জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak - অধ্যায় ৪৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38842-post-3460911.html#pid3460911

🕰️ Posted on July 5, 2021 by ✍️ Lekhak is back (Profile)

🏷️ Tags:
📖 537 words / 2 min read

Parent
এই প্রথম শুক্লার মুখের অভিব্যক্তিটা দেখে বুঝলাম, বিদিশার নামটা শুনে একবারও ওর মনের মধ্যে কোন রাগ নেই। হতাশা বা কষ্ট মানসিক কোন দ্বন্দ, সবকিছু মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে হাসি মুখে ও বলল, ‘বিদিশা আসছে? বাঃ এটাই তো চেয়েছিলাম। এই একটা কাজের মতন কাজ করেছিস তুই।’ শুভেন্দু বলল, ‘আমি আর কি করলাম? বুঝছিস না? একটা মেয়ে কতদিন বাদে ফিরে এল। কার টানে? ওই যে লোকটা, যার মাথার কাছে তুই বসে আছিস। ইতিহাস যদি কেউ বদলাতে পারে, তাহলে দেবই ওটা করে দেখিয়েছে। এরজন্য দেবের প্রশংসা প্রাপ্য।’ আমি বললাম, ‘কি আজেবাজে বকছিস? আমি আর কি করলাম? সবকিছু সময়ের ওপর নির্ভর করে। তখন আমার সময়টা খারাপ ছিল। এখন হয়তো-’ শুক্লা বলল, ‘পৃথিবীটা তো গোল। তাই ঘুরে ফিরে আমরা সবাই আবার একজায়গায়। আর বিদিশা তো আসবেই। কারণ দেব তো কোন অন্যায় করেনি।’   আমার বুকের ভেতরটা কেমন যেন একটা কম্পন অনুভূত হচ্ছে। ভাবছি, কত সহজ ভাবে কথাগুলো বলে দিল শুক্লা। কিন্তু ও কি পারবে চোখের সামনে ভালবাসাটা ছাই হয়ে যেতে দেখতে। শুক্লার তো কেউ নেই, আমার তবু বিদিশা আছে এখনো একটা আশার আলো নিয়ে। ঘরের মধ্যে বিদিশা যদি আমাকে সেই আগের আমাকে মতন জড়িয়ে ধরে, শুক্লা কি পারবে, দাঁতে দাঁত চেপে ওর হারটাকে স্বীকার করে নিতে। খুব কাছ থেকে আমি দুই নারীকে দেখেছি। হঠাৎ যদি শুক্লাও আমাকে জড়িয়ে ধরে, আমি কিছু মনে করবো না। কারণ আমি জানি ওই জড়ানোর মধ্যে কোন অনুভূতি নেই। উষ্ণতা নেই। এক বন্ধু তার বন্ধুকে জড়িয়ে ধরছে, তার গাল টিপে দিচ্ছে, খুনসুটি করছে, ওতে কোন আবেগ আসে না। কিন্তু প্রেম হল সূর্যের আলোর মত উজ্জ্বল। উত্তপ্ত প্রেম যখন শরীরে প্রবেশ করে তখন তাকে উন্মুখ করে তোলে। এই শুক্লা একটু আগেই আমার কপালে একবার হাত ঠেকিয়েছে, কিন্তু আমার কোন অনুভূতি হয় নি। কিন্তু হাতটা যদি শুক্লার না হয়ে বিদিশার হত। আমার কপালটা তখন আর কপাল থাকত না। বিদিশার ছোঁয়া পাওয়ার জন্য বারে বারে শুধু উন্মুখ হয়ে উঠত। ভালবাসা যেন আরাধনা হয়ে গেছে। কথায় বলে পরাণে ভালবাসা কেন দিলে গো, তাহলে হয়তো এই পরাণটা আমার জ্বলত না।   দেখলাম শুভেন্দু হঠাৎ মোবাইলের লাউড স্পীকারটা অন করেছে। সেদিনকে কখন আমার গাওয়া গানগুলো মোবাইলে রেকর্ড করে নিয়েছে আমি টেরই পাইনি। স্পীকারটা অন করে শুভেন্দু শোনাতে লাগল, গানটা। ‘দেব মনে পড়ে? সবার শেষে তুই এই গানটা গেয়েছিলিস সেদিন। বিদিশা ছিল।’ শুক্লা অবাক হয়ে শুনছে। ও জানে না, শুভেন্দুর বাড়ীতে বিদিশাও সেদিন এসেছিল। আমি শুক্লাকে বলিনি। গানটা তখন মোবাইলে বাজছে,  ‘তেরে মেরে সপনে আব এক রঙ্গ হ্যায় ও জাহান ভী লে যায়ে রাহে, হাম সঙ্গ হ্যায়। ও তেরে মেরে সপনে- মেরে তেরে দিলকা, তায় থা একদিন মিলনা। যেয়সে বাহার আনে পর, তায় হ্যায় ফুল না খিলনা ও মেরে জীবন সাথী- তেরে মেরে সপনে- তেরে দুখ অব মেরে, মেরে সুখ অব তেরে তেরে ইয়ে দো ন্যায়না, চাঁদ অউর সুরজ মেরে ও মেরে জীবন সাথী- তেরে মেরে সপনে! লাখ মানালে দুনিয়া, সাথ না এ ছুটেগা। আ কে মেরে হাতো মে, হাত না এ ছুটেগা। ও মেরে জীবন সাথী- তেরে মেরে সপনে অব এক রঙ্গ হ্যায়।।   শুভেন্দু বলল, উফ কি গলা দেখেছিস দেবের। এখনো সেই দরদ। সেই মূর্চ্ছনা। আমি যখন অফিসে যাই, তখনো এই গানটা চালিয়ে শুনি।’ শুক্লা বলল, ‘অসাধারণ। উফ, মন ভরে গেল।’   আসলে সেদিন সবশেষে, বিদিশার দূঃখ আর কান্নাটা ভোলাবার জন্যই এই গানটা গেয়েছিলাম। আমাদের স্বপ্নটা যেন আবার এক হয়ে যায়।  যত কষ্ট আর বাঁধাই আসুক। আমরা আর আলাদা হবো না। কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না। হয়তো ওপরওয়ালা আগাম সেই পরিকল্পনাটাই করে রেখেছেন। কে বলতে পারে?     চলবে-
Parent