দেখি কানাই নিলয় বুধু সবাই দাঁড়িয়ে ! ওদের দেখে বললাম "কি ব্যাপার রে ? তোরা এখন ?" - বোকাচোদা ! সারাদিন কোথায় ছিলে শুনি ? কানাই খেঁকিয়ে উঠল !  - কমলদা আর মিতালিকে দেখতে গেছিলাম !  -পিসিমা কিছু বলেনি তোকে? নিলয় জিজ্ঞাসা করল ! - না তো ...  - যা আগে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে আয় !  আমি ভিতরে ঢুকে মাকে বললাম "সকালে কি নিলয় বা কানাই এসেছিলো !  একটা বিরাট জিভ কেটে মা বলল "একদম ভুলে গেছিলাম ! আজ নিলয়ের আশীর্বাদ হয়েছে তোর নেমন্তন্ন আজ রাতে ওদের বাড়িতে ! " - তুমি একেবারে বুড়ি হয়ে গেছ মা ! কোন জিনিস মনে রাখতে পারনা ! ঝর্না চলে গেলে কি করবে সেটাই ভাবছি !  - হ্যাঁ আমিও ভাবছি এবার তোর একটা বিয়ে দিয়ে একটা নতুন ঝর্না নিয়ে আসব বাড়িতে ! তাহলেই হবে ! আমি ভুললেও কিছু এসে যাবে না !  - ধ্যাত ! কি যে বলনা ! । চলো ওরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে ! আমি যাচ্ছি !  - বেশি রাত করিস না !  টালিখোলার মাঠে বসে সবাই জমিয়ে মদ খেলাম ! একটু একটু ঠাণ্ডা পরে গেছে ! খোলা মাঠে বেশ শীত শীত  করছে ! তারাতারি শেষ করে সবাই নিলয়ের বাড়িতে গিয়ে খেতে বসলাম ! কচুর লতি দিয়ে কুঁচ মাছের তরকারি ! খাসির মাংস ভাত ! বেশ জমিয়ে খেলাম ! কচুরলতি যে এইরকম স্বুস্বাদু হতে পারে সেটা আমার কল্পনায় কোনোদিনই ছিলোনা ! একটু বেশি করেই কচুরলতি ছেয়ে খেয়ে নিলাম !  সকাল বেলাতেই ঝর্না রেডি হয়ে বসে আছে ! আমি ঝরনাকে নিয়ে একটা রিক্সায় বসে স্টেশনের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরলাম ! এখন আমি বড় হয়ে গেছি  ! বাবা বা মা আমাকে আর বকাবকি করেনা বা কোন উপদেশ দেয়না ! আর কদিন পরেই আমি জার্মানি চলে যাবো ! বাবা মায়ের গর্বে বুক ফুলে আছে ! সবাইকে ডেকে ডেকে বোলে বেরায় "আমার ছেলের জার্মানিতে চাকরি হয়েছে ! ও জার্মানি চলে যাবে ! বাবা মায়ের এই শিশু সুলভ আচরণ আমাকে খুব ভাবিয়ে তোলে ! যেদিন ওনারা জানতে পারবেন আমি মঞ্জুকে নিয়ে জার্মানি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছি সেদিন ওনাদের কি অবস্থা হবে !       
Parent